Better life with steem || The Diary Game || 2nd January, 2024 ||

in Incredible India10 months ago
IMG_20240103_000427.jpg

"আমার সারাদিন "

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে। আমার দিনটিও মোটামুটি ভালোই কেটেছে। আজ সারাদিন কি কি করেছি চলুন সেই গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করি।

আমার গতকালের পোস্ট পড়ে আপনার প্রত্যেকেই জেনেছেন যে, আমি মামা বাড়িতে ছিলাম। তবে আজ আমি আবার আমার শ্বশুরবাড়ি বসে ‌পোস্ট লিখছি অর্থাৎ‌‌ বুঝতেই পারছেন আমি আজ বাড়ি ফিরেছি।

আজ বোধহয় বছরের সেরা ঠান্ডা পড়েছে। গতকাল ও‌ বেশ‌ ঠান্ডা‌ ছিলো, তবে ‌আজ গতকালের থেকেও বেশি ঠাণ্ডা পরছে। অন্তত আমার তো তেমনটাই মনে হচ্ছে। সকাল বেলায় ৯.২৫ নাগাদ মামিই ঘুম থেকে ডাকলো। উঠে দেখছি বাইরে তখনো রোদ্দুর ওঠেনি, তবে ভীষণ ঠান্ডা। এর আগে কয়েকদিন আমার এতটা ঠান্ডা লাগেনি।

IMG_20240102_234436.jpg

"মামির হাতের গরম চা"

কোনো রকমে ফ্রেশ হয়ে তারপর আবার গিয়ে কম্বলের ভিতরে ঢুকলাম। যথারীতি মামি এক কাপ গরম চা ও বিস্কুট দিলো। তবে কম্বল থেকে হাত বের করে চা খেতেও কষ্ট হচ্ছিলো, ঠিক এতটাই ঠান্ডা ছিল।

আমার কিছুক্ষণ বাদে বোন ঘুম থেকে উঠলো এবং ও ফ্রেশ হয়ে আসার পর মামি আমাদেরকে একেবারে ব্রেকফাস্ট দিয়ে দিলো। আজ ব্রেকফাস্ট করেছিলাম গরম গরম খিচুড়ি দিয়ে। তবে দুঃখের বিষয়, সেই সময় খেতে খেতে কমিউনিটির কিছু কাজ করছিলাম। তাই ছবি তোলার কথা একদমই ভুলে গিয়েছি।

তবে মামীর হাতে‌ তৈরী খিচুড়ি অনেক বেশি সুস্বাদু হয়।‌ সেই কারণে খিচুড়ি খাওয়ার বায়নাটা আমারই ছিল। তাই বায়না পূরনের জন্য মামী ব্রেকফাস্টেই খিচুড়ি রান্না করেছিলো।

IMG_20240102_234451.jpg

"বাদাম খাওয়ার সময়"

ব্রেকফাস্ট শেষ করে কম্বলের তলায় বসেই কমিউনিটির কাজগুলো সব শেষ করলাম। কিছুক্ষণ বাদে মামি একটা বাদামের প্যাকেট নিয়ে এসে বলল, কম্বলের তলায় বসে বাদাম গুলো খেতে।

বাদাম গুলো গতকাল মামা নিয়ে এসেছিল। তাই আমি আর বোন দুজন মিলে কয়েকটা বাদাম খেলাম। এরপর বাইরে বেরিয়ে দেখি একটু রোদ্দুরের দেখা পাওয়া গেছে।‌এরপর মামি স্নান করে লাঞ্চ রেডি করল আর আমি বোন এক এক করে স্নান করে নিলাম।

IMG_20240102_234532.jpg

"আমার প্রিয় পালংশাক"

আজ আমার খুব প্রিয় শাক রান্না হয়েছিল, সেটি হলো পালং শাক। মামি সমস্ত সবজি দিয়ে এই পালং শাকটা খুব সুন্দর রান্না করে। তাই দুপুরের লাঞ্চে পালং শাক দিয়ে খাওয়া শুরু করেছিলাম। যার ছবিটি আমি তুলেছি। কিন্তু বাকি‌ পদ‌ গুলোর ছবি আর‌ তোলা হয়নি।

মামী আরও‌ রান্না করেছিলো ডাল, ভোলা মাছের পাতুরি ও কাতলা মাছের ঝোল। যদিও কাতলা মাছ আমি খাই না, তবে ডাল আর ভোলা মাছ খেয়েছিলাম। কাতলা মাছ‌ মূলত মামার জন্য রান্না করেছিলো, মামা আবার ভোলা মাছ‌ খায় না।

খাওয়া দাওয়া শেষ করা যথারীতি আবার কম্বলের ভিতরে বসলাম। কিন্তু যেহেতু আজ বাড়িতে ফেরার কথা ছিলো, তাই কিছুক্ষণ বাদে আবার কম্বল ছেড়ে উঠে পড়তে হলো। মামী বলল বেশি দেরি না করতে কারন, যে পরিমাণে ঠান্ডা পড়েছে সন্ধ্যের পর ঠান্ডার মাত্রা আরো বাড়বে। তাই যখন বাড়িতে ফিরতেই হবে, তখন একটু সকাল সকাল ফেরাই ভালো।

কম্বলের ভিতরে বসেই কমিউনিটির কিছু কাজ করে,‌তারপর সবকিছু গুছিয়ে,মামীকে বিদায় জানিয়ে,বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। বোন ও আমার সাথে স্টেশন পর্যন্ত এলো। মামা বাড়ি থেকে আসতে কোনোদিনই আমার ভালো লাগে না, কিন্তু ওই যে মেয়েদের আসলে কোনো উপায় থাকে না, শ্বশুর বাড়িতে ফিরতেই হয়

মামীর মনটাও খারাপ হয়ে যায় যখন আমি ফিরে আসি।‌ যাইহোক এই দুদিন অনেক বেশি আনন্দ করে কাটিয়েছিলাম এবং সেই আনন্দ নিয়েই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলাম।

রাস্তায় বেরিয়ে বুঝতে পারলাম কতটা ঠান্ডা পড়েছে।‌ সেখান থেকে সোজা স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের থেকে টিকিট কেটে নিলাম। ট্রেনের জন্য খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো না।কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেন চলে এলো।

IMG_20240102_234554.jpg

"প্রয়োজনীয় কেনাকাটা"

তারপর ট্রেন থেকে নেমে‌ বাড়ি‌ ফেরার পথে আমি দোকান থেকে দুটো জিনিস কিনলাম। হাইলাইটার আমার খুবই দরকারি ছিলো।‌ আসলে যখন বাইরে বেরোনো হয় অনেক ‌সময় মনে থাকে না।

আর একটা ‌চিরুনি কিনেছি।এই‌‌ ধরনের‌ চিরুনি আমার ছিলো না। বেশ অনেকদিন যাবত ভাবি এইরকম একটি চিরুনির কিনবো, কিন্তু সেটা আর কেনা হয়ে উঠছিল‌‌ না। আজ এই দোকান পেয়ে গেলাম তাই কিনে নিলাম।

এরপর বাড়ি ফিরে যথারীতি পিকলু আমার ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়ল। দুদিন বাদে বাড়িতে এলাম সুতরাং বুঝতেই পারছেন ঠিক কতটা অভিমান করেছে আমার উপর।

IMG_20240102_234616.jpg

"পিকলু শান্তিতে শুয়ে আছে,কারন আমি বাড়ি এসেছি"

ব্যাগ‌ রাখার সময় পর্যন্ত দিচ্ছিলো না। অনেকক্ষন‌ আদর করার পরে, ফ্রেশ হয়ে আমি আমার খাটে বসলাম। আর পিকলু লাফ দিয়ে আমার খাটে উঠে শুয়ে পরলো। ও যেন শান্তি পেয়েছে আমাকে পেয়ে।

IMG_20240102_234633.jpg

"আমার টিমের সদস্যদের সাথে কথা বলার সময় নেওয়া স্ক্রীনশট।সকলকে ধন্যবাদ"

এরপর আমি আমার টিম মেম্বারদের সাথে একটু ডিসকর্ডে‌ কথা বললাম। কারণ টুর্নামেন্টে জেতার পর তাদের সাথে আর কথা বলা হয়ে ওঠেনি। তাই বেশ কিছুক্ষণ কথা বলার পর, আমি ডিনারের জন্য রুটি করতে গেলাম।

আজ এতটাই ঠান্ডা লাগছিল যে, রাতের বেলায় কিছু খেতে ইচ্ছা করছিল না। কিন্তু একদমই না খেলে হবে না ভেবে, অল্প একটু খেয়ে, কোনো রকমে কাজগুলো গুছিয়ে কম্বলের ভিতরে ঢুকে পড়লাম। তারপর আপনাদের সাথে সারাদিনের গল্প শেয়ার করার জন্য পোস্ট লিখতে বসলাম।

এই ভাবেই আজকে আমার দিনটি কাটালাম। গতকাল এই সময় মামা বাড়িতে কতো আনন্দ করছিলাম। অথচ বাড়িতে‌ এসে মনটা একটু খারাপ লাগছে। আগামীকাল সকাল থেকে আবার প্রতিদিনের দিনযাপন শুরু হবে।

আসলে এটাই জীবন। মাঝে মধ্যে বিরতি নেওয়া সম্ভব হলেই মনটা একটু ভালো লাগে এই‌ যা। যাইহোক আপনাদের সকলের আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক এই প্রার্থনা রইলো। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 10 months ago 
  • বাহ দারুণ বাদাম, এই শীতের দিনে কম্বলের নিচে বসে বাদাম খাওয়ার মজা ই অন্যরকম। মামা বাড়ি হল সবচেয়ে মজার একটি জায়গা। যদি ওখানে আন্তরিকতা থাকে তাহলে। মামা বাড়ি গিয়েছেন, সকাল সকাল চা বিস্কুট খেয়ে নিলেন যা আপনার এনে দিয়েছি। খিঁচুনি আমার কাছে বেশ ভালো লাগে, বিশেষ করে শীতের দিনে সবজি খিচুড়ি অসাধারণ লাগে।

  • আমার কাছে পালং শাক ভালো লাগে, তবে ভাঁজির চেয়ে মাছ দিয়ে খেতে বেশি পছন্দ করি। আপনার তো আবার খুব একটা মাছ খান না।

  • আজ মামা বাড়ি থেকে নিজের বাসায় চলে
    আসছেন। পিকলু কে দেখলাম মনের আনন্দে ঘুমোচ্ছে। পিকলু যেমন আপনাকে মিস করেছে ঠিক তেমনি আপনিও অনেক মিস করেছেন। তাই নয় কি দিদি?

  • অনেক ভালো লাগলো আপনার দিন লিপি টি পড়ে। তবে একটু সতর্ক থাকবেন, অনেক সময় বেরিয়ে আসলে, অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, মনে হয় আবহাওয়ার
    জন্য। তাছাড়া কিছুদিন আগে আপনি বেশি অসুস্থ ছিলেন তাই সতর্ক থাকবেন।

 10 months ago 

আপনি সঠিক বলেছেন,আমি মাছ পছন্দ করি না বলেই, সবজি দিয়ে পালং শাক খেতে সবথেকে বেশি ভালোবাসি। মামা বাড়িতে থাকার মজাই আলাদা। নিজের পছন্দ মতন খাওয়া, আর বিশ্রাম, এর বাইরে আর কোনো কাজ নেই। একদমই ঠিক বলেছেন, আমিও পিকলুকে অনেক মিস করি। যখনই ওকে বাড়িতে রেখে যাই,মনটা একটু খারাপ লাগে। বাড়িতে ফিরলে আমাকে দেখে পিকলু যতটুকু আনন্দ পায়,আমারও কিন্তু ততোধিক আনন্দই লাগে ওকে দেখে। এটাই আমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

 10 months ago 
  • সত্যি কথা বলতে কি দিদি। আমার মনে হয় পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক হচ্ছে মামা বাড়ির সম্পর্ক। কেমন যেন মায়ের মতোএকটা আদর পাই ওখানে গেলে। তবে আগের মত তেমন একটা আবেগ কাজ করে না। যখন নানা নানু ছিল মামা বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করতো মন। আপনি খুব সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন মামা বাড়িতে তাও আবার বছরে প্রথম দিন। ধন্যবাদ আপনাকে খুব সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।
 10 months ago 

নতুন বছর এর শুভেচ্ছা রইলো।
আপনাকে প্রায় দিনই দেখি অনেক রাতে লেখা পোস্ট করেন, তখন ধারণা করি যে হয়তো সারাদিন এর সবকাজ শেষ করে লিখতে বসেন।
আপনি পিকনিক শেষ করে বোনের সাথে মামা বাড়ি গিয়েছিলেন এটা আপনার গত দিনের লেখাতেই পড়েছিলাম।ঠিকই বলেছেন, ৩১ এর দিন থেকে শীত খানিকটা বেড়েছে। যদিও আমাদের ঢাকায় এটা খুব বেশি না তারপরও শীতের দিন যে এটা ফিল করা যাচ্ছে।
আর শীতের সকালে খিচুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা।
আপনার প্লেট এর সবজিটা এটার স্বাদের কথা পড়ার আগেই নজর কেড়ে নিয়েছিলো।দেখে মনে হচ্ছিল যে খেতে খুব ভালো হবে।
আপনার সারাদিন এর ব্যাস্ত দিনলিপি পড়ে ভালো লাগলো।
ভালো থাকবেন সবসময়।

Posted using SteemPro Mobile

আপনার কাটানো সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। বেশ কয়েকদিন যাব আমাদের অধিক প্রচুর কুয়াশা আর প্রচন্ড শীত বারোটার নিচে কোন রোদেরআভাস দেখা যাচ্ছে না । আর শীতের সকালে খিচুড়ি খাওয়ার মজাই আলাদা।ইশশশ পিকলু মশাই অভিমান করে শুয়ে আছি 😐আপনার সারাদিন এর ব্যাস্ত দিনলিপি পড়ে ভালো লাগলো।ভালো থাকবেন সবসময়।আহহহ খুব শীত এই জন্য বেশি কিছু লিখতে পারলাম না। 😅

গতকাল যথেষ্টই ঠান্ডা পড়েছিল। এবার থেকে কম্বলের নিচে একটা স্ট্র নিয়ে শোবেন, তাহলে আর হাত বের করে চা খেতে হবে না। স্ট্র দিয়েই চা খেতে পারবেন। আমি আবার ব্রেকফাস্টে খিচুড়ি খাই না। কারণ আমি ব্রেকফাস্টে যাই খাই না কেন তারপরে এক কাপ চা খাই, আর খিচুড়ি খেয়ে চা খেলেই আমার অম্বল মাস্ট। পিকলুবাবু দুদিন আপনাকে কাছে পাইনি, তাই ওর অভিমান হওয়াটা স্বাভাবিক। আর কি, মামাবাড়ির মজা শেষ এবং রোজকার যাত্রাপালা শুরু। ভালো থাকবেন, আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

 10 months ago 

বর্তমান সময়ে আমাদের এখানেও প্রচুর পরিমাণে ঠান্ডা মনে হচ্ছে এত দিনের ঠান্ডা সব এক সাথেই পড়ছে। আপনি আপনার মামা বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে শশুর বাড়িতে চলে এসেছেন। আসলে ইচ্ছা না থাকলেও মেয়েদেরকে অনেক কাজ করতে হয়, এবং অনেক কিছু মেনে নিতে হয়।

পিকলু বাবু আপনার উপর ঝাঁপিয়ে পড়াটা স্বাভাবিক। কেননা আপনি দুইটা দিন ওকে রেখে নিজেই অনেক বেশি আনন্দ করে এসেছেন। তাই আপনাকে ব্যাগ রাখার সময় দিল না তার আগেই আপনার কোলে উঠে বসলো। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন সেটা আগেও দেখেছি, এর পরেও আপনি আপনার টিম মেম্বারদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। যেটা দেখে ভালো লাগলো, ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

 10 months ago 

দিদি আপনি তো দেখছি আমার মতোই শীত কাতুরে। শীতের দিনে আমারও কম্বলের নিচ থেকে বেরোতো ইচ্ছা করে না।কিন্তু কিছু করার নেই।
পালং শাক আমারও অনেক পছন্দের, তবে আপনার মামীর রান্না পালং শাক দেখেই মনে হচ্ছে অনেক সুস্বাদু হয়েছে।
পিকলু বাবু অভিমান করলেও সেও কিন্তু অনেক খুশি হয়েছে আপনাকে পেয়ে।
যাইহোক ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এই শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 76620.76
ETH 2903.43
USDT 1.00
SBD 2.57