মা কালীর শোভাযাত্রা
নমস্কার বন্ধুরা, আপনারা কেমন আছেন ?আশা করি আপনারা সবাই ভালোই আছেন। আমিও ভালো আছি আজ আমি আমার এই পোস্টে মা কালীর বিসর্জনের শোভাযাত্রা সম্পর্কে একটু বলতে চাই।
এই দিনই হয়ে গেল আমাদের কৃষ্ণনগরে কালী মায়ের বিসর্জন শোভাযাত্রা। দুই দিন ধরেই আমাদের কৃষ্ণনগরে মা কালীর শোভাযাত্রা অনুষ্ঠান পর্ব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সুতরাং সারা রাত্রি ব্যাপি এই শোভাযাত্রা চলে বলে আমরা সকলেই মায়ের বিসর্জন দেখার জন্য আমাদের হাই স্ট্রিটে উপস্থিত হয়। এখানকার একটি রীতি হচ্ছে প্রতিটি মায়ের বিগ্রহ প্রথমে রাজবাড়িতে অর্থাৎ রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আবার সেখানে পরিক্রমা করিয়ে মাকে জলঙ্গী নদীর উদ্দেশ্যে কদমতলা ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে মাকে বিসর্জন দেয়া হয়। প্রত্যেকটি ক্লাব অথবা বারোয়ারি তাদের প্রতিমা টিকে লরিতে অথবা কোন চাকা গাড়ি লোহার চাকা গাড়িতে করে নিয়ে যায়। তবে যারা মায়ের পূজা বড় করে আয়োজন করে তারা আবার মাকে বাসের মাচা তৈরি করে মাকে কাঁধে করে নিয়ে যান। এই পদ্ধতিটি কে বলা হয় সাং। এই সাং প্রথাটি আবার নাকি কৃষ্ণনগরবাসী বলে থাকে এটি নাকি কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্য। তাই বড় ছোট মাঝারি যে যার মত সাধ্যমত চেষ্টা করে মাকে এভাবে সাঙে করে বিসর্জনের নিয়ে যাওয়ার আর এতে নাকি ভীষণ একটা আনন্দ লুকিয়ে আছে।
তবে আমাদের ক্লাবের প্রতিমা মা আগুনেশ্বরী লোহার চাকার গাড়িতে করেই আমরা বিসর্জনে শোভাযাত্রায় নিয়ে যাই। সামনে একটি মোটর চালিত ভ্যান গাড়ি তার উপরে একটা বড় পাত্রে রাখা হয় নারকেল এর ছোবড়া। তাতে ধূনা দিয়ে আগুন দিয়ে জ্বালানো হয় ।এর ফলে এক ধরনের ধোঁয়া নির্গত হয়। যার খুব সুগন্ধ। এইভাবে যতক্ষণ না মাকে বিসর্জনের ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয় ।ততক্ষণই এই প্রথাটি আমরা বজায় রাখি। মনে হয় যেন মাকে আমরা আরতি করতে করতে নিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া ঢোল ,সানাই ,ঢাক এবং ব্যঞ্জন ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েও আমরা মাকে নিয়ে যাই।
ভিডিও থেকে স্ক্রিনশট নেওয়া |
---|
কৃষ্ণনগরের প্রতিমা নিরঞ্জন হতে অনেক দেরি হয়ে যায়। সকালও আজকাল হয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা থানার পারমিশন অনুযায়ী সঠিক সময়ে সন্ধ্যা লগ্নে মাকে নিয়ে বিসর্জনের পথে রওনা হয় এবং সকাল সকাল মাকে বিসর্জন দিয়ে আমরা আবার ক্লাব প্রাঙ্গনে ফিরে আসি। সেখানে সকলে মিলে একটু খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করি। তারপর যে যার বাড়ি চলে যায়। এদিকে সারা রাত্রি বিভিন্ন ক্লাবগুলো যে যার মাকে নিয়ে যায় এবং শেষ বিসর্জন টি হয় তখন বাজে সকাল আটটা । বিসর্জনের কিছু ভিডিও লিংক দেওয়া থাকলো। আপনারা চাইলে দেখতে পারেন। কৃষ্ণনগরের মা কালী বিসর্জন যাত্রা আশা করি সকলে একটু ভালো লাগবে।
যাই হোক আর আমি কথা না বাড়ি এখানেই শেষ করছি। আপনারা সকলে ভালো থাকবেন। আনন্দে থাকবেন। অন্যকে ভালো রাখার চেষ্টা করবেন মাকে আবার আগামী বছরের জন্য আমাদের মাঝখানে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি আসছে আসছে বছর আবার হবে। ধন্যবাদ।
খুব সুন্দর
ঐতিহ্য বহন করা প্রতিটি কার্যক্রম টিকিয়ে রাখাটা আমাদের দায়িত্ব ও বটে। তবে এই প্রথা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণাই ছিল না। এই সম্পর্কে জেনে যেন মনে হচ্ছে আরো কতো রীতি বা প্রথা আছে যেগুলো হয়তো জানিই না।
বাকি রইলো কৃষ্ণনগর সেইটা যেন আমার সামনে ক্রমশ প্রকাশ্য হচ্ছে। কৃষ্ণনগরের রাজবাড়ি যেটা শুনতেই আমি গোপাল ভাঁড়ের কার্টুনে বিচরণ করেছিলাম। তবে মূহুর্তের মধ্যেই বুঝতে পারলা এটাকে কেন্দ্র করেই হয়তো কার্টুন বানানো হয়েছিল যেটা অনেক বছর আগেই।
আদর্শ নাগরিক হিসেবে এটা সচেতনতার পরিচয় কারণ প্রশাসনিক অনুমতি নিলে আর কোনো ঝুঁকি থাকার কথা না। মায়ের বিসর্জন সম্পর্কে আরো অনেক কিছু জানার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।