আমাদের সবার মাঝে একটি কথা প্রচলিত আছে যে যায় বছর ভালো আসে বছর খারাপ অর্থাৎ আমরা যে বছর অতিবাহিত করি আমার সঠিক মনে করি। ভালো একটি বছর চলে গেল এবং আগামী বছর টা কেমন হবে সে প্রত্যাশা করি। আমাদের সবার জীবন থেকে একটি বছর কমে গেল। এ বছরটিতে আমার জীবনে পাওয়া না পাওয়া বিপদ আপদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আমি অনেক কিছু পেয়েছি আবার অনেক কিছু হারিয়েছি। তবে হারানোর থেকে পাওয়ার পাল্লাটাই আমার কাছে ভারী মনে হয়েছে। ২০২১ সালে অর্ধেকটা বছরজুড়ে পৃথিবীতে করোনা মহামারীতে দাপট দেখিয়েছে সেই দাপটে আমরা বিপর্যস্ত হয়ে ছিলাম। আমরা স্থবির হয়েছি, আমাদের জীবন থমকে দাড়িয়েছে। পুরো সময়টি আমার বাসায় ঘরবন্দি কেটেছে। কি নিষ্ঠুর অভিজ্ঞতা আমি অর্জন করেছি তা হয়তো আপনাদের বোঝাতে পারবো না। তবুও নিজেকে সামাল দিয়ে সব বিপদ আপদের মোকাবেলা করে সামনে চলেছি। আমি অগ্র-পথিক, আমি এক অভিযাত্রিক, যে কিনা তার জীবনকে নিজের মতো করে চালনা করতে চাই। ২০২১ এ আমি কী হারিয়েছি তা না বলে আমি কি পেয়েছি তা শেয়ার করব।

Image Source

আমার জীবনে সবথেকে বড় পাওয়া হচ্ছে আমি একটি পরিবার পেয়েছি। একটি ভালোবাসা জায়গা খুঁজে পেয়েছি। যেখানে সবাই একে অপরের প্রতি স্নেহ, সম্মান ,শ্রদ্ধা সংমিশ্রণে একসাথে পথে চলছি। একটি পরিবার যখন ভরসার জায়গা হয়ে ওঠে, বিশ্বাসের জায়গা হয়ে ওঠে, তখন আসলে চোখ বন্ধ করে পথে চলা যায়। আমি বলছি আমার ভালোবাসার জায়গা প্রিয় পরিবার আমার বাংলা ব্লগের কথা।২০২১ সালে এটি আমার জীবনে সবথেকে বড় পাওয়া । আমি কখনও কল্পনা করিনি এমন একটি পরিবারের সাথে আমি নিজেকে যুক্ত করতে পারব। এই পরিবারের সকল সদস্যদের ভালোবাসায় সিক্ত আমি। আমি সবাইকে খুব ভালোবাসি আন্তরিকতার সহিত। হয়তো ধর্মীয় কিছু কারণে, পারিবারিক বিধি-নিষেধের কারণে আপনাদের সাথে কথা বলতে পারিনা তবে আমি আপনাদের খুব মিস করি। আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে সবসময় আমি আমার পরিবারের পাশে থাকতে চাই আজীবন।

এই পরিবারের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমি আমার মাঝে সুপ্ত প্রতিভা, লুকিয়ে থাকা সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছি। আমি আমার শিক্ষাজীবনের 23 বছরে যা কিছু অর্জন করতে পারিনি যা কিছু শিখতে পারেনি তার অধিকাংশ কিছুই আমি শিখেছি এই পরিবার থেকে। এই পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতিভা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আমি প্রতিজ্ঞা করেছি নিজেকে প্রতিনিয়ত ছাড়িয়ে যাওয়ার। নিজের সৃজনশীলতাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার। নিজের ভালোলাগাকে নিজের সৃজনশীলতাকে অন্যের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ার মাঝে যে স্বার্থকতা আছে তা আর অন্য কোথাও নেই। এটাই আমি বিশ্বাস করি। এখানে যারা কাজ করে প্রতিটি সদস্য কি পরিমান পরিশ্রমই তা হয়তো না দেখলে বোঝা যাবে না সেই তুলনায় আমি কিছুই না।

Image Source

একটা মেয়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শেষ করার পর্যায়ে চলে যায় তখন পরিবার থেকে বিভিন্ন ধরনের চাপ সৃষ্টি হয় কিন্তু সে যদি স্বাবলম্বী হয়, টাকা উপার্জন করা শেখে তাহলে সেটাকে অন্তত কিছুটা হলেও দমাতে পারে। ঠিক আমার ক্ষেত্রে তাই হয়েছিল মাসে মাসে বাসা থেকে টাকা নেওয়া আমাদের লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। একটা টিউশন করতেছিলাম তা দিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করতে হত। আমি সব সময় ইউটিউবে ঘাটাঘাটি করতাম টেকনোলজি নিয়ে সবসময় ভাবতাম কিভাবে টাকা রোজগার করা যাবে। এইজন্য আমি বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্সিং বিষয়গুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে থাকি এমন এক পর্যায়ে আমি ব্লকচেইন সম্পর্কে ধারণা পেলাম। তখন তা নিয়ে একটু রিসার্চ করা শুরু করলাম ঠিক সেই মুহুর্তে আমার সামনে আমার স্বপ্ন পূরণ করার একমাত্র হাতিয়ার স্টিমিট । স্টিমিট সম্পর্কে আমার কৌতুহল বেড়েই চলছিল একটা ভিডিও দেখে আমি একাউন্ট খুলি।

অ্যাকাউন্ট খোলার পূর্বে আমি কয়বার ব্যর্থ হয়েছি তবে চেষ্টা ছাড়িনি তার ফলে অনেক কষ্ট আমি সফলতা পাই। তখন বিভিন্ন কমিউনিটি যখন সাবস্ক্রাইব করা হবে তখন আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি পায় এবং সাবস্ক্রাইব করি। বিভিন্ন নিয়ম পড়ি আগে কয়েক দিন। তারপর প্রথম আমি আমার ইন্ট্রো পোস্ট করি। প্রথমে আমি যখন পোস্ট করতে ছিলাম ভুল করে কোনো কমিউনিটিতে পোস্ট না পড়ে সরাসরি স্টিমিট এ পড়তো যার কারণে আমি সাপোর্ট পেতাম না। যাই হোক আমি এই পরিবারের সাথে যুক্ত হতে পেরে আমার জীবনে একটি পরিবর্তন আনার সুযোগ পেয়েছি। প্রথম যেদিন আমি এই প্ল্যাটফর্ম থেকে টাকা উইথড্র করলাম সেদিন যে কি পরিমান খুশি হয়েছি তা আপনাদের বুঝাতে পারব না। কেননা ঐ সময়টা আমার খুব ক্রাইসিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল না বাসা থেকে টাকা নিতে পারতাম, না টিউশনি করতে পারতাম। মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে কারণেই হয়তো আমি এই পরিবারের সাথে যুক্ত হতে পেরেছি এবং সেই থেকে নিয়মিত আপনাদের পাশে আছি এবং কাজ করে যাচ্ছি। এখান থেকে যা ইনকাম করি তা দিয়ে আমার সুন্দর স্বাচ্ছন্দে দিন কেটে যাচ্ছে এবং পরিবারের প্রয়োজনীয় অবদান রাখতে পারছি।

Image Source

এই জন্য আমি এই পরিবারের স্বপ্নদ্রষ্টা, এই পরিবারের অভিভাবক যার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে নব্য পৃথিবীর খোঁজে। আমাদের সবার প্রিয়, ভালোবাসার পাত্র সুখ দুঃখের সাথী ফ্যান্টম দাদাকে❤️❤️। দাদার প্রতি আমি অশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি তিনি যেভাবে আমাদের পাশে আছেন এইভাবে যেন সব সময় থাকেন। দাদা আমাদের সকল ভুল ত্রুটি ক্ষমা করে দেন যেমনটা একজন পরিবারের অভিভাবক করে থাকেন। আপনার প্রতি শ্রদ্ধা কখনো কমবে না।

২০২২ সালে আমি আমার জীবনের লক্ষ্য এমনভাবে স্থির করতে চাই যে, পথে যদি সকল বাধা একসাথে আসে তবে জন্য আমি মোকাবেলা করতে পারি। আল্লাহতালা যেন আমাকে সেই সামর্থ্য টুকু দেয় অন্তত। এই বছরে যত বিপদ আপদ আসুক না কেন সবকিছুই আমি মাথা পেতে নিব কিন্তু ধর্য্য হারাবো না। আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে আমি এই বছর নিজের করা টার্গেট যেভাবেই হোক পূরণ করবোই। এতে যদি আমার জীবনে ঝুঁকি আসে তবে তবুও মেনে নিতে আমি রাজি। আমরা যদি আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিতে না পারি তাহলে সফলতাও কখন যে আমাদের ধরা দেবে না। এই বছর আমাদের জীবন যেন সাফল্যমন্ডিত হয় ।আমরা যেন আমাদের লক্ষ্যের পথে একধাপ এগিয়ে যেতে পারি। অমাবস্যার অন্ধকার কাটিয়ে এক রৌদ্রোজ্জ্বল দিনের অপেক্ষা করছি আমি ।যে দিনটিতে আমি কাব্য লিখব ,আমি আমার মতো করে গল্প লিখব ,যে দিনটি হবে শুধু আমার, আমার একার। আমি আমার মতো করে ভালোবাসার গল্প বলবো।