Better life with steem || The Diary Game || 27th July, 2024 ||
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
আমরা প্রত্যেকেই কখনো না কখনো জীবন সম্পর্কে নিজেদের মনের কথা বলতে গেলে আফসোসের সুরে বলে উঠি, যেমন ভাবে জীবনটাকে কাটানোর কথা ভেবেছিলাম, ঠিক তেমন ভাবে জীবনটা কাটাতে পারলাম না।
এর ব্যতিক্রম আমিও নই। এমন আফসোস আমারও আছে। আসলে এটাই জীবনের আসল মানে, যেখানে জীবন সম্পর্কে পরিকল্পনা আমাদের বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম। কিন্তু আমাদের জীবন সেই ভাবেই কাটবে যেভাবে ঈশ্বর পরিকল্পনা করে রেখেছেন। তবুও বোধহয় এই পরিকল্পনার মাধ্যমে প্রতিটি মানুষ ভবিষ্যতের কথা ভাবে।
নিশ্চয়ই সকলে ভাবছেন এই মুহূর্তে বসে হঠাৎ এ কথা কেন বলছি। আসলে আমরা জীবন নিয়ে পরিকল্পনা করি, আর সেই পরিকল্পনা মাফিক যদি জীবন কাটাতে না পারি তাহলে আজীবন আফসোস করি ঠিকই। কিন্তু সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় হলো এই যে, জীবন তো দূরের কথা, আমরা তো আমাদের জীবনের একটি দিনও পরিকল্পনা মাফিক কাটাতে পারি না। সেখানে সারা জীবন নিজের পরিকল্পনা মত কাটাতে পারবো কেমন আশা করাটাই তো বোকামি।
অথচ এই বোকামিটা আমরা প্রত্যেকেই করে থাকি। আসলে আজকের দিনটা যেভাবে কাটাবো ভেবেছিলাম, ঠিক তার উল্টো কাটলো। সেই কারণে বোধ হয় উপরের এতগুলো কথা আজ শুরুতেই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
যাইহোক এবার জিজ্ঞেস করি, কেমন আছেন আপনারা সকলে? কেমন কাটলো আপনাদের আজকে সারাটা দিন? আমার দিন সম্পর্কে হয়তো উপরে লেখা পড়ে কিছুটা আন্দাজ করতে পেরেছেন। তবুও কি করলাম সারাদিন সে কথা অবশ্যই শেয়ার করবো, চলুন একেবারে সকাল থেকেই শুরু করি, -
"সকালবেলা"
![]() |
---|
গতকালের পোস্ট পড়ে সকলেই জেনেছেন, গতকাল ডিনারে নিজের পছন্দের মোমো খেয়েছিলাম। তারপর ভেবেছিলাম কমিউনিটির কাজ সেরে শুয়ে পড়লে ঘুমিয়ে পড়বো, কারণ দিনের বেলায় ঘুম হয় নি। কিন্তু এই যে বললাম যেমন আমরা ভাবি তেমনটা হয় কোথায়!
শোয়ার মিনিট দশকের মধ্যে আবার নিচে আসতে হয়েছিল শ্বশুর মশাইয়ের সুগার টেস্ট করতে। ঠিক তখনই ঘুমটা ভেঙে গেলো। তারপর বেশ খানিকক্ষণ জেগে রইলাম, কানে হেডফোন দিয়ে পছন্দের গান শুনছিলাম ইউটিউবে। তারপর কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না। রাতে আবার দুবার ঘুম ভেঙেছে।
![]() |
---|
সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিনের মতো ফ্রেশ হয়ে নিচে এলাম। আজ শুভর একটু তাড়াতাড়ি অফিসে যাওয়ার ছিলো, সেই কারণে আমি ওকে চা দিয়ে তাড়াহুড়ো করে কাজ শুরু করলাম। ফ্রিজ থেকে মাছ নামাতে গিয়ে দেখলাম ফ্রিজের অবস্থা একেবারেই খারাপ। আসলে গত কয়েকদিন ধরে ফ্রিজে রাখা সব জিনিসই বরফ হয়ে যাচ্ছিলো। আর আজ অবস্থা আরো বেশি শোচনীয়।
অগত্যা মাছ রান্না বন্ধ করে আমি শুভর অফিসের জন্য সয়াবিন এবং ডিমের অমলেট রান্না করলাম। সাথে ডালও করেছিলাম। এইভাবে সকালের রান্না শেষ করে রুটি করে রেখেছিলাম সকলের ব্রেকফাস্টে জন্য। শুভর তাড়া ছিল তাই ও একটা রুটি খেয়ে অফিসে বেরিয়ে গেলো।
শাশুড়ি মা ঘুম থেকে উঠলে বিষয়টা জানার পর, ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে পাশের বাড়ি থেকে ফ্রিজ ঠিক করার মিস্ত্রির নাম্বার জোগাড় করে নিয়ে এলে, তাকে ফোন করলাম। তিনি বললেন ১১:৩০ টা নাগাদ আসবেন।
গত শনিবার পিকলুকে ভ্যাকসিন দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল তাই মাঝে এই একটা সপ্তাহ ওকে স্নান করানো সম্ভব হয়নি। তাই আজ স্নান করাবো ঠিক করেছিলাম।
"দুপুরবেলা"
তখনো পর্যন্ত আমার ব্রেকফাস্ট করা হয়নি। ভেবেছিলাম ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে ওকে স্নান করাবো। কিন্তু এর মাঝেই মিস্ত্রি চলে আসলে আমার আর ওকে স্নান করাতে যাওয়া হলো না।
![]() |
---|
ফ্রিজের সমস্ত জিনিসপত্র নামিয়ে ফাঁকা করে দিতে হলো। তারপর এক প্যাকেট ম্যাগী বানিয়ে, আমি পিকলুকে নিয়ে ঘরে দরজা দিয়ে বসে কমিউনিকের কাজ দেখছিলাম। কারন লোকটি ওকে দেখে ভয় পাচ্ছিলো।
ভেবেছিলাম উনি চলে গেলে পিকলুকে স্নান করিয়ে দেবো কিন্তু, তিনি যেভাবে ফ্রিজের সবকিছু খুলে নিয়ে কাজ করতে বসলেন, তাতে স্নান করানোর জন্যে বাথরুমের দিকে যাওয়া তো দূর, ঘরের বাকি কাজ গুলোও করা যাচ্ছিল না। অগত্যা অপেক্ষা করতে হলো তার কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত।
![]() |
---|
যাইহোক তিনি চলে যাওয়ার পর আমি তাড়াহুড়ো করে ফ্রিজের জিনিসপত্র আবার সব গুছিয়ে নিলাম। ফ্রিজের উপরে যে সকল জিনিসপত্র ছিলো, সেগুলোকেও সুন্দর মতন ঝেড়ে মুছে গুছিয়ে নিয়ে, ঘর মুছলাম। তারপর ঠাকুর ঘর মুছে, ঠাকুরের বাসন ধুয়ে, বাকি টুকটাক কাজ সেরে নিয়ে আমি গেলাম স্নান করতে। আজ শশুর মশাইয়ের ও স্নান করতে অনেক লেট হয়ে গিয়েছিলো।
![]() |
---|
প্রতিদিন লাঞ্চ করতে আমাদের এত বেশি দেরি হয়ে যায় যে রোজ ভাবি একটু আগে লাঞ্চ সেরে নেবো কিন্তু ওই যে বললাম পরিকল্পনামাফিক একটা দিন কাটে না, সেখানে জীবন কাটানো স্বপ্ন দেখি আমরা। আজও সেই লাঞ্চ করতে করতে সাড়ে চারটে বেজে গেলো। তারপর এসে কিছুক্ষণের জন্য মোবাইল হাতে নিয়ে কমিউনিটির কাজ দেখলাম ও বিশ্রাম নিলাম।
"সন্ধ্যাবেলা"
গত প্রায় এক সপ্তাহ যাবত প্রতিদিনই সন্ধ্যা বেলায় একটু বাইরে যাবো ভাবি। কিন্তু সন্ধা দেবার পর, কেমন যেন অলসতা ঘিরে ধরে। আর ইচ্ছা করে না রেডি হয়ে বাইরে বেরোতে। কিন্তু যে কাজের জন্য বাইরে যাওয়া প্রয়োজন, সেটা অন্য কাউকে দিয়ে করানো সম্ভব নয়, আমাকেই যেতে হবে।
প্রতিদিনই ভাবি আজ নয় কাল, কাল নয় পরশু, এই করে আমি গত সাত দিন কাটিয়ে দিলাম। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মার্কেটে যেতে পারলাম না। আজ শনিবার ভেবেছিলাম আজ অন্তত একবার যাবো। কিন্তু সেই ভাবনাটা ভাবনাই রয়ে গেলো, আজও যেতে ইচ্ছা করলো না।
![]() |
---|
শনিবার বলে শুভ একটু আগেই অফিস থেকে ফিরেছিলো। ফেরার পথে ও আজ আইসক্রিম নিয়ে এসেছিল। তবে আনতে আনতে বেশ কিছুটা গলে গিয়েছিল বলে, ফ্রিজে আমি কিছুক্ষণের জন্য রেখে দিলাম।
"রাত্রিবেলা"
![]() |
---|
তারপর কমিউনিটির কাজ করতে থাকলাম। মাঝখানে অবশ্য আমি কয়েকটা নিমকি খেয়েছি। কারণ এত বেলায় ভাত খেতে বসে পেট ভরে ভাত খাইনি। তাই সন্ধ্যার পরে একটু খিদে পেয়েছিলো।
কিছুক্ষণ আগে শুভ ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে গেলো। আমি কমিউনিটির কাজ সেরে নিয়ে নিজের পোস্ট লেখা শুরু করেছি বেশ কিছুক্ষণ আগে। রাতের বেলা আজ আর রুটি করব না। শ্বশুরমশাই বলেছেন আজ রাতে তিনি ওটস খাবেন।
আর পিকলুকে গত কয়েক দিন ধরে রাতের বেলায় ভাতই দিচ্ছি। ওর শরীরটাও খুব বেশি ভালো না। কেমন যেন ঝিমিয়ে গেছে। যদিও ডাক্তারের সাথে কথা বলা হয়েছে, তিনি বলছেন হয়তো কোনো কিছুতে ও ভয় পেয়ে থাকতে পারে।
![]() |
---|
আবার শশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থা দেখেও হয়তো ওর ভিতরে খারাপ লাগা কাজ করছে। সেখান থেকে ও এমন চুপচাপ হয়ে গেছে। আসলে ওরা যেহেতু ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না, তাই বোঝাটা একটু কষ্টকর যে ঠিক কি কারণে ওর এমনটা হচ্ছে।
যাইহোক সকাল থেকে দিনটিকে নিয়ে আজ একটু অন্যরকম কিছু ভেবেছিলাম। কিন্তু যে যে কাজগুলো করবো ভেবেছিলাম তার কোনোটাই করা হয়ে ওঠেনি। এইভাবে আরও একটা দিন জীবন থেকে চলে গেলো।
আগামীকাল রবিবার, না চাইতেও বেশ কিছু পরিকল্পনা মাথায় ইতিমধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। জানি না তার কতখানি গতকাল পূর্ণ হবে। যাইহোক আপনাদের সকলের আগামীকাল খুব ভালো কাটুক, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।