পুরোনোটা শেষ,নতুন করে আবার শুরু
প্রিয় পাঠক/পাঠিকাঃ
আসসালামু আলাইকুম,কেমন আছেন সবাই...?আশা করি সবাই বরাবরের মতোই ভালো আছেন।আমিও ভালো আছি।কিছু কাজে ব্যস্ততার কারণে আমি কিছুদিন যাবৎ আমাদের এই কমিউনিটিতে পোস্ট এবং ডিসকোর্ডে একটিভ থাকতে ব্যর্থ হয়েছি।আমাকে ক্ষমা করে দিবেন,দয়া করে।অনেকদিন পর আমার নব আরেকটি লেখায় আপনাকে স্বাগতম।
উচ্চমাধ্যমিক শেষ করার পর ভার্সিটিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার জন্য দীর্ঘ ৩ মাস কোচিং করেছিলাম৷কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হলে দেখা গেলো আমার রেজাল্ট পয়েন্টের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে,মানে আমার রেজাল্ট খুবই খারাপ হয়েছে।এই রেজাল্ট নিয়ে সব ভার্সিটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করার যোগ্যতা ছিলোনা আমার।যেসব ভার্সিটিতে ভর্তি পরিক্ষা দেওয়ার সুযোগ ছিলো সেগুলোতে পরীক্ষা দিয়েছিলাম কিন্ত একটাতেও ভর্তির সুযোগ পাইনি।যাইহোক,রেজাল্ট ভালো না করতে পারলেও কেনো জানি পড়াশোনার প্রতি আমার ভক্তি সেই ছোটবেলা থেকেই।
বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে যখন ব্যর্থ হলাম তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো।এই সিদ্ধান্তটা একান্তই আমিই নিয়েছিলাম।বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা মানে আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের কাছে বিলাসিতা ছাড়া আর কিছু না।সাত পাঁচ না ভেবে পরিবারকে বলেই দিয়েছিলাম যে আমাকে একটা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে,তারাও তেমন কিছু না ভেবে উদ্যোগ নিলেন, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে।প্রথম প্রথম কিছু সেমিস্টার ভালোই চলেছিল,কিন্তু কিছুদিন পর দেখা দিতে শুরু করলো বিভিন্ন সমস্যার।
প্রত্যেক সেমিস্টারের আগে অনেকগুলো করে টাকা দিতে দিতে মা-বাবা হাপিয়ে উঠেছিল।মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষগুলোর অনেক সাধ থাকার পরেও সাধ্য থাকেনা।আমার সেমিস্টারের টাকার ব্যবস্থা করতে গিয়ে আমার পরিবারকে অনেক চড়াই-উতরাই পার করতে হয়েছে।অনেক সময় আমার প্রতি একটু বিরক্তি প্রকাশ করতো কিন্তু দিনশেষে তারাই আমার সব চাহিদা মিটিয়েছেন।গ্রাজুয়েশনের এই দীর্ঘ চার বছরে আমার বাবা-মা তাদের অর্জিত সকল অর্থ আমার উপর বিনিয়োগ করেছে কোনো সার্থ ছাড়াই।তারাই সব সময় আমার পাশে থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছেন।তাদের কারণেই হয়তো আমার এতদূর আসা সম্ভব হয়েছে।
কিছুদিন পূর্বে আমার গ্রাজুয়েশনের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে।আলহামদুলিল্লাহ আমার ফলাফল এবারে অনেক ভালো হয়েছে।পুরোনোটা শেষ, নতুন করে আবার শুরু করতে হবে।উচ্চ ডিগ্রি অর্জনের জন্য আবারও নতুন আরেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে।
আর সেজন্যই কয়েকদিন আগে গিয়েছিলাম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টে এমবিএ-তে আবেদন করার জন্য।এমবিএ এক বছরের কোর্স।জানিনা এবারের জার্নিটা কেমন হবে। ভালো কিছুর প্রত্যাশাই করছি।
এই পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে একটি বার্তা দিতে চাই;
দিনশেষে পরিবারের মানুষগুলোই আপন।বিশেষ করে বাবা-মা। তারা কোনো সার্থ ছাড়াই তাদের জীবনের সব অর্জন তাদের সন্তানদের উপর বিনিয়োগ করে। সর্বাস্থায় তাদের সন্তানদের কল্যাণে কাজ করে চলে। তাই সবাইকে বলতে চাই, আমার আপনার সাফল্যে যেনো এই মেহনতি মানুষগুলো আড়ালে পড়ে না যায়।তারা যেমনিভাবে আমাদের ছোটথেকে বড় করে এতদূর নিয়ে এসেছে তেমনিভাবে আমাদের উচিত তাদেরকে ঐভাবে আগলে রাখা যেমনটি তারা আমাদের আগলে রেখে এত বড় করছেন।
সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন মহান আল্লাহ তায়ালা যেন প্রত্যেক সন্তানকে প্রত্যেক পিতা-মাতার অনুগত থাকার তৌফিক দান করেন।
এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আমার জন্য দোয়া করবেন। ভালো থাকবেন সবাই।
আসলে পিতা-মাতার এমন নিঃস্বার্থ ভালোবাসা কখনোই ভোলার মত নয়। তারা আমাদেরকে তাদের কষ্টের টাকা আমাদের জন্য খরচ করে।
আপনি অনেক কষ্ট করে কোচিং করে সেই লেখাপড়া করেছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারদের অর্থের সমস্যা এটা আমাদেরও হচ্ছে। যেমনটি ভাবে আপনি বলেছেন সেমিস্টার এর টাকা দিতে হিমসিম ঠিক তেমনি আমাদের পরিবারও একই।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এমবিএ তে ভালো কিছু অর্জন করুন এই প্রত্যাশাই করি এবং অনেক অনেক দোয়া করি। পরিশেষে একটি কথাই বলি সকলের বাবা-মা এর ভালোবাসার সম্মান প্রদর্শন, আমাদের যেমন আগলে রেখেছে এমন ভাবে ভালবাসি। (ধন্যবাদ)
জাজাকাল্লাহ খাইরান