Better life with steem || The Diary Game || 8th May, 2024 ||
"আমার গতকালের সারাদিনের কিছু মুহুর্ত"
Hello,
Everyone,
অনেকদিনের ফেলে রাখা দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ গতকাল সমাপ্ত করেছি। সত্যি কথা বলতে, এতদিন ঠিকানা বদলের প্রয়োজন অনুভব করিনি, তবে আজকাল মনে হয় ঠিকানা পরিবর্তন করে দেওয়াই উচিত হবে।
কারণ আজকাল পুরনো ঠিকানায় যাওয়ার খুব একটা তাগিদ অনুভব করি না। কেমন যেন পিছুটান শেষ হচ্ছে ধীরে ধীরে। আজকাল প্রয়োজনের তাগিদেও পুরনো ঠিকানায় ফিরে যেতে বেশ অলসতা কাজ করে নিজের ভিতরে। গতকাল একপ্রকার জোর করেই কাজগুলো সমাধা করেছি।
অনেকেই ভাবছেন হঠাৎ করে এমন কথা কেন বলছি? সবটাই আজ পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তার আগে জেনে নিই, কেমন আছেন সকলে?
অন্ততপক্ষে সেই তীব্র গরমের হাত থেকে মোটামুটি সকলেই রক্ষা পেয়েছেন। তাই আশা রাখছি সকলেই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। আজকের দিনটি আপনাদের সকলের খুব ভালো কাটুক, এই প্রার্থনা নিয়ে আজকের পোস্ট শুরু করলাম।
গতকাল নানা কাজের ব্যস্ততায় ও শারীরিক ক্লান্তিতে রাতে লেখা হয়ে ওঠেনি। তবে আজ শেয়ার করব গতকাল সারা দিন ঠিক কি কি কাজে ব্যস্ত ছিলাম
"সকালবেলা"
গতকাল বুধবার ছিলো, তাই প্রতিদিনের মতো নিয়ম করে ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, শুভর জন্য চা বানিয়ে রান্না শেষ করেছিলাম। ব্রেকফাস্টের জন্য যদিও শাশুড়ি মা রুটি বানিয়েছিলেন, কারণ আমার বাড়ি থেকে বেরোনোর তাড়া ছিলো। সেই ফাঁকে বাদবাকি কাজগুলো আমি গুছিয়ে নিয়েছিলাম। তারপর স্নান করে কোনো রকমে ব্রেকফাস্ট সেরে, স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম। গন্তব্য ছিলো আমার বড় দিদির বাড়ি, আমার বাপের বাড়ির পাশেই।
নিশ্চয়ই অনেকে বুঝতে পারছেন কেন ওই পুরনো ঠিকানা কথাটি ব্যবহার করেছি। কাল যখন নিজের বাড়ি ক্রস করে দিদির বাড়িতে যাচ্ছিলাম, বাড়িটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম, কি যে একটা অদ্ভুত কষ্ট অনুভব করেছিলাম, সেটা বলে বোঝানোর মতন ভাষা নেই।
১১.০৩ এর ট্রেন ধরবো বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম ঠিকই, তবে ট্রেনটি এলে ১১.২২ নাগাদ। তাই টিকিট কেটে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলাম।
"দুপুরবেলা"
ট্রেন মসলন্দপুর স্টেশনে পৌছাতে পৌঁছাতে ১২ টা বেজে গেলো। আমি একা নই আমার সাথে আমার দুই মামী ও ভাইবোনেরও যাওয়ার কথা ছিলো, কারণ আজ আমার বরদির বাড়িতে আমাদের প্রত্যেকের নিমন্ত্রণ ছিলো। কারন বড়দির ছোট ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে, দুপুরবেলাতেই ওরা আয়োজন করেছিলো।
সত্যি বলতে শুধুমাত্র জন্মদিন হলে আমি যেতাম না। আমার প্রয়োজনের তাগিদেই আমাকে যেতে হয়েছে বলতে পারেন। কারণ এই মুহূর্তে বাড়ি থেকে বেরোনোর মতন পরিস্থিতি নেই, তার সাথে রয়েছে কমিউনিটির কাজের চাপ। কিন্তু ভাবলাম এই সুযোগে না গেলে বহুদিনের ফেলে রাখা কাজটা করা সম্ভব হবে না।
প্ল্যাটফর্মে বসে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম। তারপর মামীরা এলে আমরা একসাথে রওনা হলাম। রাস্তা খারাপ থাকার কারণে গতকাল টোটোটি অন্য একটা রাস্তা ঘুরে যাচ্ছিলো, যে রাস্তাটা আমার স্কুলের সামনে দিয়ে যায়। আরও একবার পুরনো স্মৃতিগুলো নাড়া দিয়ে গেলো, যখন আমার স্কুল পেরিয়ে আমরা বাড়ির দিকে ছুটে চলেছি।
যখন আমরা স্কুলে যেতাম তখন সকলে মিলে একসাথে হেঁটে স্কুলে যেতাম। তবে আজকাল প্রত্যেকেই দেখি সাইকেল অথবা গাড়িতে করেই যাতায়াত করে। যাইহোক দিদি বাড়িতে পৌঁছাতে আমাদের প্রায় ১.৩০ বেজে গেলো। পৌঁছে দেখি সমস্ত আয়োজন প্রায় শেষ। তখন ওরা বিট্টুকে (আমার বরদির ছোটো ছেলের ডাক নাম) আশীর্বাদ করার আয়োজন করছে।
সেখানে আমি একটি ছবি তুলে নিলাম। তারপর ঘরে গিয়ে বসলাম। দিদি আমার হাতে দুটো খাম দিলো। আসলেই খাম দুটোর জন্যই গতকাল আমার ওই বাড়িতে যাওয়া বলতে পারেন। তার মধ্যে একটি আমার নতুন এটিএম কার্ড, পুরনো কার্ডের সময় সীমা অতিক্রম হয়েছিলো বলে, ব্যাংক থেকেই নতুন এটিএম কার্ড পাঠানো হয়েছে।
অনেকদিন যাবৎ এগুলো এসেছে, কিন্তু সেগুলো আনার জন্য দিদি বাড়িতে যাওয়া আর কিছুতেই হয়ে উঠছিলো না। তাই অবশেষে কাল গিয়ে এই গুরুত্বপূর্ণ দুটি ডকুমেন্ট আমি নিয়ে এসেছি।
"বিকালবেলা"
যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে করতে আমাদের প্রায় ৩টে বেজে গেলো। বাড়ি ফেরার তাড়া ছিলো তাই খাওয়া দাওয়া শেষ করে আর বসিনি। বাইরেই আমি, মামী, ভাই বোন সকলে একটু হাটাহাটি করে নিলাম। তখন দেখছি আকাশে মেঘ জমতে শুরু করেছে, তাড়াহুড়ো করে বেরোনোর সময় ছাতা নিতে ভুলে গিয়েছিলাম।
তাই মেঘ দেখে সন্ধ্যা নাগাদ বৃষ্টি আসার সম্ভাবনা আছে ভেবে, আমি আর এতটুকু সময় নষ্ট না করে, গাড়ি ধরে স্টেশনে পৌঁছালাম। আমি একেবারে রিটার্ন টিকিট কেটেছিলাম। তাই আলাদা করে আর টিকিট কাটার ঝুঁকি ছিল না, মিনিট দশেক অপেক্ষা করার পরে ট্রেনের অ্যানাউন্সমেন্ট শুনতে পেলাম।
যাওয়ার সময় যতখানি সময় নষ্ট হয়েছিলো, আসার সময় তেমনটা হলো না। বেশ দ্রুতই পৌঁছে গেলাম দত্তপুকুরে। সেখান থেকে সোজা ভ্যান ধরে বাড়িতে পৌঁছালাম। হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে একটু শুয়ে নিলাম এবং ফোনটা হাতে নিয়ে সেই সময় কমিউনিটির কাজগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম।
"সন্ধ্যাবেলা"
কিছুক্ষণের মধ্যে সন্ধ্যা হয়ে এলো, তাই একেবারে সন্ধ্যা পুজো দিয়ে আমি বুমিং এর কাজ নিয়ে বসলাম। গতকাল টিউটোরিয়াল ক্লাসও ছিলো, সুতরাং এই কাজগুলোর সম্পন্ন করে টিউটোরিয়াল ক্লাসে যুক্ত হয়েছিলাম। কিছুক্ষণ বাদে শুভ ফিরলে, শাশুড়ি মা ওকে টিফিন দিয়েছিলো, যেহেতু আমি সেই মুহূর্তে টিউটোরিয়াল ক্লাসে ছিলাম।
"রাত্রিবেলা"
ক্লাস শেষ হতে আমাদের বেশ কিছুটা দেরি হলো এবং শেষ হওয়ার পরেই আমি তাড়াতাড়ি করে শ্বশুর মশাই ও পিকলুর জন্য রুটি করে দিলাম। পিকলু দুপুরে খুব একটা বেশি খাই নি তাই শ্বশুর মশাইকে খেতে দিয়ে আমি পিকলুকেও ডিনার করিয়ে দিলাম। আমার একটুও খিদে পায়নি তাই রাতে আমি ডিনার করিনি।
সমস্ত কিছু বুঝিয়ে টেবিলে রেখে দিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ বাদে শাশুড়ি মা ও শুভ একসাথে ডিনার সেরে নিলে, বাদবাকি সমস্ত কিছু গুছিয়ে আমি কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসেছিলাম।
কাজ শেষ করতে করতে যথারীতি তিনটা অতিক্রম হয়েছিলো। তারপর আমিও শুয়ে পড়েছিলাম। আজ আবার পুনরায় সকাল থেকে নতুন দিনের কার্যক্রম শুরু করেছি।
"নিজস্ব অনুভূতি"
বিয়ের পর থেকে এই ১০ বছরের মধ্যে একবারও মনে হয়নি যে আমার ঠিকানা পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ আমার মনে হতো ওই বাড়িটাই আমার এবং ওখানকার সমস্ত কিছুই আমার নিজস্ব। তাই পরিবর্তন করার কিছুই নেই। তবে এখন কেন জানিনা মনে হয়, এবার আমার ঠিকানা পরিবর্তন করা উচিত। যাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব শ্বশুরবাড়ির ঠিকানাতেই আসতে পারে।
আগে যেন বাপের বাড়িতে যাওয়ার একটা টান অনুভব করতাম। তবে ঠাকুরমা মারা যাওয়ার পর, বাবাও দিদির কাছেই থাকে। তাই যাওয়ার খুব একটা তান অনুভব করি না বরং এই প্রয়োজনীয় কাজগুলোর জন্য যখন অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেতে হয়, বেশ বিরক্তি কাজ করে নিজের ভিতরে।
অদ্ভুত মেয়েদের জীবন। যে বাড়িতে ছোট থেকে বড় হলাম, গতকাল সেই বাড়িটিতে একবার পাও রাখিনি। বাড়িটার যদি মন থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই গতকালও অনেক কষ্ট পেতো। দিদি বাড়ি যাওয়ার পথে এক পলক বাড়ির দিকে তাকালেও, ফেরার পথে একবারও তাকানোর সাহস হয়নি। গতকাল কি যে অদ্ভুত একটা খারাপ লাগা কাজ করছিল ভিতরে, সত্যিই বলে বোঝাতে পারবো না। তখন মনে হলো, মেয়েজন্ম বোধ হয় না হওয়াই ভালো, অন্তত শিকড় ছেড়ে বাঁচার কষ্ট এভাবে পেতে হয় না।
যাইহোক ভালো থাকবেন সকলে, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি।
অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি লেখা আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়া জন্য। গতকাল আপনি জন্মদিনের নেমন্তন্ন তে গিয়েছেন তখন আপনার পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায় স্কুলের কাটানো সেই দিনগুলোর কথা কি আর ভোলা যায় সেগুলো তো মনে পড়ে যাবেই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।
এখন এই এনগেজমেন্ট চ্যালেন্জ চলাকালীন সময়ে আপনার জন্য কোথাও বের হওয়াটা যে কতটা কঠিন কাজ সেটা ভালো করেই বুঝতে পারি। কিন্তু প্রয়োজন এর তাগিদে বের হতেই হয়।
আপনার লেখাটা পড়ার সময় একজায়গাতে পড়লাম বাড়ি ক্রস করে গেলেন।এমন আমার সাথে অনেকবার হয়েছে। বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে ক্রস করে চলে যাই। যাওয়ার সময় চেষ্টা করি ওদিকে না তাকাতে। তারপরও চোখ চলেই যায়।
একটা অদ্ভুত রকমের কস্ট লাগে। এমনও হয়েছে বাড়িতেও গিয়েছি কিন্তু রুমে ঢুকি নাই। উঠান থেকে চলে এসেছি। মনে হয়েছে বাবা মা ভেতরেই রয়েছে। সেই অনুভুতি নিয়েই বের হয়ে এসেছি ।
আমি এখনো আমার বাবার বাড়ির এলাকার ভোটার। ঠিকানা চেন্জ করি নাই। মজার বিষয় হলো ভোটও দিতে যাই না।
ভালো থাকবেন সবসময়।
প্রথমে আপনার বড় দিদির ছেলের জন্য জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা জানাই। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে বেশ তাড়াহুড়োর মাঝেই ট্রেনে বড় দিদির বাড়ি উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন।
আপনার দিদির কথা শুনে আমার নিজের বড় বোনের কথা মনে পড়ে গেল। আমার মনে হয় মায়ের পরের স্থান হল বড় বোনের।
ব্যস্তময় একটা দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Hello my dear friend, in this post you are meeting your family. Meeting with family is very relaxing because it is medicines for children. Children learn a lot from gatherings, they get a feeling of love, they get to know about each other's feelings and thoughts. It is very important to give some moments from daily life to our family.
Thank you