আমার এলোমেলো জীবন (10% beneficiaries for @shy-fox)
কেমন আছেন সবাই? সবাই আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সামনে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যা আমার জীবন ,জীবনের কথা নিয়ে আসলে আমার জীবনটা কেমন বা আমাদের মেয়েদের জীবনটা কেমন । আমার পারিপার্শ্বিক জীবনটা কেমন ভাবে অতিবাহিত হচ্ছে তা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।
আমি নিজের সাথে লড়াই করে নিজের ইচ্ছায় সমস্ত বাধা উপেক্ষা করে টিকে আছি। প্রতিনিয়ত বাসা থেকে বিয়ের চাপ। বাসা থেকে ফোন আসলেই ভয় লাগে । সেই ভয় বাসায় যেতে ইচ্ছা করে না । পরিবারের মেয়ে বড় হলে বাবা-মার একটি দুশ্চিন্তা বাড়ে । অবশ্যই দুশ্চিন্তার কারণ আমরা নিজেরাই আমাদের প্রাত্যাহিক জীবন, অবাধ্য জীবন এর জন্য দায়ী ।সবাইকে এক সেটা আমি বলছিনা কিন্তু বাকিদের জন্য আমাদের এসব কথা শুনতে হয় । বাসা থেকে আম্মা ফোন করছে একদিন বলতেছে সত্যি করে একটা কথা বলবি তুই কি কারো সাথে রিলেশন করিস । বাসায় আসতে চাস না কেন। আমি বললাম মা আপনি কি আমাকে অবিশ্বাস করেন ? আমি বুঝতে পারছি আসলে তিনি বলতে না চাইলেও । আমি বললাম দেখেন আমি ছোটবেলা থেকে কেমন সেটা আপনি ভালো করেই জানেন ।আমি আমার লক্ষ্যে স্থির কিন্তু প্লিজ আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন । বাসায় প্রতিদিন বিয়ের খবর আসতেছে মন্দ না কিন্তু আমার পছন্দ না এখন বিয়ে করা। আর এটাই আমার জীবনের সবথেকে বড় বাধা'। আমি নারী আমার কি ইচ্ছার মূল্য নেই? কেন আমাকে ধরাবাধা সময় বিয়ে করতে হবে শুধু কি অন্যের জন্য অন্যের সুখের জন্য? আমি আমার বাংলা ব্লগে আসার আগ পর্যন্ত এতটা নিরবিচ্ছিন্ন জীবন কাটিয়েছি এতটা হতাশাই কাটিয়েছি যা আপনাদের বলে বুঝাতে পারব না । এই করোনাকালীন দুইটা বছর যখন বাসায় ছিলাম প্রতিটি মুহূর্ত আমার কেটেছে চোখের জলে কারণ আমি ভেবেছি আমি কি কখনো স্বপ্ন পূরণ করতে পারব না আর। বাসা থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের চাপ। একদিকে মামা খালা বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন মেয়েকে বিয়ে দেও মেয়েকে বিয়ে দাও বলতে বলতে পাগল করে দিতো । সেই চাপ এসে পরতো আমার উপর। একদিন বাসায় আমি অনেক রাগারাগি করেছিলাম বলেছি আমার বিয়ে নিয়ে তোমাদের এত ভাবতে হবে না একটা কথা আমি তোমাদের কত পরিষ্কার করে বলবো আমাকে একটু শান্তিতে থাকতে দাও আপনারা কেন বোঝেন না আমি কি চাই । আপনার একটু ধৈর্য ধরুন । আমি মাস্টার্স কমপ্লিট করি ছোটখাটো একটা জব করি তারপর তোমরা যা বলবে তাই করব। দুই বছর অনেক যন্ত্রণা বুকে ব্যথা নিয়ে আবারো জীবন যুদ্ধে ছুটে চলা ফিনিক্স পাখির মত চলে আসলাম ঢাকায় । আমি হয়তো আমার ভিতরের অনুভূতিগুলোকে আপনাদের সাথে ওই ভাবে প্রকাশ করতে পারতেছি না আসলে অনুভূতি কখনো প্রকাশ করা যায় না লেখাই। আমার মাস্টার্স কমপ্লিট হতে আরো দেড় থেকে দুই বছর লেগে যেতে পারে কারণ বিবিএ শেষ হওয়ার পরে আমাকে হয়তো ইন্টার্নি করতে হবে তারপর এক থেকে দেড় বছর লাগবে মাস্টার্স কমপ্লিট হতে আমি ভাবছি প্রতিনিয়ত ভাবছি এই দুইটা বছর কিভাবে যুদ্ধ করব আমি তো মানুষ আমারও তো ক্লান্ত আছে । আগে যখন বাসা থেকে টাকা নিতাম প্রতিবারই শুনতে হতো বিভিন্ন ধরনের কথা আসলেই কথাগুলো তাদের ছিল না ছিল আমাদের আশেপাশে মানুষ কথায় আছে না মায়ের থেকে পিসির দরদ বেশি সে রকম অবস্থা প্রতিনিয়ত আর আমার বাবা মায়ের কানে পানি ঢালত। তখন থেকে আমি পণ করি বাসা থেকে টাকা নিব না যদি কখনো আমার নিজের চলার পর বেঁচে যায় সেগুলো বাসায় পাঠাবো । এরপর থেকে প্রায় দুই বছর আমি টিউশন করে নিজের খরচ চালাই।
তারপর আমার নতুন এক পরিবারের সাথে যুক্ত হওয়া, নিজের ভালোলাগা অনুভূতিগুলো পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়া, দিনগুলো আমার ভালোই কাটছিল এখনো ভালোই কাটছে কিন্তু ওই যে বললাম জীবনের লড়াই এ লড়াই আমি ক্লান্ত সত্যিই অনেকটাই ক্লান্ত । মাঝে মাঝে সবকিছু ছেড়ে দিতে ইচ্ছা করে। আমাকে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠতে হয় কিছু পড়াশোনা করি ডিস্কোর্ড কিছু সময় দেই, ডিপার্টমেন্ট পড়া পড়ি, কিছু কমেন্ট করি,আর আমার প্রিয় শখ আর্ট করি । এরপর টিউশনিতে যাই সত্যি বলতে এখন নিজেকে নিয়ে ভাবার জন্য একটা ঘন্টা টাইম পাইনা । তবে আমি বেশ ক্লান্ত । আমি চেষ্টা করি যতটা সময় আপনাদের সাথে থাকতে পারি ততটাই আমি আমার নিজেকে ভুলে থাকতে পারি । আমার সেমিস্টার পরীক্ষা হচ্ছে আপনাদের সাথে হয়ত তেমন সময় দিতে পারতেছি না আর এই সময়টায় আমি খুব একা বোধ করছি কারণ কেননা একাকীত্ব আমাকে এমনভাবে চেপে ধরে খুব কষ্ট হয় এর শিকল ভেঙ্গে বেরোতে কেননা নারীরা আমরা শেকলবন্দি অবস্থায় অভ্যস্ত। আমাদের শিকল পরিয়ে রাখতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সবাই । যেন আমাদের পরিচয় মানুষ না নারী!
ধন্যবাদ
@abidatasnimora
এজন্যই আমাদের, দাদার এতো গুলো প্রচেষ্টা আপু।
আশা করছি আপনি জীবনের সর্বোচ্চ সফলতার চূড়াটা ছুঁতে পারবেন। ক্লান্তি কাটিয়ে একদিন মুক্ত আকাশের দেখা পাবেন। আর এই পরিবার সবসময় আছে আপনার পাশে। কখনো ভেঙ্গে পরবেন না।কারণ মনে রাখবেন আপনি নারী,আপনি সব পারেন। 😇😇
এ বিশ্বাস আছে আপু এই জন্যই তো আপনাদের সাথে থাকলে শান্তি পাই প্রশান্তি লাগে ।নিজের অসহায়ত্ব ছাপিয়ে সুখের খোঁজ পেয়েছি বলে মনে হয়।
নারীরা সামনের দিকে এগিয়ে যাক। আসলে আমাদের এই সমাজটা বড়ই অদ্ভুত সমাজ। যে সমাজে নারীদের কেউ মূল্যায়ন দিতে চাইনা। পরিবার থেকে যদি কেউ কিছুও না বলে পাশের বাড়ির আন্টি তো আছেই বলার জন্য।আমি আশা করি আপনাদের মত স্বাধীনচেতা এবং উদ্যমী নারীদের হাত ধরে আমাদের সমাজে এগিয়ে যাবে। সর্বোপুরি বলতে চাই আপনার উপস্থাপনা টি অসাধারণ ছিল। সামনের দিকে এগিয়ে যান আপু। অনেক অনেক শুভ কামনা রইলো ♥️♥️
একদম ঠিক বলছেন ভাইয়া ।ধন্যবাদ আপনাকে।
পোস্টটি পড়ে শরীরটা পোড়ে রিফ্রেশ হয়ে গেল। আপনার জীবন এত বিদ্রোহো এত চ্যালেঞ্জ আমি হয়তো পোস্টটি না পড়লে বুঝতে পারতাম না। পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আমি অনেক মোটিভেশন পেলাম অবশ্যই আমি আমার জীবনে এটি প্রয়োগ করে দেখব। অনেক গুছিয়ে আপনার জীবনের কথাগুলো লিখেছেন শুভকামনা রইল আপনার জন্য আশা করি ভবিষ্যতে ভালো কিছু করবেন ।
আপনার কমেন্ট টি পড়ে আমার ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে
সত্যি আপু আমাদের সমাজ এখনো নারীদের সফলতা দেখতে পারে না। এজন্যই আপনার মতো আরও অনেকে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। জীবনটা লড়াইয়ের। নিজের উপর বিশ্বাস রেখে লড়ে যান ইনশাআল্লাহ সফল হবে। কিছু না করলে কখনো সফলতার ধ্বনি শোনা যায় না। আপনার জন্য শুভকামনা।
এবং আমিও আপনার মতো মনের কথা শুনি। এবং আমার মন সবসময় আমার বিবেকেই অনুসরণ করে🙂🙂।
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমার পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।
আপনার সম্পূর্ণ লেখাটি পড়লাম। খুব ভালো লাগলো। আসলে আমাদের সমাজটা এমন যেখানে কারো ভালো কেউ দেখতে পারে না।তাই অন্যদের কথা শুনে নিজেকে কষ্ট দিবেন না।
ঠিক বলেছেন , সবসময় লেখার মাধ্যমে নিজের আবেগগুলোকে পুরোপুরি প্রকাশ করা যায় না।
আপনার ভাল লেগেছে শুনে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া ।সত্যিই বাস্তবতা খুব কঠিন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমি হতভম্ভ, আপনি এই বয়সে আপনার নিজের সাথে এতটা যুদ্ধে জড়িয়ে গেছেন, আমি যুদ্ধই বলবো, যুদ্ধ নয়তো কি? যেখানে নিজেকে একটু মুক্ত রাখতে নিজেকে একটু ভালো রাখতে এতকিছুর সম্মুখীন হতে হচ্ছে, যেখানে নিজেকে নিয়ে ভাব্বার মতো একটা ঘন্টা সময় পাওয়া যায় না, সেই জীবনকে যুদ্ধময় জীবনই বলে। একটা চিরন্তণ কথা আছে-পরিশ্রম কখনো বিফলে যায় না। আমি দোয়া করি মহান আল্লাহ তায়ালা আপনাকে আপনার সেরা টা উপহার দিবে। শুভকামনা রইলো আপু আপনার জন্য।
আপু বাস্তব কথা হচ্ছে এখনকার সময়ে। মেয়ে যদি একটু বড় হয়ে যায় বিয়ে দিয়ে দাও ছেলে যদি কিছু না করে তাহলে পড়াশোনা বাদ দিয়ে দাও। এখনই এটা চলছে। আসলেই বাস্তবতা মেনে নেয়া অনেক কঠিন। বিশেষ করে মেয়েদের স্বাধীনতা নাই বললেই চলে। যদি মনে করেন একটা মেয়ে যদি ফেল করে তাকে কিন্তু গ্রাম্য ক্ষেত্রে বেশিরভাগ বাড়িতে বিয়ে দিয়ে দেয় তারা কিন্তু মেয়ের মতামত নেয় না। মেয়ে কি করবে। ছোট না বড় নিজের মূল্য কোন প্রতিদান দেয় না। আসলে আপনি এত যুদ্ধ করে নিজের লক্ষ্য স্থির রেখে আপনি নিজের সাথে যুদ্ধ করে আপনি নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে যাচ্ছেন। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার সকল স্বপ্ন পূরণ করে দেয় আর আসলেই গল্পটি খুবই বেদনায়ক
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এভাবে পাশে থাকার জন্য।
প্রযুক্তির এই সর্বোচ্চ বিপ্লবে যেখানে নারী স্বাধীনতার বড় বড় বুলি শোনা যায় সেখানে এই বাস্তবতা জানান দেয় এটাই সভ্যতা।সত্যি আমি ব্যক্তিগত ভাবে ভীষণ লজ্জিত যে আমরা নারীকে শুধু নারী হিসেবেই দেখলাম মানুষ হিসেবে নয়।তবে আপনার অদম্য মনোবল আপনার অনিবার্য জয়ের পূর্বাভাস দেয়।লড়াই জারি থাকুক।
আপনাদের অনুপ্রেরণায় আমরা পথ চলার শক্তি পাই। ধন্যবাদ দাদা এতো সুন্দর করে বলার জন্য।
আপনাকে শুধু এটাই বলব আপনি আপনার সংগ্রাম চালিয়ে যান। আর বাবা মাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। আপনার সংগ্রামী জীবন এবং জীবন দর্শন জেনে খুব ভালো লাগলো।