চাহিদা যত কম, সুখ তত বেশি!
সুখ!
সুখের কি বাস্তবিক কোনো সংগা রয়েছে?
আমি মনে করি, সুখের সংগা একেকজনের কাছে একেকরকম। কেউ বা অট্টালিকায় টাকার বিছানায় ঘুমানোকে সুখ মনে করে আবার কেউ পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে তিনবেলা পেট ভরে খেতে পেলেই নিজেকে পৃথিবীর সব থেকে সুখি ব্যক্তি মনে করে।
মনে প্রশ্ন জাগে, সবাই তো মানুষ তাহলে চিন্তা- ভাবনা, চাওয়া-পাওয়ায় কেন এত তফাত দেখা যায়? মানুষ যখন জন্মগ্রহণ করে তখন তো তার জ্ঞান বুদ্ধি থাকে না তাহলে বড় হওয়ার পর কেন ভিন্ন ভিন্ন প্রকৃতির হয়ে যায়? এর সঠিক উওরগুলো হয়ত কারোর জানা নেই!
কারোর হয়ত শহরের ইট পাথরের বড় বড় অট্টালিকা ভালো লাগে আবার কারোর গ্রামের মেঠোপথে হাঁটলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। যদিও পড়াশুনার তাগিদে শহরে থাকতে হয় অনেক বছর আগে থেকেই তবে ছোটবেলা থেকেই গ্রামে বসবাস করেছি। জীবনের যতটা দিন পার করেছি তার সিংহভাগ গ্রামেই কাটিয়েছি। গ্রাম্য পরিবেশের প্রতি অন্য রকম একটা ভালো লাগা কাজ করে এবং এর মায়ায় অনেক বেশি জড়িয়ে পড়েছি।
গ্রামের সবুজ সমারোহে ঘেরা পরিবেশ সব থেকে বেশি ভালো লাগে আমার। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ঘুম থেকে উঠেই তাদের কৃষিকাজ শুরু হয়ে যায় আর সূর্যাস্তের সময় শেষ হয়। সময় মতো তিনবেলা খাওয়ার জন্য ফসল ফলায়, বিলাসিতার চিন্হমাত্র খুজে পাওয়া যায় না তাদের জীবনে।
অনেকেই রয়েছে যারা একটা পোশাক একবারের বেশি ব্যবহার করে না আবার অনেকেই আছে যাদের প্রতিদিনই একই পোশাক পরতে হয়। নিজের যতটুকু আছে ততটুকুতেই আমাদের খুশি থাকা জরুরি। যে অন্যের বিলাসিতাকে যতবেশি হিংসা করে তার জীবন ততবেশি কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে।
অন্যের জীবন দেখে আমাদের মধ্যে যাদের মনে অনবরত প্রশ্ন জাগে,
ও দালানে বাস করছে আর আমি কেন মাটির ঘরে বাস করছি?
ও নতুন নতুন পোশাক পরিধান করছে, আমি কেন পারছি না?
অন্যের সফলতাকে হিংসা করলে এতে ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই হবে না, এতে নিজের অবস্থানের পরিবর্তন তো হবেই না বরং জীবনটা আরও বেশি নরক সমতূল্য হয়ে যাবে। কেউ একজন তার বাবার কাছে বাইক কিনে দেওয়ার আবদার করেছে এবং তার বাবার যদি সেটা দেওয়ার সাধ্য না থাকে বা কিনে দিতে না পারে তাহলে অনেক সময় ছেলেটা নিজের জীবনও দিয়ে দেয় অনেক সময়, এমন ঘটনা হরহামেশাই শোনা যায় এখন।
আমার আজকের এই পোস্টটা মূল্য বক্তব্য হলো, কারো সাথে নিজের তুলনা করা উচিত নয়। আমি আমার মতো। অন্য একজন একটা কাজ করতে পারছে আর আমি পারছি না এটার ব্যর্থতা আমার নিজেরই। অন্যকে হিংসা না করে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করে এগিয়ে যাওয়া উচিত তাহলে সফলতা একদিন আসবেই।
যে, যে অবস্থানে আছে সে যদি তাতেই খুশি থাকে তাহলে সেটা তার জীবনকে সুখি করে তুলতে সাহায্য করবে। সত্যি বলতে মানুষের চাহিদার শেষ নেই। একটা ইচ্ছা পূরণ হলে নতুন আরও ইচ্ছায় উদয় হয়, এভাবেই পর্যায়ক্রমে একটার পর একটা চলতে থাকে। যে যত বিলাসীতা বিমুখ হবে তার ততবেশি সুখী মানুষ হবে বলে আমার বিশ্বাস। যার চাহিদা যত কম হবে, যে অল্পতে সন্তুষ্ট হতে শিখবে সে তত বেশি সুখি হবে!
যা আছে তা নিয়েই নিজেকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলেই জীবন সুন্দর হয়৷ অতি চাহিদা জীবনকে পিষিয়ে তোলে৷
সৃষ্টিকর্তা আমাদের জন্য যতটুকু বরাদ্দ রেখেছেন ততটুকু আমরা পাবোই। এখন সিদ্ধান্ত আমাদের তা আমরা হালাল উপায়ে অর্জন করবো নাকি হারাম উপায়ে।