Better Life With Steem | | The Diary Game | | 16 June, 2024
আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আপনাদের দোয়ায় এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি। আজকে আমি সবার প্রিয় কমিউনিটিতে ছোট্ট একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমি আপনাদের সামনে যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটি হলো:আমার গতদিনের কার্যলিপি নিয়ে।তাহলে বন্ধুরা চলুন আজকের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শুরু করা যাক:
আলহামদুলিল্লাহ প্রতিদিনের ন্যায় গতকালকেও সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠেছি। ঘুম থেকে উঠার পর বাইরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করেছি। ফজরের আজানের পর অনেক বৃষ্টি হয়েছিল। সকালবেলা আবহাওয়া অনেক খারাপ ছিল। গত কয়েকদিন থেকে এরকম প্রতিরাতেই বৃষ্টি হচ্ছে।
আমরা সবাই জানি, আর এক দিন পরেই আমাদের ঈদুল আযহা। সচারাচর সবাই ঈদের আগের দিন কোন চাকরিতে ডিউটি করে কিনা, সেটা জানিনা। কিন্তু আমার ঈদের আগের দিনেও ডিউটি ছিল। সর্বপ্রথম কথা হলো, জীবনে হয়তো অনেকবার ঈদ আসবে এবং অনেক আনন্দ করতে পারব। কিন্তু আমি যে প্রফেশনে আছি সেখানে মানুষ বাঁচা মরার বিষয়।
গতকালকে আমাদের প্রতিষ্ঠানে কিছু ইমার্জেন্সি রোগী এসেছিল। প্রতিষ্ঠানের মালিক আমায় খুব সকালবেলায় ফোন দিয়ে বলেছিল যেন তাড়াতাড়ি ডিউটিতে যাই। ঈদের আগের দিন, তবুও আর কি করার। তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা খেয়েছিলাম।
আলহামদুলিল্লাহ নাস্তা খেয়ে ল্যাবে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। ল্যাবে প্রবেশ করে আমার যে, সকালের দৈনন্দিন কাজ সেগুলো আগে সেরেছিলাম। পোস্টের শুরুতে আমি যে, ইমার্জেন্সি রোগীর কথা বলেছিলাম। সেটা হল, একজন খুবই অসুস্থ রোগী ব্লাড দিতে এসেছিল। আমি আর দেরি না করে তাড়াতাড়ি ডোনার এবং রোগীর কাছ থেকে ব্লাড কালেকশন করেছি।
এরপর ব্লাড দেওয়ার জন্য যে, Cross Matching করতে হয় সেই কাজ সম্পন্ন করেছিলাম। রোগীর অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। এজন্য যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করেছিলাম। পরে তাড়াতাড়ি ডোনারের কাছ থেকে ব্লাড কালেকশন করে, রোগীকে ব্লাড লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় মহিলা রোগি ছিল এজন্য ছবি তুলতে পারিনি।
আসলে সবকিছু ভাবতেই কেন জানি অবাক লাগে। একদিন পরেই আমাদের ঈদের উৎসব। আমরা সবাই ঈদের আনন্দকে ভাগাভাগি করা নেওয়ার জন্য কত আনন্দে আছি। অথচ এই রোগী নিজের মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আসলেই এই পৃথিবীর নিয়মগুলো বড়ই।
যাইহোক, ল্যাবে কিছু আরো ছোটখাটো কাজ ছিল সেগুলো সম্পন্ন করেছিলাম। পরে দুপুরে খাওয়ার সময় হয়ে গেলে খেয়ে নিয়েছি। গতকালকে মাছের তরকারি দিয়ে ভাত খেয়েছিলাম। আমার মাছ খেতে তেমন একটা ভালো লাগে না।
খাওয়া শেষ করে প্রতিদিনের মতোই বিকেল পর্যন্ত শুয়ে রেস্ট করেছিলাম। পরে বিকেলের দিকে যে, রোগীকে সকালে ব্লাড লাগিয়ে দিয়েছি। তাদের ব্লাড দেওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। পরে আমি ভালোভাবে ব্লাড ব্যাগ খুলে দিয়েছিলাম।
বিকেলের পর ভাবছিলাম একটু তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যাব। কিন্তু চিন্তা ভাবনাটা পুরোটাই উল্টে গেছিল। কারণ সন্ধ্যার দিকে আরো কিছু রোগী এসেছিল ব্লাড টেস্ট করানোর জন্য। পরে সব কাজ শেষ করে মোটামুটি রাত ৭:০০টা নাগাদ ল্যাব বন্ধ করে পার্বতীপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।
বাজারে যাওয়ার পর আমার বন্ধু এসেছিল। পরে আমার কিছু কাজ ছিল সেগুলো শেষ করেছিলাম। এর মাঝে মা আমাকে ফোন দিয়ে সেমাই এবং চিনি নিয়ে আসতে বলেছে। ঈদের আগের রাতে বাজারে, যে পরিমাণ ভিড় ছিল যা বলার মত নয়। বাজারের সব কাজ শেষ করে বাসায় আসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি।
সবাইকে জানাই ঈদের অগ্রিম শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক। সবাই যেন নিজের পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে পারে। এই কামনা রইল।
মানুষের দায়িত্ব বোধ অনেক বড় একটি বিষয়। আপনি যে প্রোফেশনে কাজ করছেন তার দায়িত্ব অনেক। একজন মানুষের জীবনের সাথে বিষয়গুলো জড়িত। এজন্য কষ্ট হলেও যদি এসকল মানুষের জন্য কাজ করে যান সৃষ্টিকর্তা এর উত্তম প্রতিদান দিবেন। ঈদের আগের দিনও ব্যস্ততম একটি দিন পার করেছেন আপনি। আপনি ঠিকই বলেছেন, মানুষের ভাগ্য কত অদ্ভুত। আমরা অনেকেই যখন কালকের ঈদ নিয়ে চিন্তা করছি। তখন এই রোগীর মতন আরও কত মানুষ যে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তার হিসাব নেই। এজন্য আমরা যারা সুস্থ স্বাভাবিক আছি।আমাদের উচিত সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। ভালো লাগলো ভাই আপনার সারা দিনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পেরে। ধন্যবাদ আপনাকে।
হ্যাঁ ভাই! এই পৃথিবীর নিয়ম গুলো বড়ই অদ্ভুত। আমরা কমবেশি সবাই ঈদ উদযাপন করার জন্য মনের মাঝে কত আনন্দ। আবার আমাদের মতই কত মানুষ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। তাদের কথা চিন্তা করলে আসলেই অনেক খারাপ লাগে। এজন্য আমরা যারা সুস্থ আছি আমাদের প্রত্যেককেই সৃষ্টিকর্তার উপর শুকরিয়া আদায় করা উচিত।
আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
রাতের বেলায় বৃষ্টি হলে ঘুমটা অনেক ভালো হয়। ঈদের সময় সকল প্রতিষ্ঠান বন্দ থাকলে ঈদের আগের দিন আপনার ল্যাবে কোনো ছুটি নেই। আগেও বহুবার বলেছি আপনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পেশায় নিয়জিত রয়েছেন যেটা মানুষের জীবন রক্ষার ক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করে। আর আপনি বেশ খুশি এই পেশায় আর এজন্য ছুটি না পাওয়ার বিষয়টা মেনে নিয়েছেন।
আর আজ আপনাদের ল্যাবে অনেক গুরুতর রোগী এসেছিলো এজন্য সকাল সকাল ল্যাবে যেতে হয়েছিলো। ভালো লাগলো আপনার কার্যক্রম পড়ে। ভালো থাকবেন।
হ্যাঁ ভাই! অন্যান্য চাকরি ক্ষেত্রে ঈদের আগের দিন ছুটি থাকলেও আমি যে পেশায় রয়েছি এখানে ছুটি বলতে কোন কিছুই নেই। আমাদের সব সময় চিন্তা করতে হয় নিজের সুখ কে বিসর্জন দিয়ে একজন অসুস্থ রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা। সত্যি আমি নিজের পেশাকে খুব সম্মান করি। সেদিন সকালবেলা খুব ইমারজেন্সি রোগী এসেছিল। আমি ভালোভাবে সব কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি।
আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য ব্যক্ত করার জন্য ধন্যবাদ।
নিজের পেশাকে সম্মান করতে না পারলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া অসম্ভব। কোনো কাজে সফল হতে গেলে অবশ্যই আগে নিজের কাজকে শ্রদ্ধা করতে হবে। সাধারণত অন্যান্য পেশায় ঈদের আগে থেকে ছুটি দেওয়া হয় তবে আপনার পেশায় তেমন কোনো ছুটি নেই কারন এখানে মানুষের জীবনের প্রশ্ন থেকে যায়। আপনি সব কাজ ভালো ভাবে করেছিলেন জেনে ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ আপনাকে একটি দিনের কার্যক্রম আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য। আসলে পরিস্থিতি আমাদের এমন কিছু করতে বাধ্য করে যেটা না করলে হবে না। ঈদের আগের দিন অনেক মানুষ নিজের কার্যক্রম চালিয়ে যাই। কেউ নিজের ইচ্ছাই তার কার্যক্রম করতে যায় আবার কেউ বাধ্যতামূলক নিজের কার্যক্রম চালিয়ে যায়।
আপনি যেহেতু একটি ল্যাবে চাকরি করেন সেখানে অনেক রোগী আসে। এবং অনেক মানুষ সেখানে অনেক আশা নিয়ে আসে। যে কোন রোগে ঈদ বা ভালো একটি মুহূর্ত দেখে না। কারণ সবই সৃষ্টি কর্তার হাতে। রোগী আশা নিয়ে আপনাদের কার্যক্রম চালাতে হবে এটাই স্বাভাবিক।
যাইহোক আপনাদের ওখানে রাতের বেলা বৃষ্টি হচ্ছে এটা জানতে পেরে অনেক ভালো লাগলো। আমাদের বাড়ির দিকে বৃষ্টির কোন দেখা নেই এবং প্রচন্ড গরমের মধ্য অনেক মানুষ শরীর খারাপ হয়ে আছে।
সর্বপ্রথম কথা হলো আমি যে পেশায় আছি। সেই পেশাকে আমি অনেক সম্মান করি। জীবনে অনেক ঈদ আসবে এবং আনন্দ করতে পারব। কিন্তু আমাদের প্রতিষ্ঠানে যে ইমার্জেন্সি রোগী এসেছিল। সেটা একদম বাঁচা মরার বিষয়। এজন্য আমি দ্রুত ল্যাবে গিয়ে ব্লাড কালেকশন করে রবিকে ব্লাক লাগিয়ে দিয়েছি। আর আমি যে পেশা রয়েছি এখানে ছুটি যে নেই, সেটা আমি মন থেকে মেনে নিয়েছি।
আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সবসময় এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।
আপনার পোস্ট পড়লে সত্যিই একটা ভালো লাগা কাজ করে, কত কম বয়সে আপনি আপনার প্রফেশনের প্রতি কতটা দায়বদ্ধ। এটি অবাক করে আমাকে। সত্যিই আমরা উৎসবে আনন্দ করি ঠিকই, তবু বহু মানুষ আছে যাদের দিনগুলো অনেক বেশি কষ্টে কাটে। নিজের কাজের প্রতি এমনই সৎ ও যত্নবান থাকবেন, দেখবেন একদিন অনেক উপরে উঠতে পারবেন। আপনাদের ওখানে বৃষ্টি হচ্ছে শুনে একটু আফসোস হচ্ছে, কারন আমাদের এখানে ভীষন গরম। ভালো থাকবেন।
সর্ব প্রথম কথা হল আমি নিজের পেশাকে সর্বোচ্চ সম্মান করি। কারণ আমার এই পেশার সঙ্গে মানুষের জীবন যুক্ত রয়েছে। এজন্য আমার দিক থেকে সব সময় সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। মাথার মধ্যে একটা চিন্তা নিয়ে সবসময় কাজ করি। আমার মাধ্যমে যেন কারো কোন ক্ষতি না হয়। উল্টো যেন একটু হলেও উপকার হয়।
আমার জন্য দোয়া করবেন সব সময় যেন এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।
আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য বাক্ত করার জন্য ধন্যবাদ।