Better life with steem || The Diary Game || 30th April, 2024 ||
" সারাদিনের বেশ কিছু মুহূর্ত "
Hello,
Everyone,
সুপ্রভাত সকলকে।
সারাদিন সংসারের চাপের কারণে গতকাল পোস্ট লেখার সময় হয়ে ওঠেনি। আর রাতের দিকে কমিউনিটির কাজের চাপ একটু বেশি ছিলো। যেগুলো শেষ করতে আমার রাত ৩.১০ বেজে গিয়েছিলো।
এই কারনে গতকাল রাতে আর পোস্ট লেখা হয়নি। কারণ পরদিন সকাল অর্থাৎ আজকে ৭:১০ নাগাদ ঘুম থেকে উঠতেই হতো। এই কারণে গতকাল আর পোস্ট করা হয়নি, তাই আজ সকালের কাজ মোটামুটি একটু শেষ হতেই পোস্ট লিখতে বসলাম।
আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব ৩০ তারিখের সারাদিনের গল্প। যেহেতু সেদিন আমার সাপ্তাহিক রিপোর্ট উপস্থাপনের দিন ছিলো, এই কারণে সেদিনকার গল্প আপনাদের সাথে আর শেয়ার করা হয়ে ওঠেনি। চলুন তাহলে শুরু করি, স-
"সকালবেলা"
আপনারা সকলেই জানেন, কয়েক দিন ধরে শ্বশুরমশাইয়ের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। এর আগের ডাইরি গেমে আমি আপনাদের সাথে ওনাকে এবং শাশুড়ি মাকে নিয়ে বেশ কিছু টেস্ট করার জন্য গিয়েছিলাম, সে বিষয়ে তথ্য শেয়ার করেছি। এবং ৩০ তারিখ ছিল ওনাদের ডাক্তার দেখানোর দিন।
সেই মত সকাল ৬:৪৫ এ ঘুম থেকে উঠেছিলাম। কারণ ডাক্তার দেখানোর জন্য সকালে গিয়ে দোকানে নাম লিখিয়ে আসতে হয়। সে বিষয়ে অবশ্যই অবশ্য আগের পোস্টেও আমি আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম
বেশি রাত করে ঘুমিয়ে সেদিন সকালে ঘুম কিছুতেই ভাঙতে চাইছিল না। কিন্তু শ্বশুর মশাইকে ডাক্তার দেখানোটা অত্যন্ত জরুরী।
তাই একপ্রকার জোর করেই উঠলাম। শুভ নাম লেখানোর জন্য বেরিয়ে গেল এবং আমি রান্না ঘরে গিয়ে রান্নার যোগার শুরু করলাম। আজকাল যা গরম পড়ে তাতে সকাল সকাল রান্না সেরে নিলে কষ্ট কিছুটা হলেও কম হয়।
সত্যি বলতে যতই গরম পড়ুক না কেন আমাদের সকলকে কিছু না কিছু খেতে হবে। আর সেটা করার জন্য রান্নাঘরে যেতেই হবে তাতে যাতে কষ্টই হোক না কেন।
৮.৩০ নাগাদ দোকান খুললে শুভ নাম লিখে ফিরে আসলে, ওকে চা দিয়ে আমি ঘরের কিছু কাজ গুছিয়ে নিয়েছিলঅ ৃ
তার আগে অবশ্য ওর টিফিন এবং ব্রেকফাস্ট তৈরি হয়ে গিয়েছিল এরপর সময় মতন ব্রেকফাস্ট করে ও বেরিয়ে গেলো।
তারপর শ্বশুর মশাইকে ব্রেকফাস্ট দিলাম। আজকাল উনি একদমই কিছু খেতে চায় না। তাই কিছু ফল কেটে দিয়েছিলাম। তারপর আবার কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসেছিলাম। যেহেতু আমাকে ১২.৩০ নাগাদ বেরোতে হণ
তঝ, তাই সকালের দিকেই কাজ কিছুটা গুছিয়ে নিতে চেষ্টা করেছিলাম।
"দুপুরবেলা"
ডাক্তারের কাছে সিরিয়াল পেয়েছিলাম ১২ এবং ১৩ নম্বরে। দুপুর ১ টা নাগাদ আমাদেরকে যেতে বলেছিলো। সেইমতো শ্বশুর মশাইকে স্নান করে নিতে বললাম। তারপর আমিও শাশুড়ি মা রেডি হলাম। বাইরে সেদিন এত বেশি গরম ছিল যেটা আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন নেই।
টেস্ট করতে যাওয়ার দিন যদিও তাড়াতাড়ি গাড়ি পেয়ে গিয়েছিলাম, কিন্তু এদিন বাড়ির সামনে প্রায় ৪৫ মিনিটের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, কিন্তু কোনো গাড়ি পাচ্ছিলাম না। আসলে এই প্রচন্ড গরমে ও রোদ্দুরে খুব দরকার ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বেরোচ্ছে না। আরও কিছুক্ষন অপেক্ষা করার পর, আমরা একটা টোটো পেলাম।
আমরা যখন অর্ধেক রাস্তায় তখন ক্লিনিক থেকে ফোন করলো আমরা আদেও সেদিন ডাক্তার দেখাতে যাব কিনা জানার জন্য। আমি কনফর্ম করলাম আমরা রাস্তায় রয়েছি এবং ১০মিনিটের মধ্যে আমরা ডাক্তারের চেম্বারে পৌঁছে গেলাম।
ডাক্তারের চেম্বারটা একদমই রাস্তার পাশে। সেখানে দোকানের সামনে কয়েকটা চেয়ার রাখা রয়েছে ঠিকই,তবে চেয়ারগুলোতে বসার মতন অবস্থা ছিল না এত বেশি গরম ছিল। আসলে একদম পাশশেই পাঁকা রাস্তা, ফলে রাস্তার পুরো গরমটা যেন সেখানে অনুভব করা যাচ্ছে। আমি একপ্রকার নাক মুখ ঢেকে বসেছিলাম,কিন্তু তবুও যেন তাপ অনুভব করতে পারছিলাম।
"বিকালবেলা"
ডাক্তার দেখানো শেষ করে সেখান থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। আসার সময় অবশ্য তাড়াতাড়ি গাড়ি গিয়েছিলাম। বাড়িতে এসে প্রথমে পিকলুর অত্যাচার সহ্য করলাম। যেহেতু ওকে একা রেখে আমরা ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। তারপর ফ্রিজ থেকে জল বের করে উঠে ঠান্ডা জল দিলাম এবং আমি একটু জলের সাথে মিলিয়ে খেলাম। এরপর আমি শুভকে এবং আমার ননদকে ফোন করে সমস্তটা জানালাম।
শশুর মশাইয়ের ইউরিন ইনফেকশন এতটাই বেড়ে গেছে যে, এখন আর অ্যান্টিবায়োটিক খেলে হবে না। তাকে রীতিমতো চ্যানেল করে ইনজেকশনের মাধ্যমে, বাড়িতে বসে দশটা এন্টিবায়োটিকের কোর্স কমপ্লিট করাতে হবে। তারপর আবার টেস্ট করিয়ে সাত দিন বাদে রিপোর্ট দেখাতে যেতে হবে।
যাইহোক এরপর লাঞ্চ করে একটু কমিউনিটির কাজ দেখে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করলাম
"সন্ধ্যাবেলা"
যথারীতি সন্ধ্যা বেলার উঠে সন্ধ্যা দিলাম তখন এত গরম লাগছিল যা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। আমি কোনো কিছু না ভেবে আরো একবার স্নান করে নিলাম। কিন্তু স্নান করার পরে গরম যেন আরো দ্বিগুন বেড়ে গিয়েছিল। তারপর যথারীতি বারান্দায় গিয়ে বসলাম কিছুক্ষণ এবং সেখানে বসে বুমিং এর কাজ শেষ করলাম।
এরপর ননদের সাথে সাথে কথা হলো অনেকক্ষণ। আসলে চ্যানেল করার জন্য বাড়িতে লোক আনতে হবে এবং সেই লোকের খোঁজ নেওয়ার জন্যই এদিক ওদিকে সকলের সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে কাটালাম। তারপর নিয়ম করে শ্বশুর মশাইকে ওষুধ দেওয়ারর কাজ বাকি ছিলো, সেটাও করে নিলাম।
"রাত্রিবেলা"
রাতের জন্য আমি শুধু দুটো রুটি তৈরি করে ছিলাম। শশুর মশাই কিছুতেই খেতে চাইছিল না, কিন্তু দুধের সাথে রুটিগুলো চটকিয়ে দিয়ে কোনোরকমে খাইয়ে দিয়ে, একটু বাদে ইনসুলিন দিয়ে দিলাম।
আমরা রাতে জল ঢালা ভাত খেয়েছিলাম। এই গরমে আর অন্য কিছু খেতে ইচ্ছে করছে না্ পিকলুকে টক দইয়ের সাথে অল্প চিড়ে দিয়েছিলাম। তারপর যথারীতি আমার কমিউনিকের কাজ নিয়ে বসে ছিলাম এবং সেই কাজ চলে রাত ৩টা পর্যন্ত।
এইভাবে ৩০ তারিখের ব্যস্ত দিন কাটিয়েছিলাম। ইনজেকশনের কোর্স শুরু হয়েছে গতকাল থেকে,সেই বিষয়ে আমি পরবর্তী পোস্টে আপনাদের সাথে কথা বলবো। ভালো থাকবেন সকলে। আপনাদের সকলের দিনটি ভালো কাটুক। এই গরমে অবশ্যই সকলে সাবধানে থাকবেন।
"নিজস্ব অনুভূতি"
আমার কথা শুনে হয়তো অনেকে অবাক হবেন, কিন্তু সত্যি কথা বলতে নিজের মানুষের অসুস্থতার জন্য, আমি কেন জানিনা নিজেই অসুস্থ বোধ করি। বিশেষ করে মানসিক ভাবে।
আজ প্রায় দুটো বছর ধরে এত মানুষের অসুস্থতা দেখছি যে, আমার মধ্যে একটা বিরক্তি কাজ করে। কিন্তু দায়িত্ব থেকে কিছুতেই নিজেকে সরাতে পারি না। কারণ কোথাও না কোথাও এই বয়স্ক মানুষ গুলো আমাদের উপরে নির্ভর করে।
তাই যতই বিরক্ত লাগুক না কেন, সেটা নিজের মধ্যে রাখারই চেষ্টা করি। কারণ আমারও বয়স হবে, হয়তো আমিও অনেক অসুস্থ থাকতে পারি, কারণ ভবিষ্যতে কি হবে সেটা কেউ বলতে পারে না। তবে কর্মটা সঠিক করলে হয়তো ফলটা সেই অনুযায়ী পেতে পারবো।
আপনার বিগত পোস্টে পড়েছিলাম আপনার শ্বশুর এবং শাশুড়ি অনেকটা অসুস্থ। সত্যিই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়াটা খুব কঠিন একটি বিষয়। তাই ঘুম থেকে উঠে সকালের কাজকর্ম সেরে তাড়াতাড়ি গিয়ে সিরিয়াল নিয়েছেন।
দোয়া করি আপনার শ্বশুরমশাই যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।
সারাদিনের কার্যক্রম গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।