অভিযোজন
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাঃ
এই লেখায় আপনাকে স্বাগতম।
বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করার সুবাদে জীববিজ্ঞান বইয়ে অভিযোজন বিষয়টির সাথে প্রথম পরিচিত হয়েছিলাম। অভিযোজন অর্থ টিকে থাকা বা প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া। এই অভিযোজন শব্দটি আকারে খুব ছোট হলেও এর পরিসর বৃহৎ।
অল্প কিছুতেই নেতিয়ে পড়া মনষ্য জাতির রোগ। মানুষ হিসেবে চলতে গেলে জীবনের যেকোনো মুহুর্তেই ডিপ্রেশন বা হতাশা আসতে পারে। হতাশাকে মোকাবিলা করতে হবে মনের প্রবল শক্তি দিয়ে।নিজেকে সামলিয়ে নিতে হবে এরকম প্রতিকুল অবস্থা থেকে।
পরিস্থিতি সব সময় আপনার/আমার অনুকূলে নাও থাকতে পারে। এসময় বিভিন্ন চিন্তাই ঘুরপাক খেতে পারে আমাদের মনের গহিনে। একটা মানুষের জীবনে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ঘটনা ঘটবে এটাই স্বাভাবিক।
পরিস্থিতি অনিশ্চিত,যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে।পরিস্থিতি যত খারাপই হোক না কেনো তাই বলে নেতিয়ে পড়লে চলবে না।সিনা টান করে দাড়িয়ে থাকতে হবে সেই প্রতিকূল পরিস্থিতির বিরুদ্ধে।
সুখ, দুঃখ,কষ্ট, হতাশা এসব মিলেই জীবন।খারাপ পরিস্থিতির স্থায়ীত্বকাল খুব কম সময়, অচিরেই কেটে যায়।আমাদের মাঝে অনেকেই যারা আছেন প্রচণ্ড আবেগপ্রবণ। সামান্য একটু হতাশায় প্রবলভাবে ভেঙে পড়ে।নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা।
এইতো ক'দিন আগে আমাদের এলাকার এক বন্ধুর বাবা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। হয়তোবা তিনি পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন, যার কারণে তার এই হতাশা বা ডিপ্রেশন। বেশিরভাগ সময়ই একজন মানুষ পারিপার্শ্বিক ব্যাপারে হতাশায় ভুগতে ভুগতে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
মানুষের জীবনে হতাশা, ছিলো ,আছে থাকবে। হতাশাকে সঙ্গী করেই পথ চলতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে সামনের দিকে।এসমাজে এমনও মানুষ আছে যাদের বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে ফিটফাট অথচ ভিতরে ভিতরে হতাশার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে দিনকে দিন। তবুও তারা দমিয়ে যায় নি, তাদের এমন প্রতিকূল পরিবেশকে মানিয়ে নিয়ে সিনা টান করে এখনো বেঁচে আছে।
মনে রাখবেন,আল্লাহ তায়ালার দেয়া এই জীবনের মূল্য অনেক। আমরা পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছি, হায়াত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ পৃথিবী আমাদের আশ্রয় দিচ্ছে এবং দিবে। পৃথিবী যেমনি দায়িত্ব নিয়ে আমাদের লালন পালন করেছে তেমনি এ পৃথিবীর প্রতিটি উপাদানের প্রতি আমাদেরও অনেক দায়িত্ব আছে৷ তাই আমাদের বাঁচতে হবে। হতাশাকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে অভিযোজন করতে হবে। যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে।
উদ্ভিদ যেমন প্রতিকুল পরিবেশে নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে নিজেকে বারবার অভিযেজিত করে, আমাদের মনুষ্যকুলেরও উচিৎ প্রতিকুল অবস্থায় নিজেদের মনোবল বাড়িয়ে নিজেদের অভিযোজিত করা।
আপনার বন্ধুর বাবার কথা শুনে সত্যিই মন থেকে অনেকটা ব্যথিত হলাম,নিজের সংগ্রামময় জীবনটাকে কাটিয়ে উটে জীবন যুদ্ধে হেরে গেলেন বৃদ্ধ বয়সে।
আমাদের সকলের উচিৎ আপনার পোষ্টটি থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবন সংগ্রামে এক লড়াকু সৈনিকের বেশে বেচে থাক।
#miwcc