কলকাতার কিছু ঐতিহ্য, যেগুলো আজও শহরের গর্ব!
আমার শহর কলকাতার বুকে লুকিয়ে আছে অনেক ইতিহাস, আর যখন রাস্তায় বের হই চোখে পড়ে হলুদ ট্যাক্সি, ট্রাম, হাতে টানা রিক্সা, হাওড়া ব্রীজ ইত্যাদি।
এরা সাক্ষী সেই সময়ের যখন আমরা কেউই এই পৃথিবীতে পদার্পণ করিনি। একটা শহর তথা দেশ সর্ম্পকে জানতে হলে, অথবা নব প্রজন্মকে শহরের ইতিকথা শোনাতে হলে কিছু পুরোনো বস্তুকে যত্নের সাথে ধরে রাখা আবশ্যক।
কলকাতা শহর ভারতের অন্যতম শহর যেখানে কেবলমাত্র ট্রাম চলাচল করে আজও!
প্রথম মেট্রো রেল স্থাপিত হয় কলকাতায়।
হাওড়া ব্রীজ আজও সেই ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের সাক্ষী।
অনেকেই জানেন নিশ্চই, ব্রিটিশ শাসনের সময় কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী, এবং সেই সময় বাণিজ্যের সুবিধার্থে এই ব্রীজের নির্মাণ করেছিলেন ব্রিটিশ সরকার।
আমি যে কলেজে পড়েছি, সেই সরজনী নাইডু কলেজের পরের বাস স্টোপেজেই আছে লর্ড ক্লাইব হাউস!
হেঁটে হেঁটেই চলে যাওয়া যেত কলেজ থেকে!
কলকাতার অলিতে গলিতে যদি হেঁটে যাওয়া যায় চোখে পড়বে বেশ কিছু পুরোনো বাড়ি, যেগুলো দেখলে এক্ মুহূর্তের জন্য হলেও আপনাকে দাড়িয়ে দেখতে হবে।
(ট্রাম, হলুদ ট্যাক্সি কলকাতার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে) |
---|
নতুন বহু কিছু নির্মিত হয়েছে এই শহরে, নাম পরিবর্তন করা হয়েছে রাজ্যের তথা বেশ কিছু জায়গার, তবে আজও অধরা আছে সেই ঐতিহ্য গুলো।
ওয়ারেন হেস্টিংস এর ভূত আজও ঘুরে বেড়ায় ন্যাশনাল লাইব্রেরীতে! এরকম বেশ কিছু গায়ে কাঁটা দেওয়া জায়গা রয়েছে কলকাতায়।
আমার মনে হয়, দেশ তথা রাজ্যের ঐতিহ্যের যত্নের প্রয়োজন আছে, নইলে নবীন প্রজন্মের কাছে কেবলমাত্র গল্প বলে মনে হবে এই সকল শিহরণ জাগানো ঐতিহ্য।
আমার বাবার চাকরির কারণে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাবার তথা সেখানের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন দেখার এবং তাদের সাথে মেশার সুযোগ পেয়েছি ছোটো থেকেই।
(সেই ভৌতিক ন্যাশনাল লাইব্রেরী) |
---|
স্কুল থেকে যেবার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল এবং বিড়লা প্ল্যানেটোরিয়াম দেখতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কি যে মজা পেয়েছিলাম, আজও স্পষ্ট সেই আনন্দের অনুভূতি।
যখন আসামে গিয়েছিলাম এবং থেকেছি তখন পারিপার্শ্বিক মানুষদের মনেই হতো না তারা অপরিচিত।
একই অনুভূতি শিলিগুড়ি নিয়ে, আবার আমার জন্মস্থান বর্তমান মুম্বাই শহর নিয়ে।
এটি একটি সংস্কৃত শ্লোক যার আক্ষরিক অর্থ, জননী মানে মা এবং জন্মভুমি মানে দেশ স্বর্গের চাইতেও মূল্যবান!
(কলকাতার নামকরা আর্সালানের বিরিয়ানী) |
---|
আমার শহরে সেই রসগোল্লা সহ বহু মিষ্টি এবং খাবারের ইতিহাস লুকিয়ে আছে!
ভালবাসা সেটা কাছের মানুষগুলোর জন্য আমরা যেমনভাবে অনুভব করি, এই শহরটার প্রতি আমার অনুভূতি একইরকম।
আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় হলুদ ট্যাক্সি আজও আমার দৃষ্টি আকর্ষণ করে, নতুন ওলা উবেরের চাইতে।
আধুনিকতার ছোঁয়া শহর ঘিরে রয়েছে, কিন্তু তার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেওয়া ইতিহাস আজও অক্ষত, আর এটাই আমার কলকাতা শহরের ইতিকথা ব্যক্ত করে।
- অতুল প্রসাদ সেন অনেক আগেই তার বিখ্যাত গানে লিখে গেছেন!
সার্বভৌমত্বের প্রতীক আমার শহর তথা দেশ, যেটা পৃথক করে, আমার গর্বের শহর এবং দেশকে অন্য অনেকের থেকে!
অন্ততঃপক্ষে এই আধুনিক প্রজন্ম বইয়ের পাতার পাশাপশি চাক্ষুষ করতে পারছে সেই সকল ঐতিহ্য, যেগুলো বিলীন হয়ে গেলে এক্ সময় সকলে কাকতালীয় ঘটনা বলে উড়িয়ে দেবে।
Upvoted. Thank You for sending some of your rewards to @null. It will make Steem stronger.
আমি কলকাতায় কোন সময় যাই নাই কিন্তু কলকাতা সহ ইন্ডিয়ার সমস্ত জায়গায় ঘোরার ইচ্ছা আছে। আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন কলকাতার কিছু ঐতিহ্য, এতে করে আমি জানতে পারছি যে কলকাতার ঐতিহ্য জিনিস গুলো কোথায় রয়েছে।
আপনার এমন নিত্য নতুন পোস্ট পড়লেই কলকাতা যাওয়ার আগেই অনেকটা অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারব। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এমন তথ্যমূলক একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
Thank you, my dear friend @𝖾𝗅-𝗇𝖺𝗂𝗅𝗎𝗅 for this encouraging support 🙏
আপনার লেখাটি অনেক সুন্দর হয়েছে। আপনি যে খাবারটি উপস্থাপন করেছেন অর্থাৎ বিরিয়ানি খুবই সুন্দর একটি খাবার হিসেবে পরিচিত। তবে ভূতের ঘটনা এটা একটা আজব ঘটনা। ভূত দেখে সকলেই ভয় পায়। আমারও খুব ভয় লাগে ভূত দেখে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর লেখা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য।