শারদীয় দূর্গা উৎসবে যাওয়ায় কিছু অনুভূতি।

বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম

আসসালামু আলাইকুম

শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।

প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।আজ আমি আপনাদের, শারদীয় দুর্গা পূজাতে যাওয়ার অনুভূতি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।

আসুন শুরু করি

শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে কিন্তু শারদীয় দুর্গোৎসবের আনন্দ এখনো চারদিকে বিরাজমান। শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলাতে করে আমাদের মাঝে শারদীয় দুর্গাপূজা আগমন করেছে। দুর্গা পূজাতে সবার মাঝে আনন্দ উৎসবের কম ছিল না। সবাই মা দুর্গার আরাধনা মগ্ন থাকে। শীতের আগমনী বার্তায় কুয়াশা ভেজা সকালে মা দুর্গার প্রার্থনা সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মা দুর্গার আগমনে সকলের হৃদয়ে আনন্দের বাঁধ ভাঙ্গা উল্লাস। শারদীয় দুর্গোৎসব হলো সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব । মন্দিরের শঙ্খ কাঁসর ঢাকের শব্দে চারদিকে অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি করে। হিন্দু ধর্ম অবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো শারদীয় দুর্গাপূজা।

প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে তাদের আয়োজনে কোন কমতি থাকে না। বিশেষ করে তাদের পূজা উদযাপন বেশ অসাধারণ হয়ে থাকে। প্রতি বছর শরত কালে আমাদের মাঝে শারদীয় দুর্গোৎসব ফিরে আসে। আমি একজন মুসলিম। আমাদের গ্রামে কোন সনাতন ধর্ম অবলম্বী মানুষ বসবাস করে না‌। তাই সনাতন ধর্মের আচার অনুষ্ঠান সম্পর্কে তেমন কোনো জ্ঞান নেই। তবে আমি যখন হাইস্কুলে পড়ি তখন আমার তিনজন সনাতন ধর্মাবলম্বী ফ্রেন্ড ছিলো । তাদের মধ্যে দুজন ছেলে আর একজন মেয়ে। তারা তিনজনই আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো। তাদের যে কোনো ধর্মীয় উৎসবে আমাকে নিমন্ত্রণ করতো।

আমি প্রত্যেকটি বন্ধুর বাসায় দুই তিনবার করে গিয়েছিলাম । বিশেষ করে তাদের পূজার উৎসব গুলোতে আমি গিয়েছিলাম । বাড়িতে পূজা করার জন্য তারা বেশ চমৎকার আয়োজন করতো সন্ধ্যার মুহূর্তে। পরিবারের সকলে মিলে বেশ সুন্দর ভাবে পূজা করতো । বিভিন্ন রকম আলো সজ্জা করা হতো। প্রতি বছর শারদীয় দুর্গোৎসবে তারা আমাকে নিমন্ত্রণ করতো আমি যেতাম তাদের সাথে বেশ সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করতাম। দুর্গাপূজার প্রতিদিন সন্ধ্যার মুহূর্তে যেতাম। বেশ সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করতাম সবাই সাথে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তারা আজ কেউ নেই।

দুজন বিদেশ গিয়েছে আর মেয়ে বন্ধুটির বিয়ে হয়ে গেছে। তারা যেহেতু কেউ নাই আজ দুই বছর শারদীয় দূর্গা উৎসবে আগের মতোন আনন্দ পাই না।মহাষষ্ঠীর দিন থেকে বিজয় দশমী পর্যন্ত তারা পূজা মন্ডপ অবস্থান করত। প্রসাদ বিতরণ ও ভোগ-আরতির আয়োজন করা হতো। আমি যখন প্রতিদিন সন্ধ্যা যেতাম তারা পূজা শেষ করে আমাকে বিভিন্ন রকম প্রসাদ খেতে দিতো। প্রসাদের মধ্যে বিভিন্ন রকমের ফল পিঠা এবং সন্দেশ অন্যতম ছিল। প্রসাদের মধ্যে কত রকম আছে তারা সন্দেশ খেতে দিত তার কোন হিসেব নেই ।

নারিকেল দিয়ে নানা রকমের সন্দেশ তৈরি করতো। প্রসাদের বিভিন্ন রকমের সন্দেশ গুলো খেতে সত্যি বেশ দারুন। বন্ধুরা কেউ নেই তাই আর শারদীয় দুর্গোৎসবে আগের মতোন যাওয়া হয় না । তবে এবার দশমীর রাতে গিয়েছিলাম একা একা পূজা দেখতে। আমাদের উপজেলাতে একটি পূজা মন্ডপ। পুরো উপজেলার সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ এখানে আসে পূজা করতে। তাই বেশ জাকজমক ভাবে আলোক সজ্জার মাধ্যমে পূজা উদযাপনে আয়োজন করা হয়। এবারে পূজা কমিটি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় বেশ চমৎকার জমকালো পূজা মন্ডপের আয়োজন করেছে।

যেহেতু আমি দশমীর রাতে গিয়েছিলাম তাই পূজা মন্ডপে বেশ উপচে পড়া মানুষের ভিড়। আমি বেশ ধাক্কাধাক্কি করে পূজা মন্ডপের ভিতরে প্রবেশ করেছে। মা দুর্গার প্রতিমা সহ বিভিন্ন রকম প্রতিমা গুলো বেশ চমৎকার ভাবে সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন রকমের আলোকসজ্জা আলোতে প্রতিমা গুলো দেখতে সত্যি বেশি ভালো লাগলো। যেহেতু দশমীর রাত তাই সকলেই পূজাতে খুবই ব্যস্ত ছিলো। ছোট ছেলেরা আরতি নৃত্য করতেছে। নৃত্য দেখে খুব ভালো লাগলো। বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফি করে নিলাম পূজা মন্ডলের ভিতর। প্রায় তিন ঘন্টার মতো পূজা মন্ডপে অবস্থান করেছি। পূজা মন্ডপে সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছি।

পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো , ইনশাআল্লাহ।

• অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবাইকে শুভ দুপুর
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।

আমার পরিচিতি

আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।