গরীব দুঃখীদের মাঝে ইফতার বিতরণ

in Incredible India2 years ago
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আস-সালামু আলাইকুম বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আল্লাহর রহমতে সবাই অনেক ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও অনেক ভালো আছি এবং সুস্থ আছি, আলহামদুলিল্লাহ।

Picsart_23-04-01_20-08-13-281.jpg
Edited by PicsArt apps

রমজান মাসে আমরা যত ভালো কাজ করব সেই কাজের সওয়াবটা একটু অন্যান্য মাসের চেয়ে বেশি হয়। সেই লক্ষ্যে আমরা গতকালকে কয়েকজন মিলে উদ্যোগ নিয়ে বিরিয়ানি রান্না করে বগুড়া শহরের ভেতরে যেসব ভিক্ষুক এবং গরিব দুঃখী মানুষ ছিল তাদের মাঝে ইফতারির খাবার বিতরণ করি। ইফতার আয়োজনের সেই মুহূর্তগুলো আপনাদের মাঝে আজকের পোস্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করব।

আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে উদ্যোগ গ্রহণ করি যে আমরা কিছু গরিব-দুখীদের মাঝে একবেলা খাবার দিব। কিন্তু আমরা বেকার। এজন্য এই আয়োজনের খরচ বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না।

এজন্য আমরা আমাদের কলেজের সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছ থেকে কিছু কিছু করে টাকা নেই। এতে করে মোটামুটি দশ হাজার টাকার মত হয়। আমরা এতেই আয়োজন করার পরিকল্পনা করি।

IMG_20230401_143813900.jpg

IMG_20230401_121504652.jpg

সবকিছুর মূল দায়িত্বে ছিল আমার বন্ধু সজীব। আর আমরা ছিলাম তার সাথে সহযোগী হিসেবে। কালকে সকালে সজীব এবং জাকারিয়া দুজনেই বাজার করার জন্য যায়। তারা বাজার করতে গেলে আমরা কয়েকজন মিলে এদিকের অন্যান্য কাজ করতে থাকি।

এরপর কিছুক্ষণ পর তোরা বাজার নিয়ে আসে। আমরা কয়েকজন মিলে পেঁয়াজ মরিচ রসুন আদা আরো অন্যান্য মসলাপাতি প্রস্তুত করতে থাকি। আমাদের এইসব কাজ করতে করতেই দুপুর গড়িয়ে যায়। আমরা সকলে একটু চিন্তায় পড়ে যাই যে সবকিছু সময়মতো করতে পারব কিনা।

আমাদের ক্যান্টিনের বাবুর্চি মামা আমাদের রান্নার কাজে সাহায্য করে। আর এই সবকিছুর আইডিয়া নেই আমাদের ক্যান্টিনের ম্যানেজার স্যারের কাছ থেকে। তিনি আমাদের সবকিছু জোগাড় করতে অনেক সাহায্য করে।

বাবুর্চি মামা বিকেল তিনটার দিকে রান্না শুরু করে। তিনি খুব তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করেছিল। সাড়ে চারটার দিকে আমাদের সব রান্নাবান্না শেষ হয়ে যায়। এরপর আমরা কয়েকজন মিলে তাড়াতাড়ি করে প্যাকেটিং শুরু করে দেই।

IMG_20230401_163405507.jpg

IMG_20230401_160813606.jpg

এদিকে সজীব যায় অটো নিয়ে আসতে। আমাদের সব প্যাকেটিং করা শেষ হয়ে গেল। সজীব অটো নিয়ে চলে এলো। এরপর আমরা খাবারের প্যাকেট এবং পানির বোতল দুইটি অটোতে লোড করি।

আমরা দুইটি অটোতে ১০ জন যাব। তাই আমরা পাঞ্জাবি পড়ে নিলাম। এরপর যাওয়ার আগে আমরা আমাদের কলেজের পাশেই একটা এতিমখানা ছিল সেখানে ৩০ প্যাকেট খাবার দিয়ে আসি।

এরপর আমরা যাওয়া শুরু করি। যেহেতু আমাদের লক্ষ্য ছিল ভিক্ষুক এবং গরিব-দুঃখীদের খাবার দেওয়া সেহেতু আমরা সবাই লক্ষ রাখছিলাম কোথায় তাদের দেখা যায়। যেতে যেতেই রাস্তার আশেপাশে অনেক ভিক্ষুক ছিল তাদের খাবার দেই।

এভাবেই আমরা বনানী থেকে বগুড়া মেইন শহর এর রাস্তার আশেপাশে যত ভিক্ষুক এবং গরিব দুঃখী লোক ছিল সবাইকে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারা খাবার নেওয়ার পরে যখন একটা মুচকি হাসি দিয়েছিল আমাদের যে এতটাই ভালো লেগেছিল তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।

IMG_20230401_170120999.jpg

মনে হয়েছিল যে আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। এরকম একটা ভালো কাজ করতে পেরে আমরা সকলেই মনে শান্তি অনুভব করি। খাবার দিতে দিতে ইফতারের সময় হয়ে যায়। এদিকে আমাদের খাবার দেওয়া শেষ হয়ে যায়।

দুইটি অটোতে দুইটি দল করে আমরা খাবার দিয়েছিলাম। আমাদের অটোতে ছিল পাঁচজন। আমরা ইফতার করার জন্য কয়েকটি প্যাকেট রেখে দেই। যেহেতু আমাদের খাবার দেওয়া শেষ সেহেতু আমরা কলেজের দিকে রওনা হই।

তবে কিছুদূর আসতেই আযান হয়ে যায়। আমরা গাড়ি থামিয়ে ইফতার সেরে নেই। ইফতার শেষে আমরা কলেজে চলে আসি।

এই কাজটির মাধ্যমে আমি দেখতে পেলাম গরিব মানুষকে অল্প কিছু দিলেই অনেক খুশি হয় এবং তারা অনেক দোয়াও করে। বর্তমান বাংলাদেশের সব কিছু জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে যাদের একটু সামর্থ্য আছে তাদের অবশ্যই গরিব-দুঃখীদের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

IMG_20230401_170129500.jpg

এতে করে তারা সুন্দরভাবে বাঁচতে পারবে। এরকম ভালো কাজ আমরা সকলেই করব। এই কাজগুলোর মধ্যে অনেক শান্তি বিরাজ করে। খাবার বিতরণের সময় আমরা কোন প্রকার ছবি তুলিনি। খাবার দেওয়ার সময় ছবি তুললে তাদের সম্মানহানি হয়। আমাদের এই কাজটি করা কারো উচিত নয়।

আজ আর নয়। পরবর্তী পোস্টে আবার কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং সর্বদাই গরিব-দুঃখীদের সাহায্য সহযোগিতা করুন। আল্লাহ হাফেজ।

DeviceName
AndroidSymphony,Z15
Camera13+2 MP Dual camera
LocationBangladesh 🇧🇩
Short by@shariful12
Sort:  
 2 years ago 

আসলে ভাই আপনাদের এই উদ্যোগটা দেখে কেন জানি আমার মনে একটা প্রশান্তি বিরাজ করছিল। আপনার আপনার লেখাটা পড়তে পড়তে আমি যখন নিচের দিকে স্কিরল ডাউন করা শুরু করলাম। আমার মনে এক অদ্ভুত শান্তি পেয়েছি।

আপনাদের এমন উদ্যোগ দেখে সত্যিই আমি মুগ্ধ হয়ে গেলাম। ধন্যবাদ দেয়ার মত ভাষাও আমার জানা নেই।

তবে আপনারা যে উদ্যোগটা নিয়েছেন। এই পথের মানুষগুলোর জন্য। অনেক ভালো একটা উদ্যোগ ছিল। আপনাদের কাছ থেকে খাবারের প্যাকেট হাতে নিয়ে তারা মুচকি হেসে দিয়েছিল। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় পাওয়া, যেমনটা আপনি আপনার পোস্টে উল্লেখ করেছেন।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের এরকম একটা উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য। এবং একটা দিনের ইফতার গরীব দুঃখীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল, ভালো থাকবেন।

#miwcc

 2 years ago 

এটা শুধু আমাদের নিলেই হবে না এটা বাংলাদেশের সামর্থ্যবান সব লোককেই নিতে হবে। তবেই গরিব-দুঃখীদের মুখে পুরোপুরি হাসি ফুটানো সম্ভব হবে। আপনাকে ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

#miwcc

Loading...
 2 years ago 

আপনার উদ্দেশ্য এবং উদ্দেগ টি দেখে অনেক মানুষরে কাছে প্রশ্ন জাগবে এবং কি আপনার এই মহৎ কাজটি দেখে আরো অন্যান্য মানুষ গুলো চিন্তা ভাবনা করে দেখবে যে আমরা তো করতে পারি ওদের মত করে ৷

যার জন্য একজনের কাছে শিক্ষা পেয়ে আরেক জন ও একটি ভালো উদ্দেশ্য পেয়ে গেলো ৷

তাছাড়াও গ্রামের মানুষ কতগুলো ভালো মত ইফতার করতে পারে না আপনাদের দেওয়া এই উপহার তারা পেয়ে অনেক খুশি হবে ৷

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর উদ্দেগ নিয়ে আপনাদের কাজ সফল করার জন্য ৷

#miwcc

 2 years ago 

এই কাজগুলোতে সবারই এগিয়ে আসা দরকার। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

#miwcc

 2 years ago 

আপনি ঠিকই বলেছেন রমজান মাসে যতটা দান করা যায় যে সওয়াবগুলো আপনি পাবেন অন্য মাসের চেয়েও একটু বেশি পাবেন।

পাশাপাশি গরীব মানুষের পাশে ইফতারি নিয়ে যাও অনেক সওয়াবের কাজ এবং এই উদ্যোগটা অনেক ভালো।

অনেক গরিব মানুষ আছে সারাদিন রোজা রাখার পরেও তারা একটু ভালো খাবার খেয়ে ইফতারি করতে পারে না।

আপনাদের এই উদ্যোগটি আসলে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে যাই হোক অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

#miwcc

 2 years ago 

প্রত্যেকে এগিয়ে আসা দরকার এই সব কাজে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি কমেন্ট করার জন্য।

#miwcc

Coin Marketplace

STEEM 0.24
TRX 0.26
JST 0.041
BTC 98769.41
ETH 3492.31
USDT 1.00
SBD 3.36