ভুলে যাবার কিছু অন্যতম কারণ!(Causes behind forgetting anything)
লেখার শুরুতেই জানাই আমি কোনো মাতাজী নই, আর না কোনো বিজ্ঞান বিশারদ!
কাজেই, আজকের শীর্ষক নির্বাচন পুরোপুরি আমার নিজের কাজের ধরন, তথা অন্যের কাজের ধরনের নিরিখে নিজস্ব অভিমত।
বলে রাখা ভালো সহমতের বিন্দুমাত্র আশা রাখছি না।
- এ মা... একদম ভুলে গেছি!
- আমার না একদম মনে ছিল না!
- আজকাল ব্যাক্তিগত চাপের কারণে কোনকিছুই মনে রাখতে পারছি না!
- আর পারছি না, সত্যি একা কতদিক সামলানো যায়!
- কেউ অসুবিধা বুঝতে চায় না, আমিও যে মানুষ!
- ধুর ছাই! আর ভালো লাগছে না, এত পারা যায় না!
যারা আলঝেইমা রোগে ভুগছেন তাদের কথা ভিন্ন কিন্তু যারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করেও একই কথাগুলো ভাবেন;
তাদের ভুলের একটাই কারণ, সেটা হলো
আগের একটি লেখায় বেশকিছু উদাহরণ দিয়েছিলাম,চলুন আজকে আর বেশকিছু উদাহরণ দিয়ে নিজের কথার যথার্থতা আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।
- প্রথমত:-বাড়িতে খুব কাছের প্রিয়জন অসুস্থ, তাকে ডাক্তার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ওষুধ দিয়েছে খাবার জন্য, সাথে সময় মত খাবার খেতেও বলেছে। যে দুটি কাজ আপনার প্রিয় মানুষকে সুস্থ্য হতে সাহায্য করবে সেটা করতে আপনি কি ভুলে যাবেন?
- দ্বিতীয়ত :-আপনার বাড়িতে ছোটো বাচ্চার কিছু হলে, আপনি এড়িয়ে যেতে পারবেন?
- তৃতীয়ত :-আপনার প্রচণ্ড ক্ষিদে পেয়েছে, ঘরে কোনো খাবার নেই, অনলাইন হোক , অথবা দোকান থেকে কিনে নিজের ক্ষুধা নিবারণ করবেন তো?
- চতুর্থত:-ধরুন আপনার অনেকের কাছে কৈফিয়ত দিয়ে চলতে হয়, তাহলে উপার্জনের মূল্য কোথায়?
পায়ের নিচে পড়ে জীবন কাটিয়ে দিলেই তো হয়!
আপনি এখনও পরাধীন, আপনার কোনো অস্তিত্বই নেই।
আপনি আপনার বাড়িতে গুরুত্বহীন একটি আসবাব ছাড়া আর কিছুই নয়। যেটা কেবলমাত্র প্রয়োজনে ব্যবহৃত হয়।
এই বিষয়গুলোকে অনায়াসে জয় করা সম্ভব যদি, গুরুত্বের পাল্লায় ওজনের দিকটি একটু পরিবর্তন করা যায়।
আমরা কিছুতেই মানতে নারাজ সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকেও অনেক গুণাবলী , বৈশিষ্ট্য দিয়ে এই ধরায় পাঠিয়েছেন।
কেবলমাত্র লতা গাছ হয়ে বেঁচে থাকতে নয়।
তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই আধুনিক যুগে দাড়িয়ে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে, আর সদিচ্ছা থাকলে সব ক্ষেত্রেই ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব।
একটি চাকরিজীবী পরিবারে বেড়ে ওঠা, পাশাপশি মহিলা পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে নিজের উপার্জন নিজেকে করতে দেখে বড়ো হয়েছি বলেই বোধহয় আমার মানসিকতা এরকম।
আমরা নিজেদের কাজের গুরুত্ব নিজেরাই সাজিয়ে নিয়ে থাকি, একটু ভেবে দেখবেন কথাগুলো।
আমরাই আমাদের বোঝাই, এই কাজটা করতেই হবে আমি নিরূপায়, আবার থাক আজকে এই কাজটা করবো না, কাল দেখা যাবে!
এই বৈষম্য আমাদের সৃষ্টি, সব ক্ষেত্রে পরিবারের দোষ দিলে আমি কিছুতেই সেই যুক্তি মানতে নারাজ।
বাস্তব সমাজে টাকা কথা বলে, সম্মান বয়ে আনে। আপনার আর্থিক দুরবস্থা জানলে কাছের মানুষ দূরের হতে এক মুহুর্ত সময় লাগবে না!
আর এরাই যদি শুনতে পায়, আপনি বর্তমানে লক্ষ টাকার মালিক তাহলে আশেপাশে অনেকের আনা গোনা বেড়ে যাবে।
আরো বেশি সমাদর পেতে চাইলে মাস গেলে টাকা দিন, তখন আপনাকে কে পায়!
সবকিছুর জন্যই সর্বপ্রথম নিজেদের চিন্তার পরিবর্তন প্রয়োজন।
ধরুন যারা খুব উচ্চ পদে কাজ করেন, এবং প্রতিদিন কাজের কারণে কোথাও না কোথাও তাদের যেতে হয়, তারা দেখবেন ডাইরিতে নিজেদের সাপ্তাহিক কার্য্যক্রম লিখে রাখেন।
যাতে সঠিক সময় সঠিক কাজটি সমাধা করতে পারেন।
নিয়ম শৃঙ্খলা এমন একটি বিষয় যেটা নিজের শেখার ইচ্ছে না থাকলে, কেউ জলে গুলিয়ে আপনাকে খাইয়ে দিতে পারবেন না।
তাহলে পরিশেষে কি বুঝলাম, আমরা সেই বিষয়গুলো ভুলে যাই, যেগুলোর গুরুত্ব আমাদের কাছে কম।
আমরা কখনোই সেই কাজগুলো ভুলিনা যেগুলো আমরা মনে রাখতে চাই অথবা না করলে বট গাছের ছাওয়া পাওয়া যাবে না।
ভেবে দেখবেন একবার কথাগুলো। অনেক বলেও এই কমিউনিটির বেশ কিছু সদস্যের কাজের গতির নিরিখে আজকে আমার এই লেখা।
অথচ দিনশেষে আমিও কিন্তু একটা মানুষ। অনেক অসুবিধা আপনাদের থাকলেও, আমার জীবনের সবটাই সুবিধায় মোড়া!
এটা ভাবার বোকামী যারা করবেন, সেটা তাদের চিন্তাধারা। যেটা আমার পরিবর্তনের কোনো ইচ্ছে নেই।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.