শহর থেকে একটু দুরে
শহর থেকে একটু দূরে,গিয়েছিলাম একটু নিরালা সময় কাটানোর জন্য।যেখানে নেই কোনো যন্ত্রের অসহ্য তীব্র আওয়াজ,নেই আবর্জনার ভেপসা দুর্গন্ধ,যেখানকার বাতাস পুরোটাই বিশুদ্ধ,যেখানে চারদিকে ছিলো সবুজের সমারোহ।
এমনি এমনি সেখানে যাওয়ার সুযোগ ছিলো না, গিয়েছিলাম একটি কাজেই।আমার এক প্রিয় মানুষের এইচএসসি পরিক্ষার ফর্মফিলাপ করার লাস্ট ডেট ঘনিয়ে আসছিল,সময় শেষ হবে আর মাত্র কিছু দিন বাকি। আর তাই গতকাল মানে বৃহস্পতিবার সে তার কলেজে যাওয়ার সময় আমাকেও সাথে নিয়ে গিয়েছিল। যেহেতু ফর্মফিলাপের লাস্ট ডেট ঘনিয়ে আসছে সেজন্য প্রায় সব শিক্ষার্থী গতকাল এসেছিল ফর্মফিলাপ করার জন্য।
আমরা যখন কলেজে পৌছালাম তখন গিয়ে দেখলাম একবারে অনেক শিক্ষার্থীর উপস্থিতির কারণে লম্বা লাইন হয়ে গেছে,মানে প্রচন্ড ভীড়।এবার নিয়ম করেছে ফর্মফিলাপের টাকা অনলাইনে জমা দিতে হবে,আগে হাতে হাতেই নিতো।যাইহোক,পুরো কলেজ মিলে একটি মাত্র ভ্রাম্যমান কম্পিউটারের দোকান বসিয়েছে, যার কারনে প্রচন্ড ভীড়।।ভীড় ঠেলে সামনে গিয়ে লক্ষ্য করলাম, যিনি অনলাইনে টাকা জমা নিচ্ছেন তিনি আমার পূর্ব পরিচিত, চাইলেই পরিচিতির খাতির জমিয়ে আমি তার থেকে আলাদা সুবিধা নিতে পারতাম।
কিন্তু আমি কোনো রকম সুযোগ সুবিধা নেইনি।যদি নিতাম তবে আমি নিজের বিবেকের কাছে অপরাধী হয়ে যেতাম।কারণ, যারা আগে এসেছে তারাই অপেক্ষা করছে অনেক্ক্ষণ যাবৎ।তাই তাড়াহুড়ো না করে আমরাও অপেক্ষার প্রহর গুণতে শুরু করলাম।
যেহেতু কলেজ এরিয়াতে ছিলাম আমরা সেহেতু কলেজের আশপাশ ঘুরে দেখার সাধ জেগেছিল আমাদের মনে। কারণ,আমরা প্রতিদিন এরকম সময় পাই না বললেই চলে,বিভিন্ন কারণে আমরা দিনশেষে প্রচুর ব্যস্ত।যাইহোক, যেহেতু কম্পিউটারের দোকানে প্রচুর ভীড়,তাই আমরা কলেজের আশপাশ ঘুরে দেখার চেষ্টা করেছিলাম। কারণ,আমার প্রিয়জনের সিরিয়াল ছিলো একদম শেষের দিকে।
কলেজ মাঠ পেরিয়ে লক্ষ্য করলাম একটি মুদি দোকান, দোকানের সামনে মানুষজন বসার জন্য দোকান কতৃপক্ষ বাঁশ এবং সুপারি গাছ দ্বারা নির্মাণ করেছে একটি টঙ,আর টঙের উপরে ছিলো একটি বিশাল গাছ।এই বিশাল গাছের ছায়ায় কমবেশি সব বয়সের মানুষই এখানে আড্ডা জমায়।আমরা যখন সেখানে গিয়েছিলাম তখন ছিলো দুপুরের সময়, তাই হয়তো টঙটা ফাঁকাই ছিলো। আমরা সেখানে গিয়ে টঙে বসে,সেই মুদি দোকান থেকে আমাদের পছন্দমতো কয়েকটা আইটেম অর্ডার করেছি এবং খেয়েছিলাম।
টঙে বসেই কাটিয়ে দিয়েছি প্রায় ঘন্টা খানিক সময়। কারণ,সেখানকার প্রকৃতি এতটাই সুন্দর ছিলো যে,আমার মতো যে কেউই মুগ্ধ হতে বাধ্য সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করে।
src
শহর থেকে অনেকটা দূরে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একমাত্র লীলাভূমি গ্রামই।শহরের মানুষের জীবন হয়তো খুব উন্নত কিন্তু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে গ্রামই এগিয়ে। কারণ,গ্রামের বায়ু থেকে শুরু করে সব কিছুই বিশুদ্ধ।এমন বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আদলে থেকে গ্রামে বসবাসরত মানুষের রোগবালাইও কম হয়। শহুরে সৌন্দর্য যা আমরা দেখতে পাই তা সবই কৃত্রিম, বিপরীতে গ্রামের যে সৌন্দর্য তা সবই প্রাকৃতিক।
সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।
শহরে থাকতে থাকতে একঘেয়েমী কাটানোর জন্য গ্রামের বিশুদ্ধ বাতাসে ঘেুরে বেড়ানো এক অন্যরকম অনুভুতি।
ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মতামত প্রদান করার জন্য।
আসলেই ঠিক বলেছেন,, শহর থেকে খুব দূরে নিরিবিলি জায়গায়,, যদি কিছুটা সময় পার করা যায়। তার মত আনন্দ হয়তোবা আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না।
আপনি আজকে ওই টঙ্গে বসে বেশ খানিকটা সময় পার করেছেন। আসলে আমাদের বাড়ির পাশে এরকম একটা টঙ আছে। যেখানে বাড়ির সবাই মিলে আড্ডা দেয় আনন্দ করে। আসলে এই সময়টাই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জীবনে।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,,, আপনার জীবন থেকে খানিকটা সময় আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।