আমরা কেমন শিক্ষিত! (10% beneficiaries for @shy-fox)
কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি সেই সাথে এই পরিবারের সবার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আজ আমি আমার চিন্তার কিছু বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আজ আমি হাফিজুল্লাহ ভাইয়ের একটি পোস্ট পড়ে তার উপর ভিত্তি করে আপনাদের সাথে আমার চিন্তা ভাবনা শেয়ার করব।আমরা অনেক সময় শিক্ষিত এবং সুশিক্ষিত লোকের মধ্যে পার্থক্য খুজে পাইনা। শিক্ষা অর্জনের মূল উদ্দেশ্য কি তা আজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের শিখাতে ভুলে গেছে। তারা আজ শুধু সার্টিফিকেট প্রদানের মেশিন হয়ে গেছে। আপনি স্কুল-কলেজে গেলেন পরীক্ষা দিলেন পাস করলেন সার্টিফিকেট নিয়ে আসলেন। আপনার গায়ে শিক্ষিত তকমা লেগে গেল। আপনার উদ্দেশ্য যদি হয় সার্টিফিকেট অর্জন তাহলে আপনার সম্পর্কে আমার কিছুই বলার নেই। সমাজে এমন অনেক মানুষ পাবেন যারা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে গিয়ে সংকীর্ণ কাজের সাথে লিপ্ত।
তাদের মনের শিক্ষার আলো প্রবেশ করতে পারেনি অন্ধকারকে ভেদ করে। তাহলে চলুন আমরা জেনে নেই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্যটা কি। আসলে শিক্ষা অর্জনের নির্দিষ্ট কোন উদ্দেশ্য নাই তবে সবকিছুরই প্রাথমিক ও সুনির্দিষ্ট কিছু দিক থাকে যা আপনাকে পরিপূর্ণ মানুষ রূপে তৈরি করবে। শিক্ষার আলোয় আলোকিত যদি হতে না পারেন তাহলে মনে করবেন আপনি কখনো শিক্ষা অর্জন করতে পারেননি। শুধুমাত্র দু-একটি কাগজ আপনার সম্বল। সেই কাগজের দাম হয়তো আপনি সাময়িকভাবে পাবেন কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা মূল্যহীন হয়ে পড়বে। শিক্ষা অর্জন যা আপনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করবে আপনাকে দেখলেই বোঝা যাবে আপনার ভেতরে শিক্ষার আলো আছে কিন্তু আফসোসের বিষয় আমাদের এই সমাজে শিক্ষিত শয়তান এর অভাব নেই। নিজেকে শিক্ষিত দাবি করে মানুষের অন্যায় করতে নিজেকে ব্যস্ত রাখে। সমাজের প্রতি দায়িত্ব নেই, কর্তব্য নেই কিন্তু সমাজকে কীভাবে শোষণ করে খাবে সে বিষয়গুলো তারা ভালোভাবে রপ্ত করতে শেখে।
তাই আমি বলবো শিক্ষা অর্জন করলেই শিক্ষিত হওয়া যায়না সুশিক্ষিত হতে হয়। যেমন মানুষের পেট থেকে জন্ম নিলেই মানুষ হওয়া যায়না। তাইতো বলি সুশিক্ষিত লোক হচ্ছে আসল শিক্ষায় শিক্ষিত। যে সুশিক্ষায় শিক্ষিত তার ভিতরে বিনয় থাকবে ,ভদ্রতা থাকবে , নম্র হবে । তার সাথে কথা বললে আপনি বুঝতে পারবেন সে কতটা শিক্ষার আলোয় আলোকিত। সে কখনো নিজের দাম্ভিকতা দেখাবেনা সে সব সময় তার দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেমন হাফিজুল্লাহ ভাইয়ের লেখায় দেখলাম তিনি যখন নৌ ভ্রমণে আসেন তখন তার পরিচিত বা অপরিচিত কিছু লোক চিপস খেয়ে নদীতে ফেলে দিয়েছে। নদী হচ্ছে আমাদের মা। নদীর গুরুত্ব সম্পর্কে যদি ওই ব্যক্তি জানতেন তাহলে তিনি কখনই সেই কাজ করতেন না। শুধু তিনি নন তাঁর মতো হাজারো লোক প্রতিদিন এই কাজ করছেন আবার তারা কিন্তু শিক্ষিত তাদের ঝুলিতে কারি কারি সার্টিফিকেট আছে। তাদের অনেকেই আবার সমাজে সম্মানিত। সমাজের উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত। কিন্তু মানুষের মনের আসলে তারা কখনো যেতে পারে না। আপনি সুশিক্ষিত আপনি কখনো অন্য মানুষকে ধমকের সুরে কথা বলবেন না। আপনার কথায় থাকবে মাধুর্য শত্রু হৃদয়কেও গলাতে পারবেন। কিন্তু শিক্ষিত শয়তান তারা সব সময় নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য সবকিছু করতে পারে তাদের কাছে পরিবার, সমাজ, দেশের কোন মূল্য নেই। আমরা যদি আমাদের সমাজকে পরিবেশকে বাঁচাতে না পারি সেই প্রভাব যে আমাদের উপর আসবে কিন্তু আমরা বর্তমানে অনেক প্রমাণ এই অবহেলার পাচ্ছি।
আমরা ভাবি আমি একটা কাজ করলাম। একজন কাজ করলে কি কোন ক্ষতি হবে। বাকিরা তো সবাই আছেই এই যে আপনি ভুল কাজ করলেন ঠিক আপনার মত লক্ষ লক্ষ লোক একই কাজে মনে করছে কিন্তু সব কিছু যখন এক হয় তখন বিশাল ক্ষতি হয়ে যায়। একটা গল্প পড়েছিলাম ছোটবেলায় যে রাজার খুব ইচ্ছা সে দুধ দিয়ে গোসল করবে। তিনি রাজ্যের সবাই কে দুধ নিয়ে আসতে বললেন।তখন প্রজারা ভাবছে আমি একজন দুধ না নিয়ে গেলে কি হবে বাকিরা তো সবাই নিয়ে যাবে কিন্তু দেখা গেল সবাই একই চিন্তা করে রাজার কাছে গেছে। তখন রাজা দেখে সবাই এসেছে কিন্তু দুধ কেউ নিয়ে আসেনি। ঠিক আমাদের সমাজের অবস্থান একই রকম কিছু লোক বলে আমি একা ভালো হয়ে কি হবে আর অন্য অংশে বলে আমি একজন খারাপ হলে কিভাবে বাকিরা তো ভালো এইযে ভালো এবং খারাপের দোলাচলে আমাদের সমাজ ও দেশের কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
আমাদের মন মানসিকতা পরিবর্তন করতে হবে আপনি যদি আপনার চিন্তা ভাবনা, মন মানসিকতা পরিবর্তন না করতে পারেন আপনি কখনোই জীবনের পরিবর্তন করতে পারবেন না। আপনি আপনার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করুন দেখবেন আপনার ভাগ্য পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমাদের শিক্ষিত মানুষেরা দেখা যায় সবসময় অন্যকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ব্যস্ত থাকে, কিভাবে অন্যের ভুল ধরে তাকে সবার সামনে লজ্জায় ফেলা যাবে সেই কাজে ব্যস্ত থাকে। আবার কেউ পরিশ্রম করে উপরে উঠছে তাকে টেনে কিভাবে নামানো যাবে সেই দিকে ব্যস্ত থাকে। এইসব লোককে শিক্ষিত বলবো না। অন্যদিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত তারা নিজেদের ভুল ধরতে ব্যস্ত থাকবে এবং নিজেদের ভুলগুলো শুধরাতে চেষ্টা করে । তারা সব সময় নিজেকে অন্যের মাঝে বিলিয়ে দিতে পছন্দ করে। অন্যের মাঝে বাঁচিয়ে থাকার মধ্যে যে সুখ যে তৃপ্তি তা কখনোই নিজের মাঝে থাকলে বোঝা যাবে না। আমাদের মানবিক হতে হবে আমাদের দায়িত্ব সচেতন হতে হবে তাহলেই একমাত্র শিক্ষার উদ্দেশ্য সফল হবে। আমরা মানুষকে চর্মচক্ষু দিয়ে বিবেচনা না করে অন্তর চক্ষু দিয়ে বিবেচনা করি তাহলে দেখবেন আপনার জীবনটা অনেক সহজ সরল হয়েছে।
আসুন আমাদের অন্তরে সকল কুলুষিত দূর করি, সকল ময়লা দূর করে একজন ভালো মানুষ হই। পরিবার, সমাজ ও দেশের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করি। নিজের মাঝে বেঁচে থাকার মধ্যে কোন সার্থকতা নেই। |
---|
ধন্যবাদ
![banner-abb23.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmb8iudwDiWcPoEeCL9ghCV5egjvdDiK7MicfoDPjaNLg4/banner-abb23.png)
![break.png](https://steemitimages.com/640x0/https://images.hive.blog/DQma7eDsaUxzt7EVhxxHm2ePVexWhgcEsgXRUqWRygQYFjW/break.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
খুব সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আজকে লিখেছেন আপু। আপনি ঠিকই বলেছেন শিক্ষা অর্জন করলেই শিক্ষিত হওয়া যায়না। এবং মানুষের পেট থেকে জন্ম নিলেই মানুষ হওয়া যায়না। মানুষের মতো মানুষ হতে গেলে আমাদের অবশ্যই সুশিক্ষিত হওয়া প্রয়োজন। আমাদের সমাজে আজ শিক্ষিত মানুষের অভাব নেই তবে তাদের মন মানসিকতা দেখলে মনেই হয় না তারা শিক্ষিত।
আজকের বিষয়বস্তু টা অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু 💕
আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য ধন্যবাদ আপু।
শিক্ষার মূর উদ্দেশ্য একজন সৎ যোগ্য ব্যক্তি তৈরি করা। যার দ্বারা দেশের কোনো উপকার না হলেও ক্ষতি হবেনা। কিন্তু আজকে আমাদের দেশ শিক্ষিতদের দ্বারাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন জিপিএ ৫ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ। দারুণ লিখেছেন আপু। সুন্দর ছিল উপস্থাপনাটা
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
শুভ কামনা রইল।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি আমরা যদি নিজেকে শিক্ষিত বলে দাবিকরি তাহলে অবশ্যই আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। মানসিকভাবে শিক্ষিত হতে হবে। তবেই আমরা প্রকৃত শিক্ষার আলো অর্জন করতে পারব। আপু আপনার লেখাগুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা আপনার লেখার মাঝে তুলে ধরার জন্য।
একদম ঠিক বলেছেন।ধন্যবাদ আপু।