টমেটো 🍅 চাষ করার অনুভূতি।
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।আজ আমি আপনাদের, টমেটো চাষ করার অনুভূতি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
এই পোস্টটি আমার দুই মাস পূর্বে করার ছিলো। তবে কিছু ফটোগ্রাফি হারিয়ে যাওয়ার কারণে আর করা হলো না। আজ আমাদের মাঝে পোস্টটি উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। টমেটো আমাদের সকলের নিকট বেশ পরিচিত ফল বা, সবজি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। টমেটোর জনপ্রিয়তা আমাদের সকলের নিকট অনেক। কারণ টমেটো খেতে পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যায় না। টমেটো কাঁচা এবং পাকা উভয় অবস্থায় খাওয়া যায়। টমেটো কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং থাকলে লাল বা, হলুদ বর্ণ ধারণ করে। টমেটো সালাত তৈরীর অন্যতম উপাদান। টমেটো ছাড়া সস তৈরি করা কল্পনা করা যায় না। টমেটো শীতকালে বেশি উৎপাদন করা হয়ে থাকে। তবে সারা বছর ধরে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে প্রচুর টমেটো উৎপাদন হয়। যে কোনো তরকারি রান্নাতে টমেটো না দিলে কেমন যেন স্বাদ পরিপূর্ণতা হয় না। টমেটো দিয়ে নানা রকম খুবই মজাদার এবং সুস্বাদু রেসিপি তৈরি করা হয়ে থাকে। শুধুমাত্র মাংস ব্যতীত প্রায় সকল তরকারি রান্নাতে টমেটো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। টমেটো কদর আমাদের সকলে নিকট অনেক।
প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ:-
১ - জমি
২ - টমেটোর চারা
৩ -কোদাল
৪ -রাসায়নিক সার ( ইউরিয়া, টিএসপি,এমপি বা পটাশ, ফসফেট) সার।
৫ -জৈব সার ( গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, তরু তরকারী কাটার পর অবশিষ্ট অংশ, ছাই) ।
৬ -জমি চাষের জন্য বড় ট্রাক্টর
৭ -লাঠি (মাটির বড় অংশ ভাঙ্গার জন্য)।
৮ -পানি
৯ - মটর, বালতি, জগ ইত্যাদি।
আমি যেভাবে তৈরি করেছি তার বিবরণ :-
↘️ধাপ :- ১↙️
- আমাদের পাঁচ শতক জমি বড় ট্রাক্টর দিয়ে ৩ চাষ দিয়ে দিলাম। পাঁচ শতক জমির মধ্যে ১ শতক জমিতে আমি টমেটো চাষ করবো। তাই প্রথমে মাটির বড় অংশ গুলো লাঠি দিয়ে ভেঙ্গে ছোট করে নিলাম এবং কোদাল দিয়ে কেটে মাটিতে ঝুরঝরা করে নিয়েছি।
↘️ধাপ :- ২↙️
- এখন আমি জমিতে জৈব সার প্রয়োগ করছি। জমিতে যতো বেশি জৈব সার প্রয়োগ করা যায় ততো ফসল উৎপাদন ভালো হবে। জৈব সার আমি জমিতে সমান ভাবে ছিটিয়ে দিয়েছে।
↘️ধাপ :- ৩↙️
- এই পর্যায়ে আমি জমিতে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে নিয়েছি।
↘️ধাপ :- ৪↙️
- ১ শতক জমির জন্য আমি বাজার থেকে তিন আড়ি টমেটোর চারা ক্রয় করে নিয়ে আসলাম। তিন আড়ি মধ্যে ৫৫ থেকে ৬০ টি টমেটোর চারা রয়েছে।
↘️ধাপ :- ৫↙️
- এই পর্যায়ে আমি টমেটোর চারা গুলো সারিবদ্ধ ভাবে দৈর্ঘ্য ও প্রস্ত এক সেন্টিমিটার দূরত্ব করে রোপন করে দিলাম। টমেটো ছাড়া রোপনের তিন থেকে চার দিন গাছের গোড়ায় সকালে বিকালে মগে করে পানি দিয়েছি।
↘️ধাপ :- ৬↙️
- টমেটোর চারা গুলো সতেজ ভাবে বেড়ে উঠছে।
↘️ধাপ :- ৭↙️
- জমিতে আমি মাটির আদ্রতা বুঝে চার বার মোটর দিয়ে পানি দিয়েছে। টমেটো গাছে অতিরিক্ত পানি দিলে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই পানি দিতে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
↘️ধাপ :- ৮↙️
- পানি দেওয়ার পর গাছ গুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। আমি জমির আগাছা পরিষ্কার করে নিলাম।
↘️ধাপ :- ৯↙️
- টমেটো গাছে ফুল আসার পূর্বে দ্বিতীয়বার পরিমাণ অনুযায়ী রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হবে। রাসায়নিক সার প্রয়োগ করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে অতিরিক্ত সার প্রয়োগ না হয়। অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করলে টমেটো গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
↘️ধাপ :- ১০↙️
- সার দেওয়ার পর গাছে ফুল আসতেছে। টমেটো গাছে শাখা প্রশাখা বেড়ে যাওয়াতে গাছে খুঁটি ব্যবহার করেছি।
↘️ধাপ :- ১০↙️
- টমেটো গাছে ফুল আসতেছে দেখে খুব ভালো লাগলো। টমেটো ফুলে সারা ক্ষেত ভরে গেলো। টমেটো ফুল গুলো দিকে যখন তাকায় তখন নিজের কাছে খুবই অন্যরকম ভালোলাগা কাজ করে।
- ছোট ছোট হলুদ ফুলের সৌন্দর্যে পুরো টমেটো ক্ষেত দেখতে খুবই অন্যরকম লাগছে।
↘️ সর্বশেষ ধাপ :- ↙️
- গাছে প্রচুর টমেটো ধরতেছে। টমেটো গুলো দেখে সত্যি কি যে আনন্দ লাগছে তা বলে বুঝানো সম্ভব নয়।
টমেটো গুলো ধীরে ধীরে পরিপক্ক হচ্ছে। কিছু দিনের মধ্যে টমেটো গুলো পেকে যাবে।
ধীরে ধীরে গাছে টমেটো পাকছে। আমি কিছু টমেটো গাছ থেকে সংগ্রহ করছি। টমেটো সংগ্রহ করতে পেরে সত্যি খুব ভালো লাগলো আমার কাছে। আসলে নিজে চাষকৃত কোন ফসল উৎপাদন করে ঘরে তুলতে পারলে নিজেকে খুবই ভালো লাগে। ফসল ঘরে তোলার অনুভূতি সত্যি খুব অসাধারণ।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
পোস্ট বিবরণ :-
শ্রেণী | কৃষি শাকসবজি উৎপাদন |
---|---|
ক্যামেরা | Redmi note 7 |
পোস্ট তৈরি | @ah-agim |
লোকেশন | ফেনী, বাংলাদেশ |
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি কৃষি সম্পর্কিত অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো , ইনশাআল্লাহ।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি পোস্ট আপনি শেয়ার করলেন। টমেটো চাষ কিভাবে করতে হয় তার বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করেছেন। তবে আমি আমার বাসায় অল্প একটু জায়গায় কিছুদিন আগেই টমেটো চাষ করেছিলাম এবং অনেকগুলো টমেটো হয়েছিল, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আশা করি ভালো আছেন আপনি? চমৎকার প্রশংসা করে উৎসাহ প্রদান করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ভাইয়া দারুন একটি অনূভুতিমুলক পোষ্ট পড়লাম। একেবারে টমেটোর চারা লাগানো থেকে টমেটো ধরে পাকা পর্যন্ত ফটোগ্রাফি আমাদের সাথে শেয়ার করলেন। বিশাল বড় প্রসেস সংক্ষিপ্ত আকারে দেখে ফেললাম। ধন্যবাদ ভাইয়া।
আপনাকেও ভাই অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য।
বোঝাই যাচ্ছে বেশ অনেকদিন ধরেই ফটোগ্রাফি করে রাখছেন, শুধুমাত্র এই পোস্ট তৈরি করার জন্য। এক কথায় অসাধারণ লেগেছে সম্পূর্ণ ধাপটি।
জি ভাই ফটোগ্রাফি গুলো সংগ্রহ করতে আমার প্রায় সাড়ে তিন মাসের বেশি সময় লেগেছে। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
আপনি খুবই দক্ষতার সাথে টমেটো চাষ করেছেন। সেই অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো।
ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন টমেটো চাষ করার অনুভূতি। আসলে আপনার পোস্ট পড়ে আপনার অনুভূতি জানতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে ভাই। সত্যি ভাই আপনার সবজি চাষ দেখে আমিও মনে হচ্ছে আপনার কাছ থেকে উৎসাহিত পাচ্ছি সবজি চাষ করার জন্য। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে সবজি চাষ করার জন্য।
সুন্দর প্রশংসা করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
টমেটো এমন একটি সবজি যা সকল ঋতুতেই জনপ্রিয়তা থাকে। অনেক বেশি চাহিদা টমেটোর। টমেটো কাঁচা খাওয়া যায়, সালাদ এবং রান্না করে কিংবা সব দিক দিয়ে করা সম্ভব। এমন সুন্দর সবজি চাষ করতে সত্যি অনেক ভালো লাগবে। আপনার অনুভূতি দারুন ছিল পড়ে অনেক ভালো লেগেছে। খুব সুন্দর করে আপনি টমেটোর চাষ পদ্ধতি শেয়ার করলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অসাধারণ ছিল।
টমেটো সবাই পছন্দ করে থাকে আপু। এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
আপনারা তো দেখছি অনেক বড় জায়গাতে টমেটো চাষ করেন ভাইয়া। আপনার কাছে যে টমেটোগুলো ধরেছে তার আকৃতি ও অনেক সুন্দর। নিজেরা এ ধরনের সবজি উৎপাদন করাই ভালো কেননা বাজার থেকে যেগুলো কিনতে পাওয়া যায় সেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক থাকে।
জি ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন। নিজের হাতে যে কোন জিনিস উৎপাদন করতে খুবই ভালো লাগে। এত চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
https://twitter.com/MdAgim17/status/1677753117264461826?s=20
নিজের হাতে চাষ করে কোন ফসল পাওয়া খুব আনন্দের বিষয়। আপনি দারুনভাবে বেশ কিছুদিন সময় নিয়ে টমেটো চাষ করার পদ্ধতি গুলো আমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।আমার ভীষণ ভালো লাগলো। নিজের হাতে লাগানো টমেটো গুলো দেখে।এ এক দারুন সুন্দর অনুভূতি। সুন্দর এই অনুভূতি গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া। অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন রইলো আপনার জন্য।
জি আপু আপনি ঠিকই বলেছেন। নিজের চাষকৃত যেকোন ফসল উৎপাদন করে ঘরে তুলতে পারলে খুবই ভালো লাগে। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ভাইজান ভালো লাগলো আপনার এই টমেটো চাষ দেখে। আমিও এমনভাবে শীতকালে টমেটো চাষ করেছি আমাদের পুকুর পারে আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের মাঝে টমেটোর চাষের কার্যক্রম উপস্থাপন করেছেন আপনার এই সুন্দর একটি পোস্ট অনেকের জন্য উপকারী পোস্ট হয়ে দাঁড়াবে আশা করি।
আপনিও টমেটো চাষ করেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই শেয়ার করার জন্য।