নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন (১০ শতাংশ লাজুক শেয়ালের জন্য)
বর্তমান এ একটি দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক জনগোষ্ঠী পুরুষ এবং বাকি অর্ধেক জনগোষ্ঠী হল নারী।একটি দেশের অর্ধেক কিংবা তিন ভাগের এক ভাগ জনগোষ্ঠী দিয়ে যে পরিমাণ উন্নয়ন সম্ভব তার চেয়ে বেশি উন্নয়ন ঘটানো যাবে যদি দেশের সকল জনগণ কর্মক্ষম হয়। একটি দেশের উন্নয়নে দেশটির সকল জনগণ নিয়োজিত থাকলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের চরম পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব। এজন্য প্রতিটি দেশের পরিকল্পনা এমন হওয়া উচিত যে, দেশের সকল জনগণ কর্মক্ষম হয়।
কিন্তু বর্তমানে আমাদের দেশে নারী ও পুরুষের প্রতি সমান অধিকার নিশ্চিত করা হচ্ছে না। ফলে আমাদের দেশ বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় অবকাঠামো গত উন্নয়নের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে। শুধুমাত্র দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে নিয়ে পরিকল্পনা করা হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়।একজন নারীর জন্মের শুরু থেকেই তাদেরকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এখনো আমাদের দেশের অধিকাংশ বাবা-মা ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে যতটা খুশি হন,সেই তুলনায় মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করলে মন খারাপ করে বসে থাকে। একজন ছেলে সন্তানের আবদার খুব সহজেই পূরণ করেন। অথচ বৈষম্য পরিলক্ষিত হয় মেয়ে সন্তান জন্মগ্রহণ করার বেলায়।
নারী সমাজের প্রতি বৈষম্যের ক্ষেত্র গুলো হলো:
বর্তমান পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অনেক ক্ষেত্রেই নারীদেরকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। বৈষম্যের ক্ষেত্রগুলো ধাপ আকারে উপস্থাপন করা হল।
খাবারের সমবণ্টনে বৈষম্য:
নির্দিষ্ট একটি পরিবারের ছেলে এবং মেয়ে সন্তানের দিকে তাকালেই এই বিষয়টি খুব ভালোভাবেই পরিলক্ষিত হয়। ছেলে সন্তানের সুষম খাবার-দাবারের প্রতি যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, মেয়েদের খাবার-দাবার প্রদানের প্রতি ততটাই বৈষম্য করা হয়। মাছের মাথা, ডিম, মাংস কিংবা অন্যান্য খাবার-দাবারের আয়োজন করা হলো ছেলেদের কে প্রাধান্য দেয়া হয়। শিক্ষামূলক সিরিজগুলোতেও এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়।
শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য:
একজন বাবা-মা তাদের সন্তানদের মধ্যে মেয়ে সন্তানের তুলনায় ছেলে সন্তানের শিক্ষা দীক্ষায় অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।উন্নত স্কুলে পড়াশোনা করানো, পড়াশোনার সকল সরঞ্জামাদি প্রদান থেকে শুরু করে যাবতীয় সকল ক্ষেত্রে একজন ছেলের প্রতি যতটা গুরুত্ব দেয়া হয় তার সিকিভাগ গুরুত্বও দেয়া হয় না একটি মেয়ের ক্ষেত্রে। অথচ পরবর্তীতে দেখা যায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েরাই শ্রেণীতে পড়াশোনায় এগিয়ে থাকে।
কর্মসংস্থানে বৈষম্য:
কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও নারীদের তুলনায় পুরুষদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর প্রতি এখনো দাসের মতো আচরণ করা হয়। নারীরা শুধু ঘরের কাজ করার জন্যই জন্মেছে-এই বদ্ধমূল ধারণায় সমাজ এখনও বিশ্বাসী। এছাড়াও অফিশিয়াল, কমার্শিয়াল এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও নারীদের কাজের গুরুত্ব দেয়া হয় না। পুরুষদের কাজের যে তুলনায় সম্মানী দেয়া হয়, নারীদের সে তুলনায় দেয়া হয়না। দেশের বড় বড় কোম্পানি কিংবা গার্মেন্টস গুলোতে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদেরকে প্রাধান্য দেয়া হয়।
এছাড়াও আরও অনেক দিক থেকেই মেয়েদেরকে বৈষম্যের শিকার হতে হয়। একজন মেয়ে একা রাস্তায় বেরোনো নিরাপদ নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের লোকজন তাদেরকে ভিন্ন চোখে দেখে।
এমনিতেই নারীর প্রতি বৈষম্যের ফলে আমরা পিছিয়ে পড়ে আছি, তার মধ্যে এই বৈষম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় থাকলে একসময় আমরা আরও পিছিয়ে যাব। কারণ দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী।আর অর্ধেক জনগোষ্ঠীকে উন্নয়ন পরিকল্পনা থেকে বাদ দিলে আমরা তো পিছিয়ে পড়ে থাকবোই। এজন্য আমাদের উচিত যাবতীয় সকল বৈষম্য ক্ষেত্রগুলোতে তাদের উন্নয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।
নারীর প্রতি বৈষম্যের ক্ষেত্রগুলো খুব সুন্দরভাবে ধাপ আকারে উপস্থাপন করেছেন।এই বৈষম্য গুলো দূর করা উচিত। তা না হলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। সুন্দর লিখেছেন ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
অনেক সুন্দর ভাবে নারীদের বৈষম্য এবং তাদের গুরুত্বের একটি চিত্র তুলে ধরেছেন যা সত্যিই বর্তমান সময়ে লক্ষনীয়। আপনার গল্পটি সম্পূর্ণরূপে নারীদের প্রতি সম্মান মর্যাদা এবং ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আপনার সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা আমাদের মাঝে শেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
নারী পুরুষ হলো একটি গাড়ির দুটো চাকার মতো।
কাওকে ছাড়া কেও কখনো আগাতে বা উন্নতি করতে কোনোটাই পারবেনা। আপনি খুব সুন্দর লিখেছেন ভাইয়া।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
খুব ভালো একটি লেখনী ছিল এটা। আসলেই আমাদের সমাজের নারীরা সত্যিই সব দিক থেকেই অবহেলিত। আসলে আমাদের সবার উচিত নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে সুন্দর সমাজ সৃষ্টি করা, যেখানে থাকবে না এই বৈষম্যের কড়াল থাবা। ভালো পোস্ট, শুভ কামনা অবিরাম 🥀
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
ভাইয়া আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো। নারীর প্রতি বৈষম্যের ধাপগুলো আপনি খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। আমাদের সকলের উচিত আমাদের সমাজ এবং দেশ থেকে নারীর প্রতি বৈষম্য দূর করা। ভাই আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।
একটা সময় উপযোগী লেখা। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যগুলো এশিয়া তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। বর্তমান সমাজ এখনও বোকার স্বর্গে বসবাস করে। তবে মেয়েরাও আর পিছিয়ে নেই। নিজের যোগ্যতা বলে সে তার জায়গা ঠিক দখল করে নিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
জি আপু। গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ আপু।
উন্নত বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা আসলে রাতদিন পার্থক্য দেখতে পাই। উন্নত বিশ্বে নারীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি মুখ্য কিন্তু আমাদের এখানে তার উল্টো। আপনি যে তিনটি পয়েন্ট আলোচনা করেছেন সবগুলো পয়েন্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।