📚📚আলোকিত মানুষ চাই-বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র📚📚 (১০%🦊🦊)

in আমার বাংলা ব্লগ2 years ago

কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আমি আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। অবশ্যই এটি আমাদের জাগতিক বিষয় নিয়ে, আমাদের জীবনকে কিভাবে আলোকিত করা যায় কিভাবে সত্যেরে অনুসন্ধান করা যায় তাই নিয়ে। সেই সাথে আমরা জানবো একজন স্বপ্নবাজ মানুষের কথা যিনি তার সারা জীবনের অর্ধেকটা সময় কাটিয়েছেন মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবে। তিনি তার যৌবন কাল কাটিয়েছেন স্বপ্ন দেখতে দেখতে অন্যের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার অগ্র যাত্রী হিসেবে। আমি বলছি আলোর পথ প্রদর্শক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ এর কথা যিনি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা।

20220516_185646_0000.png

siam,.png

আমাদের মাঝে সচেতন নাগরিক যারা আছেন তারা অবশ্যই আবদুল্লাহ আবু সায়ীদকে চেনেন এবং তার হাতে তৈরি করা একটি সামাজিক সংগঠন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের কোথাও নিশ্চয়ই জানেন। প্রায় চার দশক ধরে সারা বাংলাদেশ আলোকিত মানুষ গড়ার জন্য এই সামাজিক সংগঠন টি কাজ করে যাচ্ছে। যার মূল স্লোগান হচ্ছে-আলোকিত মানুষ চাই।
এই সংগঠনটি দিনরাত একাকার করে কাজ করে যাচ্ছে এ দেশের যুবক কিশোরদের জন্য। আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যুবকদের নিয়ে কাজ করছে। তাহলে বলতে পারেন কীভাবে এই সংগঠনটি কাজ করছে? বই, একমাত্র বই পারে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে আসতে। মানুষের আত্মার জাগরন ঘটাতে। আত্মার শুদ্ধতা না আসলে কখনো মানুষ আলোর পথে আসতে পারে না। মানুষ তার মনকে পবিত্র করতে পারেনা। তিনি গ্রন্থ পাঠের মধ্য দিয়েই মানুষের মুক্তির পথ, আলোর পথ খুঁজতে চেয়েছেন। একজন মানুষকে সৎ চিন্তা ভাবনার দিকে বেগবান করতে হলে, তার লক্ষ্য কে পূরণ করতে হলে অবশ্যই তাকে বই পড়ার দিকে ঝুঁকতে হবে।

20220516_154704.jpg

siam,.png

আর যে বই পড়তে জানে, সে কখনো পাপাচার করতে জানে না! সে কখনো অন্যের ক্ষতি করতে জানে না! সে কখনো অন্ধকারে আবদ্ধ থাকে না। যে বই পড়ে সে হয়ে ওঠে বিশাল বটবৃক্ষের মতো ।সে তার আশেপাশের মানুষদের আলোকিত করে তোলে। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একটি কথা বলেছিলেন মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়। এই লক্ষ্য নিয়েই তিনি সারাদেশে তার এই আলোকিত মানুষ গড়ার মহন কাজটি করে যাচ্ছেন। সারাদেশে প্রায় 17 লক্ষ শিক্ষার্থী এই আলোকিত মানুষ গড়ার সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত।

20220516_154659.jpg

siam,.png

আমি নিজেও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে একজন সদস্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমি যখন ভর্তি হই তখন একদিন আমার হলের সামনে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একটি গাড়ি দেখতে পাই। আমি আগে এই নাম শুনেছি তবে এর কার্যক্রম সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। পরে দেখলাম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য হতে একটি নির্দিষ্ট এমাউন্টের লাগে। আমি 200 টাকা দিয়ে প্রিমিয়াম সদস্য হয়েছিলাম।কারণ আমার প্রচুর বই পড়তে ইচ্ছা করে আর এত এত বই কিনে পড়া অসম্ভব। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সঙ্গে এত এত বই আছে যা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। সারা বিশ্বের নামকরা সকল লেখকের এর বই পাওয়া যায় যা হয়ত আমি কোনো লাইব্রেরীতে গিয়ে পাবনা। এত এত বই কিনে নিজের সংরক্ষণে রাখাটা অনেক কঠিন কারণ হলে থেকে প্রচুর বই হারিয়ে যায়। তখন নিজের সুবিধার কথা ভেবে আমি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য হলাম এবং নিয়মিত বই সংগ্রহ করে পড়া শুরু করলাম। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র সদস্যই আমি প্রায়ই একশোর মতো বই পড়েছি। যা আমার ব্যক্তি জীবনে অনেক তাই উপকারে এসেছে। এমন এমন বই পড়েছি যেগুলো পরে আমি ব্যক্তিগতভাবে কেনা পড়া অসম্ভব ছিল।

20220516_154625.jpg

siam,.png

শুধু আমি না আমার হলের অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বই সংগ্রহ করে পড়ে থাকেন। আজ যখন দুপুরবেলা ক্লাস শেষে বের হলাম দেখি আমাদের মল চত্বরে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের গাড়িটি দাড়িয়ে আছে। অনেকদিন হলো কনটেন্ট খরায় ভুগছিলাম। তাই হঠাৎ করে মনে হলো আমি তো আজ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র নিয়ে লিখতে পারি। তাই আর দেরি না করে চলে গেলাম গাড়ির কাছে।আসলে এই গাড়ির মাধ্যমে সারাদেশে সেবা দিয়ে থাকে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। প্রতি সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট সময়ে গাড়িটি আমাদের হলে আসে। পুরো মাস জুড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন হল ক্যাম্পাসে সেবা দিয়ে বেড়ায় এই গাড়িটি। সারা বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি গাড়ি আছে। আপনারা হয়তো আপনাদের জেলাতেও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের গাড়ি দেখে থাকবেন।

20220516_154611.jpg

siam,.png

গাড়ির ভিতরে ঢুকে আমি অনেক আবেগাপ্লুত হয়ে গেলাম কারণ বেশ খানিকটা সময় ধরে আমি এখান থেকে বই সংগ্রহ করি না। অনেক ব্যস্ততার কারণে আসলে আর হয়ে ওঠে না। যখন প্রথম বর্ষ থেকে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত পড়ে ছিলাম তখন বই পড়া হয়েছে কিন্তু এরপরে আর তেমন বই পড়া হয়নি। যাই হোক আপনারা যারা যারা বই পড়তে ইচ্ছুক তারা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে কম খরচে বই পড়তে পারবেন। বই আমাদের মানসিক দিকটাকে প্রশান্তি দেয়, জ্ঞানের জগৎটাকে আলোকিত করে।

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন সত্যি হয়ে উঠুক এই প্রত্যাশা করি।

Sort:  
 2 years ago 

আপনার পোস্টগুলো বরাবরই ব্যতিক্রমধর্মী। বাংলাদেশে আমার প্রিয় ব্যক্তিত্বের মধ্যে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার একজন। আমার মনে হয় বাংলাদেশে যদি উনার মত 100 মানুষ থাকতো তাহলে দেশটার চেহারাই পাল্টে যেত। আলোকিত মানুষ গড়ার এই কারিগর দীর্ঘজীবী হোন, সবার মধ্যে ছড়িয়ে যাক তার স্বপ্ন এটাই প্রত্যাশা সবসময়। বলতে গেলে সেই শুরু থেকেই আমি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য। একসময় বই পড়ার প্রচুর নেশা থাকলেও সময়ের অভাবে এখন আর তেমন একটা পড়া হয়না। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার সুন্দর এই পোষ্টটির জন্য।

 2 years ago 

আপনিও সদস্য শুনে খুবই খুশি হলাম ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

, একমাত্র বই পারে মানুষকে আলোর পথে নিয়ে আসতে। মানুষের আত্মার জাগরন ঘটাতে

একদম ঠিক বলেছেন আপু একমাত্র বই পারে মানুষের জ্ঞানের প্রসারণ ঘটাতে । আমারও বই পড়তে খুবই ভালো লাগে তবে বই কিনে পড়া হয়না তেমন ,মোবাইলে অ্যাপস এর মধ্যে বই পড়া হয়ে থাকে । স্কুলে থাকতে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বাসটি একবার আমাদের স্কুলে গিয়েছিল আমি সদস্য হয়নি তবে সেখানে লাইব্রেরী ভিতরে ঢুকে অনেক বই দেখেছিলাম খুব ভালো লেগেছিল তখন । আবদুল্লাহ সাঈদ স্যারের জন্য দোয়া রইল । উনি যেন জ্ঞানের আলো সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারেন সেই প্রত্যাশাই করি । আপনাকেও ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য ❤️

 2 years ago 

আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার আমাদের সবার প্রিয় ব্যক্তিত্ব ।আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 2 years ago 

বই পড়লে মানুষের জ্ঞেনের পরিসীমা আরও বৃদ্ধি পায়। ভ্রাম্রমান লাইব্রেরীর মাধ্যমে আমরা অনেক ভাল ভাল বই পড়তে পারি এর সদস্য হয়ে। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যার এর আলোকিত মানুষ গড়ার স্বপ্ন সত্যি হয়ে উঠুক আমরাও এই প্রত্যাশাই করি। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে

 2 years ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন বই পড়লে আমাদের জ্ঞানের পরিসীমা বৃদ্ধি পায়। শুভকামনা রইল।

এই মহান মানুষটিকে নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবেদন এর আগেও টিভিতে দেখেছি। আজকে আপনার লেখা পড়তে পড়তে আর একটা বার তাকে জানলাম। আসলে আপু আপনি যা যা কথা তুলে ধরেছেন এর চাইতে মূল্যবান কথা আর কি আছে!! বই আমাদের জীবনের পরম বন্ধু। সকল বিপদে যে পাশে থাকতে প্রস্তুত। আমাদের সকলের উচিত জ্ঞানের আলোয় নিজেদের আলোকিত করে পুরো পৃথিবীটাকে উদ্ভাসিত করে তোলা। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এই গাড়িটি আমি নিজেও অনেক কয়েকবার দেখেছি। বিশ্বাস করুন আপু যতবার দেখি ততবার এই মহান মানুষটির প্রতি শ্রদ্ধাবোধ অনেক বেড়ে যায়। এমন ভালো মানুষ দের জন্যই হয়তো এখনো আমরা ভালো কিছুর প্রত্যাশা করি।

 2 years ago 

আপনি একদম ঠিক বলেছেন এই মানুষটির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আজীবন থাকবে। উনি অসাধারণ কাজ করে যাচ্ছেন দেশ ও জাতির জন্য। এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 64258.81
ETH 2772.25
USDT 1.00
SBD 2.65