বিষাক্ত সমাজ (10% beneficiaries for @shy-fox)
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভাল আছেন। আমার বাংলা ব্লগ পরিবার সকল সদস্যদের সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। পৃথিবী একটি রঙ্গমঞ্চ। সেই রঙ্গমঞ্চকে কেন্দ্র করে কত ধরনের খেলায় মানুষ মেতে ওঠে তা আমরা কখনো ভাবতে পারি না। অন্যসব খেলাধুলার মধ্যে মানুষ যখন কোন খেলায় মেতে ওঠে তা হয়ে ওঠে এক নিষ্ঠুর। তখন আপনি মানুষকে অন্য কোন প্রাণী থেকে আলাদা করতে পারবেন না বনের সব থেকে হিংস্র প্রাণী কেউ তখন তারা হার মানায়। আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না তারা নিচে নামতে নামতে এতটা নিচে নামে আপন ভাই, আপন বাবার মাংস খেতে কখনো কুণ্ঠাবোধ করে না। অথচ বনের পশু কখনোই কিন্তু স্বজাতির মাংস খায় না। শুধু মানুষকেই পাবেন যারা সব সময় স্বজাতির রক্তমাংস চুষে খেতে ব্যস্ত।
আপনারা ভাবতে পারেন হঠাৎ আজ আমি এসব কথা কেন বলছি বেশ কিছুদিন ধরে আমার বাসার আশেপাশে কিছু ঘটনা আমি পর্যবেক্ষণ করছি এমন কিছু ঘটনা যা আপনাকে কখনো মানুষ হিসাবে ভাবতে দেবেনা। আমরা সমাজে বসবাস করি কেন বা সমাজে বসবাস করে উদ্দেশ্যটা কি? বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীরা সমাজের বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা দিয়ে গেছেন। বা আমাদের ধর্মেও মানুষকে সবসময় দলবদ্ধভাবে বসবাস করার কথা বলেছে। আমরা যখন সমাজে বসবাস করবো তখন অবশ্যই আমাদের প্রতিবেশীর ভালো-মন্দ সবকিছু আমাদের উপরই বর্তাবে। আপনার প্রতিবেশী সব সময় ভালো থাকবে তা তো না তাদের কিছু খারাপ সময় আসতে পারে। যেমনটা আপনার আমার আসতে পারে। আদিমকালে যখন মানুষ বন জঙ্গলে বসবাস করত তারা বিভিন্ন ধরনের বিপদ আপদে পড়তো তারা বনের পশুর মতো জীবন যাপন করত। নিজেরা যখন বিপদে পড়ত নিজেকে উদ্ধার করতে পারত না কিন্তু একটা পর্যায়ে যখন তারা দেখল এই ভাবে জীবন যাপন করা যায়না তখন তারা দলবদ্ধভাবে বসবাস শুরু করল এবং নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করল।
সেই জন্য বলা হয় যে সমাজে বসবাস করে না সে দেবতা নয়তো পরশু। তাহলে আমরা এখনো সমাজে বসবাস করে কেন পশুর মত আচরণ করছি। এই সমাযে দূষিত মানুষের ভরপুর যারা কখনোই তার পাশের মানুষটিকে ধ্বংস করতে পিছুপা হয়না। অথচ আমাদের একে অপরের সবসময় কল্যাণ কামনার করা কত ছিল। প্রতিবেশী বিপদ দেখলে রক্তচোষা হায়নার মত তাকে ছিঁড়ে খাওয়ার জন্য নয় বরং তার ক্ষত যেন আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাময় করতে পারি সেটাই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ দেখলে খুব কষ্ট লাগে নিজের প্রতি বিতৃষ্ণা চলে আসে হায়রে মানুষ! সমাজের প্রতিটি কোনায় কোনায় বিষাক্ত রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। যে রক্তে কখনো মনুষত্ব জাগে না যে হৃদয় কখনো মানুষের প্রতি ন্যূনতম সহমর্মিতা জাগেনা।সেই হৃদয় আর যাই হোক কখনো মানুষের হৃদয় হতে পারে না।
সমাজে এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যখন একজন গরীব অসহায় ছেলে তার বাবা-মায়ের দিনরাত পরিশ্রম করা উপার্জনের মধ্য দিয়ে কষ্ট করে এক বেলা না খেয়ে পড়াশোনা করছে ভালো কোথাও ভর্তি হচ্ছে কিন্তু এই সমাজের মানুষ নামের পশু গুলো তাদেরকে নিচে নামানোর জন্য কত ধরনের চেষ্টা করছে আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। তাদের চিন্তা ভাবনা এমন আমার অনেক টাকা আছে, আমার অনেক সম্পত্তি আছে, আমার ছেলে যেহেতু ভালো কোথাও পড়তে পারছে না তাহলে একজন গরীব চাষাভুষার ছেলে যে কিনা আমার বাসায় কাজ করে খেয়েছে তার সন্তান কেন সমাজের উচ্চ আসনে যাবে ?তার সন্তান কেন উচ্চ শিক্ষা অর্জন করবে? এইসব চিন্তা ভাবনা করতে করতে তারা নিজেদের কতটা নিচে নামাচ্ছে তা হয়তো আপনি স্বচক্ষে না দেখলে, অনুভব না করলে কখনো বুঝতে পারবেন না।
আবার ভাগ্যের পরিক্রমায় দিনরাত পরিশ্রম এর ফলে একজন পরিশ্রমী ব্যক্তি যখন তার ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে সক্ষম হয় নিজের অবস্থান পরিবর্তন করার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকে। তখন সেই সমাজের কিছু রক্তচোষা হায়নারা তাকে ছিঁড়েছে খাওয়ার জন্য তার পিছু লাগে। তাকে কখনোই সমাজের বিত্তশালী হতে দেওয়া যাবে না তার অর্থবিত্ত কিভাবে ধ্বংস করা যায় সেইসব ছক আঁকতে ব্যস্ত থাকবে। তাদের একমাত্র চিন্তা থাকে যে কোনভাবেই হোক তাকে বিপদে ফেলে তার কষ্টের ফসল শেষ করা। তাকে এমন মারপ্যাঁচে ফেলে দিবে যেখান থেকে উঠে আসতে থাকে অনেক কষ্ট সহ্য করতে হবে আবার দেখা গেছে এমন হয়েছে কখনই সেই কুয়ো থেকে আর উঠতে পারেনি তবে ভাগ্য যদি সহায় হয় যত কুচক্রীমহল আসুক না কেন আপনাকে কখনো নিচে নামাতে পারবেন না যদি না সৃষ্টিকর্তা চাই। অন্যকে নিচে নামাতে নামাতে নিজেরা এত নিচে নামছে তবুও ক্লান্ত হয় না। নিজেরা কুয়াতে পড়ে থাকবে কিন্তু অন্যকে কুয়াতে না নামানো পর্যন্ত তাদের পেটের ভাত হজম হবে না।
এই সমাজে হাজারো দূষিত রক্ত বহনকারী মানুষের ভিড়ে একজন ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া বহু কষ্টের। আজ একজন ভালো মানুষ অনেক প্রয়োজন একটি সমাজের জন্য। একটি দেশের জন্য। কিন্তু রক্তচোষা হায়নারা যতটা সঙ্ঘবদ্ধ এই পৃথিবীতে ভালো মানুষ রা ততটাই ছন্নছাড়া। তা নিজেরা কখনো এক করতে পারেনা। আজ সমাজে মহানুভবতা, মনুষ্যত্ব, ন্যায় পরায়ণ মানুষের ভীষণ প্রয়োজন যারা সমাজের ক্ষতগুলোকে সারিয়ে তুলবে। যারা সমাজের কীট গুলোকে পরিষ্কার করে নতুন একটি বসবাসের জন্য সমাজ গড়ে তুলবে। যে সমাজে থাকবে না হিংসা বিদ্বেষ, থাকবে না কোনো দূষিত রক্ত। যে সমাজে থাকবেনা প্রতিবেশীর কান্না, গরিবের চোখের জল, সমাজে থাকবে শুধুমাত্র ভালোবাসা।,শ্রদ্ধাবোধ ।
ধন্যবাদ
![banner-abb23.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmb8iudwDiWcPoEeCL9ghCV5egjvdDiK7MicfoDPjaNLg4/banner-abb23.png)
![break.png](https://steemitimages.com/640x0/https://images.hive.blog/DQma7eDsaUxzt7EVhxxHm2ePVexWhgcEsgXRUqWRygQYFjW/break.png)
![standard_Discord_Zip.gif](https://steemitimages.com/0x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmTvJLqN77QCV9hFuEriEWmR4ZPVrcQmYeXC9CjixQi6Xq/standard_Discord_Zip.gif)
সমাজের মানুষকে পিছনে টেনে নামানোর অনেক লোক থাকে কিন্তু তাকে সামনে উৎসাহ দিয়ে উঠিয়ে দেওয়ার মতো কোনো লোক থাকে না। আমরা সেই সমাজে বাস করি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর একটা টপিক সুন্দরভাবে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। শুভ কামনা রইল।
বাস্তবতা আমাদেরকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যাচ্ছে কারন আমাদের মানসিকতা নিদারুণভাবে পরিবর্তন হয়েগেছে। সত্যি আমরা দিন দিন মনুষত্ব ত্যাগ করছি। খুব সুন্দর লিখেছেন। ধন্যবাদ
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ প্রিয় ভাইয়া।
আপনার লেখা বরাবরই যুক্তিসঙ্গত, যা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।আধুনিক যুগে মানুষের মধ্যে নীচু মনের বেশি বহিঃপ্রকাশ ঘটছে,যা মানুষকে
সংকীর্ণতার জগতে ঠেলে দিচ্ছে।মানুষের মনকে পরিবর্তন করতে হবে।ধন্যবাদ আপু।
ধন্যবাদ আপু আপনাকে।