Better life with steem || The Diary Game || 29th April, 2024 ||
![]() |
---|
"সারাদিনের গল্প"
Hello,
Everyone,
কেমন আছেন আপনারা সকলে?
জানি এই গরমে প্রশ্নটা করা একেবারে অনুচিত। এই প্রচন্ড গরমে দিন আসলে কোনো রকমে কাটানো সম্ভব, তবে ভালো ভাবে কাটানো একেবারেই অসম্ভব।
তবে সৌভাগ্যবশত আজ বিকেলের পর থেকে আমার সন্ধ্যার সময়টা আশ্চর্যজনকভাবে একটু অন্যরকম কেটেছে। সেই গল্প শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। চলুন তাহলে গল্পটা সকাল থেকে শুরু করি, -
"সকালবেলা"
![]() |
---|
শুভর অফিস থাকলে প্রতিদিন সকালে রুটিন একই থাকে, তাতে খুব বেশি পার্থক্য হয় না। এতোদিন অন্তত আমার ডায়েরি গেম পড়ে আপনারা এটা বুঝতে পেরেছেন। যাইহোক রোজকার মতনই ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে, পুজোর ফুল তুলে নিলাম। আসলে একটু বেলা হলে ছাদের গাছের ফুলগুলো রোদের তাপে কেমন জানি নুইয়ে পড়ে, সেই কারণে ঘুম থেকে ওঠার পরে ফুলগুলো তুলে নিই।
তারপর যথারীতি রান্না ঘরে গিয়ে, শশুর মশাইকে একটু ছাতু গুলে দিলাম, কারণ ওনার আজ একটু আগেই ঘুম ভেঙেছিল এবং খিদেও পেয়েছিলো। ওনার শরীর গত কদিন ধরে এতটাই খারাপ হয়েছে যে, আমরা বাড়ির সকলে বেশ চিন্তিত ওনাকে নিয়ে।
শুভ ওঠার সময় হয়ে গিয়েছিলো, তাই একসাথে শ্বশুর মশাই ও শুভর জন্য তা বসাতেই, শাশুড়ি মা বললেন ওনার চাও যেন একসাথে বসিয়ে দিই, যেহেতু আমি চা খাই না তাই তিনজনের চা একবারেই হয়ে যাবে।
![]() |
---|
আমিও সেই মতো ওনাদেরকে চা দিলাম। আজকে আমার আর শুভর জন্য রান্না করেছিলাম সর্ষে দিয়ে বাটা মাছ। শাশুড়ি মায়ের গতকালকের বোয়াল মাছ রান্না করা ছিল বলে আজ আর আলাদা করে কোনো মাছ রান্না করিনি। সত্যি কথা বলতে, রাতের দিকে মাছ প্রায় খাওয়া হয় না বললেই চলে। বেশিরভাগ দিন জল ঢালা ভাত খাচ্ছি আমরা সকলে। কারণ গরমে অন্য আর কোনো কিছুই ভালো লাগেনা।
যাইহোক এরপর শুভকে একটু ছাতু মুড়ি মেখে দিলাম। ব্রেকফাস্ট করে ও সময় মতো অফিসে বেরিয়ে গেলো আর আমি বসে পড়লাম কমিউনিটির কাজ নিয়ে। যেহেতু এখন চ্যালেঞ্জ চলছে, তাই প্রতি সোমবার সকালে বুমিং এর কাছে থাকেই, তার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ সংক্রান্ত কাজও করতে হয়।
"দুপুরবেলা"
![]() |
---|
সেই সমস্ত কাজ শেষ করতে করতে একটি বিষয়ে কমিউনিটিতে সময় দিতে হয়েছিল। এরপর আমি ঘরের কিছু কাজ গুছিয়ে, পিকলুকে স্নান করিয়ে দিলাম। কারণ এই গরমে প্রতিদিন ওর গা মোছানোটা খুবই জরুরী। তারপর আমি নিজে স্নান করে নিলাম। আমি পুজো দিতে বসলে, শাশুড়ি মা ও শশুর মশাই স্নান করে এলেন। তারপর পিকলুকে লাঞ্চ দিয়ে, আমরা তিনজন লাঞ্চ করে নিলাম।
"বিকালবেলা"
লাঞ্চ শেষ করে একটু প্রয়োজনীয় বিষয়ে ডিসকর্ডে কথা বললাম। তারপর কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার জন্য শুলাম। কিছুক্ষণ বাদেই শুভর মামা ফোন করলো। আমার শশুরের খবর নেওয়ার জন্য ফোন করেছিলো। এরপর শ্বশুর মশাইকে ডাক্তার দেখানো নিয়ে তার সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলতে হলো।
প্রতিদিনই দুপুরবেলায় খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য শুতে যাই ঠিকই, কিন্তু দুঃখের বিষয় বিশ্রাম নেওয়া হয় না। অথচ কমিউনিটির কাজে রাত জাগতেই হয়। জানিনা এইভাবে আসলে কতদিন শরীর সাথে দেবে।
"সন্ধ্যাবেলা"
যাইহোক কিছুক্ষণ বাদে সন্ধ্যা হয়ে এলে, আমি উঠে পড়লাম। গতকাল বলেছিলাম আজকে সন্ধ্যা বেলায় শাশুড়ি মা ও শ্বশুর মশাইয়ের রিপোর্ট দেওয়ার কথা। শুভ অফিস থেকে এসে রিপোর্টগুলো আনতে যাবে, এমনটাই ঠিক ছিলো। বেশ কিছু কারণে নিজের মাথা কাজ করছিল না, তাই আমি নিজেই বলেছিলাম,শুভর সাথে আমিও একটু ফুচকা খেতে যাবো।
কপাল খারাপ থাকারও একটা লিমিট থাকে, কিন্তু আমার কপাল খারাপ থাকার কোনো লিমিট নেই। স্টেশন থেকে শুরু করে আমাদের বাজার পর্যন্ত মোট তিনজন ফুচকা ওয়ালা বসে। আশ্চর্যজনকভাবে আজকে তাদের তিনজনের মধ্যে কেউ নিয়ে বসেননি। তখনই মনে মনে হাসি পেলো, এমন বেশি কিছুই তো চাইনি, একটু ফুচকাই তো খেতে চেয়েছিলাম, সেটাও ভাগ্যে নেই।
![]() |
---|
যাইহোক যথারীতি সেখান থেকে ফুচকা না পেয়ে আমরা রিপোর্ট আনতে চলে গেলাম। রিপোর্ট নিয়ে ফেরার পথে আমাদের পাশেরই ছোট্ট একটা রেস্টুরেন্টের সামনে শুভ বাইক দাঁড় করিয়ে দিলো। আমি তো অবাক এখানে কেন বাইক দাঁড় করাচ্ছো, জিজ্ঞাসা করতেই শুভ হঠাৎ করে বললো,- চলো এখান থেকে কিছু খেয়ে যাই।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
প্রথমে একটু আপত্তি জানাচ্ছিলাম, অবশেষে ঢুকেই পড়লাম। চিকেন কষা এবং বাটার নান খেলাম। রেস্টুরেন্টটি ছোটো হলেও বেশ ভালোই। সব থেকে ভালো ছিল সেখানকার একটা সেটিং এরিয়া, যেটা ট্যাক্সির আদলে তৈরি করা ছিলো। পাশে রাখা গিটারটাও বেশ সুন্দর ছিলো।
![]() |
---|
আমরা এমন একটা জায়গাতে বসেছিলাম যেখানে বসে শুভ ওর প্রিয় আইপিএল খেলাও দেখতে পাচ্ছিল। সবকিছু মিলিয়ে ওখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে, ফেরার পথে আইসক্রিম কিনে বাড়িতে এলাম। ফুচকা না পাওয়াতে মুডটা সত্যিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু তার পরেই ছোট্ট এইরকম একটি সারপ্রাইজ পেয়ে মনটা বেশ ভালো হয়ে গেলো।
"রাত্রিবেলা"
বাড়িতে ফিরে প্রথমেই পিকলু কিছুক্ষণ আক্রমণ চালাল। কারণ আমি আর শুভ একসাথে বেড়নো মানেই তার রাগ আরো দ্বিগুণ হয়ে যায়। বাড়ি ফিরে দেখি শশুর মশাইয়ের ইনসুলিন নেওয়ার সিরিঞ্জটা বাইরে।
শাশুড়ি মাকে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, আমি তো ঠিক জানিনা আমি নিয়েছে কিনা। আমি ফ্রীজ খুলে ইনসুলিন এর বোতল বের করে বুঝতে পারলাম, ইতিমধ্যে তিনি ইনসুলিন নিয়ে নিয়েছেন। ওনাকে জিজ্ঞাসা করতেই বললেন, - "সকাল ১১ টা বাজে, এখন তো নিতেই হবে।" সারাক্ষণই এখন ঘুমের মধ্যে থাকে, তাই এই ধরনের ভুলভাল কথা বলেন।
![]() |
---|
যাইহোক রাতে আমরা শুধু কিছুই খাবো না। তাই কমিউনিটির কাজ নিয়ে কিছুটা সময় অতিবাহিত করলাম। পিকলুকে খেতে দিয়ে কিছু কাজ গুছিয়ে নিলাম। তারপর ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম বের করে খেলাম। তারপর ভেরিফিকেশন এর কাজ শেষ করে নিজে পোস্ট লেখা শেষ করলাম। এখন পোস্ট করে তারপর ঘুমাতে যাবো।
আগামীকাল আবার সারাদিন ব্যস্ততার মধ্যে থাকবো। শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। গরমের মধ্যে ওটাই সবথেকে কস্টের কাজ এবং শ্বশুর মশাই এখন এমন অবস্থায় রয়েছেন যে, ওনাকে নিয়ে যাওয়াটা আসলেই খুবই চিন্তার বিষয়, কিন্তু কিছু করার নেই।
অনেক খারাপের মধ্যে আজকের সন্ধ্যাটা বেশ উপভোগ করেছি, সে কথা বলতেই হয়। বাকি বয়স হলে মানুষের শরীর খারাপ হবে, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। তবে চেষ্টা করছি যাতে ওনাকে একটু ভালো রাখা যায়। আপনারাও এই গরমে সাবধানে থাকবেন। শুভ রাত্রি সবাইকে।
প্রতিদিনের মতোই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে পূজার ফুল তুলেছেন। এদিকে আপনার পরিবারের সবার জন্য চা বানিয়েছেন। আসলে মেয়ে মানুষদের কাজগুলো যেন একটার পর একটা লেগেই থাকে।
এই গরমে পিকলুর স্নান করিয়ে খাইয়ে দিয়েছেন। কারন আমাদের মানুষদের গরমে যা অবস্থা আর ওরা তো পোষা প্রাণী।
আপনার শ্বশুরের টেস্টের রিপোর্টের জন্য ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়েছেন।
কিন্তু আপনার ফুচকা খাওয়ার চিন্তা ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় একটি দোকানও আসেনি।
রাতের বেলা ফ্রিজ থেকে বের করে আইসক্রিম খেয়েছেন। সত্যি এরকম গরম আইসক্রিম খেতে বেশ ভালই লাগে।
সারাদিনের কার্যক্রম গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমি অনেকবারই খেয়াল করেছি আপনি রাত দুইটা আড়াইটার পরে লেখা পোস্ট করেন।
আর তাতে করেই বুঝতে পারি যে আপনি সারাদিন কতটা চাপের মাঝে থাকেন যে লেখা পোস্ট করারা টাইম পান না রাতের আগে।
তবু আপনার শাশুড়ি মা থাকার কারণ আপনার উপর কিছুটা হলেও চাপ কমেছে। বাড়ির অনেক কাজই সে সামলে নেয়।
একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে যে সব কিছুই ঈশ্বর করেন আমাদের ভালোর জন্যই।তাই ফুচকাওয়ালা না থাকাটা ভালোই হয়েছিলো আপনার জন্য। এর ফলে রেস্টুরেন্টে যাওয়া হলো।
একসাথে বাইরে গেলে পিকলু বুঝতে পারে আর রাগ দেখায় জেনে মজা পেলাম।আসলেই ওরা অনেক বুদ্ধিমান হয়ে থাকে।
ভালো থাকবেন সবসময়।