স্বাধীনতা যুদ্ধের নয় মাস দ্বিতীয় পর্ব।
হ্যালো বন্ধুরা,,, আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ও অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি। আমি আপনাদের মাঝে স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম পর্ব উপস্থাপন করেছি। এখন দ্বিতীয় পর্বে সবাইকে স্বাগতম।
বন্ধুরা আমি প্রথম পর্বে মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্য সরবরাহ পর্যন্ত আপনাদের মাঝে শেয়ার করেছি। যুদ্ধের সময় খাদ্য নিরাপত্তা ছিলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কারন আমাদের শক্তির মূল উৎস হলো খাদ্য। মুক্তি যোদ্ধাদের খাদ্য দ্রব্য যথাযথ ভাবে চাহিদা মেটানোর জন্য স্থানীয় যুবক বৃন্দ এই বিষয় দায়িত্ব নিলেন এবং তাদের মধ্যে কমিটি নির্বাচন করা হলো।
এ দিকে রাজশাহী থেকে এবং অন্য অন্য শহর থেকে বেস কিছু অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক মুক্তি যোদ্ধাদের টেনিং দেওয়া জন্য উপস্থিত হলেন,,, এখন সংগঠনে অনেক সংখ্যাক জনবল হয়ে গেল এবং পরের দিন খবর এলে রাত্রে আরো অনেক জনবল আসবে এদিকে,,,
যেহতু আমাদের এলাকা টি হলো বাংলাদেশের উত্তর পান্তে প্রবেশের দার পান্ত সেহতু পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আমাদের এলাকায় প্রবেশ করার পরিকল্পনা সবচেয়ে বেশি রয়েছে।
সেজন্য রাত্রির ভিতর আরো কয়েক শত মানুষ অস্ত্র নিয়ে উপস্থিত হলেন,,, মোট দুইশত লোক হয়ে গেল কমিটিতে,,,
এত মানুষের খাবারের ব্যবস্থা এবং থাকার ব্যবস্থা পরিচালনা নিয়ে একটু সমস্যা মনে করছিলো সংগঠন গুলো,,,,এই খবর গুলো গ্রামে গ্রামে ছরিয়ে পড়লো,,,,
ভোরবেলা তে দেখাগেল বস্তা বস্তা চাউল,, ডাউল, আটা সবাই দিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় মুক্তি যোদ্ধাদের কাম্পে। এ অবস্থায় গ্রামের একজন ভদ্রলোক তিনটি ছাগল নিয়ে আসলো মুক্তি যোদ্ধাদের কাম্পে,,,,ছাগল দুটি দিয়ে বললো সামনে কোরবানি ঈদ আমি কোরবানি করার জন্য এই ছাগল গুলো রেখেছিলাম,,,
কিন্তু দেশের যা অবস্থা ঈদ পর্যন্ত আমি পৌঁছাতে পারবো কি না আমি জানি না,,সেজন্য ছাগল গুলো আমি মুক্তি যোদ্ধাদের দিয়ে গেলাম,,,, এভাবে আশেপাশের সমস্ত লোকজন তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেন,,,, খাদ্যর কোনো সমস্যা আর রইলো না।
এভাবে বেস কিছু দিন কেটে যাচ্ছিল সোনা যাচ্ছিল যে রাজধানী বন্দর এলকা দখল নিয়ে নিয়েছে,,,এবং আমাদের পাশের থানা নাকি দখল নিয়েছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী,,,
এদিকে মুক্তি যোদ্ধাদের টেনিং দেওয়া প্রায় শেষ,,,, সবাই যোদ্ধাদের জন্য প্রস্তুত কিন্তু রাত্রি বেলা সোনা গেল আমাদের এলাকার বেস কিছু মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছে সব তথ্য দিয়ে দিয়েছে,,
এই খবর মুক্তি যোদ্ধাদের কানো পৌঁছে দিয়েছে তাদের গোপন টিমের লোকজন,,,,তখন রাত্রিতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল এমন পরিস্থিতি মুক্তি যোদ্ধাদের নিয়ে অন্যত্র কাম্প করলেন।
কিন্ত গ্রামের লোকজন এর ভিতর থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে গেল,,, নানা ভয় আতঙ্কে রাত্রি পার করলেন,,, তখন মৌসুম ছিলো হলো আউস ধানের এর মৌসুম।
আমাদের এলাকার যেহেতু নদী বন্দর এলাকা সেহেতু একটু ভয়ের পরিধী সবচেয়ে বেশি ছিল কারণ তখন নদীতে অনেক জল ছিল। পাশের থানাতে মিলিটারির অবস্থান করেছে,,এবং ভোররাত্রে বেশ কিছু এলাকাতে আক্রমণ চালিয়েছেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
সেই সাথে বাড়ি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। চারদিকে পাকিস্তানি সৈন্যদের অত্যাচার পরিধি দিন দিন বাড়ছে।
আর এই অত্যাচারে প্রাধান কারন গুলোর মধ্যে হলো বাংলাদেশর কিছু রাজাকার পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের সাহায্য সহযোগিতা করতো এবং গ্রামের পর গ্রাম তাদের নিয়ে জালিয়ে দিত।
আমাদের পাশের থানার নাম হলো উল্লা পাড়া এখন উল্লা পাড়া থানা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দারা নিয়ন্ত্রিত এবং তাদের অত্যাচার অপকর্ম অত্যন্ত জগন্য ছিল। আর এ সমস্ত কাজে সহযোগিতা করতো রাজাকার বাহিনী।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মাঝে মাঝে রাত্রি বেলা এলাকার সুনামধন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যেয়ে অত্যাচার করতো মেরে ফেলতো। কিন্তু এর মাঝে কিছু আশার প্রদীপ দেখতে পাওয়া যেত কারন মুক্তি বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে আক্রমণ চালাচ্ছিল।
আমাদের এলাকায় বিট্রিশ দের দারা নির্মিত একটি স্টিলের ব্রিজ ছিলো,,,,মুক্তি যোদ্ধা গন সেই ব্রিজের পূর্ব পাশে সবসময় অবস্থান করতো কারন ব্রিজ টি ছিলো ট্রেন চলাচলের জন্য।
ট্রেন যেন চলাচল না করতে পারে সেজন্য তারা রেললাইন এর পার ভিন্ন ভিন্ন গাছ পালা ফেলো রাখতো যার কারনে এলাকায় প্রবেশ করতে পারতো না পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
মুক্তি যোদ্ধাদের কয়েকটি সেক্টর একত্রিত হয়ে পাশের থানা উল্লা পাড়াতে আক্রমণ করেন,,,,এবং এগারো নম্বর সেক্টর ছিলো আমাদের কাপ্টেন নুরুজ্জামানের অধিনে।
কাপ্টেন নুরুজ্জামান এর নেতৃত্ব বেস কয়েকটি সেক্টর এর সহযোগিতায় উল্লা পাড়া থানা মুক্তি যোদ্ধাদের নিজেদের আন্ডারে নিয়ে নেন,,,,
অবশেষে আমাদের এলাকা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্তি পায়,,,এর জন্য অনেক মায়ের সন্তান হারাতে হয়েছে অনেক বোনের স্বামী হারাতে হয়েছে,,, হাজার হাজার মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে বেস কয়েকটি রাষ্ট্র আমাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন এর মধ্যে ভারত অন্যতম কারন ভারত সরাসরি সৌন্য পাঠিয়েছেন এবং কয়েক লক্ষ মানুষকে বসবাসের জন্য নিজ দেশের জায়গা দিয়েছিল।
সব শেষ আমাদের এই স্বাধীন সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র সোনার বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি লক্ষ লক্ষ তাজা প্রানের বিনিময়ে,,,
বন্ধুরা আজ আর লিখছি না হয় তো বা অন্য কোন টফিক নিয়ে আপনাদের মাঝে এক সময় হাজির হবো,,,,সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
আসসালামু আলাইকুম।
দেশের মানুষ ছাড়া,, দেশের ক্ষতি করা এতটা সহজ নয়। ঠিক তেমনি আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়। আমাদের দেশের রাজাকারদের দ্বারায় তারা আমাদের দেশে প্রবেশ করতে পেরেছে। যার কারণে আমাদের দেশের,,, অনেক মা বোনের ইজ্জত দিতে হয়েছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্ব থেকেও, আমি অনেকগুলো অজানা তথ্য জানতে পারলাম। যেটা আপনি আপনার পোস্টে স্পষ্ট ভাষায় লিখে দিয়েছেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,,, এত সুন্দর করে স্বাধীনতার অজানা তথ্যগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ভালো রাখুক।ভালো থাকবেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন এই আশা করি।