শিশু বাচ্চা অসুস্থ হলে কত দুর্বিষহ প্রতিটি মুহূর্ত পার করতে হয় /১০% প্রিয় 💞 @shy-fox
বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের আমার ভাগিনা অসুস্থতার ব্যাপারে বলতে চাই। আশা করি পোস্টটি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
আজ কয়েক দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দেশের প্রস্তুতি খুবই খারাপ। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রাণহাণি সহ অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার মাঝে বিদ্যুৎ বিভ্রান্তি মানুষকে অসহ্য করে তুলেছে। অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন ভালো নেই। সকল পণ্যের দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। সাধারণ শাকসবজি দাম অনেক বেশি ৬০ থেকে ৭০ টাকা নিচে কোন সবজি পাওয়া যায় না। তার মাঝে যদি পরিবারের কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে যায় । তখন এই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে পড়ে।
আমার ভাগিনা বড় সিজারের মাধ্যমে হয়েছে আজ থেকে দুই মাস আগে। অর্থাৎ তার বয়স দুই মাস। এমনিতেই সিজারের বাচ্চাদের বিভিন্ন সমস্যার লেগে থাকে। জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন সমস্যা তার থেকে পিছু ছাড়লো না। কয়েকবার তাকে ডাক্তার দেখানো হয়েছে। একটি সমস্যা শেষ হতে না হতে অন্য সমস্যা দেখা দেয়। হঠাৎ করে কয়দিন আগে দেখা গেলো তার পেটের নাভি ফুলে আছে। সাধারণত শিশু বাচ্চাদের যে কোন সমস্যা দেখা দিলে অবহেলা করা উচিত নয়। সমস্যার জন্য শিশু ডাক্তারের শরণাপূর্ণ হতে হয়।
বড়দের যদি কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে ফার্মেসির দোকান থেকে ওষুধ কিনে খাওয়া যায়। বা অভিজ্ঞ কোন ব্যক্তি থেকে ওষুধের নাম জেনে কিনে খাওয়া যায়। কিন্তু বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই রকম করা একদমই উচিত নয়। শিশুদের যে কোনো সমস্যার জন্য অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। তাই আমিও আর্থিকভাবে বিভিন্ন সমস্যা থাকার সত্বেও ভাগিনার জন্য ভালো চিকিৎসা করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রথমে আমি ভাগিনাকে আমাদের দাগনভূঞ সরকারি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। সেখানে শিশু বিভাগের ডাক্তারকে দেখালাম। ডাক্তার দেখে বললো তার নাভিসহ পুরো পেট আল্টাসনোগ্রাফি করাতে হবে।
ডাক্তারের কথা শোনার পর আমি খুবই চিন্তিত হয়ে গেলাম। যদি খুব খারাপ মারাত্মক রোগ হয় তাহলে তো অনেক বড় সমস্যা হয়ে যাবে। আমাদের দাগনভূঞ উপজেলাতে ভালো আল্টাসনোগ্রাফি করার মতোন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। তাই আমি তাকে নিয়ে ফেনী সাইকা হেলথ কেয়ার সেন্টারে নিয়ে গেলাম। ভালো আল্টাসনোগ্রাফি করার জন্য ফেনী জেলার মধ্যে সবচেয়ে সাইকা হেলথ কেয়ার সেন্টার অনেক ভালো। আল্টাসনোগ্রাফি করার ফি নিয়েছে ১২০০ টাকা । হাসপাতাল কতৃপক্ষ ১৪০০ টাকা নিচে কোনভাবে করাতে নারাজ আমি অনেক অনুরোধ করার পরে ২০০ টাকা কমিয়ে নিয়েছে।
আল্টাসনোগ্রাফি রিপোর্ট বের হওয়ার পরে আবার দাগনভূঞ সরকারি সদর হাসপাতালে আসলাম। সেখানে পূর্বের ডাক্তারকে দেখালাম। ডাক্তার রিপোর্ট দেখে বললো নাভিতে হনিয়া নামক এই ধরনের রোগ হয়েছে। ঠিকমতো ওষুধ করলে ভালো হয় যাবে। তবে কিছুদিন সময় লাগবে। ডাক্তার আল্টাসনোগ্রাফি রিপোর্ট ভালো করে দেখে কিছু ওষুধ লিখে দিলো। পরে ওষুধগুলো বাইরে থেকে কিনে নিলাম। আজ দুপুর থেকে খাওয়ানো আরম্ভ করছি।
নাভি ফুলে যাওয়ার পর থেকে আজ কয়দিন ভাগিনা খুবই কান্নাকাটি করতেছে মায়ের দুধ খাচ্ছে না। সারাক্ষণ শুধু কান্নাকাটি করতেছে। বাসার সবাই ভাগিনাকে কোলে নিয়ে ঘুরাঘুরি করছে, বিভিন্নভাবে ঘুম পাডানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু কোন ভাবে ঘুম যাচ্ছে না। আজ কয়দিন প্রতিটি মুহূর্ত খুবই যন্ত্রনা এবং দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। তার জন্য পরিবারের সকলে রাতে ঘুমাতে পারছে না। আসলে প্রতিটি মুহূর্ত কিভাবে যে দিন যাচ্ছে তা ভাষা বলে বুঝানো সম্ভব নয়। ভাগিনার এই সমস্যার কারণে তার কাছে কেমন লাগছে তাতো বলতে পারছে না। শুধু কান্নাকাটি করছে। কানতে কানতে কন্ঠ ভেঙ্গে গেছে। আসলে ভাগিনার জন্য আমাদের পরিবারের সকলে খুবই চিন্তার মধ্যে আছি কখন যে সুস্থ হয়ে উঠবে এজন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে শুধু প্রার্থনা করছি।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
ভাইয়া আপনার ভাগিনার অসুস্থতার কথা শুনে সত্যিই খারাপ লাগলো। বড়দের যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে হয়তো সহজে বলতে পারে কিন্তু ছোটদের ক্ষেত্রে তারা বলতেও পারে না এমনকি কাউকে বোঝাতেও পারে না। তবে আল্ট্রাসনোগ্রাফির ফি অনেকটা বেশি নিয়েছে মনে হচ্ছে। ডাক্তার যেহেতু বলেছে এই সমস্যা ঠিক হবে তাই নিয়মিত ওষুধ খাওয়ান। আশা করছি ঠিক হয়ে যাবে। আপনার ভাগিনার সুস্থতা কামনা করছি ভাইয়া।
পুরো পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মতামত উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ছোট বাচ্চাদের অসুস্থতা খুবই কষ্ট দেয়।তারা কিছু বলতেও পারে না বুঝাতেও পারে না।শুধু কষ্ট ভোগ করে।আপনি দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে সুবুদ্ধির পরিচয় দিয়েছেন।এখন আবহাওয়া চেঞ্জ হচ্ছে ছোট বাচ্চারা এখন সহজেই নানা রোগে আক্রান্ত হবে।তাই ভাগীনা কে সাবধানে রাখবেন একটু। প্রার্থনা করি সে জলদি সুস্থ হয়ে উঠবে
কমেন্ট করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
ছোট বাচ্চারা অসুস্থ হলে আসলেই খুবই খারাপ লাগে,কারণ ওরা মুখ দিয়ে কিছু বলতে পারেনা,
শুধু কান্নাকাটি করতে থাকে। এই বিষয়টা খুব বেশি কষ্ট দায়ক।হ্যাঁ আপনি ঠিকই বলেছেন বাচ্চাদের অসুস্থতায় কখনো অবহেলা করতে নেই। দ্রুত বাবুটাকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে খুব ভালো কাজ করেছেন,রোগ যেহেতু ধরা পড়েছে আশা করি খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে।ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি বাবুটা যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।শুভকামনা রইল।
পোস্টটি সম্পর্কে এত সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ভাইয়া ঠিক বলেছেন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আবহাওয়ার অবস্থা খুবই খারাপ ছিল আবার এই দিকে লোডশেডিং এর অবস্থা আরো বেশি খারাপ হওয়াতে মানুষ আরো বেশি বিপাকে পড়ে গিয়েছিল। এর মধ্যে আবার প্রতিটা সবজির দাম অনেক বেশি। এই সময় যদি পরিবারের কেউ অসুস্থ থাকে আমার কাছেও ভালো লাগে না। আমার ছেলেটাও কয়েকদিন আগে খুব অসুস্থ ছিল এখন আল্লাহর রহমতে একটু সুস্থ আছে। এই কথাটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া সিজারের বাচ্চাদের একটার পর একটা অসুখ লেগেই থাকে। ভাইয়া ডাক্তার যা ওষুধ দিয়েছে তা ঠিকমতো বাবুকে দিতে বলবেন তাহলে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে। বাবুর জন্য দোয়া রইলো। ধন্যবাদ।
পোস্টটির সম্পর্কে এত সুন্দর বিস্তারিত মতামত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
এ-তো রীতিমতো ডাকাতি করা হয়েছে। এখন ম্যাক্সিমাম হসপিটাল গুলোতে এরকম ডাকাতি করা হয়ে থাকে। আপনার ভাগিনার অসুস্থতার কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো। কারণ ছোট বাচ্চাদের কষ্ট হলেও তারা বলতে পারে না। দোয়া করি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। আর ঔষুধগুলো ঠিক মত খাওয়াবেন।
সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই