ভালো থাকা নিয়ে আমার ভাবনা শেষ পর্ব (১০ ভাগ প্রিয় লাজুক খ্যাঁকের জন্য)
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। গতকাল আমি আপনাদের সাথে ভালো থাকার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলাম। সেটা ছিল আমার প্রথম পর্ব আজ আমি আপনাদের সাথে শেষ পর্ব নিয়ে আলোচনা করব। আসলে ব্যক্তিজীবনে ভালো থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে সুস্থ থাকা আমাদের জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। মন ভালো থাকলে সব ভালো থাকে ।কিন্তু এই ভালো থাকাটাই যেন আমাদের জন্য খুব কঠিন হয়ে উঠেছে । ভালো থাকার জন্য আমাদের কত আয়োজন কিন্তু তবুও ভালো থাকতে পারছি না। সবাই প্রত্যাহিক জীবনে কিছু কিছু ভুল করে থাকি তার কারণে হয়তোবা মানসিকভাবে প্রশান্তি লাভ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। ছোট ছোট বিষয়গুলোই মানসিকভাবে চাপে রাখে আমাদের। তবে দেখি বিষয়গুলো কি।
আমরা অনেকেই মনে করি যে আমাদের জীবনটা কিভাবে গড়ে তোলা উচিত? প্রত্যাহিক চিন্তায় মশগুল হয়ে থাকি আমরা। জীবনের অর্থ খুঁজে পাইনা, সামনে এখন আর কোন পথ দেখিনা। সেই ক্ষেত্রে আমরা পৃথিবীর সকল মনীষীদের জীবনী পড়তে পারি। তারা তাদের প্রত্যেক জীবন কাজকর্ম কিভাবে করেছেন সেগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিতে পারি। তারা কিভাবে পরিশ্রম করেছে এবং তার পেছনে লেগে থেকেছে সেসব বিষয়ে খুটিনাটি বিষয় জানতে পারি। তখন দেখবো আমরা কিছু না কিছু পথ বেই হবেই। সেই পথ ধরে এগিয়ে চললে অবশ্যই আমরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবো।
আমাদের এখানে ভালো না থাকার আরেকটি অন্যতম কারণ হচ্ছে অকারনে দুশ্চিন্তা। সামান্য বিষয় নিয়ে প্রচুর দুশ্চিন্তা করে। চিন্তা আমাদের মানসিকভাবে ভীষণ দুর্বল করে দেয়। আমাদের কর্মক্ষমতাকে নষ্ট করে ফেলে। আমাদের উচিত যে বিষয়গুলো আমাদের ভালো থাকতে দেয় না, যে বিষয়গুলো ভাবলে কষ্ট লাগে সেসব বিষয়কে ইগনোর করা। সেই সব দিকে আমাদের না ঢোকাই সব থেকে বেশি ভালো হবে। আমি যখন এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছিলাম তখন পরীক্ষা দিয়ে আমি বাসায় এসে হঠাৎ মনে হলো আমি মনে হয় সাবজেক্ট কোড এর জায়গায় অন্য একটি সাবজেক্ট এর কোড বসিয়েছি। এই যে আমার মনে একটি সন্দেহ শুরু হল এই সন্দেহ টুকু এইচএসসি রেজাল্ট না হওয়া পর্যন্ত আমার মনে ছিল।যখনই মনে পড়ত আমি অস্থির হয়ে যেতাম মনে হয়েছিল যেন আমি আর পাশ করতে পারব না। আমার সাবজেক্ট কোড ভুল হয়েছে। আসলে আমি ভুল করিনি রেজাল্ট হওয়ার পর দেখি আমার কোন সমস্যা হয় নাই কিন্তু এই যে দীর্ঘ সময় আমি এ বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করেছি, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলাম।যা মোটেও উচিত হয়নি। অনেকেরই এই সমস্যা দেই। অনেক দেখবেন ঘরে তালা দিয়ে অনেক দূর আসারপর মনে মনে ভাবে আমি মনে হয় তালা ভালো করে টিপ দেইনি তালা হয়ত লাগেই। তখন সে আবার এসে দেখে নিশ্চিত হয়। তাই আমাদের অযথা কোনো বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা করা উচিত নয় ।তাহলে দেখব আমরা মানসিকভাবে অনেক ভালো থাকতে পারবো।
আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে অনেক ঘটনাই ঘটে থাকে কোন ঘটনা প্রাসঙ্গিক কোনোটা অপ্রাসঙ্গিক। কিন্তু আমাদের সব ঘটনাই মনে রাখা যাবেনা। সবকিছুকে সমান গুরুত্ব দেওয়া যাবে না। আমাদের মাঝে অনেকেই আছে দেখবেন ছোট ছোট বিষয়গুলোকে এত বেশি গুরুত্ব দেয় যা আসলে অতটা পাওয়ার যোগ্য ছিল না। আমাদের অবশ্যই সব বিষয়ে সমান গুরুত্ব দেয়া উচিত নয় তাতে হিতে বিপরীত হতে পারে। জীবনে একটা বিষয় দারুণভাবে খুঁজে বের করতে হবে যে কোন বিষয়টি আমাদের জীবনের গুরুত্ব বহন করে। অন্য কোনো বিষয়কে গুরুত্ব না দেওয়াই উচিত। আমাদের চলার পথে এত এত ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে যে সবগুলোকে গুরুত্ব দিতে গেলে আমরা কখনোই সামনের দিকে পা বাড়াতে পারব না। আমাদের ভালোর জন্য, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য কোন নিজেকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
আমাদের ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের সবচেয়ে বড় বাধা বলে আমি যদি মনে করি তা হচ্ছে দৈনন্দিন কাজকর্ম কে রুটিনমাফিক না করা। আমরা প্রতিদিন অনেক কাজ করছি কিন্তু এই কাজের কোনো নিয়ম কানুন নেই ।কখন ঘুমাচ্ছি কখন উঠতেছি তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই ।ধারাবাহিক ভাবে কাজ করি না ।যার ফলে কোনো কাজ শুরু করলে কয়েকদিন পর আর করা হয় না ওই কাজ । এই জন্য আমাদের অবশ্যই প্রতিদিনের কাজ গুলো একটি রুটিনের মধ্যে আনতে হবে এবং ধারাবাহিকভাবে একের পর এক কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে এবং এই ভাবেই প্রতিটা দিন অতিবাহিত করতে হবে তখন আমরা দেখতে পারবো খুব সহজেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেছি। নিজেকে ভালো রাখার জন্য, ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার জন্য আমাদের অবশ্যই দৈনন্দিন কাজ সময়মতো করতে হবে তাহলে আমাদের মন মানসিকতা ভালো থাকবে। আমরা ভালো কিছু করব।
শেষে আমি যে কথাটি বলবো তা হচ্ছে আমরা প্রতিটা কাজই যে আমাদের সফল হতে হবে এটা একান্ত ভুল একটি ধারণা। অনেকে মনে করে যে সে যে কাজ করবে সেই কাজেই তাকে সফল করতে হবে। যখনই সে সফল হতে পারবেনা তখন মনে হবে আমি ব্যর্থ হলাম আমাকে দিয়ে আর হবে না। আপনাকে পরাজয় বরণ করার মতো সাহস থাকতে হবে। যে পরাজয় মেনে নিতে পারে না সে জয়ের স্বাদ কখনো তৃপ্তির সাথে উপলব্ধি করতে পারে না। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি কাজ 100 পার্সেন্ট সঠিক হবে সে চিন্তা থেকে বের হয়ে আসা।আমাদের কাজে ভুল হতেই পারে এটা স্বাভাবিক। ভুলকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিলেই আমরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারবো।
আমরা যদি এই ছোট-ছোট বিষয়গুলোকে মেনে চলি দেখব আমরা অনেক ভালো আছি।
ধন্যবাদ



আপনার লেখা "ভালো থাকা নিয়ে আমার ভাবনা " গল্পটিতে অনেক কিছুই শেয়ার করেছেন যা অনেক ভালো লাগলো পরে।
এই কথাটি অনেক ভালো বলেছেন। প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন না করলে সেটা এক সময় অনেক বড় বোঝা হিসেবে সামনে দাড়ায়।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। শুভেচ্ছা রইল আপনার জন্য
আপনি খুব সুন্দর মন্তব্য করেছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
রুটিনমাফিক কোন কাজ করলে সে কাজের সফলতা খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায়। আমাদের অগোছালো জীবনটাকে সুন্দর করে সাজাতে হলে পরিকল্পনার কোন বিকল্প নেই। আপনি অনেক সুন্দর করে আমাদের বিষয়টি শেয়ার করেছেন যা সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে আমার কাছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জ্বী আমাদের উচিত রুটিন মাফিক দিন অতিবাহিত করা। আপনার মন্তব্যর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপু ভালো থাকা বিষয়ক আপনার পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আমরা অনেক সময় চাইলেও দুশ্চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না। আপনার মত পরীক্ষা দিয়ে এই দুশ্চিন্তা বোধ হয় বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীই করে থাকে। তারপরেও ভালো থাকার অন্যতম শর্ত হচ্ছে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা। সুন্দর এই পোস্টটি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার ভালো লাগলো শুনে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকা নিয়ে আপনার ভাবনার শেষ পর্বটা পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম।আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।