|| Travel diary (Mayapur-part-1) || 31th August,2024 ||

in Incredible India2 months ago
IMG_20240901_080923.jpg
"আমাদের যাত্রা শুরুর কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি খুব ভালো কাটুক এই প্রার্থনা রইলো।

IMG_20240831_050806_074705.jpg
"ভোরের আকাশ"

এখন সকাল ৫.১২ বাজে। সবেমাত্র ট্রেন ছাড়লো। যেহেতু অনেকটা পথ যেতে হবে, তাই ভাবলাম ট্রেনে বসেই আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য লেখাটা শুরু করি। নিশ্চয়ই ভাবছেন এতো সকলে কোথায় রওনা হলাম?

অনেকদিন ধরেই প্ল্যান করছিলাম, বান্ধবীরা মিলে মায়াপুর যাবো। মায়াপুর সম্পর্কে আপনারা ইউটিউবে বা গুগুল থেকে জানতে পারবেন, একথা ঠিক। তবে আমি আমার এই মায়াপুর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার আগামী দিনের পোস্ট গুলির মাধ্যমে।

সত্যি বলতে এই মায়াপুর ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানটা আমরা যখন দু বছর আগে দীঘা গিয়েছিলাম তখনই করছিলাম। তবে যেহেতু একসাথে বেশ কয়েকজন যাবো, তাই সকলের সাথে সময় অ্যাডজাস্ট হচ্ছিল না।

IMG_20240831_050710_074630.jpg
"দত্তপুকুর স্টেশন"

তবে শেষ পর্যন্ত আগস্ট মাসের শেষ দিনে যাওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হলো। সেই কারণেই আজ ভোরবেলাতে রওনা দেওয়া। ভোরবেলা যাওয়ার উদ্দেশ্য হলো, সেখানে গিয়ে যেন ঘুরতে পারি। আমি যেহেতু দত্তপুকুর স্টেশন থেকে একা উঠেছি, তাই এই মুহূর্তে আমি একাই আছি। তবে কয়েকটি স্টেশন বাদে আমার বান্ধবীরা উঠে পড়বে। তখন গল্প আর আড্ডায় জমজমাট হয়ে যাবে আমাদের এই জার্নিটা।

যাইহোক ঘুম থেকে উঠেছি আজ সকাল ৪.১৫ নাগাদ। ফ্রেশ হয়ে, রেডি হয়ে বাড়ি থেকে রওনা হয়েছে ৪.৫০ নাগাদ। কারণ ট্রেন টাইম ছিল ৫.১২ মিনিটে। সকালে স্টেশন পর্যন্ত আসার জন্য আদেও কোনো গাড়ি পাবো কিনা জানিনা, তাই বাধ্য হয়ে শুভকেই পৌঁছে দিতে বলেছিলাম।

IMG_20240831_050748_074649.jpg
"প্ল্যাটফর্মে ওঠার সময় তোলা ছবি"
IMG_20240831_050644_074603.jpg
"সুর্যোদয়ের পূর্বমুহূর্তে"

যখন আমরা বেরিয়েছি তখনও তেমনভাবে সূর্যোদয় হয়নি।এরপর টিকিট কেটে তিন নম্বর প্লাটফর্মে পৌঁছে দেখি, আকাশটা দেখতে এতো সুন্দর লাগছিল যে, আমি কয়েকটা ছবিও তুলেছি। এরপর দুজনে মিলে ট্রেনের অপেক্ষা করতে লাগলাম। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন আসলে, শুভর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রওনা হলাম।

বেশ কিছুক্ষণ একাই থাকতে হবে, তাই ভাবলাম পোস্ট লেখাটা কিছুটা এগিয়ে রাখি। দত্তপুকুর থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত টিকিট কেটেছি। যার মূল্য ২৫ টাকা নিয়েছে। কারণ কৃষ্ণনগর থেকে আবার অটোতে যেতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, ভায়া বনগাঁ এবং রানাঘাট হয়েই যাবো। কারণ শিয়ালদা হয়ে গেলে ভীর হবে অনেকটা। তবে রানাঘাট হয়ে গেলে, ভীরটা এড়ানো সম্ভব।

IMG_20240831_080258.jpg
"দত্তপুকুর থেকে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত কাটা টিকিট"
IMG_20240901_055713_075405.jpg
"মায়াপুরের নুতন মন্দির,যা এখনও পর্যন্ত উদ্ভোধন হয়নি (ছবিটি আজ তোলা)"

বহুদিন যাবত এই মায়াপুর যাওয়ার প্লান হচ্ছিল আমাদের।যেখানকার আকর্ষণ হলো, মায়াপুরে তৈরি হওয়া নতুন মন্দিরটি। যদি এখনও পর্যন্ত মন্দিরটি সম্পূর্ণ হয়নি, তা এখনো নির্মীয়মান অবস্থায় রয়েছে। মায়াপুরে ব্যক্তিগত ভাবে আমার সবথেকে ভালো লাগে মূল মন্দিরের আরতি। সেটা সন্ধ্যা আরতি হোক বা ভোরের আরতি।

২০১৫ সালে একবার মায়াপুর দর্শনে গিয়েছিলাম। সেই সময় মন্দিরের আরতি দেখার স্মৃতি আজও স্পষ্ট। বলতে পারেন সেই আকর্ষণ থেকেই মায়াপুরের যাওয়ার আগ্রহটা অনেকাংশে বেশি।

IMG-20240901-WA0000.jpg
"আমরা সকলে"
IMG_20240901_080010.jpg
"ট্রেনটা বেশ ফাঁকাই ছিলো"

যদিও মায়াপুর দর্শনের সব থেকে ভালো সময় শীতকাল। সেই সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফুলের সমারোহে মায়াপুর সেজে ওঠে অন্য রূপে। তবে কথায় আছে এই সকল জায়গায় ইচ্ছা থাকলে সব সময় যাওয়া সম্ভব হয় না, যদি ঈশ্বর না সেখানে ডাকেন। এই কারণেই হয়তো এতদিন ধরে প্লান করেও, আমাদের শীতকালে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত এই সময়েও যে যেতে পারছি, এটা অনেকটা আনন্দের।

IMG_20240831_061316_074859.jpg
"বনগাঁ স্টেশনে সাজানো ফুলের গাছ"
IMG_20240831_061314_074824.jpg
"ফুলগাছের সাথে বেশকিছু পাতাবাহার গাছও আছে"

যাইহোক এর মাঝেই বান্ধবীরা ট্রেনে উঠে পড়েছে, ওদের সাথে কথাবার্তা বলার পর দেখতে দেখতে পৌঁছে গেলাম বনগাঁ স্টেশনে। সেখান থেকে ট্রেন বদলে আমাদেরকে রওনা করতে হবে রানাঘাটের উদ্দেশ্যে।

IMG_20240831_061312_074802.jpg
"পাতাবাহারের সৌন্দর্য্য"
IMG_20240831_061309_074741.jpg
""পাতাবাহারের সৌন্দর্য্য"
IMG_20240831_061226_075049.jpg
"রানাঘাটে যাওয়ার ট্রেনে বসে তোলা বনগাঁ লোকালের ছবি"

তাই খুব বেশি সময় নষ্ট না করে, ট্রেন থেকে নেমে উল্টো দিকের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকা রানাঘাট লোকালে উঠে বসলাম। তখন জানালা দিয়ে তোলা ছবিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

মায়াপুর ঘোরার অভিজ্ঞতার পরবর্তী অংশ, পরের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের পোস্টটা এখানেই শেষ করছি। আশা করছি ব্যক্তিগতভাবে যাদের মায়াপুর দর্শনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা তাদের ভালোলাগা অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে শেয়ার করবেন। সকলে ভালো থাকবেন।

"কিছু ছবি বান্ধবীর ফোন থেকে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নেওয়া।তাই তারিখ পরিবর্তন হয়ে গেছে।"
Sort:  
 2 months ago 

যেহেতু আমি নিজে কখনো ভারতে যাই নাই তাই ভারতের কোন কিছুই চিনি না তবে মাঝেমধ্যে আপনাদের ভরা মনের পোস্ট পড়লে মনে হয় যে আমি ভারতেই বসে আছি মায়াপুর কোন জায়গায় সেটা আমি জানিনা তবে আপনার লেখা পড়ে অনেক কিছুই জানতে পেরেছি
মায়াপুরের নুতন মন্দির,যা এখনও পর্যন্ত উদ্ভোধন হয়নি তার আগেই আমরা দেখতে পেলাম আপনার এই পোস্টে মধ্য।

পাতাবাহারি গাছ গুলো এমন সুন্দর করে কেটে রাখলে দেখতে খুবই ভালো লাগে। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভ্রমণের দৃশ্যগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।

 2 months ago 

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। মায়াপুরের অনেক ছবি আপনি আমার আগামী পর্বে আরও ভালো ভাবে দেখতে পাবেন। এই সকল জায়গা গুলো মানসিক শান্তির এক ঠিকানা। ওখানে গেলেই যেন অন্য ভালোলাগায় মন ভরে ওঠে। পাতাবাহার গাছ গুলো কেটে রাখলেই দেখতে বেশি ভালো লাগে। ট্রেন থেকে নেমে প্ল্যাটফর্মের সামনে গাছগুলো এতো যত্ন করে লাগানো, যা স্টেশনের সৌন্দর্য্যকে অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। দেখে এতো ভালো লেগেছিল যে, কয়েকটি ছবি তুলেছিলাম। সেগুলো দেখে আপনার ভালো লেগেছে জেনে সত্যিই আমারও ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

আমরা মেয়েরা যখন সংসারের সামলানোর ভিতর দিয়ে যখন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে যায় তখন মনটা সত্যিই ভালো হয়ে যায়। আর আবার তা যদি হয় বান্ধবী গুলোর সাথে তাহলে তো কথাই নেই আনন্দে রাত সীমা থাকে না।।।

আপনার তোলা ছবি এবং স্টেশনের বেশ কিছু ফটোগ্রাফি সবকিছুই ভালো লেগেছে যদিও ভারত কখনো যায়নি, তবে এই স্টেশন গুলোর নাম অনেকবার শুনেছি পড়েছি গল্পের মাঝে ভীষণ ভালো লাগলো আপনার ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে পেরে।

Loading...

TEAM 5

Congratulations! This post has been upvoted through steemcurator07. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags.


image.png

Curated by : @damithudaya

 2 months ago 

Thank you @damithudaya Sir for your support. 🙏

 2 months ago 

দিদি এতো আপনি খুব বাজে করলেন! কৃষ্ণনগরের ওপর দিয়ে যাতায়াত করছেন। আমার সাথে একবারও যোগাযোগ করলেন না। আমি যদি আগে জানতাম তাহলে অবশ্যই আপনাকে টেনেটুনে হলেও নিয়ে আসতাম । আমার তো ভীষণ খারাপ লাগছে।

 2 months ago 

প্রথমেই আমি ক্ষমাপ্রার্থী, আপনাকে না জানিয়ে আপনার বাড়ির খুব কাছ থেকে ঘুরে আসার জন্য। সত্যি বলতে একটা দিনের জন্য যাওয়া হয়েছে, যাতায়াতেই অনেকটা সময় কেটে গিয়েছিল আমাদের। আর যেহেতু সাথে বান্ধবীরা ছিলো, তাই আপনার সাথে কতক্ষণ সময় কাটানো সম্ভব হতো সেটা নিয়ে যথেষ্ট সন্ধিহান ছিলাম। তবে কথা দিলাম পরবর্তীতে যদি মায়াপুরে যাওয়ার প্ল্যান হয়, প্রথমেই আপনাকে ও মৌসুমী দিদিকে জানাবো। অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট পড়ে আপনি মন্তব্য করেছেন তার জন্য। নিশ্চয়ই আমাদের দেখা হবে খুব তাড়াতাড়ি, আমিও অপেক্ষায় রইলাম।ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

ঐতিহাসিক স্থাপনা গুলোতে ভ্রমণ করতে খুব ভালো লাগে, অধিকাংশ জায়গায় শীতকালে ভ্রমন করতে খুব ভালো লাগে, আপনার মায়াপুরের ভ্রমনের কাহিনী দেখে খুব ভালো লাগলো, আমরা দূরে কোন ঐতিহাসিক স্থানে ঘুরতে গেলে আগে থেকে প্ল্যান করে থাকি, সেই প্লান অনুযায়ী ঘুরতে যাই, ধন্যবাদ সুন্দর ভ্রমণ কাহিনীটি আমাদের সাথে শেয়ার করার।

 2 months ago 

হ্যাঁ, আপনি ঠিকই বলেছেন ঐতিহাসিক জায়গা গুলোতে ঘোরার অনুভূতি সত্যিই ভিন্ন হয়। বিভিন্ন ঐতিহাসিক জায়গা গুলি পর্যবেক্ষণ করার সময় কোথাও যেন ইতিহাসের সাথে আমাদের একটি অদৃশ্য মেলবন্ধন তৈরি হয়, যেটা আসলেই লেখার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। প্ল্যান আমরা অনেক সময় করি তবে সব সময় সেটা সম্পূর্ণ হয় না। কিন্তু যখন সেটা হয়, তা অনেকখানি আনন্দের হয় এ কথাও সত্যি। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 months ago 

আমার সাথে হয়তো খুব অল্পদিনে পরিচয় আপনাদের। কিন্তু বাড়ির কাজ দিয়ে মায়াপুর ঘুরে গেলেন । আমাকে বললে আমি আপনার সাথে একটু দেখা করতে পারতাম। যাইহোক অনেকদিন বাদে বান্ধবীদের সাথে মায়াপুরে যাওয়ার মুহূর্ত টা শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করছি বান্ধবীদের সাথে মায়াপুরে খুব ভালোভাবে ঘুরেছেন। মায়াপুর আমাদের বাড়ি থেকে বেশি দূরত্বের নয়।

 2 months ago 

খুবই দুঃখিত দিদি, আপনাকে ও ঈশা দিদিকে না জানিয়ে আপনাদের বাড়ির খুব কাছ থেকে ঘুরে আসার জন্য। পরবর্তীতে এমন ভুল হবে না কথা দিলাম। আসলে অনেকদিন ধরে যাওয়ার প্ল্যান হচ্ছিলো, তবে আদেও সেদিন যাওয়া হবে, সেটা আগের দিন রাতে নিশ্চিত হতে পেরেছিলাম। তাই আগে থেকে জানানো সত্যিই সম্ভব হয়নি। আপনি মায়া পুরের খুব কাছাকাছি থাকেন এটা সত্যিই জানা ছিল না। তবে আপনাদের বাড়ি যে কৃষ্ণনগরে, এই বিষয়টা আমার জানা ছিলো। কথা দিলাম পরবর্তীতে যখন মায়াপুরে যাবো, অবশ্যই আপনাদের সাথে দেখা করবো। খুব ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পড়ে। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 68703.91
ETH 2503.79
USDT 1.00
SBD 2.54