ছোট গল্প * ভুলা যায় না / প্রথম পর্ব ।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের ছোট গল্প, ভুলা যায় না প্রথম পর্ব সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
সময়টা ২০০৯ গ্রীষ্মকাল চলতেছে গরমের কারণে তাড়াতাড়ি ঘুম যাওয়া সম্ভব হয় না। আর বাংলাদেশের বিদ্যুতের দুরবস্থা। গ্রীষ্মকাল আসলে লোড শেডিং অনেক বেড়ে যায়। বয়স তখন আমার ৬ থেকে ৭ বছর হবে। আমাদের পাশের বাড়ির লোক মুন্না । আমি তাকে কাকা বলে ডাকি। প্রতিদিন তাদের ঘরে বিশেষ করে রাত্রি বেলায় ঝগড়াঝাঁটি আরম্ভ হতো। ঘরের বাইরে গেলে তাদের বিভিন্ন কথাবার্তা আমরা শুনতে পেতাম। তখন গরম কাল হওয়াতে রাতের সাড়ে নটায় দশটা পর্যন্ত আমরা সবাই ঘরের বাইরে থাকতাম। মুন্না কাকাদের ঘরে তার মা, তার ছোট বোন এবং তার বউ ছিলো। সেই বিয়ে করছে আট থেকে নয় মাস হবে। মুন্না লোক হিসেবে খুবই সরল ঠান্ডা মাইন্ডের। বলা যায় যে মুন্না কাকা সাধারণত চঞ্চল নয়। তাদের পরিবার মধ্যবিত্ত পরিবার হিসেবে সমাজের স্বীকৃত। তাদের পরিবারের পুরুষ লোক একমাত্র সেই।
মুন্না কাকা তখনকার এসএসসি পাশ। নারায়ণগঞ্জে সে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতো। বিয়ে করার পর কেন যেন সে চাকরি ছেড়ে দিলো। আমি তখন ছোট তাদের পরিবারে প্রায় সময় কেন ঝগড়া হয় এই বিষয়ে তেমন বুঝতাম না । তবে অনেক সময় আম্মাকে জিজ্ঞেস করতাম তাদের ব্যাপারে। কি নিয়ে কথা হচ্ছে? তখন আম্মা বলতো তার বউকে নিয়ে ঘরের মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। তার বউয়ের নাম লিমা। লিমার বাপের বাড়ির পরিবারের লোকেরা খুবই বড় লোক। সেই হিসেবে মুন্নাদের পরিবারের সাথে লিমাদের পরিবারের অনেক তফাৎ রয়েছে। বলা যায় যে অর্থবিত্তের দিক দিয়ে মুন্নাদের পরিবারের সাথে লিমার পরিবারের কোন মিল নেই। তবে কেমনে যেন তাদের মধ্যে বিবাহর সম্পর্ক হয়। বিয়ের কয়েক মাস যাবার পরে লিমা শশুর বাড়িতে থাকতে আর চাই না ।
সে তার বাপের বাড়ি চলে যেতে চায়। প্রতিদিনই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিমা শ্বশুরবাড়ির লোকজন এর সাথে ঝগড়া করতো। লিমা বাপের বাড়ির লোকেরা বড় লোক হওয়ার কারণে তার মাঝে কেন যেন অন্যরকম আচার আচরণ কাজ করে। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটি করে। বিশেষ করে মুন্না চাকরি নেই সে বেকার তারাদের পরিবার খুবই গরীব লিমার চাহিদা অনুযায়ী কোন জিনিস পাওয়া হচ্ছে না এই বিষয় নিয়ে প্রতিদিনই ঝামেলা লেগে থাকতো।
তবে মুন্না ছিল খুবই শান্ত স্বভাবের সে এতো কিছুর পরেও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মুন্না মাঝে মাঝে ভাবে তাদের পরিবারের শুধু তার মা আর বোন রয়েছে তারপরও এত ঝামেলা। সে এখন কি করবে। অনেক সময় সেই দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে আফসোস করে কেন সে বিয়ে করেছে। আশেপাশের সমাজের লোকজন যেখানে বিয়ে করে অনেক সুখী দাম্পত্য জীবন খুব সুন্দরভাবে কাটাচ্ছে সেখানে সেই প্রতিনিহত তার বউ এর কাছে অপমানিত অপদস্ত হচ্ছে। সেই মনে মনে চিন্তা করে যাই হোক জীবনে বিয়ে যখন করেছি। তখন সারা জীবন লিমিকে নিয়ে কাটিয়ে দিবো কোনভাবে তাকে জীবন থেকে ছেড়ে দেব না।
এদিকে লিমার আচরণ আরো খারাপ হতে লাগলো । আসলে আচরন খারাপ হওয়ার পেছনে কারণ রয়েছে। মুন্নাদের বাড়ির পাশে লিমার মামাতো বোন এবং একজন দূর সম্পর্কের আত্মীয় থাকতো। তারা দুজনে প্রায় মুন্নাদের বাড়িতে আসতো। লিমার সাথে অনেক বিষয় তাদের কথা হতো। এ বাড়িতে আসলে তারা দুজনে লিমার সাথে বিভিন্ন কূট উক্তি মূলক কথাবার্তা বলতো। তারা লিমিকে নিয়ে হাসাহাসি করতে। তারা বলতো তার স্বামী বেকার। বেকার স্বামী ঘরে কেন রয়েছোত। ইচ্ছে করলে আরো অনেক ভালো চাকরি করে এমন স্বামী পেতে পারবি। তোর বান্ধবীর স্বামীদের দেখ। তারা কত উন্নতভাবে জীবন যাপন করে। এ ঘরে থাকার চেয়ে না থাকা অনেক ভালো। এখনো সময় আছে মুন্নাকে ছেড়ে দে, মুন্না তোকে কি দিয়েছে এভাবে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতো তারা। এ কারণে লিমার অনেক মনে কষ্ট আসতো। তাদের এই ধরনের কথাবার্তার ফলে লিমের মনে আস্তে আস্তে মুন্না এবং তার পরিবারের প্রতি অবহেলা ঘৃণা জন্মাতে লাগলো। আসলে একজন মানুষকে যখন বারবার একটি বিষয়ে প্ররোচিত করে বা, কোন বিষয়ে সম্পর্কে নেগেটিভ কথাবার্তা বলতে থাকবে তখন ঐ বিষয়টির উপর নেগেটিভ চিন্তাভাবনা নিবে। লিমারও মুন্নাদের পরিবারের প্রতি নেগেটিভ চিন্তাভাবনা জন্মেছে। তাই সে মুন্নার সাথে আর সংসার করতে চাই না।
আজ আর নয় আগামী পর্বে আপনাদের মাঝে গল্পের বাকি অংশ উপস্থাপন করার চেষ্টা করব ইনশাল্লাহ।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | ছোট গল্প |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি এই ধরনের ছোট গল্প আরো উপস্থাপন করব , ইনশাআল্লাহ।
অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
![witness_proxy_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
গল্পটির প্রথম পর্ব পড়ে কিন্তু বেশ ভালই লাগছে। আর খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লেখার কারণে পড়তেও অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ হচ্ছে। তবে পুরো গল্পটা পড়তে পারলে হয়তো বা ভালো লাগত। যেহেতু ছোট গল্প, টানটান উত্তেজনা তো থাকবেই মনের মধ্যে। মুন্না কাকা আর তার জীবন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী। যাইহোক অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বের জন্য।
https://twitter.com/MdAgim17/status/1625149792845451264?s=20&t=ky_rPuh0in6bgcnA8piEQA
মুন্না ও লিমার গল্পের প্রথম পর্বটি পড়ে একটু অন্যরকম লাগলো। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম এটি কোন কাল্পনিক গল্প হবে পরে পড়ে দেখলাম এটি কোন কাল্পনিক গল্প নয় , এটি আপনার দেখা একটি বাড়ির পাশের ঘটনা। লিমার স্বামী বেকার এই নিয়ে হাসাহাসি করা উচিত নয় কারণ চাকরি তো মুখের কথা নয়, চাইলেই সাথে সাথে তা পাওয়া যায় না। মুন্না যে বিয়ের পর কেন চাকরিটা ছাড়লো এটাও চিন্তার বিষয়। লিমার মামাতো বোন ও তার একজন দূর সম্পর্কের আত্মীয় লিমার জীবনে স্বামী বেকার তাই নিয়ে অনেক প্রভাব ফেলেছে যা বুঝতে পারছি। গল্পের সবশেষে কি হয়েছে জানতে পারলে যদিও ভালো হতো। যাই হোক পরের পর্বে বাকি কি কি ঘটলো তা জানা যাবে সেই অপেক্ষায় রইলাম।