মামার বিয়ে
আমার বাংলা ব্লগের সকল ভাই ও বোনেরা আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি। এর আগে আমি আমার মামার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানের অনুভূতির কিছু কথা নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছিলাম এবার আমি মামার বিয়ের অনুষ্ঠানের অনুভূতি নিয়ে হাজির হয়েছি।
![]() |
---|
বিয়ের দিন সকাল ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া করে মামার রুমে সবাই মিলে গেলাম আড্ডা দিতে। গিয়ে দেখি মামা মামির সাথে ভিডিও কলে কথা বলছে। আমরাও গিয়ে মামীর সাথে কথা বললাম সেই সাথে নানা রকম হাসি ঠাট্টা চললো। এরপর দুপুরে খাওয়া-দাওয়া শেষে সবাই মিলে একসাথে রেডি হতে লাগলাম। এর মধ্যে মামার গাড়ি নিয়ে ভাইয়ারা সাজিয়ে নিয়ে আসতে গেল। আমরা সবাই রেডি হয়ে কমিউনিটি সেন্টারের উদ্দেশ্যে বের হলাম।
![]() |
---|
এরমধ্যে মামা এসেও হাজির হলো মামাকে দেখতেও বেশ ভালো লাগছিল। এরপর আমরা সবাই গাড়িতে উঠে কমিউনিটি সেন্টারে যাবার জন্য রওনা দিলাম। গাড়িতে আমরা সবাই বেশ মজা করতে করতে গেলাম। এরপর আমরা কমিটি সেন্টারে পৌঁছে গেলাম। মামাকে গাড়ি থেকে বের করে ঘোরাতে করে কমিউনিটি সেন্টারের ভিতরে প্রবেশ করানো হলো।
![]() |
---|
যেহেতু মামার ঘোরাতে ওঠার অভ্যাস নেই তাই প্রথম প্রথম সে একটু ভয় পাচ্ছিল আর বলছিল যদি পড়ে যাই। তারপর মামাকে অনেক বুঝিয়ে ঘোড়াই করে কমিউনিটি সেন্টারের ভিতরে প্রবেশ করানো হলো। কিন্তু অন্যদিকে মেয়ে পক্ষরা গেট ধরে ছিল। এটাই হলো বিয়ের আসল মজা। আমরাও মেয়ে পক্ষের সাথে টুকটাক ঝগড়া করে নিলাম। এরপর মামা তাদের আবদার মত টাকা দিয়ে দিল। তারপর মামাকে মেয়েপক্ষরা বরণ করে নিয়ে স্টেজে বসালো। এরপর মামী এলো পালকিতে চড়ে। মামীর এন্ট্রিটা আমার কাছে অনেক ইউনিক লেগেছিল। এরপর মামী ও পালকি থেকে নেমে স্টেজে এসে বসলো।
![]() |
---|
এরপর মিউজিসিয়ানরা তাদের গান পরিবেশন করতে লাগলো আর আমরা উপভোগ করতে লাগলাম ও ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। হলুদে যেহেতু ছেলের বাড়ির কোন পারফরম্যান্স ছিল না সেই জন্য বিয়ের দিন ছেলের বাড়ির পক্ষ থেকে আমি ও আমার ভাই-বোনেরা সবাই মিলে নাচ পরিবেশন করেছিলাম। নাচ দেখে সবাই প্রশংসা ও করেছিল। সবাই বলতে লাগলো মেয়ের বাড়ির পারফরম্যান্সের থেকে ছেলের বাড়ি পারফরমেন্স বেশ ভালো লেগেছে।
![]() | ![]() |
---|
এরপর খাওয়া-দাওয়ার পালা। সবার খাওয়া শেষ হবার পর সবার শেষে খেতে বসেছিল মামা ও মামি। মামা ও মামির জন্য ছিল স্পেশাল খাবার। মামা যেহেতু একটু পেটুক টাইপের তাই বেশ ভালোই খেয়েছিল। সবশেষে সবাই মিলে একটা করে পান খেয়েছিলাম।
এরপর মামীর বিদায়ের পালা। মামি বেশ কান্নাকাটি করছিল এইটা তো স্বাভাবিক। নিজের বাবা-মা ও ফ্যামিলিকে ছেড়ে অন্য একটা নতুন ফ্যামিলিতে যাচ্ছে এটা একটা মেয়ের কাছে যেমন সুখের তেমনি আবার কষ্টেরও।
আমিও মামাদের সাথেই এক গাড়িতে ছিলাম। রাস্তায় একটা চায়ের দোকান দেখে নেমে সবাই একসাথে চা খেলাম। তারপর সবাই মিলে বাসায় ফিরলাম। বাসায় মামীর এন্ট্রি হতেই আমার ছোট মামা ছাদে উঠে আতশবাজি নানা রকম পটকা ফুটাতে লাগলো। আর এইসব দেখে মামীয় বেশ খুশি হল।
মামা মামি তাদের রুমে প্রবেশ করার আগেই আমরা রুমে ঢুকে রুমটাকে সুন্দর করে একটু ডেকোরেশন করে নিয়েছিলাম। এরপর মামারা যখনই রুমে প্রবেশ করতে চাইলো তখনই আমরা বললাম কষ্ট করে রুম সাজিয়েছি টাকা চাই, টাকা চাই। এরপর মামা আবারও টাকা দিতে বাধ্য হল। টাকা নিয়ে আমরা মামা ও মামিকে রুমে ঢোকার অনুমতি দিলাম। অনেক রাত পর্যন্ত আমরা সবাই মিলে একসাথে আড্ডা দিয়েছিলাম। তারপর যে যার মত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। মামীকে রুম গোছাতে আমি সাহায্য করলাম। মামি লাগেজ থেকে তার জামা কাপড় বের করে গোছাতে লাগলো। আমিও মামীর সাথে সাথে মামার রুম গোছাতে সাহায্য করলাম। ততক্ষণে মামীর সাথে আমার বেশ ভালই একটা আড্ডা হয়ে গেল। তখনই মামা রুমে আসলো আমাদের জন্য চা নিয়ে।
![]() | ![]() |
---|
এরপর আমি মামা ও মামি একসাথে আড্ডা দিলাম আর চা খেলাম। তারপরের দিন আমরাও মামা-মামীদের থেকে বিদায় নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম ।
আসসালামু আলাইকুম। আমি আফরিন খান উপমা। আমি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলায় বসবাস করি। আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের মানবিক বিভাগের একজন ছাত্রী। আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি একজন ব্লগার উদ্যোক্তা। আমি গান গাইতে , নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে এবং ছাদ বাগান করতে খুব ভালোবাসি। আমি আনন্দময়ী এবং সকলকে নিয়ে হৈহুল্লর ও একসঙ্গে সকলকে নিয়ে মজা করতে পছন্দ করি। আমি সকলের দুঃখে দুঃখী এবং সকলের সুখে সুখী ।
আপনার মামা-মামীর বিয়ের মুহূর্ত গুলো বেশ ভালোভাবে আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। বেশ ভালো লাগলো যে আপনি তো বেশ ইঞ্জয় করেছেন পুরোটা সময়। তার উপর আপনার মামা আর মামী দুই জনের এন্ট্রিটাই বেশ ইউনিক লাগলো আমার কাছে। আপনার মামা-মামীর বিবাহিত জীবন সুখের হোক, এই শুভকামনা।
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
আপু আপনি আপনার মামার বিয়েতে গিয়েছেন জেনে ভালো লাগলো। তবে যাই বলুন না কেন বিয়ে বাড়িতে গেলে অনেক আনন্দ হয়। আর সবাই মিলে অনেক মজা করেছেন জেনে ভালো লাগলো। আপু আপনার মামা মামির জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।