একজন আর্জেন্টিনা ভক্তের গল্প।
হ্যালো বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।আমিও সবার দোয়ায় ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি অন্যরকম গল্প নিয়ে হাজির হয়েছি।
আমরা সবাই জানি কিছুদিন আগেই ফুটবল বিশ্বকাপ হয়ে গেল। সেই বিশ্বকাপে বিজয়ী দল আর্জেন্টিনা হয়েছিল। আমি একজন আর্জেন্টিনার অনেক বড় ভক্ত। আর্জেন্টিনা এবং ফ্রান্সের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচের সময় আমার অবস্থা এবং আর্জেন্টিনা জেতার পরে আমার অবস্থা সম্পর্কে আপনাদের মাঝে আজকে আমি তুলে ধরব।
আমাদের গ্রামের বেশিরভাগ লোকই আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। তাই আমরা আর্জেন্টিনার খেলা হলেই বাইরে টিভি বের করে খেলা দেখতাম। আর্জেন্টিনার সবগুলো খেলা দেখেছিলাম আমরা সবাই।
অন্যান্য দিনের মতো ফাইনাল খেলার দিনে ও আমরা বাইরে টিভি বের করেছিলাম খেলা দেখার জন্য। আমরা খেলা দেখতাম প্রায় ৫০ থেকে ৬০ জন লোক একসাথে। খেলা শুরু হওয়ার আগেই আমরা সেখানে গিয়ে জমায়েত হই।
এরপর শুরু হয়ে গেল খেলা। খেলার কিছুক্ষণ যেতেই আর্জেন্টিনা একটা গোল করে দিল। গোল করার সাথে সাথেই আমরা সবাই নাচতে শুরু করলাম। সবাই চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিল।
এরপর কিছুক্ষণ পর আবার একটি গোল দিয়ে দেয়। আমরা আরো বেশি আনন্দিত হয়ে যাই এবং তখন নাচতে শুরু করি সবাই মিলে। এরই মধ্যে প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়ে যায়। সবাই অনেক খুশি ছিলাম যে আমাদের প্রিয় দল জিতে যাবে।
কিছুক্ষণ পর আবার সবাই মাঠে নেমে পড়ে। এরপরেই নেমে আসে কালো ছায়া। একটু পরেই ফ্রান্স একটি গোল করে দেয়। তাতেও বেশি একটা চিন্তিত হয়নি। তবে কিছুক্ষণ পর ফ্রান্স আবারো একটি গোল করে দেয়।
এর মাধ্যমেই দুই দল সমান সমান গোলে পৌঁছে যায়। এরপর আমাদের মুখে আর হাসি ছিল না। সবাই মন খারাপ করে চুপচাপ বসেছিল আর খেলা দেখতেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আর্জেন্টিনা আবারও একটি গোল করে। এতে সবাই আগের মত আনন্দিত হয়ে যায় এবং নাচতে থাকে।
আমাদের আনন্দ আর বেশিক্ষণ থাকে না। একটু পরে ফ্রান্স আরেকটি গোল দিলে গোল সংখ্যা সমান সমান হয়ে যায়। তারা শেষ মুহূর্তে গোল করেছিল তাই আর গোল শোধ দেয়ার সুযোগ ছিল না।
ফলাফল স্বরূপ খেলাটি পেনাল্টিতে গড়ায়। পেনাল্টি শুরু হয় এবং আমার বুকের কম্পন শুরু হয়। আমি আর বসে থাকতে পারিনা।আমি উঠে এদিক সেদিক হাঁটতে শুরু করি। এরই মধ্যে আর্জেন্টিনা প্রথম পেনাল্টিতে গোল দিয়ে দেয়।
আবারো নাচানাচি। এরপর ফ্রান্সও গোল করে। ফলাফল সমান সমান। এরপর আর্জেন্টিনা আবারো একটি গোল করে। কিন্তু দ্বিতীয় পেনাল্টিতে ফ্রান্স গোল মিস করে। আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক ইমিলিয়ানো মার্টিনেজ তাদের গোলটি আটকে দেয়।
সবাই চিল্লাচিল্লিতে ফেটে পড়ে। এরপর আর্জেন্টিনার আবারো একটি গোল করে। কিন্তু এবার ও ফ্রান্স গোলপোস্টের বাইরে বল মেরে গোল মিস করে। সবাই অনেক বেশি আনন্দিত হয়ে যায়। কিন্তু এবার আর্জেন্টিনা গোল দিতে ব্যর্থ হয়।
এতে সবার মনে একটু চিন্তার ভাঁজ পড়ে। ফ্রান্স আবারও গোল দিয়ে দেয়। এবার হলো আর্জেন্টিনার শেষ পেলান্টি শুট। এটা গোল দিতে পারলেই জয় আর না পারলে ড্র। কিন্তু আর্জেন্টিনা এই গোলটা দিয়ে দেয়।
আর এরই মাধ্যমে আর্জেন্টিনা দল মানে আমার প্রিয় দল ৩৬ বছর পর বিশ্বকাপ জয় করে। আর এদিকে আমরা সবাই রীতিমতো গান বাজিয়ে নাচতে আরম্ভ করি। এরপর আমরা আর্জেন্টিনার পতাকা নিয়ে অনেকগুলো ছবি তুলি।
এরই মধ্যে শুনতে পারি ঢোলের আওয়াজ। কিছু আর্জেন্টিনা ভক্তরা মিলে তাদের জয়ের উপলক্ষে আনন্দ মিছিল। সবাই মেসির নামে স্লোগান দিছিল। আমরাও সেই মিছিলে শামিল হই। আমরাও কিছুক্ষণ তাদের সাথে থাকি।
এই সময়টা আমার জীবনে একটা অন্যরকম সময় যা আমার সারা জীবন স্মৃতি হয়ে থাকবে। আমরা সবাই অনেক আনন্দ করেছিলাম সেই সময়ে। এই সব স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। আসলেই যে দলকে সাপোর্ট করি সেই দল যদি জিতে যায় তাহলে সেটা এক অন্যরকম অনুভূতি জাগ্রত হয়। যা বলে বোঝানো সম্ভব না।
আমার মত আর কে কে আর্জেন্টিনার দলকে ভালোবাসেন কমেন্টে বলে যাবেন।আমি চাই আমাদের বাংলাদেশ দল ও বিশ্বকাপ খেলুক এবং বিশ্বকাপ জয় করে আমাদের দেশের নাম বিশ্ব দরবারে উজ্জ্বল করুক। এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি।খোদা হাফেজ।
আসলে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিল এসব খেলা আমি দেখি না আমি বুঝিও না। তার পরেও আপনার পোস্ট পড়ে আমি যতটুকু বুঝতে পারলাম। আপনারা খুব বেশি আনন্দ করেছিলেন খেলা উপভোগ করেছিলেন।
গোল দেয়ার পর সবাই অনেক নাচানাচি করেছিলেন। ওই মুহূর্তগুলো আপনার কাছে খুবই মূল্যবান। এবং আপনার সারা জীবন মনে থাকবে। আসলে আনন্দের মুহূর্তগুলো সব সময় মনে থাকে এটাই স্বাভাবিক।
যাইহোক অসংখ্য ধন্যবাদ।এত সুন্দর ফটোগ্রাফি পোস্ট আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য
খেলা দেখা ভালো, বিনোদন করা বা পাওয়া ভালো, তবে এমন সাপোর্ট করা ঠিক নয়, যেখানে প্রতিদ্বন্দ্বীতা রয়েছে, এসবে কখনো লাব নাই, বরং ১০০% লস। নিজেকে আবেগের মধ্যে ঠেলে দিয়ে শেষ করে দেওয়ার বড় উৎস হলো এই কাজ গুলো করা।
তাই এসব কাজ থেকে ফিরে আসা প্রতিটি মানুষের জন্য একান্ত কাম্য। তবে যাইহোক না কেন, আপনার লেখার প্রশংসা করতেই হয়, লেখাটাকে সুন্দর ভাবে সাজিয়েছেন, এটাই বড় পাওয়া আপনার। ভালো লাগে সুস্থ থাকবেন।