গানের জগতে পা রাখার স্মৃতি
আসসালামু আলাইকুম। আমার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যগণ আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই পরিবার নিয়ে ভালো ও সুস্থ আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে বেশ ভালো আছি। আজ আবারও আমি আপনাদের মাঝে একটি পোস্ট নিয়ে চলে এলাম।
আজকের পোস্টে আমি গানের জীবনে কিভাবে পা রেখেছিলাম ও আমার জীবনের কিছু সেরা মুহূর্তের কথা শেয়ার করতে যাচ্ছি। আমার পরিবারের প্রায় সকলেই নাচ গানের সাথে জড়িত। তাই পরিবারের ইচ্ছাতেই আমি গান শিখেছিলাম।বিশেষ করে আমার আম্মু মনে করে একটা মেয়ের সব কিছু জানা দরকার। সেই জন্যই আরো গান শেখা।গান শেখার পাশাপাশি আমি নাচও শিখেছিলাম।
আমি যখন ক্লাস ওয়ানে পড়ি তখন আমার আম্মু আমার জন্য গানের টিচার ঠিক করলো।সপ্তাহে দুই দিন করে বাসায় এসে স্যার আমাকে গান শিখাতো।আমার গান শিখতে খুবই বিরক্ত লাগতো।আর তাছাড়াও স্যার কিছু নিয়মে থাকতে বলতো।বিশেষ করে ঠান্ডা কোনো কিছু খাওয়া একেবারে নিষেধ করে দিয়েছিল।এমন কি আমার আম্মু আমাকে আইসক্রিম খেতে দিতে চাইতো না ।আবার আম্মুর কথা না শুনলে আম্মু স্যার কে বলে দিত সেই ভয়ে আমিও আর আইসক্রিম খেতাম না। এই ভাবে প্রায় ১ বছর চলল।এরপর আমার সেই গানের টিচার বগুড়া থেকে ঢাকা চলে গেলো।আমিও আর নতুন টিচার নেই নাই। ক্লাস ২-৩ পর্যন্ত আর গান শিখা হয়নি।ক্লাস ৪ এ উঠার পর আম্মু আমাকে ভর্তি করে দেয় উচ্চারণ একাডেমীতে।তখন থেকে নতুন যুদ্ধ শুরু।সবাইকে দেখতাম কি সুন্দর করে গান করে কিন্তু আমি গান করতেও চাইতাম না রিয়ারসেলও ঠিক মতো করতাম না।গান ভুল করতাম স্যারের কাছে বকা খাইতাম। তারপর যখন অনুষ্ঠান করতাম প্রায় সময় মানুষ দেখে ভয়ে গান ভুল করতাম বা গান থামিয়ে দিতাম।এই গান এর জন্য সত্যি বলতে প্রচুর বকা, মাইর খাইছি আম্মুর কাছে।
এরপর আস্তে আস্তে বুজলাম যে সবাই ভালো করে আমিও যদি চেষ্টা করি হয়তো ভালো করতে পারবো।আমি তখন থেকে নিজের ইচ্ছায় রিয়ার্সেল করতাম প্রতিদিন গান প্র্যাকটিস করতাম।একটা সময় স্যারের প্রিয় ছাত্রীদের মধ্যে আমি একজন হয়ে উঠলাম।তখন আমাকে আর গান শিখতে হতো না আমি যেকোনো গানের সুর শুনলেই গান টা অটোমেটিক্যালি হারমোনিয়ামে তুলতে পারতাম। এরপর থেকে আমি প্রচুর অনুষ্ঠান করেছি।গানের জন্য রাজশাহী,ঢাকা সব জায়গাতে গিয়ে গান করেছি,প্রশংসাও পেয়েছি সেইসাথে পুরস্কারও অর্জন করেছি।
তারপর পড়ালেখার চাপে পরে বাধ্য হয়ে গান থেকে দূরে সরে আসতে হয়। এরপর প্রায় ৬ বছর গানের সাথে আমি ছিলাম না। তারপরও সবার জোরাজোরিতে স্কুল জীবনের শেষ সময় একটা প্রতিযোগিতা করেছিলাম সেখানে আমি উপজেলা,জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম হয়েছিলাম।এইটাই আমার শেষ প্রতিযোগিতা ছিল। এরপর আর কোথাও গান ওই ভাবে গাওয়া বা অনুষ্ঠান করা হয়নি। এরপর বাংলা ব্লগে আসার পর হ্যাংআউট এ চেষ্টা করি আপনাদেরকে বিনোদন দেওয়ার জন্য। জানিনা আমি কতটুকু আনন্দ দিতে পারি আপনাদের। তবে হারমোনিয়াম বাজিয়ে এখন আর গান করা হয় না আমার। কারণ আমি এখন ওইভাবে আর সময় করতে পারিনা।
এই ছিল আমার আজকের পোস্ট।এরপর আবারো নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হবো সে পর্যন্ত আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।আপনাদের সবাই কে জানাই অনেক ধন্যবাদ।
আসসালামু আলাইকুম। আমি আফরিন খান উপমা। আমি রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলায় বসবাস করি। আমি ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের মানবিক বিভাগের একজন ছাত্রী। আমার জাতীয়তা বাংলাদেশী। আমি একজন ব্লগার উদ্যোক্তা। আমি গান গাইতে , নতুন নতুন রেসিপি তৈরি করতে এবং ছাদ বাগান করতে খুব ভালোবাসি। আমি আনন্দময়ী এবং সকলকে নিয়ে হৈহুল্লর ও একসঙ্গে সকলকে নিয়ে মজা করতে পছন্দ করি। আমি সকলের দুঃখে দুঃখী এবং সকলের সুখে সুখী