Better Life With Steem | The Diary game 3rd August। গুজব ও আন্দোলন এর একদিন। |
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
সকাল |
---|
সিংহাসনে বসা মানে সিংহের পিঠে থাকা। যতক্ষন তুমি একে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে ততক্ষন এই সিংহ তোমার।কিন্তু যে মূহুর্তে তুমি এর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলবে কিংবা সিংহাসন থেকে নেমে যাবে তখন সিংহ তোমাকে খেয়ে ফেলবে।
এররকমই একটা লেখা পড়েছিলাম সৈয়দ মুজতবা আলীর দেশে -বিদেশে বইতে।ঘুম ভাঙ্গার পর থেকেই এই লাইনগুলো মাথার মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
নাহলে সামান্য একটা আন্দোলন আজ এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারতো না যদি না তাদের মাঝে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও অহংকার না থাকতো।সামান্য কথা দিয়ে যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো সেটা না করে বরং শক্তি দেখাতে গেল।যার ফলে এতগুলো তাজা প্রান ঝরে গেল ও এররকম পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো।
এসব ভাবতে ভাবতেই কি নাস্তা বানাবো সেটাও ভাবতেছিলাম।রাতে ভালো ঘুম হয় নাই। এত ভয়ংকর কিছু মেসেজ পেয়েছিলাম তাতে ভয় আর অস্থিরতা বেড়ে গিয়েছিলো অনেক বেশি।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
কারণ এগুলো যদি আসলেই ঘটে তার পরিনাম হবে ভয়াবহ। আর এটা যে শুধু আমারই হয়েছিল এমন না।আমাদের সবার মাঝেই ছড়িয়ে পরছিলো।
যার কারনে ঘুম থেকে উঠতেও লেট হয়েছে।
এরই মাঝে আমার হাসবেন্ড অস্থির হয়ে গেল বাজারে যাওয়ার জন্য। আমি তাকে বাধা দিতেছিলাম কারন পাচ্ছিলাম যে কি না কি হয়।কিন্তু তাকে ফেরাতে পারি নাই।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
দেখি অনেক জিনিস কিনে এনেছে। কারন বিভিন্ন ধরনের কথা শুনতে পাচ্ছি যার কোনটা সত্যি আর কোনটা মিথ্যা বোঝার কোন উপায় নেই।
আসার সময় পরোটা আর ডালবাজিও নিয়ে এসেছিলো সেটা দিয়েই নাস্তা সেরে নিয়েছি।
এরপর টিভি আর ইউটিউবে বিভিন্ন খবর দেখতে লাগলাম।
দুপুর |
---|
এক অদ্ভুত রকমের থমথমে দিন। এমন দিন আমি আগে কখনো দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না।ঝড়ের আগে যেমন একটা থমথমে ভাব থাকে তেমনটাই।রাস্তায় কোন গাড়ির হর্ন নেই শুধু মাঝে মাঝে পুলিশের গাড়ি কিংবা এম্বুলেন্স এর সাইরেন ছাড়া। এতদিন মাথার উপর দিয়ে কয়েক মিনিট পর পর হেলিকপ্টার দেখেছি কিন্তু গতকাল থেকে একটা হেলিকপ্টারও দেখতে পাচ্ছি না।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
কি হতে চলেছে কিছুই বুঝতে পারতেছি না। এরই মাঝে ছাত্র, শিক্ষক, আইনজীবী, এককথায় সব ধরনের মানুষের একত্রিত হওয়ার সংবাদ পাচ্ছি।
শহীদমিনার এলাকা জনসমুদ্রে পরিনত হয়েছে।
আজকে বুয়া আসে নাই।বুয়া না আসলে সাধারণত বিরক্ত হই কিন্তু আজকে খুশি হলাম এটা ভেবে যে না এসে ভালোই করেছে। খারাপ কিছু হলে বেচারী বিপদে পরতে পারে।
এরই মাঝে বিকেলের দিকে কুমিল্লার অবস্থা ভয়াবহ শুনতে পেলাম।সবচেয়ে খারাপ লাগলো এটা জেনে যে,ছাত্রছাত্রীরা যখন গুলির উম্মত্তের মতো দৌড়াচ্ছিল আর বিভিন্ন বাসায় নক করতেছিল ভেতরে ঢোকার জন্য তখন অনেক বাসা থেকেই দরজা না খুলে বরং ভিডিও করতেছিলো।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
রাত |
---|
তিনি ছাত্রদের সাথে আজকে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন অথচ এই কাজটা যদি ১০/১১ দিন আগেও আগে করলেও হয়তো এমন পরিস্থিতি হতো না। কিন্তু এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। ১৮ তারিখ এর পরেও ছাত্ররা সুযোগ দিয়েছিলো কিন্তু সেই সুযোগ না নিয়ে শক্তি প্রদর্শন করলো বার বার । চার সমন্বয়কে যখন ডিবিপুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছিলো তখনও তারা বার বার বলেছিলো যে , তারা তার সাথে কথা বলতে চায়।কিন্তু সেটা তিনি করেন নাই ।তার এই ভুলের পরিনতি আজকের এই অবস্থা ।
খবরে দেখলাম শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় আক্রমণ হয়েছে।এটা দেখে মনে পরলো যে,, নগর পুড়লে দেবালয় রক্ষা পায় না।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
গতকাল রাত থেকেই বিভিন্ন ধরনের গুজব শুনতে পাচ্ছিলাম কিন্ত আজকের রাত যেন সব কিছু ছাপিয়ে গেছে। আজকের রাতকে গুজবের রাতও বলা যায়।
একদল বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে আরেকদল সেটাকে কাউন্টার দিচ্ছে, যার যা মনে আসছে সেটাই বলছে। তবে যে যাই বলুক না কেন সবাই মোটামুটি একমত যে আগামীকাল ভয়ংকর কিছু একটা হতে যাচ্ছে।
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে নেয়া |
---|
এখন রাত ৩টার ওপরে কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া জেগে আছে। কিন্তু আমি ব্যাংকারের বউ তাই যাই হোক না কেন আমাকে তার জন্য সকালে নাস্তা বানাতে হবে আর তাকে বিদায় জানাতে হবে আতংকিত মনে যে কিভাবে বাসায় আসবে।
তাই সোশ্যাল মিডিয়া থেকে লগ আউট করার সাথে সাথে লেখা বন্ধ করে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলাম।
চলমান পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ জানিনা সামনে দিনগুলো কিভাবে মানুষ মোকাবেলা করবে। যতদিন যাচ্ছে ততই যেন মানুষের খোপ বেড়েই চলেছে গত কয়েক বছর ধরে মানুষের উপরে যে জুলুম অত্যাচার করছে তার প্রতিফলে আজকে মানুষ এভাবেই রাস্তায় নামছে। যখন একজনের পিট দেয়ালে থেকে যায় তারা আর কিছুই করণীয় থাকে না।
যদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের মধ্য দিয়ে সমসাময়িক প্রেক্ষাপট তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন।