Better life with steem || The Diary Game || 25th March, 2024 ||

in Incredible India4 months ago (edited)
IMG_20240325_012102.jpg

"দোলের দিনের বিশেষ কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

কেমন আছেন আপনারা সকলে?
আশা করছি সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

"নিজস্ব অনুভূতি"

দেখতে দেখতে দোলের দিনটাও কেটে গেলো। আরও একটা বছর অপেক্ষা করতে হবে এই দিনটির জন্য। এক বছর আগে এই দিনে আমি আমার বাপের বাড়িতে ছিলাম।

কারণ তার কয়েকদিন আগেই ঠাকুরমা মারা গিয়েছিলেন। তাই আপনারা যেমনটা জানেন, সেই সময় আমি বাবাকে নিয়ে আমার বাপের বাড়িতেই ছিলাম। এইজন্য বহু বছর বাদে পুরনো বান্ধবী, পাড়া প্রতিবেশী সকলের সাথে সেই বছর দোল উৎসব পালন করার সুযোগ হয়েছিলো।

IMG_20240325_012815.jpg

"গতবছরের হোলির দিনের কিছু মুহুর্ত"

কিন্তু এই বছর তেমন সুযোগ হলো না, তাই যেমন ভাবে ভেবেছিলাম তেমনভাবে এই বছরের দোল পালন করতে পারলাম না। আসলে আমাদের পরিকল্পনা মাফিক জীবন কাটে না। আমাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ অন্য কারোর হাতে।

আমাদেরকে শুধু তার মতন করে জীবন কাটাতে হয়। এই কারণেই বোধহয় আগামী কাল বা এক মুহূর্ত পরে, আমাদের জীবনে কি ঘটতে চলেছে তার আন্দাজও আমরা করতে পারি না।

প্ল্যান করেছিলাম এবছর দোলে বাপের বাড়িতে যাবো, কারণ সেখানে পাড়ার সকলে মিলে দোল উৎসবের আয়োজন করে। বেশ আনন্দ করে পালন করে এই বিশেষ দিনটি। কিন্তু শ্বশুর মশইয়ের শরীর খারাপ থাকার কারণে এবারের প্ল্যানটা সফল হলো না। এমনকি আমার দিদির মেয়ে বারংবার যাওয়ার কথা বলা সত্ত্বেও, ওদের বাড়িতে যাওয়া হলো না।

বেশ কিছুটা মন খারাপ, কিছুটা অভিমান, কিছুটা লোক দেখানো আনন্দ, কিছুটা বিরক্তি, এই সমস্ত কিছুর সমন্বয়ে আজকের দিনটি কাটল আমার।

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

IMG_20240325_083210.jpg

সকালে ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় ৮ টা নাগাদ। অবশ্য বিছানা ছেড়েছি পোস্ট করার পরে। এরপর ফ্রেশ হয়ে প্রথমে নিজের জন্য চা বসিয়েছি, এমন সময় শুভ ফোন করে জানালো ও চা খাবে। তাই আবার কিছুটা জল মিশিয়ে দিয়ে দুজনের জন্য চা করলাম।

আজ আমি উঠে দেখি শাশুড়ি মায়ের ফুল তোলা হয়ে গেছে। তিনি ঠাকুরের বাসনও মেজে রেখেছেন। যেহেতু বাড়িতে গোপাল এবং রাধাকৃষ্ণ আছেন, তাই পূর্ণিমা থাকাকালীন পুজো দিতে হবে। পূর্ণিমা ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকালে ১১:৪৮ মিনিটে।

IMG_20240325_155612.jpg

তাই তৈরি তিনি অনেকটা কাজ সম্পন্ন করে নিয়েছেন। আমি আর তাই পূজোর দিকে গেলাম না। রান্নাঘরে গিয়ে দেখলাম শাশুড়ি মা রুটি করে রেখেছেন, কিন্তু আমার রুটি খেতে ইচ্ছে করছিল না বলে, আমি নিজের জন্য এক প্যাকেট ম্যাগি বানিয়ে নিলাম।

অবশ্য নিজের জন্য আলাদা করে কিছু করতে ইচ্ছে করে না, কিন্তু রুটি খাওয়া থেকে নিজেকে বাদ রাখার জন্য এটুকু কষ্ট আজ করলাম।

যাইহোক দুপুরে যেহেতু চিকেন রান্না করতে হবে, তাই শাশুড়ি মা যতক্ষণই পুজো দিয়েছিলেন, ততক্ষণে আমি রান্নার আয়োজন করে নিলাম। কারণ মাংস রান্না করার পর গ্যাস পরিষ্কার করে দিলে, তবেই শাশুড়িমা বাদবাকি রান্না করবেন। যেহেতু তিনি নিজে মাংস খান না, তাই এই সমস্ত বিষয় আমাদের বাড়িতে একটু মেনে চলা হয়।

IMG_20240325_125527_011421.jpg

আমি সবকিছু গুছিয়ে মাংস বসিয়ে দিলাম। ইতিমধ্যে আমার ননদের বড় ছেলে আমাদের বাড়িতে চলে এলো। ও মোটামুটি রং মেখে ভূত হয়েই ছিলো। তারপর এসে আমাদের সকলকে আবীর দিয়ে, ও তার বন্ধুদের সাথে রং খেলতে বেরিয়ে পড়ল।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

কিছুক্ষণ বাদে শুভর বন্ধুরা এলো। আজ ওরা সকলের মিলে বেশ কিছুটা সময় কাটিয়েছে নিজেদের মধ্যে। দোল উপলক্ষে সকলের ছুটি থাকায়, বেশ অনেকদিন বাদে সবগুলো বন্ধু এক জায়গায় হয়েছে।

এই ব্যাপারটা দেখে আসলে আমার অনেক বেশি রাগ এবং খারাপ লাগা কাজ করছিল। কারণ আমি নিজেই এ বছর প্ল্যান করেছিলাম, সব বান্ধবীদের সাথে এইভাবে হোলি কাটাবো। কিন্তু যেহেতু আমি বাড়ির বউ, তাই সব বিষয়ে ত্যাগ স্বীকারটা আমাকেই করতে হয়। যাইহোক রান্নাবান্না করাকালীন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডিসকর্ডে কিছুক্ষণ কথা হলো। তারপর আবার যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।

IMG_20240325_155947.jpg

এরপর কখন সময় পার হয়ে গেলো বুঝলাম না। অবশ্য আমি তেমন রঙ খেলিনি। সকলে এসে আবীর দিয়েছে এইটুকুই যা। আজ পিকলুও একটু আবীর মেখেছে। অন্যান্য বছর ননদ-ননদের বর আসলে আরেকটু বেশি আনন্দ হয়। কিন্তু এবার ননদের হাজব্যন্ডের শরীর খারাপ খারাপ থাকার কারণে তারাও আসতে পারেনি।

1672344690977_010726.jpg

"বিকালবেলা"

IMG_20240325_013821.jpg

ননদের ছেলে বাড়িতে এলো, তখন প্রায় দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে। ও স্নান করে নিলে, আমরা সকলে একসাথে লাঞ্চ শেষ করলাম। পিকলুকে অবশ্য আগেই লাঞ্চ করিয়ে দিয়েছিলাম। শুভ ওর বন্ধুদের নিয়েই ব্যস্ত ছিলো। তাই ওকে ছাড়াই লাঞ্চ করে নিয়েছিলাম। তারপর যথারীতি নিজের কাজ নিয়ে বসেছিলাম। বিকেল পাঁচটা নাগাদ শুভ স্নান করেছিলো, তবে আজ ও লাঞ্চ করেনি।

এরপর সন্ধ্যা পূজো শেষ করে, আমি পুনরায় কাজ নিয়ে বসলাম। শাশুড়ি মায়ের আজ দুপুর থেকে আবার জ্বর এসেছে। মাঝেমধ্যে বুঝতে পারি না, অভিযোগটা কার প্রতি করবো।

বাড়িতে একটার পর একটা সমস্যা যদি এইভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে নিজে ধৈর্য কতক্ষণ ঠিক রাখতে পারবো এ বিষয়ে আমি যথেষ্ট সন্ধিহান। আমার তো মাঝে মধ্যে মনে হয়, ভগবান বোধহয় আমার একটু বেশিই পরীক্ষা নিচ্ছেন।

না হলে গত দুবছর ধরে তিনি আমাকে যে পরিস্থিতিতে রাখছেন, তাতে ভালো সময় কেমন হয় তা আমি প্রায় ভুলতে বসেছি। একের পর এক কাছের মানুষদের শারীরিক অসুস্থতা দিয়ে চলেছেন, আর এদের সকলের সেবা করতে গিয়ে আমার মনে হয় মানসিক দিক থেকেও নিজে অসুস্থ হয়ে পড়ছি।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

IMG_20240325_202232.jpg

কিছুক্ষণ বাদে বাইরে হালকা হালকা বৃষ্টি শুরু হল। তার সাথে বেশ ঠান্ডা হাওয়া বইছিলো। বেশ ভালো লাগছিল তখন।

রাতে ডিনারের জন্য রুটি তৈরি করেছিলাম। আবার কিছুটা ভাতও ছিলো। এর উপরে আবার পাশের বাড়ি থেকে প্রসাদ দিয়ে গিয়েছিলো। যেহেতু দোল পূর্ণিমার দিন তারা তাদের বাড়িতে গোপাল প্রতিষ্ঠা করছেন, তাই সেই পূজার প্রসাদ দিয়ে গিয়েছিলেন।

এই সমস্ত কিছু মিলিয়ে মিশিয়ে আমরা সকলে ডিনার করেছি। পিকলুকে অবশ্য মাংস দিয়ে রুটি দিয়েছিলাম। ও বেশ তৃপ্তি করে খেয়েছে। এরপর সব কিছু গুছিয়ে রেখে আমি নিজের পোস্ট লিখতে বসলাম।

1672344690977_010726.jpg

যদিও রবিবার এবং সোমবার শুভর অফিস ছুটি ছিলো বলে সকালের দিকে ইচ্ছা মতন উঠেছি। তবে আগামীকাল থেকে যদিও তা আর সম্ভব হবে না, কারণ অফিস শুরু হয়ে যাবে। তার পাশাপাশি শুরু হবে রুটিন মাফিক আমার দিন যাপন।

হোলির দিনটা যে এত বাজে ভাবে কাটবে, আমি সত্যিই ভাবিনি। তারপরও যখন রাত হলো, ভাবলাম দিনটা তো কেটে গেছে এটাই অনেক। যাইহোক, এই ছিলো আমার দিনের গল্প। আপনাদের দোলের দিনটি কেমন কাটলো, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 4 months ago 

প্রথমেই আপনাকে দোল পূর্ণিমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। তবে আমরা যে পরিকল্পনা করি সেটা কখনোই পরিপূর্ণ হয় না। আবার মাঝে মাঝে হয়, আশা করি আগামী বছর আপনার এই পরিকল্পনা নিশ্চয়ই পূর্ণ হবে।

আসলে আমরা মানুষ তাই সমস্যা আছে সমাধানের পথ আমাদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের জীবনের সমস্যাগুলো কেমন যেন শেষ হতে চায় না। একটার পর একটা লেগেই থাকে, সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি আপনার শাশুড়ি এবং শশুর খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক। ভালো থাকবেন।

 4 months ago 

সেই প্রথম থেকে মনোযোগ দিয়ে পড়ছিলাম বেশ ভালো লাগলো, মেয়েরা মনে হয় এমনই হয় সবকিছু যেন তাদের স্বীকার করতে হয়,, গত একটা বছরের জমানো স্বপ্ন তা পূর্ণ হলো না কারণ আপনার শ্বশুর অসুস্থ এর ভিতরে আজ আবার শাশুড়ির ঝড় এসেছে,,,,
তবে এটাও সত্যি সৃষ্টিকর্তা যা করে আমাদের মঙ্গলের জন্যই করে।।

এটা তো অবশ্যই সত্যি ধৈর্যের ফল মিষ্টি খায় অবশ্যই এত কষ্টের পিছনে রয়েছে অনেক শান্তি আপনার। মন খারাপ এবং অভিমান চাপা কষ্ট নিয়ে নিজের উপরে খারাপ লাগাটাকে স্থায়ী করবেন না, কারণ নিজেকে ভালো রাখার দায়িত্ব একদম নিজের উপরে। আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা ধন্যবাদ।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65236.35
ETH 3483.12
USDT 1.00
SBD 2.51