নৈশপ্রহরী

in Incredible India9 months ago

pexels-yan-stavchansky-4544919.jpgsrc
যেহেতু এখন আমি বাসায় আছি তাই বাসায় শুধু শুধু বসে না থেকে আমাদের দোকানে কিছু সময় দেওয়ার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে দোকানেও বসি৷ আমাদের দোকান শহরের মেইন রোডের পাশেই। আরেকটা কথা বলি, আটটি জেলার প্রবেশ দ্বার, আমার শহর। ঢাকা রংপুর হাইওয়ে রোড বয়ে চলেছে আমার শহরের উপর দিয়েই। যার কারণে এখানে বিভিন্ন জেলার মানুষের সমাগম হয়। তাই এখানে দিন রাত দুটো সময়েই প্রায় বহু মানুষের পদচারণা। আর এজন্যই আমরা বছরের ৩৬৫ দিনই দিন রাত ২৪ ঘন্টাই দোকান খোলা রাখি, বেচা কেনাও হয় মোটামুটি ভালো হয় কখনো কখনো ব্যতিক্রমও হয়৷

pexels-darya-sannikova-2927518.jpgsrc

আমাদের দোকানে যারা দায়িত্বে থাকেন। তারা পারিবারিক বিভিন্ন ঝামেলা হলে দোকানে আসেন না অনেক সময়৷ আর তখনই প্রয়োজন হয় আমাকে, যদি আমি বাসায় থাকি৷ আমাকেই তাদের খালি স্থানটা পূরণ করতে হয়৷ এসময় সারাদিন দোকানে থাকতে হয়, কখনও কখনও সারারাত।

গতদিন আমাদের দোকানের দায়িত্বে থাকা কাকা পারিবারিক যেকোনো সমস্যার কারণে রাতে দোকানে আসতে পারেন নি৷ আমরা যেহেতু দোকান বন্ধ করি না তাই সে রাতে কোনো উপায় না পেয়ে আমাকেই থাকতে হয়েছে দোকানে৷ এর বিনিময়ে কিছু পারিশ্রমিকও পেয়েছি। মানে উনি যা পেত আমিও সেটাই নিয়েছি।

pexels-kuanyu-huang-17507234.jpgsrc

যাইহোক, সারারাত দোকানে থাকার কারণে শরীরটায় বেশ ভালোই ক্লান্তি অনুভব করছিলাম। তাই দোকানে যিনি দিনে থাকবেন সকালে যেই মাত্র তিনি আসলেই সেইমাত্রই আমি তাকে দোকানের সে রাতের সম্পূর্ণ হিসেব ঠিকঠাক বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসলাম ঘুমানোর জন্য। সেদিনই যে প্রথম সারা রাত দোকানে থেকেছি তা কিন্তু নয়, এর আগেও বহুবার থাকতে হয়েছিল।

pexels-son-tung-tran-6746255.jpgsrc

বাসায় আসার পর হাত মুখ ধুয়ে হালকা ফ্রেশ হয়ে ছাদে উঠে পড়লাম কবুতরগুলোকে খাবার দেওয়ার জন্য। কবুতরগুলোকে খাবার ছিটিয়ে দিয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে ছিলাম কিছু সময়। এসময় লক্ষ্য করলাম হালকা রোদ ভালোই মিষ্টি লাগছিলো। কিছুক্ষণ রোদ উপভোগ করার পর নিচে নেমে হালকা নাস্তা করে প্রস্তুত হলাম ঘুমানোর জন্য৷ বিছানায় কেবল গা হেলান দিয়েছি সাথে সাথেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। দীর্ঘ ছয় সাত ঘন্টা ঘুমানোর পর জাগনা পেলাম। উঠে ফ্রেস হয়ে সন্ধ্যায় হালকা নাস্তা করে দোকানের দিকে এগিয়ে গেলাম। দোকানে গিয়ে কিছু কাজ করলাম। তবে সেদিন আর রাতে আমাকে দোকানে থাকতে হয়নি। কারণ, যিনি আগে দোকানে ছিলেন উনি এসেছেন৷

রাতে দোকানে থাকতে গিয়ে একটা জিনিস অনুধাবন করেছি সেটা হলো, রাতজাগা বিষয়টা আসলে অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তারমধ্যে সেটা যদি হয় শীতের রাত৷ নিজে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হলে আসলে অন্যের খারাপ পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হওয়া যায় না৷

যাইহোক, ওনি দোকানে বসার পর আগের রাতের বিক্রির হিসেব তাকে বুঝিয়ে দিয়ে বাসায় চলে এসেছিলাম।

Sort:  

আমি আপনাকে প্রথমেই বলতে চাই যে আপনার বিষয় বস্তু নির্বাচন করা গুলো অসাধারন হয়। আর আপনি বরাবরই ভালো কিছু জানাতে ইচ্ছুক বলে আমাদের সাথে এতো সুন্দর বিষয়বস্তু নির্বাচন করে পোস্ট শেয়ার করার।আর রাতে আমি এমনিতে দেরি করে ঘুমাই কিন্তু একদম না ঘুমিয়ে থাকতে পারি না আর আপনি একদম সঠিক কথা বলেছেন যে রাত জাগা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

আপনি আজ নিজের কাজকর্মের মাধ্যমে নৈশপ্রহরীদের নিয়ে সুন্দর লেখা প্রকাশ করেছেন। আপনার সারারাত দোকানে থাকতে নিশ্চয়ই অনেক কষ্ট হয়েছে।আমার এরকম কিছু স্মৃতি আছে,তবে সেটা রাতে থাকার না।
দুই ঈদের আগে আমাকে দোকানে পাঠাতো, তখন যা মেজাজ খারাপ হতো!
রাত জাগা নৈশপ্রহরীদের জীবন অনেক কঠিন। তাদের অনেক সংগ্রাম করে বেচে থাকা লাগে।
ধন্যবাদ আপনাকে।

Loading...
 9 months ago 

নেশা প্রহরী হওয়া ব্যাপারটা এত সহজ নয়। এটি বেশ কষ্টসাধ্য একটি চাকরি এটাই আপনি বোঝাতে চেয়েছেন। যদিও আপনি নিজের কাজটি সবসময় করেন না তবে প্রয়োজনে মাঝে মাঝে রাত জাগতে হয়। তখন আপনার অনেক কষ্ট হয় এবং বেশি কষ্ট হয় শীতের রাতে। গল্প আকারে হলেও আপনি একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন যে আমরা তো অনেকে নিশ্চিন্তে ঘুমাই। কিন্তু যারা আমাদের সবকিছু সচল রাখতে রাতভর জেগে থাকে তাদের অনেক কষ্ট
হয়। খুব ভালো লাগলো আপনার ব্যতিক্রমধর্মী এই লেখাটি পড়ে।

 9 months ago 

আপনাদের দোকান রয়েছে সেটা আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম।। আজ দোকানে যে রাতে থাকে তার সমস্যার জন্য আসতে পারিনি তাই আপনি সারারাত দোকানে থেকেছেন।।

রাত জাগলে শরীর এমনি অনেক বেশি ক্লান্ত হয় ভাই।। শুনে ভালো লাগলো রাত এমনি এমনি জাগেননি তার বিনিময়ে কিছু পেয়েছে।।

 9 months ago 

আমি লেখা পড়া শুরুর আগে ক্যাপশন দেখে ভেবেছিলাম যে, হয়তো নাইটগার্ডদের নিয়ে লিখেছেন। পরে দেখলাম এই নাইটগার্ড আসলে আপনিই।আপনাূদের দোকানে সারারাত ডিউটি করেছেন।
আসলে রাত জাগাটা বেশ পরিশ্রমের কাজ।অনেকবারই সারারাত জাগতে হয়েছে তাই জানি।
আপনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

এটা জেনে ভালো লাগলো যে আপনি পারিবারিক ব্যবসায় সক্রিয়ভাবে সাহায্য করছেন। পরপর দু'দিন যে আপনাকে রাত জাগতে হয়নি এটা একটা ভালো ব্যাপার। বিশেষ করে শীতের রাতে রাত জাগাটা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য আর দিনের পর দিন রাত জাগলে তা শরীরের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ভালো থাকবেন আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 9 months ago 

ভাই শুনে ভালো লাগলো যে আপনি আপনাদের দোকানে কিছুটা হলেও সময় দেন। এটা একটি ভালো দিক ভাই। দোকানে বসলে অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা হয়। বিভিন্ন মানুষের সাথে কথা হয়, তাদের আচার আচরণ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়। আর দোকানে বসলে মানুষের অভাব অনটনের দৃশ্যও স্পষ্ট হয়। অনেকে আছে টাকার অভাবে অনেক কিছুই কিনতে পারে না। তাদের দেখলে বোঝা যায় বাস্তব কতটা কঠিন এবং তাদের থেকেও শিক্ষা নেয়া যায়। মৃতব্যায়ী হওয়ার বিশেষ এক শিক্ষা পাওয়া যায়।

যাইহোক ভাই ভালো থাকবেন।

 9 months ago 

আপনি এখন বাড়িতে থাকায় দোকানে অনেকটা সময় দিচ্ছেন। পোস্ট করে জানতে পারলাম। আপনার শহর আটটি জেলা শহরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। তাই লোক সমাগম হরহামেসাই থাকে। আপনি রাতে দোকানে থেকেছেন। তাই। নৈশপ্রহরির কি কষ্ট তা অনুধাবন করতে পেরেছেন। খুব বাস্তব একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করেছে। ধন্যবাদ আপনাকে।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 61852.16
ETH 2402.53
USDT 1.00
SBD 2.60