"Travel diary- Explored Digha-(Part-2)"

in Incredible India3 months ago
IMG_20240605_023857.jpg
"দীঘায় কাটানো প্রথম দিনের আনন্দের মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

কমিউনিটির কাজ মোটামুটি সম্পন্ন করে ভাবলাম নিজের পোস্ট লেখা কিছুটা এগিয়ে রাখি। শুরুতেই জানাই আজকের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব দীঘায় কাটানো প্রথম দিনের গল্প।

এর আগের পোস্টে আমি দীঘায় ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান ও সেখানে পৌঁছানো পর্যন্ত লিখে শেষ করেছিলাম। আজ ঠিক তার পর থেকে শুরু করছি। সত্যি কথা বলতে এই ধরনের লেখাগুলো তাড়াহুড়ো করে লেখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না।

কারণ আমার মনে হয় ফেলে আসা দিনের কোনো আনন্দের মুহূর্তগুলোকে যখন লেখার মাধ্যমে উপস্থাপন করবো, তখন সেই মুহূর্তগুলোকে আরও একবার উপভোগ করার সুযোগ আমি পাবো। তাই বলতে পারেন স্মৃতিচারণার মাধ্যমেই আরো একবার সেই আনন্দের মুহূর্ত গুলো ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করি।

IMG_20240603_112809.jpg
"হোটেল খোঁজার মুহুর্ত"

যাইহোক সমুদ্র দর্শনের পর আমাদের প্রথম কাজ ছিলো খাওয়া দাওয়া সম্পূর্ণ করা। তারপর হোটেল খোঁজা। তাই প্রথমেই আমরা একটা দোকান থেকে কচুরি খেয়ে নিলাম। তারপর বেরিয়ে পড়লাম হোটেল খোঁজার উদ্দেশ্যে।

আমার বরাবরই সমুদ্রের কাছাকাছি কোনো হোটেল পছন্দ। এই কারণে বেশি ভিতরের দিকে না দেখে না রাস্তার উপরের দিকে খুঁজতে থাকলাম। যদিও এই দায়িত্বটি আমার বান্ধবীর দাদাই নিয়েছিলো। খুব বেশি লাক্সারি রুম আমাদের দরকার ছিল না, কারণ সেই সময় ততটাও গরম ছিল না, যে এসি রুম নিতে হবে।

এই কারণে আমরা একটা সাধারন রুম বুক করেছিলাম, যাতে অন্তত তিনজন একসাথে থাকতে পারি। দাদা নিজের জন্য আলাদা একটা রুম নিয়ে ছিল আমাদের পাশেই। হোটেলের রুমগুলো যেরকম হয় তেমনি ছিলো। আলাদা তেমন কিছুই ছিলো না।

IMG_20240604_110941.jpg
"হোটেল বেড"
IMG_20240604_111120.jpg
"ব্যালকনির থেকে দেখা রাস্তার দৃশ্য"

একপাশে ছোট্ট একটা টেবিল, মাঝারি সাইজের একটি খাট, একটা টিভি,,একটা ওয়ার্ড ড্রপ,,আর অ্যাটাচ টয়লেট, এই ছিলো ভিতরের জিনিসপত্র। যদিও সম্পূর্ণ রুমের ছবি তোলা হয়নি, কারণ আমাদের জিনিসগুলো ভীষণ বাজে ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো। আমি শুধুমাত্র খাটের ছবিটি শেয়ার করলাম।

IMG_20240604_111012.jpg
"সমুদ্রে নামার পূর্বে আমরা"
IMG_20240604_110811.jpg
"সমুদ্রের জলে"

রুমে ঢুকে কোনো রকমে লাগেজ রেখে, তাড়াহুড়ো করে আমরা রেডি হয়ে নিলাম। ভালো জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যাবে বলে, তখন নামিনি। না হলে হয়তো আমি সেই মুহূর্তেই নেমে যেতাম। যাই হোক ড্রেস চেঞ্জ করে, রেডি হয়ে, রুমে লক করে পৌঁছে গেলাম সমুদ্র স্নানে। সেখানে গিয়ে এত মজা করেছি যেগুলো ভাষায় লিখে প্রকাশ করার মত নয়। তবে যে ছবিগুলো শেয়ার করলাম, সেগুলো দেখে হয়তো আপনারা কিছুটা আন্দাজ করতে পারবেন।

IMG_20240604_111348.jpg
"সমুদ্রে তখন আমরা কিছু আনন্দের স্মৃতি তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলাম"

সত্যি কথা বলতে বান্ধবীর দাদা আমাদের ক্যামেরাম্যান হয়ে গিয়েছিলো। তিনি বোধহয় আমাদের সাথে গিয়ে ততটাও মজা করতে পারেন নি, কারণ আমরা সব ছবি ওনাকে দিয়েই তোলাচ্ছিলাম। আমি সেও ধৈর্য্য ধরে উপরে দাঁড়িয়ে আমাদের ছবি তুলে যাচ্ছিলো। অবশ্য পরে ওনাকেও আমরা একটু সমুদ্র স্নানের সুযোগ দিয়েছি।

IMG_20240604_111059.jpg
"সমুদ্রের পাড়"

কারণ আমরা রুমে ফিরে এসে আগে স্নান করে নিয়েছিলাম।তারপর দাদা এসে স্নান করেছিল দুপুরের খাবার সময় কখন পার হয়েছে সমুদ্রে আনন্দ করতে করতে সেটা ভুলেই গিয়েছি। হিসেব মতন প্রায় সন্ধ্যা বেলার দিকে আমরা লাঞ্চ করেছি।

এত বেশি ক্লান্ত লাগছিল যে তখন আর হেঁটে সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে বসতে ইচ্ছে করছিল না। তাই লাঞ্চ সেরে রুমে এসে সকলেই শুয়ে পড়লাম। ও হ্যাঁ প্রথম দিন লাঞ্চে ওরা সকলে চিকেন বিরিয়ানি খেয়েছিলো। কিন্তু আমি যেহেতু বাইরের বিরিয়ানি খাই না, এই কারণে আমি চিকেন কারি দিয়ে সাদা ভাত খেয়েছিলাম।

যেহেতু আমরা যে হোটেলে ছিলাম, সেখানকারই রেস্টুরেন্ট খেয়েছিলাম। তাই খাবারটা বেশ ভালোই হয়েছিল। খাওয়ার ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না, কারণ সেই সময় সকলের ফোন চার্জে বসানো ছিলো। সমুদ্রে ছবি তুলতে তুলতে চার্জ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল।

IMG_20240604_111432.jpg
"বিকালে বেড়োনোর জন্য তৈরি আমরা সকলে"

ঘুম থেকে উঠতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেলো। ব্যালকনি দিয়ে উঁকি দিয়ে দেখলাম প্রচুর লোক তখন রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে। আমরাও মোটামুটি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। সেদিন রামনবমী ছিলো, এই কারণে রাস্তায় বেরিয়ে দেখলাম মানুষের প্রচুর ভিড়।

IMG_20240604_111825.jpg
"রাম নবমীর উৎসব "

ভিড়টা পেরোতেই পেছনের দিকে একটা গাড়ি আসতে দেখলাম, যার সামনে শ্রী রামচন্দ্রের একটি সুন্দর ছবি লাগানো ছিলো। এরপর আমরা পৌঁছে গেলাম সমুদ্রের পাড়ে। রাতের সমুদ্রের সৌন্দর্য্য একেবারেই অন্যরকম। তা ভাষায় প্রকাশ করা আসলেই অসম্ভব। সেখানকার বিভিন্ন দোকান গুলো ছিল একদম নজর কাড়ার মতন।

IMG_20240604_111804.jpg
"ঝিনুকের তৈরি জিনিসপত্রের দোকান"
IMG_20240604_111748.jpg
"ঝিনুকের তৈরী বিভিন্ন ধরনের আয়না"

দুপুরবেলায় যখন আমরা গিয়েছিলাম তখন মার্কেটটা পুরোই বন্ধ ছিলো। বিকেলবেলা নাগাদই সমস্ত দোকান খুলে যায় এবং এই সময় মানুষের ভিড় চোখে পড়ে আরও অনেক বেশি। শঙ্খের তৈরি প্রচুর জিনিস বিক্রি হয় সমুদ্র সৈকত লাগোয়া বাজারে, এটা নতুন কিছু নয়। তবে জিনিসগুলো দেখতেও সত্যিই অনেক বেশি ভালো লাগে।

প্রথম দিন অবশ্য কিছুই কিনিনি। কেনাকাটা যা করার ছিল সেটা ফেরার আগের দিন করেছিলাম। এদিন শুধুমাত্র সমুদ্রের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেছি। বলতে পারেন দীর্ঘক্ষণ সমুদ্রের পাড়ে বসার জায়গাতে বসে, সমুদ্রের ঢেউয়ের আনাগোনা দেখতে দেখতে সময় পার করেছি সকলে মিলে।

IMG_20240604_111609.jpg
"আমাদের প্রিয় পাপড়ি চাট"

এর মাঝে অবশ্য আমাদের সকলের পছন্দের পাপড়ি চাটও খেয়েছি। দামটা যদিও বা তুলনামূলকভাবে বেশি, তবে সমুদ্র দেখতে দেখতে পাপড়ি চাট খাওয়ার আনন্দ উপভোগ করার জন্য এইটুকু দাম দেওয়াই যায়। এরপর রুমে ফেরার তাড়া, কারণ আমরা যে হোটেলে ছিলাম সেখানে ১১টা পর্যন্ত গেট খোলা থাকবে, এমনটাই নিয়মাবলীতে লেখা ছিলো।

IMG_20240605_023521.jpg
"রাতের সমুদ্রের দৃশ্য"

তাই আমরা প্রায় দশটা নাগাদ রুমে ফেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। এদিন বেলা করে খাওয়াতে রাতে কারোরই খিদে ছিলো না। তার উপরে আবার আমরা পাপড়ি চাটও খেয়েছিলাম। তাই সেদিন রাতে আমরা আর কিছুই খাইনি। সকলে রুমে এসে একে অপরের ফোন থেকে ছবি দেওয়া নেওয়া করতে করতে, কখন ঘুমিয়ে গেছে বুঝতে পারিনি।

পরের দিন আমাদের যাওয়ার কথা ছিল শংকরপুর সমুদ্র সৈকতে, যাকে চলতি ভাষায় অনেকেই পশ্চিমবঙ্গের গোয়া বলে থাকেন। সেখানকার অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো, তার জন্য পরবর্তী পর্বের অপেক্ষা করুন। আশাকরছি সেই সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্য আপনারা আমার লেখা এবং ছবির মাধ্যমে কিছুটা হলেও উপভোগ করতে পারবেন।

পোস্টটা লিখতে লিখতে ইতিমধ্যেই আমার যেন মনে হচ্ছে আমি পুনরায় আবার একবার দীঘায় পৌঁছে গেলাম। সেই মুহূর্তগুলো আরো একবার উপভোগ করার সুযোগ পেলাম। যাইহোক আপনাদের আমার পোস্ট পড়ে কেমন লাগলো, জানাতে ভুলবেন না। ভালো থাকবেন। সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের লেখা এখানে শেষ করছি। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 3 months ago 

আমরা বিগত পোস্টেই আপনার দিঘায় ঘুরতে যাওয়ার কথা জানতে পেরেছি। বর্তমান সময় তো কোথায় ঘুরতে গেলে আগে থেকে হোটেল বুক করতে হয়। কারণ পরে গেলে হোটেল খুঁজে পাওয়া বড়ই দুষ্কর হয়ে পড়ে। কিন্তু আপনারা সেখানে পৌঁছে খাওয়া দাওয়া করে তারপরে হোটেল খুঁজেছেন।
আপনার পানিতে যেভাবে লাফালাফি করা দেখলাম বেশ ভালোই মজা করেছেন। বাইরের হোটেলের রুমগুলো সচরাচর এরকমই হয়। আপনারা তো সেখানে গিয়ে সর্বপ্রথম কচুরি খেয়েছেন। তবে আমার চিন্তা আছে কখনো কক্সবাজার ঘুরতে গেলে সবার প্রথম কাঁকড়া খাব😁। দেখব কাকড়া খাওয়ার টেস্টটা কেমন।(মজা করে বললাম)
পুরনো দিনের স্মৃতি নিয়ে পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

যাদের মাছ পছন্দ তারা সকলেই সমুদ্রের কাছে ঘুরতে গেলে কাঁকড়া, চিংড়ি এইসব খেতে পছন্দ করে। তবে আমরা কেউই মাছ পছন্দ করি না। তবে আমার বান্ধবীর দাদা পমফ্রেট মাছ ভাজা কিনেছিলেন। তবে হ্যাঁ জলে একটু বেশিই লাফালাফি করেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য। আশাকরি আপনারও কক্সবাজার যাওয়ার ইচ্ছা খুব তাড়াতাড়ি পূরণ হবে। ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

আপনার আগের পোস্টে আমি জানতে পেরেছি আপনি দীঘায় বেড়াতে গিয়েছেন। আপনারা যেহেতু বাড়ি থেকে হোটেল বুক করে যাননি তাই হোটেল খুঁজতে একটু কষ্টই হয়েছে। সমুদ্র আমারও খুব ভালো লাগে। আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে সমুদ্রের জলে আপনারা খুব আনন্দ করেছেন। আপনার পোস্টটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

 3 months ago 

হোটেল বুক না করে গেলেও, হোটেল পাওয়ায় কোনো অসুবিধা হবে না ভেবেই আমরা আর বুক করিনি। দুটো হোটেল দেখেই আমরা বুক করেছিলাম, তাই খুব একটা কষ্ট হয়নি। সমুদ্রের জলে আমরা সত্যিই অনেক মজা করেছিলাম। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

TEAM 7
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator09.

Curated by : @mvchacin

 3 months ago 

Thank you for your support @mvchacin.

 3 months ago 

আপনারা প্রথমে খাওয়া দাওয়া করে নিয়ে হোটেল খোজাখুজি শুরু করেন।এরপর মোটামুটিভাবে থাকার মতো একটা হোটেলে উঠে পড়েন।সেখানকার বেলকনি দিয়ে যে দৃশ্যটি এটি আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।আপনি বাইরে বিরিয়ানি খাননা।তাই চকেন কারি দিয়ে সাদা ভাত খেয়েছেন।এই ট্যুরে আপনি আপনার বান্ধুবীর দাদাক্র ক্যামেরম্যানের দায়িত্ব দিয়েছিলেন।এটি খুব ভালো লাগার একটি কাজ।লোক না পেলে মাঝে মাঝে আমাকেও ডাকবেন আপু।আমি ছবি তুলে দিবো আপনাদের।ভালো থাকবেন।সুস্থ থাকবেন।

 3 months ago 

আসলে আমরা তিনজন ছবি তুলতে এতো ব্যস্ত ছিলাম যে, ছবি তোলার ভার দাদার উপরেই ছিলো। 😊। পরে উনি রাগ করায় সকলে মিলে মাঝে মধ্যে সেলফি তুলেছি, যাতে দাদাও আমাদের সাথে থাকে। তবে সকলে মিলে অনেক মজা করেছিলাম আমরা। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.033
BTC 64188.14
ETH 2766.12
USDT 1.00
SBD 2.66