প্রতিযোগিতা - ১৬ // নারিকেলের স্বাদে খুবই মজাদার সুস্বাদু সেমাই লাড্ডু || ১০% shy-fox
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভাল আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের সেমাইয়ের লাড্ডু তৈরি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
এই সুন্দর প্রতিযোগিতা আয়োজন করায় শ্রদ্ধেয় দাদা @rme প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এবং তাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। তার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি তার সাথে সাথে তাদের পরিবারের বিশেষ করে শ্রদ্ধেয় ছোট দাদা, প্রিয় বৌদি, স্নেহের টিনটিন বাবু সহ সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। সৃষ্টিকর্তার কাছে তাদের জন্য প্রার্থনা করছি তারা যেন সব সময় সুখে-শান্তিতে সমৃদ্ধির সাথে জীবন অতিবাহিত করতে পারে।
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল এডমিন মডারেটরসহ সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। যার যার অবস্থান থেকে সবাই যেন ভালো থাকে সেই প্রত্যাশা করছি।
আসুন শুরু করি
সেমাই খুবই জনপ্রিয় মজাদার সুস্বাদু খাবার। এটি এক সময় বাঙালির ঐতিহ্য ছিল। আমাদের মা- দাদিরা হাতে সেমাই তৈরি করতে হয়। শুধু ঈদ উৎসব না অন্যান্য সকল উৎসব বা, অনুষ্ঠানে খাবার শেষে মিষ্টি জাতীয় সেমাই খাওয়ার রীতি অনেক আগে থেকে। কিন্তু বর্তমানে বাহিরের বিভিন্ন সংস্কৃতি,বিভিন্ন ধরনের মুখোরোচক খাবার জন্য সেমাইয়ের গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে শুধু ঈদের উৎসব ছাড়া আর কোন উৎসব বা অনুষ্ঠানে সেমাই তৈরি করা হয় না। আগে সেমাই ছাড়া খাবারের অনুষ্ঠান অসম্পূর্ণ থাকে যেতো। বিশেষ করে খাবারের শেষে একটু সেমাই না খেলে খাবারে পুরো পূর্ণ তৃপ্তি পেতো না।
ঈদে সারাদিন অতিথি (মেহমান) আপ্যায়নে প্রধান খাবার হলো সেমাই। মুসলমানদের বিশেষ ঐতিহ্য হলো ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে সেমাই দিয়ে মিষ্টিমুখ করা। এইটি মুসলিম সমাজে প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত হয়ে আসছে।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো রোজার মাসে বাংলার মহিলা সেমাই তৈরিতে ব্যস্ত থাকতো।
ফিতরের সেমাই কল দিয়ে অনেক ধরনের নানা ডিজাইনের সেমাই তৈরি করতো। তারা অত্যান্ত আনন্দে উৎসবে সাথে ঈদের দিন মেহমানদের আপ্যায়ন এর জন্য বাহারি রকমের সেমাই তৈরি করতো। কারণ তখন বর্তমানে বাজারে যেসব সেমাই রয়েছে এইসব সেমাই ছিল না। আগে ঈদুল ফিতর (রমজানের ঈদ) বলতে সেমাইয়ের ঈদকে বোঝানো হতো। কারণ তখন সেমাই ছাড়া কোন বিশেষ ধরনের খাবার তৈরি হতো না। বর্তমানে বৈচিত্র্যময় নানা ধরনের খাবার বা, রেসিপির মাঝে ঐতিহ্যবাহী সেমাই কদর কমে গেছে।
আমাদের সকলের মাঝে হারানো গৌরব ফিরে আসুক। আমরা অনেক ধরনের সেমাই দিয়ে ঈদ উৎসব পালন করি। সেমাইয়ের মিষ্টি মুখের সাথে সাথে ঈদের আমেজ সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক। সকলকে সেমাই দিয়ে মিষ্টিমুখ করানোর মধ্য দিয়ে আমরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।
পরিশেষে বলছি আপনাদের সকলের আমাদের বাসায় দাওয়াত রইলো। ভালো কোন ধরনের খাবার দিয়ে আপ্যায়ন না করতে পারলেও অন্ততপক্ষে সেমাই দিয়ে মিষ্টিমুখ করাতে পারবো। সকলকে ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা রইল।
প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ :-
নাম | পরিমাণ |
---|---|
সেমাই | এক প্যাকেট |
নারিকেল | একটি |
দুধ | চার টেবিল চামচ |
চিনি | পরিমাণ মতো |
বাদাম | ১০০ গ্রাম |
কিসমিস | পরিমাণ মতো |
খেজুর | চারটি |
তেল | পরিমাণ মতো |
লবণ | এক চিমটি ইত্যাদি। |
প্রস্তুত প্রণালী :-
↘️ধাপ :- ১↙️
- একটি নারকেল গাছ থেকে পাড়ি । নারিকেলের ছোবড়া (খোসা) কেটে ছাঁটাই করলাম। তারপর কোরানি দিয়ে নারিকেল কোরিয়ে নিলাম।
↘️ধাপ :- ২↙️
- সেমাই ভাজি করার জন্য চুলার উপরে একটি পাতিল (তেলের কড়াই) বসায়। তারপর পাতিলের মধ্যে পরিমাণমতো তেল দিলাম।
↘️ধাপ :- ৩↙️
- এখন আমি নারকেল পাতিলের মধ্যে দিলাম। তারপর চামচ দিয়ে নাড়তে (নাড়াচাড়া) করতে লাগলাম । যতক্ষণ পর্যন্ত নারিকেল লালচে বর্ণ ধারণ না করে ততক্ষণ পর্যন্ত। কারণ নারিকেল না নাড়লে পাতিলের সাথে লেগে যাবে।
নারিকেল ভাঁজি হয়ে গেছে। পাতিল থেকে নারিকেল একটি বাটিতে রাখলাম।
↘️ধাপ :- ৪↙️
- এই পর্যায়ে আমি পাতিলের মধ্যে পরিমাণমতো তেল দিলাম। তারপর পাতিলের মধ্যে সেমাই ঢেলে দিলাম। এখন আমি সেমাই চামচ দিয়ে নাড়িয়ে ভাজি করতেছি। কিছুক্ষণ পর পর আমি সেমাই নাড়িয়ে দিচ্ছি ভালো করে ভাজি হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতেছি।
↘️ধাপ :- ৫↙️
- সেমাই ভাঁজি করা হয়ে গেছে।
↘️ধাপ :- ৬↙️
- এই ধাপে আমি বাদাম ভাজি করে নিলাম। ভাজি করার পর বাদামের উপরে যে পাতলা আবরণ আছে তা উঠিয়ে নিলাম। এবং বাদাম গুলোকে হালকা পিষে ভেঙ্গে নিলাম।
- এখন আমি খেজুর গুলোকে চিকন চিকন করে কেটে নিলাম।
↘️ধাপ :- ৭↙️
- পরবর্তীতে আমি সেমাইয়ের মধ্যে খেজুর এবং বাদাম দিলাম।
↘️ধাপ :- ৮↙️
- তারপর আমি সেমাইয়ের মধ্যে কিসমিস দিলাম।
- এখন আমি সেমাই এর মধ্যে দুধ এবং পরিমাণমতো চিনি দিলাম।
↘️ধাপ :- ৯↙️
- এখন আমি সমস্ত উপকরণ সেমাই এর সাথে চামচ দিয়ে ভালো ভাবে মিক্স করে নিলাম।
↘️ধাপ :- ১০↙️
সকল উপাদান সেমাই এর সাথে মিক্স করার পর এখন আমি লাড্ডু তৈরি করবো।
- এখন আমি হাতের তালুর মধ্যে সেমাই নিয়ে মুটি মুটি করে গোলাকার করে নিলাম।
- এভাবে আমি সেমাই লাডু তৈরি করে নিলাম।
↘️ধাপ :- ১১↙️
- এখন আমি লাড্ডুর উপরে নারিকেল হাত দিয়ে চেপে চেপে বসিয়ে দিচ্ছি।
↘️সর্বশেষ ধাপ↙️ :-
*এভাবে আমি সবগুলোই লাড্ডুর উপরে নারকেল বসিয়ে দিলাম।
- তারপর আমি পরিবেশন করার জন্য একটি নাস্তার প্লেটে লাড্ডু গুলো নিলাম। আমি সেমাইয়ের লাড্ডু খেয়ে দেখেছি অত্যান্ত মজাদার এবং সুস্বাদু হয়েছে।
আসলে নিজে তৈরি করেছি আবার নিজেই এর স্বাদ সম্পর্কে বর্ণনা করছি তা কেমন দেখায়। আপনারা যদি পাশে থাকতেন তাহলে খেয়ে দেখতে পারতে। স্বাদ কেমন হয়েছে ?
সত্যি বলতে নারিকেলের ফেভারে লাড্ডু গুলো খুবই অন্যরকম ছিল। স্বাদে অতুলনীয়।
আপনারা এভাবে তৈরী করে খেয়ে দেখতে পারেন। আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।
আশা করি আমার কাঙ্খিত সেমাইয়ের লাড্ডু তৈরি সম্পূর্ণ হয়েছে। এইভাবে আমি মজাদার সেমাইয়ের লাড্ডু রেসিপি টি সম্পূর্ণ করি।
যা এখন আপনাদের কাছে দৃশ্যমান।
আমি সেমাইয়ের লাড্ডুর কিছু আলোকচিত্র করে নিলাম।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ দুপুর
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
আপনার রেসিপিটি কিন্তু আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে এবং আপনার উপস্থাপনা টা অনেক সুন্দর হয়েছে। এর প্রতিটি ধাপ আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। ধন্যবাদ এত সুন্দর হিসেবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর মতামত প্রকাশ করার জন্য।
প্রথমেই আপনাকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আপনি নারকেলের স্বাদে সুস্বাদু সেমাই লাড্ডু রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। রেসিপিটি আমার কাছে একেবারে নতুন লেগেছে তবে দেখে মনে হচ্ছে খেতে অনেক সুস্বাদু হবে। নারিকেলের স্বাদে সুস্বাদু সেমাই লাড্ডু রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই এত অসাধারন কমেন্ট শেয়ার করার জন্য।
আপনার তৈরি সেমাই লাড্ডু দেখে অবাক হলাম ভাইয়া। এভাবে নারকেল দিয়ে সেমাই লাড্ডু তৈরি করা যায় তা জানা ছিলোনা। সেমাই ও নারিকেল দিয়ে লাড্ডু তৈরি রেসিপি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে ভাইয়া। ধাপে ধাপে আমাদের মাঝে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
এত সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
সম্পূর্ণ ইউনিক একটি রেসিপি হয়েছে এটি। সেমাই দিয়ে যে কখনো লাড্ডু তৈরি করা যায় এটা তো চিন্তায় করতে পারিনি। তবে আপনি সেমাই ভাজার কাজে তেল ব্যবহার না করে ঘি ব্যবহার করলে সুন্দর একটা সুবাস পেতেন খাওয়ার সময়। যাইহোক আপনার রেসিপিটি খুব সুন্দর ছিলো। ধন্যবাদ আপনাকে।
জি ভাইয়া, ঘি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। বাজারে গিয়ে দেখি ঘি ছোট এক কোটার অনেক দাম। আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় কিনতে পারেনি। আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পোস্টটি দেখে এত সুন্দর ভাবে আপনার মনে অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য অন্তরের অন্তস্থল থেকে আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। ভালো থাকবেন ভাইয়া।
প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করছেন দেখে খুবই ভালো লাগল,সেমাই রেসিপি খুবই সুন্দর করে রান্না করে আমাদের মাঝে নিয়ে আসছেন।দেখে মনে হচ্ছে খুবিই স্বাদের ছিল।ধন্যবাদ আমাদের মাঝে শেয়ার করা্র জন্য ,শুভ কামনা রইল
এত সুন্দর প্রশংসা করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
এভাবে নারিকেল দিয়ে সেমাইয়ের লাড্ডু কখনো খাওয়া হয়নি। আজকে আপনার মাধ্যমে এরকম সেমাইয়ের লাড্ডু প্রথম দেখলাম। দেখে তো আমার মুখে জল চলে এসেছে। মনে হচ্ছে খেতে খুবই সুস্বাদু হবে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর ইউনিক সেমাইয়ের রেসিপি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। প্রতিযোগিতার জন্য শুভ কামনা রইল।
আমার পুরো পোস্টটি দেখে এত সুন্দর ভাবে আপনার মতামত প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
অনেক বড় লেখনী, অধিক ছবির সমাহার ও ভাষার মাধুর্যে ভরপুর কন্টেন্টে, সেমাইয়ের আর স্বাদ খোজার দরকার হয়না।
এত সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।