DIY-এসো নিজে করি:৷ নিজে চাষকৃত ধনিয়া পাতা তোলার মুহূর্তটা অন্যরকম। /১০% প্রিয় 💞 @shy-fox
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভাল আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের নিজে চাষকৃত ধুনিয়া পাতা তোলার মুহূর্ত সম্পর্কে। বা, আমি কিভাবে ধুনিয়া পাতা চাষ করেছি সে সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন।
- ধনিয়া পাতা একবর্ষজীবী উদ্ভিদ। মসলা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয় এবং সর্বাধিক ব্যবহৃত হয় ধুনিয়া পাতার বীজ। সাধারণত মাংস ছাড়া আর সব তরকারিতে দুনিয়া পাতা ব্যবহার করা হয়। ধুনিয়া পাতা ব্যবহারের মাধ্যমে খাবারের স্বাদ অনেকগুণ বেড়ে যায় এবং সুগন্ধি হয়। ধনেপাতা মূলত তরকারিতে সুগন্ধির জন্য ব্যবহার করা হয়। ধনিয়া পাতা সারা বছর ধরে পাওয়া যায়। তবে শীতকালে এই টির বেশি উৎপাদন হয়। মানবদেহের জন্য দুনিয়া পাতা অনেক উপকারী এর নানা রকমের পুষ্টি গুণ রয়েছে।
আসুন শুরু করি
ধনিয়া চাষাবাদ করতে আমার যে উপকরণ সমূহ প্রয়োজন হয়েছে তা হলো:-
১ - জমি
২ - বীজ
৩ -কোদাল
৪ -রাসায়নিক সার ( ইউরিয়া, টিএসপি,এমপি বা পটাশ, ফসফেট সার।
৫ -জৈব সার ( গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরু তরকারী কাটার পর অবশিষ্ট অংশ ছারি (লারকি জ্বালানোর পর অবশিষ্ট অংশ)।
৬ -জমি চাষের জন্য পাওয়ার টিলার
৭ -লাঠি (মাটির বড় অংশ ভাঙ্গার জন্য)।
৮ -পানি
৯ - বালতি এবং জগ ইত্যাদি
আমি যেভাবে ধনিয়া পাতা উৎপাদন করেছি তার বিবরণ :-
↘️ধাপ :- ১↙️
প্রথমে আমি আমাদের ৫ শতাংশ জমি কে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ দিয়েছি। অর্থাৎ জমির উপরের অংশের মাটিকে পাওয়ার টিলারের নাঙ্গর দ্বারা ভেঙ্গে ছোট ছোট করা হয়েছে।
জমি পাওয়ার টিলার দ্বারা চাষ দেওয়ার পরে মাটির যে অংশগুলো বড় রয়েছে তারা লাঠি দিয়ে ভেঙ্গে
ছোট করে নিলাম।
↘️ধাপ :- ২↙️
এখন আমি ৫ শতাংশ জমির মধ্যে ধনিয়া পাতা চাষ করার জন্য। আনুমানিক দৈর্ঘ্য ১০ হাত এবং প্রস্থ ১৫ হাত জায়গা নিলাম।
↘️ধাপ :- ৩↙️
পরবর্তীতে আমি জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছি। আমি রাসায়নিক সার এর মধ্যে ( ইউরিয়া, টিএসপি,এমপি বা পটাশ, ফসফেট সার ইত্যাদি জমিতে প্রয়োগ করি।
আমি সার গুলোকে পরিমাণ মতো একটি পাত্রে একসাথে রাখি । তারপর এগুলো মিশ্রন করি এবং জমিতে ছিটিয়ে দিলাম।
↘️ধাপ :-৪ ↙️
জৈব সার ( গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরু তরকারী কাটার পর অবশিষ্ট অংশ ছারি লারকি জ্বালানোর পর অবশিষ্ট অংশ।
আমি জৈব সার গুলো কে দুইটি বড় ঝুড়ি করে জমিতে নিয়ে আসি এবং জমিতে সমান ভাবে ছিটিয়ে প্রয়োগ করি।
↘️ধাপ :-৫ ↙️
জৈব সার এবং রাসায়নিক সার প্রয়োগ করার পরে আমি ধনিয়া বীজ জমিতে সমানভাবে খুব সুন্দর করে ছিটিয়ে প্রয়োগ করি।
বীজ জমিতে প্রয়োগ এর পূর্বে আমি বীজ গুলোকে ১২ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখেছি।তারপর বীজ গুলোকে পানি থেকে উঠিয়ে ঝরঝরে করে নিলাম ।তার পর জমিতে প্রয়োগ করি।
তারপরে আমি কোদার দিয়ে জৈব সার, রাসায়নিক সার বীজ এবং মাটি একসাথে ভাবে মিশ্রন করে দিলাম। সবগুলো ভালো করে একসাথে মাটিতে মিশিয়ে দিলাম।
এই কাজ করার মাধ্যমে আমার মুলা শাক চাষাবাদের অধিকাংশ কাজ শেষ ।
↘️ধাপ :-৬ ↙️
দিনের বেলায় সূর্যের আলোতে যেন মাঝে আদ্রতার না শুকিয়ে যায় সেজন্য প্লাস্টিক দিয়ে জমি ঢেকে দিলাম।
ধনিয়ার চারা উঠা পর্যন্ত আমি প্রতিদিন সকালে প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে দিই এবং বিকেলে তা উঠিয়ে দিই।
↘️ধাপ :-৭ ↙️
বীজ জমিতে বোপন করার ২০-২২দিন পর চারা উঠে । তিন সপ্তাহ পর যখন জমিতে চারা উঠছে তখন আমার কাছে খুব ভালো লাগছে দেখে।
↘️ধাপ :-৮↙️
আমি জমির আদ্রতার উপর নির্ভর করে চার থেকে পাঁচ পর জমিতে পানি দিয়েছিলাম। ধনিয়া গাছ খুব দ্রুত গজিয়েছে।
↘️ধাপ :-৯ ↙️
যথাযথ পরিচর্যা কারণে ধুনিয়া পাতাগুলো দ্রুত বড় হয়েছে। মাত্র বিশ দিনের ধনিয়া পাতা জমি থেকে তোলার উপযুক্ত হয়েছে।
↘️সর্বশেষ ধাপ↙️ :-
আজকে প্রথম আমি জমি থেকে দুনিয়া পাতা তুলেছি। আম্মা ধনিয়া পাতা তরকারি দিবে এবং দুনিয়া পাতা দিয়ে ভর্তা তৈরি করবে ।
আজকের এই মুহুর্তের জন্য অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে আমায়। আজকে মনে হচ্ছে যেন এতদিনের পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। কারণ আমি খুব দ্বিধাদ্বন্দের মধ্যে ছিলাম যে আমার উৎপাদিত শাক তুলতে পারবো কিনা। কারণ দেখা যায় বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণে বা বীজ নষ্ট হয়ে গেলে ।ঠিকমতো ফসল উৎপাদন হয় না। তাই আমার কাছে অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকের দিনটি খুব অন্যরকম ছিল।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | কৃষি ( শাকসবজি উৎপাদন) |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি এই ধরনের কৃষি সম্পর্কিত তথ্য আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব, ইনশাআল্লাহ।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ সকাল
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
নিজে চাষ এটা শুনে খুবই ভালো লাগছে, আপনার চাষ করা পদ্ধতি খুবই ভালো ছিল।আপনার পোস্ট খুবই উপকারী এতো সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।শুভ কামনা রইল আপনার জন্য
সুন্দরভাবে কমেন্টের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
একটা ইউনিক বুদ্ধি ছিল। তবে আমি মনে করি এই প্রজেক্টটি তৈরি করতে আপনার অনেক দিন সময় লেগে গিয়েছে। জমি তৈরি করা থেকে শুরু করে জমি থেকে ধনিয়াপাতা উত্তোলন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে আপনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন আমাদের সামনে।
এটা একদিনে তৈরি করা সম্ভব নয়। প্রায় এক থেকে দেড় মাস সময় লেগেছে আপনার এই প্রজেক্টে। ধৈর্য ধরে আমাদের সামনে এত সুন্দর প্রজেক্ট শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
পোস্টটি সম্পর্কে এত চমৎকার ভাবে আপনার মতামত উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনি অনেক সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। নিজের হাতকে সেরকম কাজগুলি করার মজাই আলাদা। আমিও নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করি। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে দেখিয়েছেন কিভাবে আপনি ধনিয়া রোপন করেছেন। আপনার রোপন করা ধনিয়া পাতা গুলো খুবই সুন্দরভাবে উঠেছে। মনে হচ্ছে আপনি এসব বিষয়ে অনেক দক্ষতা সম্পন্ন । আমাদের মাঝে এরকম একটা বিষয় শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
পোষ্টটি সম্পর্কে আপনার মনের অনুভূতি প্রকাশের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
নিচে চাষ করা বাগানে সবজি তুলতে সত্যিই অনেক ভালো লাগে। সেটার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে যে নিজে চাষ করছেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল
এত সুন্দর ভাবে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
নিজের চাষ করা ধনিয়া পাতা খেতে অনেক সুস্বাদু হয়। ধনিয়াপাতা গুলো দেখেই বুঝা যাচ্ছে একদম সতেজ। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে ধনিয়া পাতা চাষ করেছেন এবং ভালো ফলন হয়েছে। ভাইয়া আপনার জন্য শুভকামনা রইল। এভাবেই এগিয়ে যান এবং নতুন নতুন সবজি ফলন করুন এবং আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
পোস্টটি সম্পর্কে তার মনের অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে নিজের জমিতে চাষ করার সুবিধা এই একটাই বাজার থেকে কিনতে হয়। খুব সুন্দর ছিল আপনার অভিজ্ঞতা, আমাদের মাঝে এত সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
এত সুন্দর ভাবে কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার চাষের পোস্টগুলো অনেক ভালো লাগে আমার কাছে। শাকসবজি চাষের অভিজ্ঞতাগুলো অনেক সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেন।ধনিয়া পাতা গুলো দেখতে অনেক ভালো লাগছে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করবার জন্য ভাইয়া। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখে এত সুন্দর ভাবে কমেন্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমিও কৃষক পরিবারের সন্তান। আমিও মাঝেমাঝে নিজেই কিছু চাষ করার চেষ্টা করি। আপনার করা কাজ টি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা
সুন্দরভাবে মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।