চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের ট্রাজেডিতে গভীরভাবে শোকাহত। মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভাল আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আপনারা সবাই সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদপত্র এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে অবগত আছেন যে গতরাতে চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডের শীতলপুরি কন্টেইনার ডিপো তে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। রাসায়নিক বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুর্ঘটনায় সারাদেশ থমকে গেছে। আগুনের নিষ্ঠুরতায় এতটাই যে পোড়ো লাশের গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।আসলে আগুনের ভয়াবহতা বর্ণনা করার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মিছিল হচ্ছে। পুরো কন্টেইনার ডিপো এলাকা মৃত্যুর কূপে পরিণত হয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা একের পর এক ক্ষতবিক্ষত দেহ গুলো উদ্ধার করেছে।
ক্ষতবিক্ষত দেহ গুলো সারা কন্টেইনার ডিপোতে। অনেকের শরীরে ৯০ থেকে ৯৫ ভাগই পুড়ে গিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে আগুনের বিস্তৃতি খুব কম ছিলো ।পাঁচ ইউনিটের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আগুন নিভানোর আপ্রাণ চেষ্টা করতেছে। ঠিক তখনই মারাত্মক ভয়াবহ রুপে দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটে আপনারা হয়তো অনেকেই দেখেছেন অনেক ফায়ার কর্মী, সংবাদকর্মী, ক্যামেরাম্যান, পুলিশ সদস্য এই বিস্ফোরণে উড়িয়ে গিয়েছে। তাদের ক্ষতবিক্ষত দেহগুলো হাওয়াতে উঠে গিয়েছে। আসলে দৃশ্য গুলো এতটাই মর্মান্তিক দেখে সহ্য করার মতো নয়। হৃদয়ের প্রতিটি জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অনেকে তাৎক্ষণিক মারা গিয়েছে। অনেক মৃতদেহের পরিচয় সনাক্ত করা খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়েছে। দেহগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। অনেকে খুবই মারাত্মক অবস্থায় বেঁচে আছে। দেহে শুধু প্রাণ আছে, দেহের অধিকাংশ অংশ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনের তীব্রতা এবং নিষ্ঠুরতায় এতটাই এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে যে স্যাটেলাইটে পর্যন্ত আগুনের লেলিহান লাভার ছবি উঠে এসেছে। এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত সংখ্যা প্রায় ৫০০ উপরে। যারা আহত হয়েছে কোন রকম বেঁচে আছে তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর ভিতর অবস্থা এতটাই মর্মান্তিক আসলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়। অনেকে মারা যাচ্ছে যাদের শরীরে অধিকাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছে। তারা অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। দৃশ্যগুলো হৃদয়কে নাড়া দিচ্ছে। অনেকের মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। হাসপাতালে এত রোগী নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জায়গা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। প্রতিটি রোগীর জীবন বাঁচাতে রক্তের খুব প্রয়োজন হচ্ছে। প্রতিমুহূর্তে বিভিন্ন গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন হচ্ছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রক্তের কতটা প্রয়োজন তা নিজ চোখে না দেখলে বলে বোঝানো সম্ভব নয়।
আমার এক বন্ধুর বড় ভাই এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। শরীরের প্রায় ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতস্থান শুকাতে এই মলম টি (বানা ক্রীম \ সিলভার সালফাডায়াজিন ইউএসপি ১%) খুবই কার্যকরী।
সকল দগ্ধ রোগীর জন্য এই মলম টি খুব প্রয়োজন । ডাক্তার যখন আমার বন্ধুকে এই মলম টি লিখে দিয়েছে সেই পুরো মেডিকেল কলেজের আশেপাশে এলাকায় মলম টি খুঁজেছে কোথায় পায়নি।প্রায় ৪ ঘন্টা খোঁজ করার পর মলম টি পেয়েছে । যাদের শরীরের অধিকাংশ অংশ পুড়ে গিয়েছে । তাদের শরীরের একবার লাগালে মলমটি শেষ হয়ে যায়। তাই পুরো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এর আশপাশ এলাকায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মলমটি কোনো ফার্মেসীতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সকলে এই মলটির জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করতে নিজের প্রিয়জনদের কে বাঁচাতে আপ্রাণ চেষ্টা করতেছে। অনেকে মলমটি বিভিন্ন জায়গা থেকে সরবরাহ করতে। আমার বন্ধু যখন আমাকে ফোন করে বলেছে। তখন আমি আমাদের দাগনভূঞা থেকে ৩৪ টি মলম পাঠিয়ে দিয়েছি। এই মলম গুলো কয়েকজন রোগী কষ্ট লাগব করতে কিছুটা সহায়তা করবে। মলমটি পোড়ার জ্বালাপোড়ার ব্যথা কমাতে এবং ক্ষতস্থান শুকাতে সহায়তা করে। আসলে দগ্ধ রোগীদের কি যে কষ্ট তা একমাত্র যে রোগী সেই বুঝে।
আপনারা যারা বা আপনার আত্মীয়-স্বজন ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে ভ্রমণে বা অন্য কোন কারণে যাবেন । তারা দয়া করে এই মলমটি যা পারেন কয় পিচ নিয়ে যাবেন। আপনার এই মলম টি মুমূর্ষু রোগীর কষ্ট লাগবে সহায়তা করবে। স্কয়ার কোম্পানির না পেলেও আরো অন্যান্য কোম্পানি রয়েছে। যে কোন কোম্পানির মলমটি নিতে পারেন। অগ্নিদগ্ধ রোগীদের জন্য এই মলমটি খুবই প্রয়োজন এখন।
সীতাকুণ্ডের অগ্নিকাণ্ডের মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ট্রাজেডিতে যারা নিহত হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । শোকাহত পরিবারের ধৈর্য্য ধারণ করার তৌফিক দান করুন। যারা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে লড়তেছে সৃষ্টিকর্তা তাদের উপর দয়া করুন। আহত রোগীদের যন্ত্রণা, জ্বালাপোড়ার ব্যথা কমিয়ে দিন। ব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা দান করুন। অগ্নিদগ্ধ সহ সকল আহত রোগীদের দ্রুত সুস্থতা দান করুন।
জি ভাই আসলে প্রতিনিয়ত টিভিতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি কি পরিমান ক্ষয়ক্ষতি, কি পরিমান মানুষের জীবনের শেষ পরিণতি, কি পরিমান মানুষ যে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে আসলে বলে বোঝানো মুশকিল। খুবই খারাপ লাগছে ভাই এখনও লাগতেছে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ভাই আপনি যেভাবে মলম গুলো সংগ্রহ করে এগিয়ে এসেছেন আসলে সবারই এগিয়ে আসা উচিত। কিন্তু দূরদূরান্ত হওয়ার কারণে সম্ভব হচ্ছে না। যাই হোক এই মর্মান্তিক নিউজটি পুরো স্টিম ব্লকচেইন এ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি দেখে আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
ঘটনাটি সত্যিই অনেক মর্মান্তিক। কত প্রান অকালে চলে গেল। আপনার মতো আমারও অনেক খারাপ লাগছে। কত পরিবার তাদের স্বজন হারালো আজ। আল্লাহ্ সবাইকে জান্নাত নসিব করুন। আমিন। যারা হাসপাতে আছেন তাদের যেন আল্লাহ্ সুস্থ করে দেন এই দোয়াই করি। ভাল লিখছেন লেখাটি।
পোস্টটি দেখে সুন্দর মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
সেলুট ভাই।আপনার মত যদি আমিও পারতাম এভাবে সাহায্য করতে।আসলে মানুষ তো মানুষেরই জন্য,আর সাহায্য করেছেন খুব ভালো কাজ করেছেন।
আর পুরো ব্যাপারটি কাল থেকে যতবার দেখতেছি ভিতরটা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে
কিযে হচ্ছে দেশে কিছুই বুঝতেছি না।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই সুন্দর গঠনমূলক মতামত শেয়ার করার জন্য।
স্তব্ধ সারা বাংলাদেশে সাথে আমিও, আপনি ঠিকই বলেছেন এতটাই ভয়াবহ তা ছিল যা কল্পনা কে ছাড়িয়ে গেছে। আপনি অনেক সুন্দর করে গুছিয়ে মনের কষ্টগুলো ব্যাখ্যা করেছেন। এমনকি খুব সুন্দর একটা সলিউশন দিয়ে গেছেন। বার্না ক্রিম, এটি পোড়া স্থানে ব্যবহার করলে খুব উপকার পাওয়া যায় এবং দ্রুততার সাথে পড়ার ক্ষতস্থান শুকাতে শুরু করে। এত সুন্দর একটি পরামর্শ দিয়ে আপনার মনের তীব্র আকাঙ্ক্ষা গুলো প্রকাশ করার জন্য , আপনার প্রতি রইল ভালোবাসা অবিরাম।
পোস্টটি পড়ে সহমর্মিতা জানানোর জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আসলে টিভিতে নিউজ দেখলেই গা শিউরে উঠে। এমন অবস্থায় আমাদের সকলের উচিত সাহায্যের হাত বাড়ানো। ভাই আপনার কাজগুলো দেখে আপনার প্রতি সম্মান বেড়ে গেলো।
পোস্টটি দেখে সুন্দর অনুভূতি উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
সবাই এই নিউজ গুলো যতবার দেখি ততবারই গা শিউরে উঠে যায়। আর খুবই খারাপ লাগে। কেমন যেন কান্না চলে আসে। তবে আপনি ঠিক বলেছেন এদেরকে আসলে সাহায্য করা উচিত। যদিও আমরা অনেক দূরে রয়েছি। তবে আপনি খুব ভালো পরামর্শ দিয়েছেন। আর আপনি সাহায্য করেছেন এটা শুনে খুব ভালো লাগলো। সবার জন্য অনেক অনেক দোয়া করি যেন খুব তাড়াতাড়ি এই অবস্থা থেকে সবাই ফিরে আসতে পারে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই পোস্টটি দেখে কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য।
আসলে আমরা সবাই গভীর ভাবে শোকাহত এবং যারা মানবিক মানুষ তারা এই মুহূর্তে একমত পোষণ করবে। ধন্যবাদ আপনাকে অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য।
পোস্টটি দেখে সুন্দর মতামত জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই এই নিউজটি পাই নিউজ পড়ে খুবই কষ্ট পেয়েছি। এই রকম মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার বাংলাদেশ আগে কখনো মনে হয় হয়নি ।সবারই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তাদেরকে সবসময় সমর্থন করি।
সহমর্মিতা জানানোর জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।