মুস্তাক গাছ যা দিয়ে শীতলপাটি তৈরী হয়।
কিছু কাল আগেও গ্রামের মহিলারা শীত শেষ হওয়ার মূহুর্তে শীতলপাটি এবং হাতপাখা বুনতো। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে কিছু ধাপে এই হাতপাখা ও শীতলপাটি বুনতো। এটি একটি হস্তশিল্প যা বর্তমানে হারিয়ে যেতে বসেছে। শীতলপাটি তৈরীতে বিশেষ এক গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ ব্যবহার করা হয়। যার নাম মুস্তাক গাছ বা পাটিগাছ বা মুর্তা গাছ। প্রতিটি গ্রামের বাড়ির পিছনে ঝোপের মত বেড়ে উঠে এই মুস্তাক গাছ। যা বর্তমানে খুব কমই দেখা যায়।
এই শীতলপাটি তৈরীতে কয়েকট ধাপ অনুসরণ করতে হয়। প্রথমে মুস্তাক গাছকে কেটে ডালপালা ছেঁটে তিন চার দিনের জন্য পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তার পর সেই গাছ মাছ কাঁটার বটির সাহায্যে মুস্তাকটি লম্বা ভাবে চার ভাগ ফালি বের করে। এর ভিতরের সাদা নরম একটি অংশ থাকে যা ফেলে দেওয়া হয় এর নাম বুকা। এই সাদা ফেলে দেওয়া অংশ আবার শুকিয়ে জ্বালানীর কাজে ব্যবহার করা হয়।
সাদা অংশ ফেলে দেওয়ার পর গ্রামের মহিলারা সেই ফালি থেকে যতটুকু পারে পাতলা ও সুরু বেতী বাহির করে। বেতী যত সুরু ও পাতলা হবে শীতলপাটি তত মসৃন হয়। একজন দক্ষ পাটি বানানেওয়ালা একটি ফালি থেকে বারোটি বেতী পর্যন্ত বের করতে পারে। সম্পূর্ণ বেতি নেওয়ার পর সবগুলো বেতিকে গুচ্ছ আকারে বাঁধা হয় একে বিড়া বলে। এর এই বিড়াকে দুই তিনদিনের জন্য রোদে শুকাতে দেওয়া হয়।
এর পর এই বেতী গুলোকে বড় একটি ডেকচীতে পানির সাথে ভাতেমুরগির র মাড় জারুল ও আমড়া গাছের পাতা দিয়ে সিদ্ধ করা হয়। যার ফলে বেতি মোলায়েম মসৃন ও চকচকে। অনেকে আবার ভাতের মাড়ের সাথে বিভিন্ন রং মিশিয়ে দেয় নকশী করার জন্য। সিদ্ধ করা হয়ে গেলে বেতী গুলো আবার রোদে শুকাতে দেওয়া হয়।
এবার পাটি বুননের পালা। পাটি বুননের আগে যিনি পাটি বুনবেন তার বৃদ্ধ ও মধহ্ন আঙ্গুলে কাপড় পেচিয়ে নেয় যাত হাত কাটা না যায়। এরপর যিনি পাটি বুনেন তিনি মাটিতে বসে কাপড় বুননের মত করে দৈর্ঘ-প্রস্থ ঠিক করে বেতী বসানো হয়। পাটি বুনার সময় বেতিকে আড়াআড়ি ভাবে বেতী ঢুকানো হয় যাতে ফাঁকফুকুর না থাকে। গ্রামের মহিলারা একা একা অথবা দল বেঁধে শীতলপাটি ও হাত পাখা বুনে।
গ্রামের মহিলারা এই শীতলপাটি তৈরী করতো মাটিতে বসে খাবার খাওয়ার জন্য, নামাজ পড়ার জন্য জায়নামাজ। শুয়ে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বড় পাটি গরম থেকে বাঁচার জন হাত পাখা ইত্যাদি তৈরি করতো। যদিও বর্তমানে প্লাস্টিকের মাদুরের জন্য অনেকটা হারিয়ে গেছে এই শীতলপাটি। আমাদের মা দাদী নানাীরা ছাড়া বর্তমান জেনারেশন এর মেয়েরা এই শীতলপাটি বুননের সম্পর্কে মোটেই জানে না।
আগে গ্রাম অঞ্চলে ঘরে ঘরে শীতলপাটি বুননের যে হিড়িক ছিল তা বর্তমানে প্রায় হারিয়ে গেছে। মানুষ এখন আগের মত এইসব শীতলপাটি হাতপাখা বুনতে অনাগ্রহী। আগে দেখতাম শীত শেষ হওয়ার সাথে সাথে গ্রামের প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরে শীতলপাটি বুনতে যা এখন প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। আগের সেই মধুময় দিন গুলো আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে চলচে। আজ এ পর্যন্ত বন্ধু সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ।
I am Bangladeshi. My mother's language is Bengali. I can't write well in English. That's why I prefer to write in Bengali. Hope you will love my writing. Today in my post I have discussed about introduction of Schumannianthus dichotomus.
Device name: | Vivo Y21 |
---|---|
Camera: | 13 megapixels |
Shot by: | @shasan |
Location: | Bangladesh🇧🇩 |
শুধুমাত্র এই শীতলপাটিই না, আধুনিকতার ছোঁয়ায় এমন অনেক হস্তশিল্প বিলুপ্ত প্রায়। প্রযুক্তি যেমন নতুন একটা যুগের শুরু করেছে তেমন একটা যুগের সমাপ্তিও ঘটিয়ে দিচ্ছে।
এই প্রচন্ড গরমে শীতলপাটি নামটা শুনে ভেতর থেকে অন্যরকম অনুভুতি হলো।
ধন্যবাদ আপনাকে সম্পূর্ণ নতুন একটা বিষয় নিয়ে পোস্ট করার জন্য।
এট ঠিক বিজ্ঞান আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে আবার অনেক কিছু নিয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ার পর এত সুন্দর একটা মতামতের জন্য।
Looking at how you actually describe this mustak tree, it will definitely have a whole lot of benefits i am so sure of that which is healthy also. I guess it is not in nigeria
It is found only in the Indian subcontinent and mats are made from it which is completely natural. Which is very comfortable to use. Thank you for reading my post and for the nice comment.