Better life with steem || The Diary Game || 28th April, 2024 ||

in Incredible India3 months ago
IMG_20240429_022659.jpg

"ব্যস্তময় দিনের কি মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে এই গরমে মোটামুটি ভালো আছেন। কারণ এই আবহাওয়ায় খুব ভালো থাকা বোধহয় আমাদের কারোর পক্ষের সম্ভব হচ্ছে না।

খুব প্রয়োজন ছাড়া এই ওয়েদারে বাইরে বেরোনোটা আসলে খুবই কষ্টকর, পাশাপাশি যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তবে কাজের প্রয়োজনে অনেককেই প্রতিদিন বাড়ির বাইরে বেরোতে হয়।

তবে বাড়ির বাইরে বেরোনোটা কতটা কষ্টকর, সেটা আজ আমি খুব ভালোভাবে উপভোগ করলাম। কারণ শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মায়ের বেশ কিছু টেস্ট করানোর জন্য আজ ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে যেতে হয়েছিল।

যাইহোক সারাদিন আজ এই গরমের মধ্যে কিভাবে কাটালাম, সে কথাই শেয়ার করবো পোস্টের মাধ্যমে। চলুন সকাল থেকে শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

IMG_20240428_022509.jpg

যথারীতি অন্যান্য দিনের মতনই গতকাল রাতে ঘুমাতে প্রায় রাত তিনটে বেজেছিলো। যদিও গতকাল পোস্টের চাপ একটু কম ছিলো, তথাপি নিজের লেখা শেয়ার করার পর শুতে শুতে সেই তিনটেই বেজে গিয়েছিলো।

যদিও আজ রবিবার তাই অনেক সকালে ঘুম থেকে ওঠার প্রয়োজন ছিল না। তবে গরমের তীব্রতা সকাল থেকেই এতটা বেশি ছিল যে, ফ্যান চলা সত্ত্বেও অনেক গরম লাগছিলো।সপ্তাহের অন্যান্য দিন যদিও এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে, তবে আজ ঘুম ভেঙেছিল আমাদের অ্যাডমিন ম্যামের ফোনে।

ঠিক তখনই আমি ফিল করলাম যে, ফ্যান চলা সত্বেও আমি সম্পূর্ণ ঘেমে গিয়েছি। যাইহোক ম্যামের সাথে কথা বলা শেষ করে বিছানা থেকে নামলাম। তারপর ফ্রেশ হয়ে দু গ্লাস জল খেলাম, ফ্রিজের জলের সাথে মিশিয়ে। কারণ নরমাল জলে যেন পিপাসা কিছুতেই মিটতে চাইছিল না।

আজ দুপুরে আমাদের বেড়ানোর কথা ছিলো, তাই দেখলাম শাশুড়ি মা সকালেই রান্না বসিয়ে দিয়েছেন। তাই আমিও ঘরের টুকটাক কাজ শেষ করে, কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসলাম। অবশ্য তার আগে শুভকে ছাতু মুড়ি দিয়েছিলাম ব্রেকফাস্ট করার জন্য, আর আমি নুন চিনির জলের মধ্যে অল্প একটু মুড়ি দিয়ে খেয়ে নিয়েছিলাম। এই গরমে রুটি বা অন্য কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করছিল না।

এরপর কমিউনিটির কাজ শুরু করলাম এবং বিশেষ একটি কাজের কারণে আজ অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়েছিলো। অবশেষে প্রায় সাড়ে বারোটা নাগাদ আমি কাজ শেষ করে উঠে তাড়াতাড়ি ঘরের কাজগুলো গুছিয়ে নিলাম। ততক্ষণে শাশুড়ি মায়ের রান্নাও শেষ হয়ে গিয়েছিল।

যেহেতু আমাদের ফিরতে অনেকটা লেট হবে, তাই শাশুড়ি মা স্নান করে পুজো দিয়ে যেতে চাইলো। এই কারণে আমি ওনাকে ঠাকুরের বাসন মেজে, ঠাকুর ঘর মুছে দিলাম। উনি স্নান করে পুজো দিলেন। গরমের কারণে আমি আর স্নান করে বেরোইনি আজ।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

আর যেহেতু শুভ বাড়িতে ছিল তাই পিকলুকে নিয়ে কোনো চিন্তা ছিল না, বরং ও থাকাতে আজ পিকলুকে ভালোভাবে স্নান করিয়ে দিতে পেরেছে। আমরা মোটামুটি রেডি হয়ে দেড়টা নাগাদ রাস্তার সামনে দাঁড়ালাম। কারণ এই গরমে রাস্তায় গাড়ি পাওয়া আসলে অনেকটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই সময়ের বেশ কিছুটা আগেই বাইরে বেরিয়ে দাঁড়ালাম।

IMG_20240428_133106.jpg

বাইরে তখন প্রচন্ড রোদ্দুর এবং রাস্তার সামনে গিয়ে আমি অনুভব করলাম যে, রৌদ্রের তাপ কতটা। যদিও আমি একটা ওড়না মাথায় বেঁধে বেরিয়েছিলাম, যেটা দিয়ে আমি মাথা, নাক ঢেকে নিয়েছিলাম, একেবারে শীতকালের মত করে।

IMG_20240428_133703.jpg

কিছুক্ষণ বাদে একটা ফাঁকা টোটো পেয়েছিলাম। যদিও একটু ভাড়া বেশি চাইল কিন্তু তবুও অসময়ে পাওয়া গেছে এটাই অনেক বেশি। এরপর আমি শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মাকে নিয়ে রওনা দিলাম এবং বাড়িতে শুভ পিকলুকে রাখলো।

IMG_20240428_022953.jpg
IMG_20240428_135338.jpg

তাই দুটো নাগাদ আমরা সেখানে পৌঁছাই এবং রিসেপশনে কথা বলার পর আমাদেরকে কিছুক্ষণ ওয়েট করতে বলে। সিরিয়াল অনুযায়ী নাম এলে আমাদেরকে ডেকে নেবে। সেখানে বসেই আমি দু একটা ছবি তুলেছি, আমি ঠিক শশুর শাশুড়ি মায়ের পেছনের সিটে বসেছিলাম। আপনারা হয়তো উপরের ছবিটা দেখে বুঝতে পারছেন, পাশাপাশি দুজন বসে আছেন।

যেহেতু শাশুড়ি মায়ের দুটো টেস্ট ছিলো, তাই প্রথম ইসিজি করার জন্য ওনাকে ডেকে নিলেন এবং কিছুক্ষণ বাদে শ্বশুর মশাইকেও ডাকলেন।

IMG_20240428_140756.jpg
IMG_20240428_140546.jpg

শ্বশুরমশাই একা একা এক্সরে রুমে যাওয়ার মতন অবস্থায় ছিলেন না, তাই অনুরোধ করে আমি নিজেও এক্সরে রুমের ভিতরে গেলাম এবং সেখানে তার গলার মালা থেকে শুরু করে, গেঞ্জি, চশমা সমস্ত কিছু খুলে দিলাম। তার শরীর এতটাই দুর্বল যে, এক্স রে রুমের ভিতরের চেয়ারটাতেই বসে তিনি ঝিমাচ্ছিলেন।

যাইহোক এরপর ভেতর থেকে তাকে বাইরে এনে বসলাম। শাশুড়ি মা তখনও আসেননি, তাই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর শাশুড়ি মা এসে জানালেন, ওনার ইসিজি এবং ইকো দুটোই করা হয়ে গেছে।

সেখানে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর, রিসেপশন থেকে আমাদের নাম ধরে ডাকলো এবং আমি সেখানে গিয়ে টাকা জমা দিলাম এবং রিপোর্ট নেওয়ার জন্য আমাদের আগামীকাল যেতে বলেছে।

IMG_20240428_141649.jpg
IMG_20240428_141134.jpg

পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে কত টাকা খরচ হয়েছে, তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ আমি নিচে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি সেন্টারে যাওয়ার জন্য আমাদের কত টাকা ভাড়া লেগেছে, তার বিবরণ দেওয়া হলো।

"আজকের ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে যাতায়াত ও টেস্টের জন্য খরচ হওয়া মুল্য তালিকা"

খরচভারতীয় মূল্যস্টিম প্রাইজ
ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে যাওয়ার সময় টোটো ভাড়া(৩ জনের)৬০ টাকা১.৮৭ স্টিম
শশুর মশাইয়ের চেস্ট এক্সরে৩০০ টাকা৯.৩৬ স্টিম
শাশুড়ি মায়ের ইসিজি২০০ টাকা৬.২৪ স্টিম
শাশুড়ি মায়ের ইকো১৩০০ টাকা৪০.৫৫ স্টিম
বাড়ি ফেরার সময় টোটো ভাড়া(৩ জনের)৪০ টাকা১.২৫ স্টিম

1672344690977_010726.jpg

"বিকালবেলা"

IMG_20240428_142201.jpg
IMG_20240428_142150.jpg

এরপর ওখান থেকে বেরিয়ে আমরা সাথে সাথে একটি টোটো পেয়েছিলাম, যে কারণে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করতে আমার প্রায় চারটের বেশি বেজে গেলো। তারপর একটু বিশ্রামের খুব প্রয়োজন ছিলো। কারণ রাস্তায় এত রোদ্দুর এবং এত গরম ছিল যে, যাতায়াতের কারণেই যেন আরো অনেক বেশি পরিশ্রম হয়ে গিয়েছিলো।

যাই হোক তবুও সবকিছু সুন্দরভাবে হয়ে গিয়েছে এটাই অনেক বড় কথা। বিশ্রাম নিতে গিয়ে মিনিট কুড়ির মত ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। ঘুম ভেঙেছে আমার দিদির ফোনে। রেশন কার্ড সম্পর্কিত কোনো একটি কাজের জন্য ডিলারের বাড়িতে গিয়েছিলে এবং আমাকে জানিয়েছিল যদি প্রয়োজন পড়ে আমাকে ফোন করবে এবং আমি যেন ডিলারের সাথে কথা বলি। তবে পরবর্তীতে ও আর ফোন করেনি, হয়তো আর কোনো সমস্যা হয়নি বলেই।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

সন্ধ্যার দিকে ঘরে থাকাটা এত কষ্টকর যেটা সত্যি বলে বোঝানো সম্ভব না। দুপুরে বাইরে বেরোনোর সময়ও বোধ হয় এত গরম লাগেনি, যেটা সন্ধ্যায় পর ঘরের ভেতরে লাগে। তাই প্রতিদিনের মতো আমি ও পিকলু বারান্দাতে বসেছিলাম। তবে সেখানেও মশার উৎপাত।

সন্ধ্যা পূজা দেওয়ার পর মনে হল আমি যেন স্নান করে উঠলাম, এতো পরিমাণে ঘেমে গিয়েছিলাম। তারপর আবার কিছুক্ষণ ফ্যানের তলায় বসে আমি কমিউনিটির কাজ শুরু করলাম, কারণ বুমিং এর কাজটা এই সন্ধ্যাবেলায় আমাকে করতে হয়।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

এরপর শুভ ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার জন্য বাইরে বেরোলো। আর আমি শ্বশুর মশাইকে একটু ছাতু গুলে দিলাম। উনি সেটা খেলেন। কিছুক্ষণ বাদে শাশুড়ি মা ঘুম থেকে উঠে ওনাদের দুজনের জন্য চা করে খেয়েছিলেন। আমার এতো গরম লাগছিল যে, আমি সন্ধ্যা বেলা থেকে জল ছাড়া আর কিছু খাইনি।

এরপর কমিউনিটির আরো অনেক কাজ ছিল যে, বিষয়ে অনেকটা সময় অতিবাহিত করতে হয়েছে, কারণ আগামীকাল আমাদের এই সপ্তাহের কন্টেস্টের শেষ দিন, তাই কনটেস্ট সংক্রান্ত অনেক কাজ থাকে। সেই সমস্ত কাজ গুছিয়ে উঠতে আমায় প্রায় ১০ টার বেশি বেজে যায়।

IMG_20240428_023719.jpg

এরপর শ্বশুরমশাই এবং পিকলুর জন্য আমি গুনে গুনে চারটে রুটি করলাম। তারপর দেখি ডিসকর্ডে অ্যাডমিন ম্যাম কথা বলছেন, সেখানে আমি যুক্ত হলাম। বেশ কিছু বিষয়ে কথাবার্তা হওয়ার পর, আমি পিকলুকে রাতের খাবার দিলাম এবং আমি, শাশুড়ি মা ও শুভ একসাথে ডিনার শেষ করলাম।

ডিনারের শেষে সমস্ত কাজ গুছিয়ে রেখে আমি কমিউনিটির কাজ করতে বসলাম। পোস্টের চাপ খুব বেশি না থাকার কারণে আজ একটু তাড়াতাড়ি কাজ শেষ হয়েছে এবং নিজের পোস্ট লিখতে বসেছি।

যদিও বেশ কিছুটা পোস্ট আমি ঘুম থেকে ওঠার পরে লিখে রেখেছিলাম, তাই কাজ অনেকটাই করা ছিল। যাই হোক এই গরমের মধ্যে বাইরে যাওয়াটা সত্যিই অনেক বেশি কষ্টকর হলেও, আমাকে আবার আগামী মঙ্গলবার আবার ওনাদের নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যেতে হবে।

আসলে আবহাওয়া যেমনই হোক না কেন, কিছু কাজ কিছু দায়িত্ব, আমাদেরকে পালন করতেই হয়। যাই হোক আপনাদের দিন কেমন কাটলো এবং আমার দিনের গল্প পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো, অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  
Loading...
 3 months ago 

গরমের এত তীব্রতা যদি রাতে ভালো ঘুম না হয় তাহলে শরীর এমনিতে অসুস্থ হয়ে পড়বে। কেননা গরমের জন্য রাতে ঘুমানো যাচ্ছে না দিনে মানে তো ঘুম আসবেই না।

শশুর মশাই কে নিয়ে ডাক্তার বাড়িতে গিয়েছেন এক্সরে করার জন্য। আপনার শ্বশুর এর অবশ্য দেখে অনেক খারাপ লাগছে তার জন্য দোয়া রইল যেন সর্বদা সুস্থ থাকেন। যদিও এই গরমে ঘর থেকে বের হওয়ার মত নয় তবুও তো আমাদের বের বের হতে হয় দরকার বিশেষ।

দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যক্রম আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য আপনার পরবর্তী দিনলিপি পড়ার অপেক্ষায় রইলাম ভালো থাকবেন।

 3 months ago 

আপনার শাশুড়ি মায়ের ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে কিছু টেস্ট করিয়েছেন। দোয়া করি আপনার শ্বশুর এবং শাশুড়ি মা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে।
আপনার রিসিভ থেকে বুঝতে পারলাম ইকো এবং বুকের এক্সরে করিয়েছেন।
আসলে ইকো টেস্টটা করতে গেলে বুকের এক্সরে টা অবশ্যই দরকার হয়।
কারণ কার্ডিওলজি বিভাগের যে কোন ডাক্তার ইকোর রিপোর্ট দেখতে গেলে অবশ্যই এর সাথে বুকের এক্সরে দেখতে চায়।

সারাদিনের কার্যক্রম গুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

TEAM 5

Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator08.

Curated by : @sduttaskitchen
 3 months ago (edited)

এত লেখাটা আমি পড়েছিলাম আরো দুদিন আগেই, যদিও সেদিন কমেন্ট করা হয়নি। সেই দিন আপনার এই মুখঢাকা ছবিটা চোখে পরেছিলো এবং খারাপ লেগেছিল খুব।
আমাদের ঢাকার চেয়ে কলকাতার গরম আরো অনেকটাই বেশি।
ঢাকাতেই আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে গরমের কারনে। আপনাদের ওখানে গরমের মাঝে বাইরে বের হওয়াটা যে কতটা কষ্ট হয় সেটা এখানে বসে বসে অনুভব করতে পারি।
এটা শ্বশুর মশায়ের চেয়ারে বসে বসে ছবিটা দেখে আমার নিজের বাবার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো।আজকেও দেখলাম ভালো করে।

প্রার্থনা করি ঈশ্বর উনাকে সুস্থ করে তুলুক।
সেই সাথে আপনিও ভালো থাকবেন সবসময়ই।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65762.16
ETH 3485.95
USDT 1.00
SBD 2.50