অবহেলিত পথ শিশুদের আর্তনাদ (১০% বরাদ্দ লাজুক শিয়ালের জন্য)
আশ্রয়হীন,অবহেলিত এবং খাদ্য বস্ত্র ও চিকিৎসা সহ যাবতীয় সকল মৌলিক চাহিদা থেকে বঞ্চিত শিশুরাই হল পথশিশু। রাস্তাঘাট, রেললাইন থেকে শুরু করে যেকোনো জায়গায় বের হলে পথ শিশুদের দেখতে পাওয়া যায়। পথ শিশুদের জন্মগত পরিচয় থাকে না। অধিকাংশ পথশিশুরাই জানেনা তাদের বাবা-মা কারা। কিছুসংখ্যক পথশিশু যদিও তাদের বাবা-মার পরিচয় জানে, তবুও তারা তাদের পিতৃ এবং মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হওয়ার ফলেই আজ তারা পথশিশু হয়েছে ।
স্বাভাবিক পরিবারের একজন শিশু জন্মগ্রহণের পর তাদের বাবা-মার সহচর্যে বেড়ে ওঠে। বাল্যকাল থেকেই বাবা মার মায়া-মমতা এবং পরিবারের মানুষদের স্নেহ-যত্নে লালিত পালিত হয়।একজন স্বাভাবিক শিশু খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সহ যাবতীয় সকল সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকে। তাদের কোন কিছু হয়ে গেলেন পরিবারের সকল লোকজন এগিয়ে এসে সকল সমস্যার সমাধান করে দেয়। অথচ পথ শিশুদের ক্ষেত্রে এর উল্টোটা ঘটে। বাবা-মার স্নেহ, মায়া-মমতা থেকে বঞ্চিত হয়ে অবহেলা-অনাদর এবং অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে তারা বেড়ে ওঠতে থাকে।
একজন স্বাভাবিক শিশুর ভরণপোষণ এর দায়িত্ব যেখানে তাদের বাবা-মারা নিয়ে থাকেন, বিপরীত দিকে একজন পথশিশুকে নিজের সকল সুযোগ সুবিধার জন্য নিজেকেই লড়তে হয়। আর নিজের সকল চাহিদা পূরণের জন্য হাত পাততে হয় মানুষের দ্বারে দ্বারে। দুবেলা-দুমুঠো খাবার জন্য কতনা সংগ্রাম করতে হয়। আবার অনেক সময় সারাদিন মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরার পরেও সাহায্য সহযোগিতা না পেলে তাদেরকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়। ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে মানুষের ফেলে দেয়া খাবার কিংবা ড্রেন থেকে খাবার তুলে নিয়ে খেতে হয়। এর চেয়ে চরম নিষ্ঠুরতার আর কি বা হতে পারে!
আর পথশিশুরা ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে থাকলে তারা কাজে লেগে পরে। নিজের ভরণপোষণ এর চাহিদা পূরণ করতে তারা অনেক সময় এমন কঠিন কাজ বেছে নেয় যা তাদের পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। অর্থাৎ তারা ছোটবেলা থেকেই শিশুশ্রমের শিকারে পরিণত হয়। এত কঠিন কাজ না করতে পেরে অনেক পথশিশুরা খারাপ পথ বেছে নেয়। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি ও খুন থেকে শুরু করে যাবতীয় সকল নিন্দনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করে। তাদের কাছে তখন ভালো-মন্দ বিচার করার গুণ থাকে না। কারণ পেটের খিদের কাছে সবকিছু মূল্যহীন।
পথশিশুদের দ্বারা সংঘটিত সকল নিন্দনীয় কার্যক্রমের জন্য কি পথশিশু রাই দায়ী? পথশিশুরা কখনও এর জন্য দায়ী হতে পারে না। কারণ একজন শিশু সব সময় নিষ্পাপ হয়ে জন্ম নেয়। তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য দায়ী থাকে তাদের বেড়ে ওঠা সুশীল সমাজের লোকজন । এই সুশীল সমাজের লোকজন তাদেরকে মানুষ হিসেবে গণ্য করেনি, তাদেরকে দেয়া হয়নি যথাযথ মর্যাদা। বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের সকল মৌলিক অধিকার থেকে । তারা যখন ক্ষুধার চাহিদা মেটানোর জন্য সকলের কাছে হাত পাততো, খাবারের পরিবর্তে তারা পেয়েছে শুধু ধিক্কার আর অবহেলা। পেটের ক্ষুধায় আর্তনাদের সময়ও মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি।
আমরা প্রতিদিন যতটুকু খাবার বজ্র করি সেগুলো যদি পথশিশুরা খেতে পারতো তবে তাদের নর্দমায় খাবার খুঁজতে হতো না।
আপনি অনেক সুন্দর লিখেছেন পথশিশুদের নিয়ে।এরকম করে আমাদের সবাইকে পথশিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভুতিশীল হওয়া উচিত।ধন্যবাদ ভাই মূল্যবান পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
পথ শিশুদের, নিয়ে লেখা বর্ণনা খুব সুন্দর হয়েছে। আরও সুন্দর হতো যদি নিজের চোখে দেখা গুলোকে তুলে আনা যেতো। শুভ কামনা।
আপনাকে ধন্যবাদ ভাই।
কথাটা যখন পড়েছিলামঃ যে বাবা-মায়েরা তার শিশুদের দায়িত্ব নেন এবং পথশিশুদের কে সেই দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হয় তখন সত্যিই খুব কষ্ট লাগছিল আসলেই আমরা আমাদের চারপাশের কত অসঙ্গতি এবং এরকম অবস্থা দেখছি। এদের সবার জন্য মন থেকে দোয়া রইল এবং আমরা যারা আছি তারা সবাই আমাদের জায়গা থেকে যতটুকু পারি এদের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করা উচিত
জি ভাই। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাই।
পথ শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং সমাজের উচ্চ শ্রেণীর লোকজনদের উচিত পথশিশুদের দেখাশোনা করা। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর একটি বিষয় আমাদের সামনে উপস্থাপন করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
খুব ইমোশনাল হয়ে গেছি ভাইয়া ব্লগটি পড়ে। আমার সাধ্য থাকলে আজ থেকেই ওদের জন্য কিছু করতাম। অনেক ধন্যবাদ বাস্তবিক একটি পোস্ট করার জন্য।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
অবহেলিত বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে অনেক সুন্দর লিখেছেন হয় আমাদের মানসিক চিন্তাচেতনার কারণে আজকে শিশুরা বিভিন্নভাবে অবস্থিত যা সত্যিই অনেক। আমরা যদি আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে একটু ব্যতিক্রম ভাবে চিন্তা করলে তাহলে এই সকল শিশুদের জীবনটা অনেক সুন্দর করা সম্ভব। অসংখ্য ধন্যবাদ
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।