জীবনটাকে শুধুমাত্র রান্নাঘরে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
প্রিয় বন্ধুরা, আশা করি আপনারা সবাই সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি সুস্থ আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নতুন একটি বিষয় নিয়ে হাজির হলাম। আশা করি সবার ভালো লাগবে চলুন শুরু করা যাক।
Source
প্রিয় বন্ধুরা আমি দীর্ঘদিন পর একটি প্রবন্ধ পড়ছিলাম, আমার সামনের সপ্তাহ চাকরি ভাইবা পরীক্ষা আছে। সেজন্য প্রবন্ধটি পড়ছিলাম। প্রবন্ধটি ছিল বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের। প্রবন্ধটির নাম ছিল অর্ধাঙ্গী।
আশা করি অর্ধাঙ্গী প্রবন্ধটি সবাই পড়েছেন। আমিও বেশ কয়েকবার পড়েছি। আমার কাছে এই প্রবন্ধটি অনেক ভালো লাগে। কারণ নারী জাগরণের অগ্রদূত নিয়ে বিস্তারিত খুবই সুন্দরভাবে এখানে আলোচনা করা হয়েছে।
প্রবন্ধটি লিখেছেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন। বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুর জেলায়। তৎকালীন সময় তিনি নারীদের সর্বপ্রথম অন্ধকার থেকে আলোর পথে আসতে উদ্বুদ্ধ করে।
তৎকালীন সময় আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্রের নারী শিক্ষার অগ্রগতি একদমই ছিল না বললেই চলে। তৎকালীন সময়ে মনে করা হতো নারীরা কেবল ঘরের ভিতরে সীমাবদ্ধ।
বেগম রোকেয়ার অর্ধাঙ্গী প্রবন্ধের আমার কাছে অনেক বাক্যগুলো মূল্যবান মনে হয়। যেমন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন স্বামী যখন পৃথিবীতে হতে সূর্যের ও নক্ষত্রের দূরত্ব মাপে, স্ত্রী তখন একটা বালিশের দৈর্ঘ্য প্রস্থ মাপে।
শুধুমাত্র এ কথাগুলো বিবেচনা করলে, অতি সহজেই বুঝতে পারা যায় তৎকালীন সময় নারীদের শিক্ষার অবস্থা কেমন ছিল।
Source
তৎকালীন সময়ে এটাই মনে করা হতো নারীদের শিক্ষার কোন প্রয়োজন নেই। মেয়েরা শুধুমাত্র ঘরের সীমাবদ্ধ থাকবে। মেয়েরা রান্না, বান্না সেলাই অতিরিক্ত দু'চারটা উপন্যাস পাঠ করিতে পারবে ইহাই যথেষ্ট বলে সম্বোধন করিতেন।
তৎকালীন সময় মেয়েরা যে শুধুমাত্র শিক্ষা থেকে পিছিয়ে ছিলেন এমনটা নয়। তাদেরকে পিতা-মাতার সম্পত্তি থেকেও বঞ্চিত করা হতো।
বন্ধুরা বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের প্রবন্ধটি পাঠ করলে পুরুষ ও নারীর মধ্য কি বৈষম্য ছিল তাই স্পষ্ট বোঝা যায়।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন নারীদেরকে একটি রোগের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, সেই রোগের নাম হচ্ছে দাসত্ব।
তৎকালীন সময়ে দাসত্ব যেনে শুধুমাত্র নারীদের ওই কাজ, নারীরা যেন এসব বিষয় মেনে নিয়েছিল।
Source
আর এই দাসত্ব হচ্ছে মানসিক দাসত্ব শারীরিক দাসত্ব নয়। আর দাসত্ব থেকে বের হওয়ার জন্য বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন।
নারীদের শিক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন সব সময়, নারী যেন সমাজের ভেতরে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকতে পারে। তার জন্য রেখেছেন বিশাল ভূমিকা।
আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায় নারী জাতি আত্মশক্তিতে বলিয়ান ছিল না। নারী জাতির মনের ভিতর বিরাজ করত দাসত্বের মনোভাব।
এর জন্য নারীরা যেমন দায়ী তেমনি পুরুষের স্বার্থপরতা মানসিকতা ও দায়ী রয়েছে পুরুষের ।
নারীদের আত্মশক্তি জাগরণের জন্য তৎকালীন সময়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
Source
নারীদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। করেছিলেন তাদের জন্য আত্মত্যাগ। সর্বব্যবস্থা তাদেরকে নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শিক্ষার দিকে।
নারী সমাজের অগ্রগতির স্বার্থে বেগম রোকেয়ার পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত জোরালো ভাবে। তার এই মহান পদক্ষেপের কারণে, তিনি আজও মানুষের মাঝে বেঁচে রয়েছেন।
বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কখনো তার প্রবন্ধে, নারীদেরকে দাসী কখনো নারীদেরকে পুতুলের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
নারীকে এই দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন মানসিক দাসত্ব ঘুচিয়ে আত্মনির্ভশীল হতে হবে। নারীকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।
আর প্রত্যেক মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করলে মহৎ এবং উদার হয়ে উঠে। শিক্ষা মানুষের চোখ বৃদ্ধি করে, শিক্ষার মাধ্যমে অন্ততরের চোখ গুলো খুলে যায়।
কথায় আছে যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি ততই উন্নত। তাই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে নারীদের ও শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
আমাদের মানব দেহে যেমন দুটি হাত রয়েছে। একটি অন্যটি ব্যতিত চলতে পারে না বা পরিপূর্ণ জীবন যাপন করত পারে না, তেমন একটি সমাজ ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন এর জন্য নারী শিক্ষার কোন বিকল্প নেই।
তৎকালীন ঔপনিবেশিক সমাজ ব্যবস্থা হিন্দু-মুসলিম উভয় সমাজে নারীরা ছিল পিছিয়ে পড়া এক জাতি।
আমাদের নারী জাতি প্রকৃতিগতভাবে অনেক দুর্বল। পুরুষ এবং নারী উভয় একে অপরের উপর নির্ভরশীল।
Source
বর্তমান সময়ে নারীদের খাটো করে দেখার কোন উপায় নেই। সুস্থ ও সবল জাতি গঠনে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন। দেশ জাতি ও সমাজ গঠনে নারী ও পুরুষের রয়েছে সমান অধিকার।
Source
আর বর্তমান নারীদের এ পর্যায়ে এসেছে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন এর মতন হাতে গোনা কয়েকজন নারীর হাত ধরে।
প্রিয় বন্ধুরা আমার লেখা এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।