নিজে চাষকৃত ধুনিয়া পাতা জমি থেকে তোলার অনুভূতি।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের নিজে চাষকৃত ধুনিয়া পাতা তোলার অনুভূতি
সম্পর্কে জানতে যাচ্ছি। কিভাবে ধুনিয়া পাতা চাষ করেছি সে সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন।
ধুনিয়ার পাতা আমাদের সকলের অতি পরিচিত। ধুনিয়া পাতা তরকারিতে সুগন্ধির জন্য ব্যবহার করা হয় । শীতকালে ধনিয়া পাত বেশি উৎপাদন হয়। তবে হাইবিড জাতের ধুনিয়া পাতা সারা বছর ধরে পাওয়া যায়। ধনিয়া পাতা একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। মসলা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় হচ্ছে ধুনিয়া। মসলা আইটেমের মধ্যে সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় ধুনিয়ার বীজ। সাধারণত মাংস ছাড়া আর অন্য সব তরকারিতে দুনিয়া পাতা ব্যবহার করা হয়। ধুনিয়া পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে খাবারের স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়। খাবার অতি সুগন্ধি হয়। বিশেষ করে শীতকালে তরকারিতে ধনিয়া পাতা না দিলে কেমন যেন শূন্যতা মনে হয়। ধুনিয়া পাতার অনেক পুষ্টি গুণ রয়েছে। মানবদেহের জন্য ধুনিয়া পাতা অনেক উপকারী। মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধিতে ধুনিয়া পাতা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
আসুন শুরু করি
ধুনিয়া পাতা চাষাবাদ করতে আমার যে উপকরণ সমূহ প্রয়োজন হয়েছে তা হলো:-
১ - জমি
২ - বীজ
৩ -কোদাল
৪ -রাসায়নিক সার ( ইউরিয়া, টিএসপি,এমপি বা পটাশ, ফসফেট সার।
৫ -জৈব সার ( গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরু তরকারী কাটার পর অবশিষ্ট অংশ, ছাই ।
৬ -জমি চাষের জন্য বড় ট্রাক্টর
৭ -লাঠি (মাটির বড় অংশ ভাঙ্গার জন্য)।
৮ -পানি
৯ - মটর, বালতি, জগ ইত্যাদি।
আমি যেভাবে ধুনিয়া পাতা উৎপাদন করেছি তার বিবরণ :-
↘️ধাপ :- ১↙️
- প্রথমে আমি আমাদের ৬ শতাংশ জমি বড় ট্রাক্টর দিয়ে দুই চাষ দিয়েছি।
↘️ধাপ :- ২↙️
- ৬ শতাংশ জমির মধ্যে দুনিয়া চাষের জন্য আমি দৈর্ঘ্য ২০ হাত এবং প্রস্থ ১৫ হাত জমি নির্ধারণ করি। তাতে জৈব সার গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরু তরকারী কাটার পর অবশিষ্ট অংশ ও ছাই দিলাম।
↘️ধাপ :- ৩↙️
- পরবর্তীতে আমি জমিতে রাসায়নিক সার দিলাম। আমি রাসায়নিক সার এর মধ্যে ( ইউরিয়া, ,এমপি বা, পটাশ, ফসফেট পরিমাণ মতো সবগুলো সার একসাথে মিশিয়ে জমিতে প্রয়োগ করি।
↘️ধাপ :-৪ ↙️
- রাসায়নিক সার এবং জৈব সার দেওয়া হয়েছে। জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। এখন বীজ ছিটিয়ে দিবো।
↘️ধাপ :-৫ ↙️
- আমি বীজ ভান্ডার থেকে ২৫০ গ্রাম ধুনিয়ার বীজ কিনে নিলাম। ধুনিয়ার বীজ হালকা ভাবে বেটে দুই ভাগ করে নিলাম। তারপর দুনিয়ার বীজ গুলোকে সন্ধ্যার সময় পানিতে ভিজিয়ে রাখলাম পরের দিন সকালে পানি থেকে উঠালাম। অর্থাৎ ধুনিয়ার বীজ ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি।
↘️ধাপ :-৬ ↙️
এখন আমি ধুনিয়ার বীজ জমিতে সমান ভাবে ছিটিয়ে প্রয়োগ করি। তারপরে আমি কোদার দিয়ে জৈব সার, রাসায়নিক সার বীজ এবং মাটি একসাথে ভাবে মিশ্রন করে দিলাম।
↘️ধাপ :-৭ ↙️
- দুনিয়ার বীজ থেকে চারা উঠতে কিছুদিন সময় লাগে। প্রায় জমিতে বীজ বোপন করার ১৮ দিন পর চারা উঠে ।
↘️ধাপ :-৮↙️
- ধুনিয়ার গাছ সতেজ ভাবে উঠতেছে দেখে আমার কাছে খুব ভালো লাগছে।
↘️ধাপ :-৯ ↙️
- দুনিয়া গাছে আমি প্রথমে কয়েকদিন বালতি করে পানি নিয়ে জগ দিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছি। পরে দুদিন মোটর দিয়ে পানি দিয়েছি।
- সঠিক পরিচর্যা কারণে ধুনিয়া পাতা তাড়াতাড়ি বড় হয়েছে। ধুনিয়া পাতা জমি থেকে তোলার উপযুক্ত হয়েছে।
↘️সর্বশেষ ধাপ↙️ :-
আজকে প্রথম আমি জমি থেকে দুনিয়া পাতা তুলেছি। যদিও আম্মা কয়েক দিনের জমি থেকে দুনিয়া পাতা তুলেছে। আম্মা ধনিয়া পাতা তরকারি দিবে । মনে হয় দুনিয়া পাতা দিয়ে ভর্তা তৈরি করবে ।
আজকের এই মুহুর্তের জন্য একমাস থেকে একটু বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে আমায়। আজকে মনে হচ্ছে যেন এতো দিনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। কারণ আমি অনেক চিন্তার মধ্যে ছিলাম আমার উৎপাদিত ধুনিয়া পাতা তুলতে পারবো কিনা? কারণ দেখা যায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে বা, বীজ নষ্ট হয়ে গেলে ।ঠিকমতো ফসল উৎপাদন হয় না। তাই আমার কাছে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকের দিনটি খুব অন্যরকম ছিলো।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | কৃষি ( শাকসবজি উৎপাদন) |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি এই ধরনের কৃষি সম্পর্কিত পোস্ট আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ। অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
আপনি একদম সত্য কথা বলেছেন ধনিয়া পাতা তরকারির সুস্বাদু করতে ব্যবহার করা হয় তাছাড়া আরও অনেক রেসিপিতে ধনিয়া পাতা ব্যবহার করা হয়। আপনি খুবই চমৎকার ভাবে ধনিয়া পাতা চাষের প্রক্রিয়া আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আপনি অনেকদিন থেকেই এই পোস্ট প্রস্তুত করেছেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধনিয়া পাতা চাষের প্রক্রিয়া আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এত অসাধারণ মন্তব্য করে উৎসাহ প্রদান করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
ধনিয়ার ঘ্রানটা আমার কাছে অদ্ভুত সুন্দর লাগে। কেমন যেন নেষা ধরে যায়। চাষ বাসের উপর আপনার এই পোষ্টগুলো আমার কাছে দারুন লাগে। আমাদের দেশে কৃষকদেরকে কেও তেমন একটা সম্মান করেনা কিন্তু তাদের স্থান হওয়া উচিত সবার উপরে। ধন্যবাদ ভাই।
ধুনিয়াত ঘ্রাণ সত্যি অসাধারণ মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।
ধুনিয়া নাকি ধনিয়া পাতা।আমাদের এই দিকে ধনিয়া পাতা বলে।আসলে শীতকালে বিভিন্ন সবজি তে এই পাতা না দিলে নয়।আজকে ও লাউ রান্না শেষে ধনিয়াপাতা দেওয়া হয়েছে। আপনি পুরো চাষ পদ্ধতি বর্ননা দিয়েছেন পড়ে বেশ ভালো লাগলো। ধনিয়াপাতা গুলো দেখতেও বেশ ভালো লাগছে।কালার গুলো সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে
এত সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ধনিয়া পাতা আমার খুব প্রিয়।ধনিয়া পাতা আমি সব রান্নায় দেই শীতকালে। আপনি ধনিয়া পাতার চাষ পদ্ধতি খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন। নতুন নতুন চারা গাছ উঠতে দেখলে মনটা আনন্দে নেচে উঠে।আপনার ধনিয়া পাতা হতে দেখে মনটা ভরে গেল।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
অনেক অনেক ধন্যবাদ এত দুর্দান্ত মন্তব্য শেয়ার করার জন্য।
আপনার পোস্ট গুলো অনেক ভালো লাগে ভাইয়া আসলেই নিজের সবজি চাষের ফটোগ্রাফির সাথে ইনফরমেশন গুলো শেয়ার করেন অনেক ভালো লাগে। ধনিয়া পাতা তো কম বেশি সকলেরই প্রিয় শীত মৌসুমে ধনে পাতা ছাড়া কোন রেসিপি হয়না। আপনাদের ক্ষেতের ধনে পাতাগুলো দেখতে অনেক পুষ্টিকর মনে হচ্ছে। অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য।
নিজে চাষকৃত ধনিয়া পাতা তোলার অনুভূতি ব্যাক্ত করেছেন, সত্যিই এটা অসাধারণ অনুভূতি। ধনিয়া পাতা খেতেও ভীষণ ভালো লাগে, সত্যি বলতে তরকারির স্বাদ বৃদ্ধি করে। আপনি একদম জমি চাষ করা থেকে শুরু করে পুরো প্রক্রিয়াটি দেখিয়েছেন, সত্যিই খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। তবে আপনার পরিশ্রম সার্থক এটাই বড় বিষয়।
পরিশ্রম সার্থক হয়েছে ভাই, ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
https://twitter.com/MdAgim17/status/1626627779377926145?s=20
আপনি ঠিক বলেছেন ধনিয়া পাতা তরকারিতে ব্যবহার করলে তার স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায়। আপনার ধনিয়া পাতা চাষ করার পদ্ধতি দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনার ধনিয়া গাছগুলো যে ঠিকমতো ভাবে হয়েছে জেনে ভালো লাগলো। আসলে কোন কিছু নিজে চাষ করলে সেটা যদি ভালোভাবে হয় তাহলে এমনিতে অনেক ভালো লাগে।
আপনার লেখার মধ্যে অনেক জায়গায় ধনিয়া বানান ভুল আছে। অনেক জায়গায় ধরিয়া লিখতে গিয়ে দুনিয়া লিখে ফেলেছেন। আশা করি ঠিক করে নিবেন। ধন্যবাদ।
আমার পোস্টটি পড়ে সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
ধনিয়া পাতা বর্তমানে এমন একটি খাবার হয়ে গেছে যা যেকোনো রেসিপি সাথে ব্যবহার করা যায় যেমন রেসিপি সেন্ট বাড়িয়ে দেয় তেমনি খেতে সুস্বাদু হয়।।
বিশেষ করে ধনিয়া পাতা দিয়ে পাকোড়া প্রস্তুত করলে অথবা দুনিয়া পাতা সিদ্ধ করে বিভিন্ন ধরনের মসলা দিয়ে ভাজি করলে খেতে সবথেকে মজা লাগে আমার কাছে।।
এত দুর্দান্ত কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
যদিও আমি ধনিয়া পাতা খাইনা। তবুও ছাদে কিছু ধনিয়ার বীজ রোপন করেছিলাম।পরবর্তী সময়ে অনেক ধনিয়া গাছ হয়েছিলো। ধন্যবাদ ভাইয়া প্রথম থেকে ধনিয়া রোপন করার পদ্ধতি শেয়ার করার জন্য।
এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।