ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট ও আমার ভাবনা) ১০ ভাগ লাজুক খ্যাঁকের জন্য

in আমার বাংলা ব্লগ3 years ago

কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। আমরা সবাই জানি বিশ্ব বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে । ইউক্রেন ও রাশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে সারাবিশ্ব উদ্বিগ্ন। বিশ্ব মানবতা আজ চরমভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তবে আমি সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো না আমি আলোচনা করব রাশিয়া ও ইউক্রেনের সংকটের ফলে দুই দেশ কি ধরনের সমস্যায় পড়তে পারে সেই সব বিষয় নিয়ে। যুদ্ধ কোন দেশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনে না এটি শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি, বেসামরিক লোক জনের প্রাণহানি । তবে চলুন শুরু করা যাক,

apocalypse-g6b7d95e15_1920.jpg

Image Source

শুরুটা যেভাবে ,
২০১৪ সালে ক্রিমিয়া সংকট এবং ইউক্রেনে রুশপন্থী সরকারের পতন।

বর্তমান রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যে সমস্যাটি সূত্রপাত মূলত সাম্প্রতিক ২০২১ সালের শেষের দিকে মূলত ইউক্রেনের দুটি দুটি শহর দোনেস্ক ও লুহানেস্ক বিদ্রোহীদের অতি তৎপরতা মধ্য দিয়ে, যার ফলশ্রুতিতে বেশকিছু বেসামরিক লোকজন হতাহত হয় এবং ইউক্রেন সরকার এই সব অঞ্চলে শক্ত অবস্থান নেয় এবং বিদ্রোহ দমন করার জন্য নীতিগত সিদ্ধান্ত নেন। যেহেতু বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাশিয়াপন্থী ছিল যার ফলে অবস্থা ক্রমান্বয়ে চরম আকার ধারণ করে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের প্রতিনিয়ত অস্ত্র সহায়তা ইউক্রেন সরকারকে ভাবিয়ে তোলে অতঃপর তারা নীতিগত সিদ্ধান্তের পৌঁছায় যে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।

war-gdf62e2826_1920.jpg
Image Source

এরপরে ঘটনাটি ঘটে ন্যাটো কে কেন্দ্র করে। রাশিয়া যখন দেখল ইউক্রেন ন্যাটোতে যোগদানের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে তখন রাশিয়াকে বিষয়টি খুব ভাবিয়ে তুললো। এমন যেন রুশদের আঙ্গিনায় পশ্চিমাদের মিসাইল বিতরণ। তখন রাশিয়া তাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি খুব ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারে তখনই তারা নড়েচড়ে বসল যে কোনোভাবে ইউক্রেনকে পশ্চিমা জোটে যোগদান করতে দেওয়া যাবে না ।আপনাদের একটা কথা আগে বলা উচিত যে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার পর রাশিয়া পাশ্চাত্য জোটের সাথে একটা চুক্তি হয়েছিল যে পশ্চিমারা কখনোই ন্যাটোকে পূর্বে ইউরোপে সম্প্রসারিত করবে না। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে পশ্চিমাদের ইউক্রেনের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছে তা রাশিয়ার কাছে চুক্তিভঙ্গের সামিল

apocalypse-g23458c734_1920.jpg

Image Source

অতঃপর আমরা দেখতে পেলাম রাশিয়ার ধৈর্যচ্যুতি হলো তারা ইউক্রেনে দুটি বিদ্রোহী প্রবণ অঞ্চল কে স্বাধীনতা ঘোষণা করল।যায় ফলশ্রুিতে শুরু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্রোহী অঞ্চল দুটিকে মুক্ত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করল। ইউক্রেনকে সম্পূর্ণরূপে নিরস্ত্র করার জন্য রাশিয়া সর্বাত্বক সামরিক অভিযান শুরু করল।
রাশিয়ার এই সামরিক অভিযানের পরবর্তী দিনগুলোতে আমরা যে বিষয়টি দেখতে পাবো বা ঘটনার বিষয়ে যে দিকে মোড় নেবে বলে আমরা ধারণা করছি,

প্রথমত পশ্চিমারা সর্বাত্মকভাবে রাশিয়াকে বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বা আরোপ করা শুরু করেছে। এই প্রথম রাশিয়ার কোন প্রেসিডেন্ট পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়ল। পশ্চিমারা পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দ্বিতীয়ত বিষয়টি বহুল আলোচিত নর্ড স্টিম টু গ্যাস পাইপলাইনের ভবিষ্যৎ অনেকটাই অন্ধকারে। যারফলে ইউরোপ কিছুটা বিশ্ববাজারে জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে এবং বিশ্ববাজারে তেল ও গ্যাসের দাম ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্যদিকে জাতিসংঘে রাশিয়ার যে ভাবমূর্তি ছিল তা কিছুটা হলেও ক্ষুন্ন হয়েছে এই অভিযানের ফলে।

children-of-war-gb44adfce7_1920.jpg

Image Source

অন্যদিকে এই সামরিক অভিযানের ফলে ইউক্রেন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এই অভিযানে অসংখ্য বেসামরিক লোক মারা যাবে, সেই সাথে গৃহহারা হচ্ছে লক্ষ মানুষ, ইতিমধ্যে রোমানিয়া,পোল্যান্ডে তারা আশ্রয় নিয়েছে, অন্যদিকে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণে ইউক্রেন সামরিকভাবে একেবারে পঙ্গু হয়ে যাবে। এছাড়াও এরকম একটি যুদ্ধ অবস্থা পরিপেক্ষিতে ইউক্রেনে বিনিয়োগ অধিক হারে কমে যাবে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আধিপত্য বিরাজ করবে। রাজনৈতিকভাবে ভবিষ্যতে ইউক্রেন রাশিয়ার তাবেদারী বা পুতুল রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেবে। কেননা বর্তমান প্রেসিডেন্ট পশ্চিমাদের সহযোগিতা আশায় ছিল কিন্তু পশ্চিমাদের সহযোগিতা না পেয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট একেবারে একা হয়ে গেছে, যার ফলে পশ্চিমাদের উপর তার বিশ্বাস কিছুটা হলেও ভঙ্গ হয়েছে ।আমার মনে হয় রাশিয়া এই অভিযানের ফলে ইউক্রেনে নতুন কাউকে ক্ষমতায় বসাবে। যে হবে একে বাড়ে রাশিয়ার অনুগত।

Sort:  
 3 years ago 

আসলে যুদ্ধ মানেই মানবসভ্যতার ইতিহাসে ভয়াবহ বিপর্যয়। সামাজিক অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়া। বিশ্বের কোন প্রান্তে যুদ্ধ সংঘটিত হলে শুধু ওই জায়গার উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে না বরং সারা বিশ্বের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ে থাকে। তাই যুদ্ধবিরতির জন্য শান্তিপূর্ণ আলোচনা একান্ত প্রয়োজন। আপনার পোস্টটি পড়ে খুবই ভালো লেগেছে। এত সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

 3 years ago 

আপনি অনেক সুন্দর মন্তব্য করেছেন ভাইয়া আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

আমিও বিষয়টি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত।
মন থেকে আমিও উপরওলার কাছে খুব বেশি প্রার্থনা করছি এই যুদ্ধটা যাতে খুব বেশি দূর না গড়ায় কারণ অনেকেই এ ধরনের মন্তব্য করছেন যে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটা সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে । তাই উপরওলার কাছে সত্যিই প্রার্থনা করছি যেন প্রত্যেকটি মানুষকে আল্লাহ হেফাজত করেন। আপনার পোস্টটি অনেক সুন্দর ছিল অনেক কিছু গুছিয়ে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন এর জন্য শুভকামনা রইল।

 3 years ago 

ধন্যবাদ ভাইয়া পোস্ট মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।

সত্যি বিষয়টি জেনে অনেক খারাপ লেগেছে। যেদিন প্রথম শুনেছি যে রাশিয়ার মতো একটা বড় দেশ ইউক্রেন এর মত একটি ছোট দেশের ওপর হামলা চালায়। তখন সেটি তিনি অনেক খারাপ লাগছিল। তাই সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি যে খুব তাড়াতাড়ি যেন সমাধান একটা হয়। বিনা রক্তপাতে যেন সুস্থ একটা সমাধান হয়।

 3 years ago 

আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 years ago 

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি রাশিয়া অনুগত ছিল না বিধায় এই যুদ্ধ হচ্ছে আমার কাছে মনে হচ্ছে । কারণ রাশিয়া প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এমন একজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করেছিল তার আগে সে প্রেসিডেন্ট ইউক্রেনের হলেও রাশিয়ার অনুগত ছিল । এই যুদ্ধের কারণে অলরেডি তেলের বাজার সংকট দেখা দিয়েছে এবং তেলের দামের ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যাচ্ছে । কোন রাষ্ট্র চায়না যুদ্ধ । অবশ্যই তারা শান্তিতে থাকতে চায় । আমরাও চাই একটি সুন্দর মীমাংসার মাধ্যমে সকল নাগরিক তাদের স্বাধীনতা রক্ষা করে বসবাস করবে নিজ দেশে । খুব সুন্দর একটি বিষয় উপস্থাপন করেছেন আপু । ধন্যবাদ আপনাকে ❤️

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 62299.15
ETH 2428.96
USDT 1.00
SBD 2.65