আজকের কবিতা - "শৈশব!" (Poetry- Childhood)
এই মুহূর্তে সকলেই প্রকৃতির বিদ্রোহের সাথে সময় অতিবাহিত করছেন ঘরে বসে।
যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কে আমি প্রকৃতির বিদ্রোহ আখ্যা দিয়েছি।
সময়ের হাত ধরে বহু আধুনিক যন্ত্রের কারণে এখন খানিক আগাম বার্তা পাওয়া যায় বটে, তবে এখনো প্রকৃতির শক্তির কাছে আধুনিক প্রযুক্তি দুর্বল!
তার অন্যতম উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে, এই দুর্যোগে নেটওয়ার্ক না পাওয়া মোবাইলে, সাথে বৈদ্যুতিক গোলযোগ প্রমাণ করে, সৃষ্টির উন্নতির হাত ধরে অনেককিছুই এগিয়ে যাচ্ছে; তবে, এখনো আসল শক্তির কাছে মানব কর্তৃক নির্মিত সৃষ্টি ছাপিয়ে উঠতে পারে নি।
প্রকৃতি বিরোধিতার খেলায় মেতে ওঠে তার ভারসাম্যের ঘাটতি দেখলেই। এর আগেও আমফান সহ সুনামি, ভূমিকম্প ইত্যাদি বহু উদাহরণ এঁকে রেখে গেছে অতীতের হাত ধরে।
তবে, আজকে এই দুর্যোগের দিনে ঘরে বসে অন্যান্য কাজের মাঝে শৈশবের কালবৈশাখীর দিনে আম কুড়ানোর কথা, একসাথে গরমের সময় স্কুল ছুটির দিনগুলো কিভাবে কাটাতাম এরকম বেশ কিছু স্মৃতিচারণ করছিলাম।
এটা একদম বাস্তব আমার শৈশব খুব সল্প সময়ের হাত ধরে এসেছিল, অন্যান্য অনেকের মত করে সুদীর্ঘ সময় ধরে আমার ছেলেবেলা ছিল না।
এই তো সেদিনের কথা একসাথে পাড়ার সকলের সাথে বিকেলে খেলতাম নিয়ম করে,
খেলা জমে উঠতে না উঠতেই দিদির সেই ডাক
কোনো কারণ ছাড়াই! খেলায় বিঘ্ন ঘটানোর জন্য ঝগড়া করা! উত্তরে, শান্ত কণ্ঠে উত্তর,
"না তোকে অনেকক্ষণ দেখি না তো তাই!"
সময়ের সাথে দূরত্ব এখন দেখার দৈর্ঘ্য অনেকখানি বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে আজ আর নালিশ আসে না! আর রাগ ও হয়না।
জীবনটা ভারী অদ্ভুত, কখনো কখনো না চাইতেই সব দিয়ে দেয়, আবার কখনও কত ইচ্ছে পূর্তি অধরা থেকে যায়।
হয়তো, এটাই আমাদের জন্য মঙ্গলকর!
জানিনা! কারণ অনেক ঘটনার পিছনের মঙ্গলের উদ্দেশ্য আজও অজানা।
এই বিষয়টা আমার মত হয়তো অনেকেরই মনে হয়, জীবন যে আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দেবে এমনটা নয়;
সবটাই আমার মনে হয় জীবন আমাদের জন্য বয়ে আনে;
কিছুটা ভাগ্য আর বেশিরভাগটাই কর্মের হাত ধরে।
(মন্দারমণি ঘুরতে যাবার স্মৃতি আরেক সম্পার সাথে) |
---|
হারিয়ে গেলে যেমন সবকিছুর মূল্য বোঝা যায়, তেমনি হারিয়ে যাওয়া অনেক কিছুর মত শৈশব এমন একটি সময় যেটি আমরা সকলেই ফিরে পেতে ইচ্ছুক।
একাকী কোনো না কোনো সময় বসে, পিছনের সময়ের দিকে তাকালে সর্বাগ্রে আমার শৈশব আর তার অমলিন স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায়, অন্যান্য অনেক স্মৃতির সাথে।
আপনারা কখনো দেখেছেন একটা শীতবস্ত্র থেকে একটা উলের মাথা বেরিয়ে গেলে, সেটা ধরে টানতে শুরু করলে ধীরে ধীরে গোটা বস্ত্র নষ্ট হয়ে যায়!
শুধু তাই নয়, এর পাশাপশি একরাশ অগোছালো উল জমা হয়, যেগুলোকে একার পক্ষে গোটানো বা একত্র করা বেশ কষ্টকর ব্যাপার।
(জীবনের ঝড় অনেকক্ষেত্রে পুরো জীবনটাকেই এলোমেলো করে দিয়ে যায় চিরতরে!) |
---|
আমার মায়ের, আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়াটা সেই শীতবস্ত্র থেকে বেরিয়ে যাওয়া একটুকরো উলের মত! যেটাতে সময়ের টান পড়তে পড়তে কখন যেন পুরো বস্ত্র টাই উলে পরিণত হয়ে গেছে নজর পড়ে নি!
এরপর বেঁচে থাকার বাস্তবিক লড়াই লড়তে গিয়ে উলগুলো আজও অগোছালো রয়ে গেছে।
আজকে তাই মনে হলো নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ এর হাত ধরে একটা কবিতা লেখার প্রয়াস করি, যেখানে নিজের শৈশবের সাথে আধুনিক শৈশবের পার্থক্য থাকবে, আর বর্তমান মানুষের মানসিকতার সংকীর্ণতা।
(আমার মায়ের শৈশব, ডানদিকে ফ্রক পরে দাঁড়িয়ে মা, মাঝে দিদিমা এবং বা দিকে সেই মাসি যাদের বাড়িতে রাধা কৃষ্ণ মন্দির আছে; অযত্নে ম্লান ছবিটি) |
---|
তাই কবিতার নাম রেখেছি 👇
|
---|
সে...ই কবে.. যেনো নিজের অজান্তে
হারিয়েছি ছেলেবেলা;
ভুলে গেছি লুকোচুরি
কুমির ডাঙ্গার মত খেলা!
হারিয়েছে শৈশব, হারিয়েছে সাথী!
সময়ের সাথে বিলুপ্ত সহপাঠী।
বিকেল হলে কেউ ডাকে না এখন;
এ...ই সুনীতা! কি রে! কোথায় তুই?
খেলতে আসবি কখন?
এখন খেলার নতুন ধরন;
একলা খেলা, ডাকা বারণ!
একলা চাওয়া, একলা পাওয়া;
ভাগের শিক্ষা হারিয়ে যাওয়া!
এখন শুধু প্রয়োজন!
প্রিয়জনের অভাব!
আত্ম স্বার্থে ব্যবহার,
আর ফুরোলেই?
মুখ ফেরানোর স্বভাব!
শৈশব টাই, ছিল বেশ;
আজ আড়ি, কাল ভাবের রেশ!
*যখন খেলতে গিয়ে
হঠাৎ আঘাত পেতাম;
ছোট্ট হাতের দেখা,
পাশেই পেয়ে যেতাম।
বড়দের আবার আলাদা ধরন!
সাহায্যের আগেই
লাভ লোকসান স্মরণ।
কতখানি দিলে, কতখানি পাবো?
তবেই এক্ পা এগিয়ে যাবো!
নেই আজ, সেই কাঁদা মাটির খেলা;
খেলনা বাটি, গরম জিলিপি, আর পাপড় একসাথে উপভোগ করা, রথের মেলা।
ঘরে,ও বাইরে আজ
শুধু বেঁচে রাজনীতি;
ক্ষমতা থাকলেই
খুঁজে পাওয়া যাবে
মানুষের ভিড়,
সাথে সোহাগ ও প্রীতি!
পরনিন্দা, আর পরচর্চা;
বিকেলের জলখাবার!
পুরোনো সেই লুচি পাতা
শৈশবের হাত ধরে,
ফিরবে কি আবার?
সবটাই নিজস্ব অনুভূতি, কাজেই অনেকেই সহমত পোষণ নাই করতে পারেন।
যদিও, আজকাল বিশেষ মন্তব্যের দেখা মেলে না লেখার শেষে, তবুও বলে রাখা ভালো।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
Twitter share -https://twitter.com/SunitaD88779200/status/1795171090173448468?t=0qiccqiw4FHYj0SLjKPeJA&s=19
TEAM 2
Congratulations! This post has been voted through steemcurator05. We support quality posts, good comments anywhere and any tags.@anasuleidy thank you my dear lovely friend for this energetic support 💕
আসলেই প্রকৃতির কাছে মানুষ অনেক দূর্বল। আমরা যতই বড়াই করিনা কেন দিনশেষে প্রকৃতির আশ্রয়ে আশ্রিত থাকতে হবে আমাদের।আসলে ঠিকি বলেছেন, ঝড়ের কারণে আমাদের কতকিছুই থমকে দাড়িয়েছে।বিশেষ করে বিদ্যুৎ, নেটওয়ার্ক, মানুষের সাভাবিক চলাফেরা ইত্যাদি। খুব ভালো কথা বলেছেন
প্রকৃতির শক্তির কাছে মানুষের শক্তি কিছুই না। প্রকৃতি যদি তার বিধ্বংসী রূপ নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হয় তাহলে আমরা ভালো করে তাকিয়ে দেখার আগেই ধ্বংস হয়ে যাবো ,কিছু বুঝার তো প্রশ্নই আসে না।
মানুষের জীবনে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যার প্রভাব প্রকৃতির এই ঝড়ের সাথেই অনেকাংশে তুলনা করা যায়। ছোট্ট একটা ঘটনা কিন্তু তার প্রভাব জীবনভর।
ঘরে,ও বাইরে আজ
আপনার কবিতার এই অংশটুকুর সাথে আমিও একমত। ক্ষমতা না থাকলে এই সব কাছের মানুষদের আর দেখা পাওয়া যায় না।
ভালো থাকবেন সবসময়।