অফিস কার্যের বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা
Hi everyone
আমার লেখা ব্লগে সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি। আজকে আমি অফিস কার্যের বৈশিষ্ট্যাবলি আলোচনা করব। তাহলে বন্ধুরা শুরু করা যাক।
অফিস কার্যের অনেক বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। বলা যায় যে, নিজস্ব বৈশিষ্ট্যের কারণেই সকল প্রকার কার্য থেকে সহজেই অফিস কার্যকে শনাক্ত করা সম্ভবপর হয়।
অফিস কার্যের বৈশিষ্ট্য |
|---|
করণিক কাজ: অফিস কার্যের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো করণিক সংক্রান্ত কার্যাবলি সম্পাদন করা। এ কারণেই বলা হয় যে, করণিক কার্য যে স্থানে সম্পাদিত হয় তা-ই অফিস। অফিসে নিয়োজিত কর্মীগণ প্রতিনিয়তই করণিক সংক্রান্ত কার্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
প্রশাসনিক কাজ : প্রশাসনিক কাজ অফিস কার্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। কার্যত অফিসকে প্রশাসনিক কার্যও সম্পন্ন করতে হয়। অফিসই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় কার্যাবলি সংগঠন ও পরিচালনা করে থাকে। সুতরাং, প্রশাসনিক কার্যসম্পাদন অফিস কার্যের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
অন্যান্য নথিপত্র তৈরি ও সংরক্ষণ : অফিস কার্য মূলত প্রতিষ্ঠানের নথিপত্রের সাথে সম্পর্কিত। নথিপত্র প্রস্তুত ও রেকর্ড রাখার জন্য সংরক্ষণের দায়িত্ব অফিসেরই। অফিসকে তাই প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় তথ্যের দলিলপত্র সংরক্ষণাগার বলা হয়। নথিপত্র তৈরি ও সংরক্ষণ অফিস কার্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
শিক্ষার সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজ: শিক্ষার সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজ অফিস কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে। অফিসে সাধারণত যে-সকল কার্যাদি সম্পাদিত হয় তার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার একটা সম্পর্ক রয়েছে। যে ব্যক্তির শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, সে অফিস কার্যসম্পাদনের অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।
মানসিক কাজ: অফিস কার্যের আর একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, এখানে অর্থাৎ অফিসে দৈহিক শ্রমের তুলনায় মানসিক শ্রম অপরিহার্য। কার্যত অফিস কার্যসম্পাদনের ক্ষেত্রে দৈহিক শ্রমের চেয়ে মানসিক শ্রমই বেশি ব্যয় করতে হয় এবং এ কারণেই মানসিক কাজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
গোপনীয়তা বজায় রাখা : গোপনীয়তা বজায় রাখা অফিস কার্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ বৈশিষ্ট্য। প্রত্যেক কারবারি সংগঠনের এমন অনেক বিষয় থাকে, যা একান্তভাবেই গোপনীয়। কারবার প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে ঐ সমস্ত বিষয়সমূহের গোপনীয়তা রক্ষা করা অফিস কাজের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিক। অফিস কার্যের সার্বিক সাফল্য ও ব্যর্থতা গোপনীয়তা বজায় রাখার উপর বহুলাংশে নির্ভর করে থাকে।
উন্নত কার্য পরিবেশ : অফিস কার্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো উন্নত কার্য পরিবেশের মধ্যে যাবতীয় কার্যাবলী সম্পন্ন করা। অফিস কার্য যেখানে সম্পাদিত হয় সে স্থানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস যুক্ত ও স্বাস্থ্যকর হয়ে থাকে, যা কারখানা বা অন্য কোনো কার্যক্ষেত্রে থাকে না।
স্নায়ুকেন্দ্রস্বরূপ : অফিস কার্যের সাথে প্রতিষ্ঠানের সকল কার্য ওতপ্রোতভাবে জড়িত বিধায় একে স্নায়ু কার্যের সাথে তুলনা করা যায়। স্নায়ু যেমন মানবদেহের প্রাণকেন্দ্র, তেমনি অফিস প্রতিষ্ঠানও বিভিন্ন বিভাগের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে এদের কাজকে সচল রাখে। তাই বলা হয়ে থাকে, অফিস একটি প্রতিষ্ঠানের স্নায়ুকেন্দ্রস্বরূপ ।
কোলাহল মুক্ততা: অফিস কার্য সম্পাদনের স্থানটি হতে হয় অনেকাংশে কোলাহল মুক্ত। এটি এর একটি বৈশিষ্ট্য। অফিসে যেহেতু মানসিক শ্রমবিশিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ কার্যাদি সম্পন্ন হয়। সেহেতু এটি অনেকটা নিরিবিলি ও কোলাহল মুক্ত হওয়া আবশ্যক। কোলাহলমুক্ত পরিবেশ অফিস কার্য সম্পাদনে কর্মকর্তা ও কর্মীগণকে ব্যাপকভাবে সহায়তা প্রদান করে থাকে। কার্যত এটি অফিস স্থাপনের একটি বিশেষ লক্ষণীয় দিকও বটে।
শ্রম-সংক্ষেপ যন্ত্রের ব্যবহার: শ্রম-সংক্ষেপ যন্ত্রপাতির ব্যবহার অফিস কার্যের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। আধুনিক শ্রম-সংক্ষেপ যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে দ্রুততার সাথে সুন্দর ও কার্যকরভাবে দপ্তরের কার্যসম্পাদন করা সম্ভবপর হয়। শ্রম-সংক্ষেপ যন্ত্রপাতির ব্যবহার বর্তমানে অফিস কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ব্যাপকভবে সহায়তা করে থাকে।
অফিস কার্যের উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায় যে, উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলো একটি অফিসের কার্যকে অন্যান্য যে-কোনো কাজ হতে স্বতন্ত্র হিসাবে চিহ্নিত করতে সহজতর করেছে।
অফিস কার্যের বৈশিষ্ট্যাবলি সম্পর্কিত আমার পোস্টটি এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।