বন্দী জীবন কারোর কাম্য নয়!(Nobody wishes to be confined to a prison cell!)

in Incredible India9 days ago
1000029499.png

মনে পড়ে সেই প্রথম লক ডাউন যখন ঘোষণা করা হয়েছিল?

একদম সত্যি কথা বলতে, লকডাউন এর আক্ষরিক অর্থ জানলেও বাস্তবিক ভাবে তাকে আগে কখনও দেখিনি!
কাজেই, মাথায় কাজ করছিল, কি মজা! এখন থেকে আর সকাল নয়টা মধ্যে অফিসে পৌঁছনোর তাড়া থাকবে না;
বাড়ি বসে বসে কাজ করতে পারবো!

অস্বীকারের জায়গা নেই, প্রথম প্রথম এই গৃহবন্দী পরিস্থিতিকে তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছি।
তবে, ওই সময় বাজারে গেলে, সব সাত সকলেই ফুরিয়ে যাওয়া, ওষুধের দোকানে লাইন ইত্যাদি কিছু সমস্যার মধ্যে দিয়ে সকলকেই আমার মত যেতে হয়েছে।

এরপর, যখন লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়া শুরু হলো, আমার এই গৃহবন্দী দশা রীতিমতো দমবন্ধ দশায় পরিণত হতে শুরু করেছিল!

ঠিক সেই সময় অনুভব করা শুরু করলাম, খাঁচায় বন্দী অবস্থায় পশু পাখিদের পরিস্থিতি!
মুক্ত আকাশে উড়তে ভালোবাসা পাখি সহ, খাঁচায় বন্দী পশুদের এরকমই অনুভূতি নিশ্চই হয়।

IMG_20240705_005736.jpg

সাথে এটাও মনে হতো, এটা সৃষ্টিকর্তা মানুষকে বোঝাতে চেয়েছিলেন, দেখ বন্দিদশায় থাকতে কারোরই ভালো লাগে না।
আজকে তোরা বন্দী আর প্রকৃতি সহ, তার প্রিয় পশু, পাখিরা আজ উন্মুক্ত!

অনেকেই জীবনের ক্ষেত্রেও বন্দিদশায় দিনযাপন করে থাকেন, কিন্তু সেই অনুভূতি যে একেবারেই সুখকর নয়, তার আদর্শ উদাহরণ ছিল লকডাউন।

IMG_20240705_004051.jpg

একই অনুভূতির পুনরাবৃত্তি হয়েছিল পয়লা জুলাই যখন স্টেশন হয়ে ঘড়ির দোকানে যাবার পথে ছটফট করতে দেখা বন্দিদশায় থাকা পাখিদের দেখেছিলাম!

আবারো মানুষ আজ উন্মুক্ত, আর এই নিরীহ প্রাণীরা বন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করেছে!
কারণ?
মানুষ এদের চড়া দামে কিনে পোষ্য করে রাখবে বলে।

কি অদ্ভুত শখ! আমরা সভ্যতার পরিভাষা শিখতে পারলেও স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ শিখতে সক্ষম হয়েছি কি?

IMG_20240705_004111.jpg
কিছু মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গল্পটা খানিক এদের মতই!

আমি কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বেশ সন্দিহান!
আজও অনেক পরিবারে মেয়েদের সময়মতো বাড়িতে প্রবেশ করতে হবে, অনেকেই লেখাপড়া শিখেও কাজ করবার অনুমতি পায় না, এখন এই উন্নত সমাজে বেশকিছু দেশে ঘরের কাজ মেয়েদের আর পুরুষদের বাইরের কাজ এভাবে ভাগ করার প্রবণতা তথা মানসিকতা আছে!

এছাড়াও, একটি মেয়ে রাতে অফিসে করলে, সে একা থাকলে, তার পোশাক নিয়ে, তার বাড়িতে কেউ আসলে বাঁকা নজরে দেখা এবং পিছনে মুখ টিপে হাসা ইত্যাদি রয়ে গেছে।

এখন প্রশ্ন হলো তাহলে কি করে আমরা নিজেদের উন্নত তথা সভ্য সমাজের অন্তর্ভুক্ত বলে বড়ো গলায় কথা বলি আমার অন্ততঃপক্ষে জানা নেই।

মানসিকতা উন্নত না হলে বাকি যা কিছুই উন্নত হোক না কেনো সবটাই মূল্যহীন।
এটা আমার একেবারেই নিজস্ব অভিমত যে, সমাজ উন্নত এবং সভ্য বলে সেইদিন ঘোষিত হবে যেদিন রাতের অন্ধকারে নারীরা নিরাপদ চলাচল করতে পারবে।

পাশাপশি, গৃহবন্দী পরিস্থিতি থেকে তাকে মুক্তি দিয়ে, তার যোগ্যতার বিকাশে সহায়তা করবে পরিবার তথা পরিবেশ এবং সমাজ।

খাঁচায় যখন পাখিগুলো ছটফট করছিল মুক্ত আকাশের দিকে তাকিয়ে, মনে হচ্ছিল খাঁচা খুলে তাদের খোলা আকাশে উড়িয়ে দি!

IMG_20240705_004025.jpg

যা পাখি তুই উড়ে যা,
খুঁজে নে নিজের বাসা;
বন্দী থেকেও বোঝেনি মানুষ
তোদের কষ্টের ভাষা!

আজকে আপনাদের সাথে সেইদিনের তোলা বন্দী পাখির ছবিগুলো ভাগ করে নিচ্ছি।
ইচ্ছে থাকলেও সত্যি বলতে এই মুক্ত অনুভূতি থেকে বঞ্চিত করতে কষ্ট হয় বলে আমি পশু পাখিদের পোষা পছন্দ করি না!

অনেকেই আমার সাথে একমত না হতেই পারেন, তবে, একবার পিছন ফিরে লকডাউনের দিনগুলোর কথা ভেবে দেখবেন।
যখন দূষিত নদীর জল হয়ে গেছিল স্বচ্ছ, যখন প্রকৃতিতে দূষণের মাত্রা প্রায় নেই বললেই ছিল, যানবাহন বন্ধের কারণে।

তাই পরিশেষে বলতে চাই, বন্দী জীবন কারোর কাম্য নয়! সেটা মানবকুল হোক অথবা প্রাণীকুল!
আপনাদের অভিমতের আশা নিয়ে আজকে ইতি টেনে বিদায় নিলাম!

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  

আপনি ঠিক বলেছেন কারন বন্দী জীবন কেউ পছন্দ করে না।করনায় যখন আমরা বন্দি হয়েছিলাম তখন সেটার কষ্ট আমাদের এখনো মনে নারা দিয়ে যায় কষ্টের সৃতিগুলো মনেপরে যায়।মুক্ত আকাশে উড়ানোর জন্য পাখিগুলো চেয়ে আছে কিন্তু পরিস্থিতি তাদের কে বাধ্য করেছে যেটা অতি কষ্টকর পরিস্থিতি অনেক ধন্যবাদ বন্ধু আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.

করোনা আমাদেরকে অনেক কিছুই শিখিয়েছে, বন্দী জীবন থেকে সবাই মুক্তি চায়, কেউ যদি বন্দি থাকে সে নিজের অস্তিত্ব ভুলে যেতে থাকে, যেমন একটা হিংস্র বাঘ যখন খাঁচার মধ্যে বন্দি থাকে তখন সে আস্তে আস্তে নিজের শক্তি ভুলতে থাকে। সকল প্রাণীর মুক্ত থাকা আবশ্যক, খাঁচার মধ্যে কোন প্রাণী রাখা আমার কাছে অমানবিক মনে হয়।

অনেক মেয়েই শুধুমাত্র আমাদের সমাজ ব্যবস্থার কারণে নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করতে পারে না, সর্বক্ষেত্রে নারীদের নিরাপত্তা আবশ্যক।

ধন্যবাদ এই সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শকরার জন্য, আপনার সাথে আমি একমত।

 8 days ago 

আসলে বন্ধি জীবন কখনো কারোর ভালো লাগে না পাখিদের সব সময় মুক্ত আকাশে উড়ে বেড়াতে ভালো লাগে কিন্তু আমরা কিছুটা মনে আনন্দ নিয়ে আসার জন্য তাদেরকে খাঁচায় বন্দি করে রাখি এবং আমরা যদি অনুভব করতে পারি তাহলে লকডাউনে আমরা আরো বেশি অনুভব করতে পেরেছি বলে মনে হয় যেমনটা আপনি অনুভব করেছেন।

প্রথম প্রথম লাভডাউনে আমরা সবাই অনেক আনন্দিত ছিলাম বাড়ি বসে থাকতে হবে কোন কাজ করতে হবে না কিন্তু একটি সময় এসেছিল বাড়ি বসে থাকা আমাদের জন্য আরো বেশি খারাপ লাগা কাজ করছিল।

Loading...
 8 days ago 

মুক্ত আকাশের নিচে খোলা বাতাসে সবাই তো বেড়াতে চাই তবে সবাইকি আর সেই ভাগ্য নিয়ে জন্মাই, সেই ভাগ্য নিয়ে জন্মালেও কিছু মানুষের সুবিধার্থে কিছু মানুষ বন্দী থাকে।

আবার কিছু মানুষের নিষ্ঠুরতায় অনেক পাখিকেও বন্দী হয়ে থাকতে হয় মনের তৃপ্তি মেটাতে প্রতিদিন এই পাখিগুলোকে দেখে ।নিজের বাড়ির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেও অনেক মানুষ এগুলো বন্দী করে থাকে। তবে তারা যদি কথা বলতে পারতো তাহলে হয়তোবা চিৎকার করে বলতো আমাকে ছেড়ে দিন আমি খোলা আকাশের নিচে ডানা মেলে একটু বেড়াতে চাই।

শুধু এখানে পাখি বলে কথা নয় প্রতিটি মানুষ চাই নিজের স্বাধীনতা। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে খুব সুন্দর একটি আর্টিকেল উপস্থাপনা করার জন্য।

 7 days ago 

প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আমাদেরকে এত সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য। আসলেই আপনি সেই লকডাউনের কথা আবার মনে করিয়ে দিলেন। আসলে প্রথম প্রথম যখন লকডাউন দিল তখন আমরা কেউই ঘর থেকে বের হতে পারিনি। সবার কাজকর্ম বন্ধ সবাই ঘরে বসে ছিলাম। আসলে গৃহবন্দী কারোরই ভালো লাগেনা। মনটাকে একাকীত্ব লাগে। স্বাধীন সবাই ভালোবাসে। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন, আমি আশা রাখবো এরকম আরো ভালো ভালো পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেবেন।

TEAM 6 : Congratulations!

This post has been curated using steemcurator08. We appreciate your efforts on making quality blogs and post relevant comments. Thank You! 😊

footer.jpg

Curated by : @shohana1
 6 days ago 

Appreciate this support, my friend @shohana1

With pleasure Apu ❤️

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.14
JST 0.030
BTC 58659.71
ETH 3164.52
USDT 1.00
SBD 2.43