প্রকৃতির সৌন্দর্য্য। The Beauty of Nature.
আজ গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজের জন্য গুনোরি নামে একটা জায়গায় যেতে হবে এক দাদাদের বাড়িতে। যদিও গরমের মধ্যে বাড়ি থেকে বেরোতে আমার একটুও ইচ্ছে করে না। তবে আমি আগে কখনও যাই সেখানে, তাই ভাবলাম একটু ঘুরে আসা যাক। অপরিচিত জায়গা পরিচিত হয়ে যাবে।
সে উদ্দেশ্যেই আজ খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সঙ্গে স্নানটাও সেরে নিলাম। আমাদের লক্ষ্য আজই আবার বাড়িতে ফিরে আসবো তাই সকাল সকাল বেরোতেই হবে। কারন আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটাই দুরের পথ।
সকালের খাওয়া শেষ করে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হলাম। আমি আর আমার দাদা মোটরগাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে রওনা হলাম। আমাদের পৌঁছাতে প্রায় দুপুর হয়ে গেলো। গন্তব্যে পৌঁছাতে আমাদের মোট ৩ টা নদী পার হতে হয়েছিলো। এতদুর থেকে গিয়ে সত্যিই খুব ক্লান্ত লাগছিলো।
ওখানে পৌঁছনোর পর খুব ক্লান্ত অনুভব হওয়ার পরও বিশ্রাম নিতে ইচ্ছে করলো না। কারন আসার পথে প্রকৃতির এমন কিছু সৌন্দর্যের মাঝ দিয়ে এসেছি যেখানে না যাওয়া পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছিলাম না। তাই কোনো মতে একটু ফ্রেশ হয়ে সেখানে চলে গেলাম।
এটা হচ্ছে শিপসা নদী । আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়ত শিপসা নদীর নাম শুনে থাকবেন। এটা খুব ভয়ানক একটা নদী। প্রত্যেক বছরই অনেক নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটে এখানে। একেক নদীর বৈশিষ্ট্য একেক রকম হয়ে থাকে। কিছু কিছু নদী খুব শান্ত প্রকৃতির হয়ে থাকে আর কতকগুলো খুব অশান্ত হয়ে থাকে। সহজ কথায় বলতে গেলে শিপসা নদী পার হওয়ার কথা বললে যে কারোরই বুক কেপে উঠবে।
জীবনে একবারই শিপসা নদী পার হয়েছি সেটাও আবার প্রায় ৩ বছর আগে। এক কাকার বিয়েতে যাওয়ার সময় পার হয়েছিলাম। আজ ২য় বার এই নদীর কাছাকাছি আসলাম তবে আজ আর নদীর ওপারে যেতে হবে না। তাই নদীর পাড়ে বসে জলরাশীর ঢেউ এর সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম।
আমি আগেও বলেছি, আমার মামার বাড়ি নদী এলাকায় এজন্য ছোটবেলা থেকেই নদীর প্রতি এক অন্য রকম ভালোবাসা কাজ করে। শিপসা নদীতে এমন একটা জায়গা রয়েছে যেখানে এই নদীর সাথে আরও দুইটা নদী মিলিত হয়েছে।
গ্রাম্য ভাষায় সবাই তিন মোহনার মুখ বলে থাকে। বিশেষ করে এই জায়গাটা মাঝেমধ্যে অনেক বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। আবহাওয়া যদি একটু ঝড়ো প্রকৃতির হয় তাহলে তো কথাই নাই। যে কেউই নৌকা বা ইঞ্জিন চালিত টলারে করে এই জায়গা দিয়ে নদী পাড়ি দিতে ভয় পায়।
যারা এই নদীকে খুব কাছ থেকে দেখেছে তাদের মুখ থেকেই শুনেছি, যখন এ নদীতে তুফান ওঠে তখন অনেক উঁচু উচু তুফান আঁচড়ে পড়ে পাড়ে।
নদীর মায়া ছেড়ে এবার অন্য কথায় আসি। যদিও নদী আমার খুব প্রিয় তবে এটাও হার মেনে গিয়েছে প্রকৃতির অন্য রূপের কাছে।
নদীর পাশ দিয়ে রাস্তার দুপাশে এমন গাছের সারি, একবার শুধু কল্পনা করুন। যদিও কল্পনার থেকে বাস্তবে বেশি সুন্দর লাগে। যতদুর চোখ যায় শুধুই এই দৃশ্য। প্রকৃতি আসলেই অনেক সুন্দর। আহ! মন জুড়িয়ে যায়।
আজ আমি যেখানে অবস্থান করেছি এটা সুন্দরবনের খুব কাছাকাছি জায়গায়। সুন্দরবন তো সবাই চেনেন আশা করি। আমি যেখানে আছি সেখান থেকে শিপসা নদী পার হয়ে ওপার গেলেই সুন্দরবন। এখানে যারা বসবাস করেন তারা মাঝে মধ্যে বাঘ মামার দেখা পান।
সত্যি বলতে এই গরমের মাঝেও তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছিল না। গরমের তাপ খুব কমই অনুভব হচ্ছিলো। হয়ত গাছপালার পরিমান বেশি হওয়ার কারনে তাপমাত্রা অনেকটাই কম ছিলো। বেশ ছায়ায়ও ছিলো তাই এক অন্যরকম অনুভুতি হচ্ছিলো।
এত তীব্র গরমের আসল কারন হচ্ছে আমরা অনেক বেশি পরিমানে গাছপালা কেটে উজাড় করছি তবে সে তুলনায় বৃক্ষরোপণ খুব কমই করছি।
যদিও বর্তমানে প্রতিটা দেশের সরকার বৃক্ষরোপণের বিষয় নিয়ে জোরদার হচ্ছে। এই যে রাস্তার দুপাশে এত এত গাছপালা দেখছেন এগুলো কিন্তু এমনি এমনি হয়নি। বন বিভাগের দায়িত্বে থাকা সরকারি লোকজন লাগিয়েছে এসব। শুধু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেই হবে না, জনগন হিসাবে আমাদেরও সাধ্য মতো বৃক্ষ রোপন করতে হবে। হঠাৎই দুটো লাইন মাথায় আসলো--
আমাদেরও এগিয়ে আসা দরকার!
গুনোরী ও শিপসা নদী এই দুটো নামে আমার কাছে একদম নতুন। এগুলো কি খুলনাতে পরেছে?
তবে গুনহাটির রাস্তা ও শিপসা নদী দুটো দেখেই মুগ্ধ হয়েছি। দুইপাশে গাছে ঢাকা এরকম মায়া মাখানো রাস্তায় চলতে খুব ভালো লাগে। মনে হয় পথ যেন আর শেষ না হয়, চলতেই থাকুক।
সুন্দরবনের ভেতর আমি একবার গিয়েছিলাম। কয়রা না কি যেন নাম ছিলো জায়গাটার। বনের ভেতর দিয়ে রাস্তা চলে গেছে। একদম শেষে লেখা রয়েল বেঙ্গল টাইগার হতে সাবধন।আপনার লেখা পড়ে আজকে মনে পরে গেল।
আজনার লেখা পড়ে ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন সবসময়।
সত্যিই রাস্তাটা দেখলে মন ভরে যায়। এমন মনোরম পরিবেশে হাঁটতে হাটঁতে হয়ত চলে যাওয়া যায় বহুদুর। আমিও জীবনে প্রথমবার এই অঞ্চলে গিয়েছিলাম এবং জায়গাটার প্রেমে পড়ে গিয়েছি।
রাস্তা টা অনেক সুন্দর লাগলো মনে হয় যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে ৷ তার পাশাপাশি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এর কিছু বর্ণনাও তুলে ধরেছেন ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷
সত্যিই ভাই প্রাকৃতিক দৃশ্যের উপর আর কোন দৃশ্যই হতে পারে না। উপরওয়ালার যে সৃষ্টি এত সুন্দর তা বলে বোঝানোর মত নয়।
শিপসা নদীর ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর ছিল।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
হ্যা প্রকৃতি হলো সৃষ্টি কর্তার সৃষ্ট আশীর্বাদ যেটার সৌন্দর্যের সাথে কিছু তুলনা করা মুশকিল।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মতামত করার জন্য।