একটি বিরক্তিকর দিন অতিবাহিত করলাম।

in Incredible India2 years ago (edited)
20230911_181701_0000.png

আমার লেখার শীর্ষক দেখে অনেকের মনে কৌতূহল জাগতে পারে, আমার বিরক্তির পিছনে কারণ কি সেটা জানার!

আমার দিনটিকে আজকে ডায়েরি রূপে না লিখে নিজের যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করছি প্রতিদিন সেই বিষয়গুলো তুলে ধরতে আমার আজকের লেখা।

আমি কখনোই এই দাবি করিনা, আমার সবকিছু ভালো আর যত দোষ নন্দ ঘোষ(মানে সব দোষ অন্যের)!

আমি ভুল করলে অকপটে স্বীকার করতে পারি জনসমক্ষে, আবার ক্ষমাও চাইতে পারি। কারণ আমার মনে হয়, ভুল স্বীকার করতে পারাটা একটা দক্ষতা, বা নিজের ভুল উপলব্ধি করাটাও।

পরিশেষে বিরক্তির কারণটা জানাবো তার আগে এই বিরক্তির সূত্রপাতটা আপনাদের জানা দরকার, নইলে মেলাতে পারবেন না, আজকের আমি আসলে শুরু থেকে এরকমটা ছিলাম না।

তখন আমি শিলিগুড়িতে, স্বপরিবারে নিজের ফ্ল্যাটে বসবাস করছি। আমি এর আগেও জানিয়েছি, সাময়িক সময়ের জন্য একটি স্কুলে আমি কর্মরত ছিলাম, এবং পরে সেই স্কুলের প্রিন্সিপাল আমার পড়ানোর দক্ষতা দেখে আমাকে সেই স্কুলে পার্মানেন্ট চাকরির প্রস্তাব নিয়ে স্বয়ং বাড়িতে এসেছিলেন। সেই সময় অভাব দরজায় কড়া নাড়ে নি, গুছিয়ে চতুর্দিক আবেষ্ট করে সম্পর্ক, কাজেই সাত পাঁচ না ভেবে পরিবারের কথা ভেবে চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলাম।

এরও আগে, যখন আমি নবম শ্রেণীতে পড়ি, বাংলা চলচ্চিত্র থেকে ডাক পেয়েছিলাম, বাবা বাঁধ সাধলেন, পড়াশুনার ক্ষতি হয়ে যাবে!
বড়দের সাথে বিপ্লব করবার বয়স আর শিক্ষা কোনোটাই আমার ছিল না, আজও নেই।

IMG20230911155050.jpg
IMG20230911155028.jpg
(প্রতিটি দিন যে শিক্ষা নিয়ে আসে সেটাকে কাজে লাগাতে শেখা উচিত)

আজকে এই পুরনো অভিজ্ঞতা গুলো তুলে ধরছি কারণ, জীবন আমাকে এমন চরম শিক্ষা দিয়েছে, এবং বুঝিয়ে দিয়েছে কাজকে যারা, সম্মান করে না; কাজও তাদের সম্মান করে না।

পরিবার, সম্পর্ক, দায়িত্ব এর পাশাপশি আর্থিক অভাব কি তার যন্ত্রণা না বোঝার অভিজ্ঞতার ফল সময় আমাকে হাতে নাতে দিয়েছে।

একটা সময় নিজের শিক্ষার যোগ্য চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছিলাম, পরে এমন সময় আসলো নিজের যোগ্যতার চাইতে সল্প কাজকে করতে বাধ্য হলাম। আর মনে মনে আফসোস করলাম, যে মানুষদের জন্য কাজ ছাড়লাম, আজ কোথায় তারা?

সাথে যে সেদে দরজায় এসেছিল তাকেও ফিরিয়ে দিলাম, এখন আমাকে কে দেখবে?

সেইদিন থেকে আজকের দিন আমার কাছে আমার শারীরিক অবস্থা, সম্পর্ক, পরিস্থিতির উর্ধ্বে আমার কাজ।

কারণ আমি দেখেছি, কাজ সঙ্গে থাকলে অনেক পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, কিন্তু কাজকে অসম্মান করলে, গুরুত্ব না দিলে অবশেষে পশ্চাতাপ ছাড়া কিছুই পাওয়া যায় না।

like-2643085_1280.webp

Pixabay

আজকে আমি আমার দুই মডারেটরদের উপরে ভীষণ বিরক্ত হয়েছি, কারণ, এখানে শুরু থেকে আমি সকলকে শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজে হাতে ধরে কাজ শেখাই।

এমনটা নয়, শুরুতে থেকে তারা ভুল করেনি, এমনকি এখনও অনেক ভুল করে, কিন্তু আমার কাছে ভুলের চাইতেও, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা বেশি বিরক্তিকর।

অনেকেই ভাবছেন এই কথাগুলো পোস্টের মাধ্যমে না লিখলেও চলত, কিন্তু আমি আগেই বহুবার বলেছি আমি স্পষ্টভাষী এবং অনেক দেখে, সহ্য করে তারপর সর্বসমক্ষে কথা বলি।

bee-4092986_1280.jpg

Pixabay

(শুধু মানবজাতি নয়, কীট পতঙ্গ পর্যন্ত নিজেদের পেট ভরাতে কঠিন সংঘর্ষ করে প্রতিদিন)

অনায়াসে সবকিছু পেয়ে গেলে আমরা তার কদর খুব কম করি, আমার জীবনের একটা পর্যায়ের পরে সবটাই আমাকে লড়াই করে অর্জন করতে হয়েছে, কাজেই পরিশ্রমের মূল্য আমি বুঝি আর তাদের সম্মান করি যারা প্রকৃত অর্থে পরিশ্রমী সর্বত্র।

আমার ঘরে আসবাব কম, কিন্তু তাতে ধুলো নেই, আমার ঘরে খালি পেয়ে হাঁটলে পা কালো হয় না, আমি যদি এক পদ রান্না করি সেটাও গুছিয়ে এবং সময় নিয়ে করি।

কথাগুলো বলছি, কারণ আমরা অনেক কাজ দায়সারা ভাবে করি, বিশেষ করে যে কাজগুলো আমাদের করতে ভালো লাগে না, কিন্তু পরিনতিস্বরুপ এই অবহেলা আমাদের ক্ষতি ডেকে নিয়ে আসে।

আমি এতটাই বিরক্ত আজকে হয়তো এরকম চলতে থাকলে কিছু মানুষকে এই প্ল্যাটফর্মে আর দেখতেই পাবেন না!

আমার শারীরিক অবস্থা এতটাই নিম্নমুখী তারপরেও আজকে প্রতিটি কাজ সময় মত করবার চেষ্টা করছিলাম যাতে একটু শরীরটা বিশ্রাম পায়।

গতকাল রাতেও এক ছিটে ফোঁটা ঘুমতে পারিনি, সবার সমস্যা আমাকে বুঝতে হবে সবসময় এমন মাথার দিব্যি আমি কাউকে দিয়ে রাখিনি।

এখানে কাজের বিনিময় যথেষ্ট রোজগারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, কাজেই যদি এরপর থেকে আমাকে সময় মত কাজ বুঝিয়ে দেওয়া না হয় তার পরিণতি যার যার।

কাজে গাফিলতি কারোর ক্ষেত্রেই বিশেষ করে নামের পাশে বড় বড় ট্যাগ নিয়ে বসে থাকা কারোর ক্ষেত্রেই বরদাস্ত করা হবে না।

আমি যদি নিজে পরিশ্রম না করে পরনির্ভরশীল হতাম, আজকে হয়তো কথাগুলো এখানে বলতাম না।
আমি এমন মানুষ পছন্দ করি যারা কাজকে শুধু ভালোবাসে না সম্মান করে এবং জীবনের তালিকায় সর্বোচ্চ পদে আসীন রাখেন।

I9Ws6mn5yoT8JYcTf1.gif

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeTntZEMjmNE2ojS3wJkRgH4FAk5wzUJTnRwSJu27LuNnR3DZNbpLAeQCyaNbnKVWTpGhovHtq.gif

Posted using SteemPro Mobile

Sort:  

Congratulations, your post has been upvoted by @scilwa, which is a curating account for @R2cornell's Discord Community. We can also be found on our hive community & peakd as well as on my Discord Server

Manually curated by @ abiga554
r2cornell_curation_banner.png

Felicitaciones, su publication ha sido votado por @scilwa. También puedo ser encontrado en nuestra comunidad de colmena y Peakd así como en mi servidor de discordia

Loading...

আমাদের প্রতিটা মানুষের নিজের দায়িত্ব ও কর্তব্যের উপর যত্নশীল হওয়া উচিৎ।তারপরও অনেক সময় ভুল ভ্রান্তি হয়ে যায়।ভুলের উর্ধ্বে কেউই না।তবে সেই ভুল বারংবার হলে বিরক্তির উদ্রেক হয়।আপনাকে স্বল্প াময় চিনি,আপনি আপনার কাজের ব্যাপারে যত্নবান জানতাম,আপনার স্পষ্টভাষী রূপ টা আজ দেখলাম।
পরিশেষে এটাই বলব,কাজকে আমাদের প্রত্যেকের ভালবাসা উচিৎ সেই সাথে কাজকে যথাযথ সম্মান ও করা উচিৎ।
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য।

 2 years ago 

অনেক ভালো লাগলো পোস্ট টি পড়ে। আসলেই যে কাজকে ভালো বাসে না,কাজ ও তার দিকে ফিরে তাকায় না। কাজের মাধ্যমেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। আপনি অনেক ‌কাঠ‌ কয়লা পুড়েই এখানে এসেছে ন।তা জেনেও আমার অনেক ভালো লাগলো। আপনার জন্য শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

আপনার এই প্রতিবেদনে দুটি শিক্ষা মূলক দিক হচ্ছে আমরা যতদিন বাঁচবো ততোদিন শিক্ষার সুযোগ পাব। দ্বিতীয়টি হলো উচিৎ কথা সামনাসামনি বলার সৎ সাহস, যেটা মানুষকে অর্জন করতে হয় কঠোর পরিশ্রম করে।

আপনার বিরক্তির কারণটা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বোধের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য আমারা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।

আপনার সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ কামনা করি। আপনি আমার নমস্কার নেবেন।

Posted using SteemPro Mobile

Coin Marketplace

STEEM 0.08
TRX 0.30
JST 0.035
BTC 109952.01
ETH 3856.29
USDT 1.00
SBD 0.52