জগদ্ধাত্রী প্রতিমার দ্বিতীয় বিসর্জন
নমস্কার বন্ধুরা, আপনারা কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। আমিও খুব ভালো আছি। গতকাল আপনাদের জন্য আমি একটি পোস্ট দিয়েছিলাম ।সেটি কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য পূজা জগদ্ধাত্রী পূজা ।তো তার বিসর্জনের বিষয়টি নিয়ে তো প্রথম দিনের ভাসানের সম্বন্ধে কিছু দেওয়ার পর আজ আমি আপনাদের কে যে পোস্টটি দিতে চলেছি সেটি হল কৃষ্ণনগর শহরের দ্বিতীয় দিনের জগদ্ধাত্রী মায়ের বিসর্জন।
এই বছরে টানা চার চারটি দিন এই জগদ্ধাত্রী পূজাতে আমি আমার পরিবারকে নিয়ে ভীষণভাবে আনন্দে লিপ্ত হয়েছিলাম। পূজা মানে যেমন আনন্দ তেমনি ঠাকুর দেখা এবং বিসর্জন দেখা এবং রাত জেগে সেটা করা।এটা কিন্তু এক ধরনের ভীষণ শারীরিক পরিশ্রম। সুতরাং আমি হয়তো পোস্ট লেখার অবস্থায় ছিলাম না। কিন্তু তবুও আজও আমি এই পোস্টটি লিখছি ।কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী মায়ের দ্বিতীয় দিনের বিসর্জনটি কিন্তু প্রথম দিনের বিসর্জনের থেকে একেবারেই আলাদা। এই জন্য কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের বিষয়টি অন্য সাধারন সমস্ত জায়গার থেকে একটু ভিন্ন। কারণ প্রথম দিন যেভাবে ভাসানো হয় ।মায়ের দ্বিতীয় দিন কিন্তু একেবারে অন্যরকম ভাবে মায়ের ভাসান হয়।
প্রথম দিন মায়ের বিসর্জন সাঙে করে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বিভিন্ন ট্রাক এবং লোহার চাকা গাড়িতে করে মাকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রথম দিন ভাসান উত্তেজনা এবং উদ্দীপনা কাজ করে। কেননা বেহারাদের কাঁধে চেপে মা যখন রওনা দেন তখন বেশ দ্রুত গতিতে মায়ের প্রতিমা নিয়ে বেহারারা এগিয়ে চলে, যার ফলে প্রতিমার সাথে সাথে সাধারণ সকল মানুষ দৌড়তে হয় ।কিন্তু দ্বিতীয় দিন এর ঠিক উল্টোটা প্রতিমা গুলি গাড়িতে খুব ধীরে সুস্থে এগিয়ে চলে এবং সাধারণ মানুষজনও যে যার প্রতিমার সাথে খুব ধীরগতিতে নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে বাজনার সঙ্গে সঙ্গে নৃত্য করতে করতে এগিয়ে চলে। প্রথম দিন শুধুমাত্র ঢাক বাদ্যযন্ত্র টি ব্যবহার করা হয় বিসর্জনে। কিন্তু দ্বিতীয় দিন ঢাক, বাদ্যযন্ত্রের সাথে বিভিন্ন রকমের ঢোল ,সানাই, তাশা ,ব্যান্ড এ ছাড়া আরো কত কি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার করা হয়। প্রথম দিন বিসর্জন শেষ হতে সারারাত্রি তো লেগে যায়।
উল্টে পরের দিন দুপুর বারোটা একটা অব্দি বিসর্জন চলে। কিন্তু দ্বিতীয় দিন বিসর্জনটি মধ্যরাতে সমাপ্ত হয়ে যায়। অথচ দেখুন কি আশ্চর্য ব্যাপার যে প্রথম দিন প্রতিমা কিন্তু হয়তো ৪৫ থেকে ৫০ টি ভাসানের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয় দিন প্রায় 200 টির কাছাকাছি প্রতিমা বিসর্জন হয় কিন্তু খুব দ্রুত বিসর্জন পর্ব শেষ হয়ে যায়। তবে একটি বিষয় ভীষণভাবেই মিলে যায় ।এতগুলি অমিলের মাঝখানে যেমন সেটি হল প্রথম এবং দ্বিতীয় দুটি দিনের ভাসানের কিন্তু লোকে লোকারণ্য অবস্থা থাকে প্রচুর দর্শকের সমাগম হয়। মানে যাদের বলা হয় মায়ের দর্শনার্থী। রাস্তার দু'ধারে বিভিন্ন খাবারের দোকান মেলা প্রভৃতি বসে থাকে ।এমনকি নদীর তীরে প্রাঙ্গণটির চতুর দিক দিয়ে বিভিন্ন খাবারের দোকান বসে এবং সেখানেও প্রচুর মানুষের ঢল দেখা যায়। তবে এখন বর্তমানে প্রশাসনের তৎপরতায় নদী তীরবর্তী অঞ্চলটিতে খুব একটা ভিড় জমাতে দেওয়া হয় না ।এতে মায়ের বিসর্জনের ক্ষেত্রে অসুবিধা যেন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।
আপাতত আজকের মত আমি এটুকুতেই শেষ করছি। আবার আগামী দিন হাজির হব কোন নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। সকলেই ভালো থাকবেন ।আনন্দে থাকবেন ।এটুকুই কামনা করি মায়ের কাছে। ধন্যবাদ।