সিবলিং জেলাসি (Sibling Jealousy) কিভাবে মোকাবিলা করবেন ?
![]() |
---|
আমার দুই ছেলের মাঝে বয়সের পার্থক্য মাএ ১৪ মাস। ছোট ছেলের জন্মের সময় আমার বড়ো ছেলে বলতে গেলে তখন কিছুই বুঝতো না।তারপরও অনেককেই বলতে শুনতাম যে ,
তোমার আদরের দিন শেষ, এ-ইতো আর মাএ কয়েকটা দিন।
তখন আমি নিজেও এসব বিষয় তেমন কিছু বুঝতাম না যার কারনে এসব কথার কোন প্রতিবাদই করি নাই।চুপচাপ শুনে যেতাম।কিন্তু এখন বুঝতে পারি যে তখন এর প্রতিবাদ না করে অনেক ভুল করেছি।ও হয়তো ছোট ছিলো বলে ওর ওপর তেমন একটা প্রভাব পরে নাই, কিন্তু ওর বয়স যদি কিছুটা বেশি থাকতো তাহলে এর প্রভাব ওর মনের ওপর মারাত্মক হতে পারতো।
পরবর্তী সময়ে এই জিনিসটা আমি অনেকবার খেয়াল করেছি।
![]() |
---|
একটা বাচ্চার কাছের মানুষই তার মনের মাঝে এক ধরনের হিংসা ঢুকিয়ে দিয়ে থাকে তার ছোট ভাই বোনের সাথে। আবার আমরা- বাবা মায়েরাও একই কাজ করে থাকি। তুলনা করি বড় কিংবা ছোট ভাই-বোনের সাথে । একটা বাবা-মায়ের দুটো বাচচার মেধা, চালচলন একরকমই হবে এমন কোন কথা নেই।
আমার নিজের পরিবারের মাঝেও দেখেছি একটা বাচচা অতিরিক্ত দুষ্ট। শুধু দুষ্ট না মেধার মাঝেও রয়েছে বিস্তর পার্থক্য দেখেছি। এর ফলাফল হিসেবে তার মাকেই দেখেছি তুলনা করতে। এমন না যে ওর মা অসচেতন কিন্তু একটা সময় ধৈর্য হারিয়ে ফেলেই করেছে কাজটা। কিন্তু এর ফলাফল আমি চোখের সামনেই দেখেছি।
এখন কথায় কথায় বলে, বড় ছেলেতো এজন্য। এর প্রভাব যে শুধু ওর ওপরই পরেছে এমন না এটা কমবেশি আমার ছোট ছেলের ওপরও পরেছে।কারন ও এসে আমার ছেলেকে বলে যে,আরে তুইতো ছোট ছেলে। আর আমার ছেলেও এটা কিছুটা বিশ্বাস করে।
যদিও কথাগুলো খানিকটা পারিবারিক তার পরও এর অবতারণা এই জন্যই করলাম যে, আমরাই বাচ্চাদের মাঝে এই সিবলিং জেলাসি ঢুকিয়ে দিয়ে থাকি।।কখনো সেটা খেলাচ্ছলে আবার কখনো বা নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে।
![]() |
---|
অনেক বাবা-মায়ের ক্ষেত্রেই খেয়াল করেছি, এক সন্তান এর প্রতি সামান্য পরিমানে বেশি দূর্বলতা থাকা। এটা হয়তো সেই বাবা মা খেয়ালই করেন না।তার অজান্তেই ঘটে যায় কিন্তু সেই ভুক্তভোগী বাচচাটা ঠিকই খেয়াল করে। এতে করে সে একধরনের তীব্র মানসিক কস্টও জেলাসিতে ভুগে থাকে।সে হয়তো মুখে কিছুই বলে না কিন্তু এর প্রভাব তার মনের উপর ঠিকই পরে। প্রথমত, এধরণের আচরণ করাটা একদমই ঠিক না। তারপরও যদি কারো মাঝে এধরণের একতরফা কিছু থাকে তাহলে তাকে এটা কন্ট্রোল করা উচিত।
শুরুতেই যে কথাটা বলছিলাম যে,নতুন শিশুর আগমনে বড়ো বাচচাটাকে মজা করে মানুষ ভয় দেখায়।এমনিতেই ছোট বাচার প্রতি কিংবা কোন বাচচা যদি অসুস্থ থাকে তাহলে মানুষ কিছুটা বেশি নজর দেয়। এতে করে বড় শিশুটার খারাপ লাগাটাই সাভাবিক।এসময়ে তার প্রতি যদি আসলেই কিছুটা মনযোগের অভাব ঘটে তাহলে বাসার বাকি সদস্যদের এগিয়ে আসা উচিত। সেই সাথে তার বাবা মাকেও চেষ্টা করা উচিত তাকে সময় দেয়ার এবং তার মাঝে এই বিশ্বাস স্হাপন করা উচিত যে, তাকেও আপনি ভালোবাসেন এবং সবসময়ই তার পাশে আছেন।
![]() |
---|
বাচচাদের মাঝে প্রায়ই ঝামেলা কিংবা ঝগড়া -বিবাদ লেগেই থাকে।এসব মিটমাট করতে গেলে একজনের পক্ষ নেয়াটাই স্বাভাবিক। এর ফলে যার পক্ষ নেয়া হয় না সে মানসিক ভাবে কস্ট পেয়ে থাকে।তাই এইসব ঝগড়া বিবাদ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থেকে ওরা যাতে ওদের সমস্যা মিটিয় ফেলতে পারে সেই শিক্ষা দেয়া উচিত। সাথে দুজনের মাঝে যাতে একটা ভালো বন্ডিং গড়ে উঠে এদিকটায় সবসময়ই খেয়াল রাখা উচিত। সমানভাবে দায়িত্ব ভাগ করে দিন।কাউকেই সাহায্য না করে ওদেরকে বলেন যে একজন যেন আরেকজনকে প্রয়োজনে সাহায্য করে।
![]() |
---|
তাহলেই হয়তো আপনার শিশু তার এই জেলাসি থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হবে।
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
![image.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmcbLFsUnAvByRWqVfYseHWp96dDnrerJ2JEAey2YBHMfn/image.png)
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
আপনারই পর্যবেক্ষণটা একদমই সঠিক।আমরা মনের অজান্তেই বিভিন্ন কথা বলে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ফেলছি। অথচ আমরা নিজেরা এটা অনুভব করতে পারছি না। এটা নিতান্তই মনের অজান্তে অভ্যাসবশত মানুষ করে থাকে ।কিন্তু এখন সময় এসেছে সচেতন হওয়ার ।মানুষকে কথা বলার আগে বুঝে শুনে নিতে হবে যে সে কি বলছে এবং এ কথার কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে ।
ভাই হলে আরেক ভাইয়ের আদর কখনো কমে যায় না বোন হলেও আরেকটি বোনের আদর কখনো কমে যায় না।বরং ভাই ভাই ও বোন বোনের মধ্যে যে বন্ডিং থাকে তা এই পৃথিবীর সবচেয়ে নিষ্পাপ ভালবাসার মধ্যে একটি। চমৎকার একটি বিষয় আজকে তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে। খুব ভালো লাগলো পড়ে।
ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য।
এরকম মা অনেক আছে নিজের সন্তানের মধ্যে তুলনা করে একজনের সাথে আরেকজনের। এটা আগের দিনের মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশি হতো যে ছেলে পড়ালেখা বেশি পারতো তাকে অন্যদের সাথে তুলনা করতো এতে যারা কম পারতো তাদের মধ্যে একটা রাগ তৈরি হতো যা পরর্বতীতে বিরাট আকার ধারন করতো। এটা বর হলেও থেকে যে ছেলে মাকে টাকা বেশি দিতো তার প্রতি ভালোবাসা বেশি দেখাতো আর এক্ষেত্রে আবার তৃতীয় ব্যক্তি কাঁটা গায়ে লবনের ছিটা দিতো। কিন্তু ভাইবোনের রাগের মধ্যে তাদের ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে। ধন্যবাদ সুন্দর একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য।
ধন্যবাদ সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।
অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। ছোট পরিবারের বাচ্চাদের মধ্যে সিবলিং জিলাসি টা বেশি দেখা যায়। বড় পরিবারে এটা তুলনামূলক কম। এটা একদম সত্য কথা যে বড়রা হাসির ছলে বলা কথাই এই ছোট বাচ্চাদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তারা অজান্তেই এক জন আরেক জনকে প্রতিযোগি ভাবতে শুরু করে। মাঝে মাঝে বাবা মার কারণেও এই বিবাদ বড় রূপ ধারণ করে।
এই সমস্যা সমাধানে বড়দেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। মজার ছলে এসব বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।
ভালো লাগলো আপনার সুন্দর একটি পোস্ট পড়ে। শুভকামনা।
ধন্যবাদ এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য
আপনি যে বিষয়টা নিয়ে একটু রিসার্চ করেছেন। সেটা আমি অনেক ক্ষেত্রেই দেখেছি। বিশেষ করে আমার ফ্যামিলিতে ও দেখেছি। এখন বর্তমানে আমি আমার ননদের ফ্যামিলিতে ও দেখতে পাচ্ছি। কেননা আমার ননদ তার তিনটা ছেলেমেয়েকে আলাদা আলাদা চোখে দেখে। এটা নিয়ে আমি অনেকবার উনার সাথে কথা বলেছিলাম। কিন্তু উনি বলল সন্তানদেরকে বড় করার ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত।
আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে বিষয়টা আরো বেশি ক্লিয়ার হয়ে গেলাম। কেননা আমাদেরকে অবশ্যই সবাইকে সমান চোখে দেখতে হবে। পরিবারের সন্তান সবাই আর কাউকে যদি আমরা একটু ছোট করে দেখি কাউকে একটু বড় করে দেখি। এটা কিন্তু অনেক বড় একটা অন্যায়।গুরুত্ব বিষয় আলোচনা করার জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ এত সুন্দর করে মন্তব্য করার জন্য। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য
আপনি অসাধারণ একটা বিষয়বস্তু নির্বাচন করেছেন। বাচ্চারা কোন কিছু শিখে পৃথিবীতে আসে না যা কিছু শিখে আমাদের কাছ থেকে শিখে।আপনার কথা টি একদম সঠিক যে আমরাই আমাদের ভাই বা বোন দের অন্য ভাই বোনদের প্রতি হিংসা সৃষ্টি করে দি।আপনার পোস্ট টি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।